<p>সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবীদের সংগঠন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ায় এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকনকে অব্যাহতি দিয়েছে তার সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবদী আইনজীবী ফোরাম।</p> <p>বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের এ সংগঠনটির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি পদে ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব পদে থাকা খোকন। গতকাল শনিবার (২১ এপ্রিল) ফোরামের প্যাডে খোকনকে অব্যাহতির চিঠি পাঠান দপ্তর সম্পাদক মো. জিয়াউর রহমান।</p> <p>অব্যাহতির চিঠিটি কিভাবে পাঠানো হয়েছে জানতে চাইলে জিয়াউর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘রেজিস্ট্রি ডাকে অব্যাহতির চিঠি পাঠানোর পাশাপাশি এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকনের চেম্বারে আমি নিজে গিয়ে চিঠিটি পৌঁছে দিয়েছি।’ </p> <p>তবে মাহবুব উদ্দিন খোকন অব্যাহতির চিঠি পেয়েছেন কিনা তা জানা যায়নি। কল করে তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। সমিতির সভাপতির কক্ষে খোঁজ করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।</p> <p>প্রতি বছর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির ১৪টি পদে নির্বাচন হয়ে থাকে। সভাপতি, সম্পাদকসহ সম্পাদকীয় পদ ৭টি। বাকি ৭টি সদস্য পদ। পেশাজীবী সংগঠন হলেও আওয়ামীপন্থী প্রার্থীরা সাদা ও বিএনপিপন্থীরা নীল প্যানেলের প্রার্থী হিসেবে পরিচিত। গত ৬ ও ৭ মার্চ নির্বিঘ্ন ভোট হলেও ভোট গণনা কখন হবে এ নিয়ে বিবাদ তৈরি হয় প্রার্থীদের মধ্যে। এক পর্যায়ে মারামারির ঘটনাও ঘটে। পরিচিত দুই প্যানেলের বাইরে সম্পাদক পদের প্রার্থী নাহিদ সুলতানা যুথীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তিনি সমিতির নির্বাচনে বহিরাগতদের দিয়ে সাদা প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী শাহ মঞ্জুরুল হকসহ অন্য প্রার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে গত ৯ মার্চ ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা করে নির্বাচন পরিচালনা উপ কমিটি।</p> <p>ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী সংখ্যাগরিষ্ঠ জয় পায় আওয়ামীপন্থী সাদা প্যানেল। সম্পাদকসহ ছয়টি দাপ্তরিক ও চারটি সদস্য পদে জয় পায় এ প্যানেলের প্রার্থীরা। আর সভাপতি ও তিনটি সদস্য পদে জয় পায় নীল প্যানেল অর্থাৎ বিএনপি-জামায়াতপন্থী প্রাথীরা। ওইদিন মাহবুব উদ্দিন খোকন ও তাঁর অ্যাজেন্টরা ভোট গণনায় অংশ নিলেও বিএনপিপন্থী অন্য প্রার্থী বা তাঁদের কোনো অ্যাজেন্ট গণনায় অংশ নিতে দেখা যায়নি। ফলাফলে সভাপতি পদে জয়ী হলেও গণনায় কারচুপির অভিযোগ তুলে পুননির্বাচন দাবি করেন মাহবুব উদ্দিন খোকন। সেই দাবিকে সমর্থন জানিয়ে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সিদ্ধান্ত নেয় পুননির্বাচনের জন্য যৌক্তিক আন্দোলন চালিয়ে নেওয়ার। আর এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে নির্বাচিত চার জনকে সংশ্লিষ্ট পদের দায়িত্ব গ্রহণ না করতে গত ২৭ মার্চ চিঠি দেওয়া হয়। সে চিঠি উপেক্ষা করে গত ৪ এপ্রিল দায়িত্ব নিয়ে সভাপতি পদে বসেন বিএনপি নেতা খোকন। সেদিন দায়িত্ব নেওয়ার আগে সংবাদ সম্মেলন করে খোকন সমিতির নির্বাচনে নীল প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী রুহুল কুদ্দুস কাজল ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। এমন পরিস্থিতিতে মাহবুব উদ্দিন খোকনকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত জানাল সংগঠনটি।    </p> <p>খোকনকে দেওয়া অব্যাহতির চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ৬ এপ্রিল বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটি সংগঠনটির উপদেষ্টা ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি-সম্পাদকদের নিয়ে জরুরি সভা করেন। সভায় এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকনের কার্যকলাপকে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী হিসেব গণ্য করে তাঁকে সংগঠনটির সিনিয়র সহ-সভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ২০ এপ্রিল থেকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে।<br />  </p>