নেই কোনো রকম সংকট। তা সত্ত্বেও বেড়েই চলেছে চালের দাম। গত দেড় মাসে খুচরা পর্যায়ে প্রতিকেজি চালের দাম ২ থেকে ৬ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। দেশের ১৪ জেলায় বন্যার কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকার পাশাপাশি ত্রাণ কাজে বিপুল পরিমাণ চাল লাগছে।
নেই কোনো রকম সংকট। তা সত্ত্বেও বেড়েই চলেছে চালের দাম। গত দেড় মাসে খুচরা পর্যায়ে প্রতিকেজি চালের দাম ২ থেকে ৬ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। দেশের ১৪ জেলায় বন্যার কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকার পাশাপাশি ত্রাণ কাজে বিপুল পরিমাণ চাল লাগছে।
একইসঙ্গে দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের মোকামগুলোতে ধান ও চালের মজুত গড়ে তুলে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে দাম বাড়াচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া বিশ্ববাজারে চালের দাম দেশের বাজারের চেয়ে বেশি। ফলে আমদানির সম্ভাবনাও কম।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, পর্যাপ্ত মজুত থাকার পাশাপাশি সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র বন্যা, ত্রাণ ও আন্তর্জাতিক বাজারের অজুহাতে বাড়ানো হচ্ছে চালের দাম। একইসঙ্গে মোকামগুলোতে ধান ও চালের মজুত গড়ে তুলে সিন্ডিকেট গড়ে তোলার মতো অভিযোগও করেছেন।
বিশেষ করে ধান উৎপাদন এলাকা হিসেবে পরিচিত রাজশাহী, নওগাঁ, কুষ্টিয়া, দিনাজপুর, পাবনা ও বগুড়ার মোকামে ধান-চাল মজুত রেখে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এক্ষেত্রে সিন্ডিকেট প্রথা ভাঙতে চাল আমদানির এলসি উন্মুক্ত করার দাবি ব্যবসায়ীদের।
গতকাল শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কয়েকটি খুচরা ও পাইকারি বাজারের খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খুচরা বাজারে জাত ও মানভেদে প্রতিকেজি দেশি বাসমতি ৯০ থেকে ৯৫ টাকা, মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৮ থেকে ৭৫ টাকা। নাজিরশাইল চাল ৬৮ থেকে ৮০ টাকা, মাঝারি মানের বিআর ২৮, ২৯ নম্বর চাল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, মোটা স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ৫৭ টাকা ও হাইব্রিড মোটা ৫৪ টাকা।
গত জুলাই মাসেও খুচরা বাজারে প্রতিকেজি দেশি বাসমতি ৮৪ থেকে ৯০ টাকা, মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৬২ থেকে ৬৮ টাকা।
এদিকে পাইকারি বাজারে বর্তমানে চিকন চাল প্রতিকেজি মিনিকেট মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭২ টাকা। নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭৪ টাকা। দেশি বাসমতি চাল প্রতিকেজি ৮৫ থেকে ৮৮ টাকা। মাঝারি মানের প্রতিকেজি বিআর ২৮ নম্বর প্রতিকেজি চাল ৫৭ টাকা। বিআর ২৯ নম্বর ৫৮ টাকা। পাইজাম প্রতিকেজি ৫৫ থেকে ৫৭ টাকা। মোটা চাল গুটি স্বর্ণা চাল মানভেদে ৫৪ টাকা, হাইব্রিড ধানের চাল (গুটি) বা সবচেয়ে মোটা চালের দাম কেজি ৪৯ টাকা।
অথচ গত জুলাই মাসেও পাইকারি বাজারে চিকন চাল প্রতিকেজি মিনিকেট মানভেদে বিক্রি হয়েছে ৫৯ থেকে ৬৫ টাকা। নাজিরশাইল চাল বিক্রি হয়েছে ৬২ থেকে ৭৪ টাকা। দেশি বাসমতি চাল প্রতিকেজি ৮০ থেকে ৮৪ টাকা। মাঝারি মানের বিআর ২৮ নম্বর প্রতিকেজি চাল ৫১ থেকে ৫৩ টাকা। বিআর ২৯ নম্বর ৫২ থেকে ৫৪ টাকা। পাইজাম প্রতিকেজি ৫৪ থেকে ৫৫ টাকা। মোটা চাল প্রতিকেজি গুটিস্বর্ণা চাল মানভেদে ৪৯ থেকে ৫১ টাকা। হাইব্রিড ধানের চাল (গুটি) বা সবচেয়ে মোটা চালের দাম কেজিতে ৪৬ টাকা।
এদিকে মার্কিন কৃষিবিষয়ক সংস্থা ইউএসডিএ সম্প্রতি ‘বাংলাদেশ গ্রেইন অ্যান্ড ফিড আপডেট, আগস্ট–২০২৪’ শীর্ষক বাংলাদেশের দানাদার খাদ্যবিষয়ক ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের ১৪ জেলায় ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রভাব পড়েছে চালের বাজারে। প্রতিকেজি চালে ৬ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। অন্যদিকে সরকারি গুদামে চালের মজুতও গত বছরের তুলনায় কম রয়েছে। বিশ্ব বাজারে চালের দাম বেশি থাকায় এ মুহূর্তে চাল আমদানির সম্ভাবনাও কম। সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে চালের বাজার কিছুটা অস্বাভাবিক থাকবে। তবে নভেম্বরে দাম কিছুটা কমতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
ইউএসডিএ’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফলে প্রায় এক মাস বিভিন্ন খাদ্য পরিবহন বাধাগ্রস্ত হওয়ায় এর প্রভাব চালের বাজারেও পড়েছে। তবে ধান উৎপাদনের ক্ষেত্রে আন্দোলনের প্রভাব পড়েনি বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, দেশে বছরে মোট চালের চাহিদা রয়েছে ৩ কোটি ৭০ লাখ টনের বেশি। কিন্তু বন্যার কারণে এ বছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে চালের উৎপাদন ৩ শতাংশ কমতে পারে। এ অর্থবছরে চালের উৎপাদন ৩ কোটি ৬৮ লাখ টন হতে পারে। ধান হয়েছে ১ কোটি ১৫ লাখ হেক্টর জমিতে, যা গত বছরের চেয়ে সাড়ে ৩ শতাংশ কম।
এ বিষয়ে পুরান ঢাকার বাবুবাজারের পাইকারি চাল ব্যবসায়ী মেসার্স রশিদ রাইস এজেন্সির স্বত্বাধিকারী আবদুর রশিদ জানান, আগস্টে ছাত্র আন্দোলনে সরকার পতনের পর থেকেই চালের দাম বাড়তে থাকে। এরপর দেশের ১৪ জেলায় হঠাৎ বন্যা ও আন্তর্জাতিক বাজারে চালের দাম বাড়ায় দেশের পাইকারি ও খুচরা বাজারে সব ধরনের চালের দাম মানভেদে কেজিতে ২ টাকা থেকে ৬ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ফলে হঠাৎ বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে কোনো চাল আমদানি হচ্ছে না। এরপর দেশের ১৪ জেলায় বন্যায় ফসলের ক্ষতি হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বাড়তি সুবিধা নিতে ধান-চাল মজুত করে বাজারে সংকট তৈরি করে চালের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। মোকাম মালিক ও মিলাররা আগের চাহিদাপত্র অনুযায়ী চাল দিতে অস্বীকৃতি জানালেও বাড়তি দাম পেলেই গুদামগুলোতে চালবাহী ট্রাক পাঠাচ্ছে। এজন্য চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে এলসি খুলে রাখা যেতে পারে। এতে করে দেশে চালের সংকট দেখা দিলে বা দাম বেড়ে গেলে বাইরে থেকে সহজেই চাল আমদানি করা যাবে। পাশাপাশি বাড়াতে হবে মনিটরিং। তা না হলে লাগামহীন হয়ে পড়তে পারে চালের বাজার।
বাবুবাজারের সেসার্স হাজি রাইস এজেন্সির মালিক মো. জিয়াউল হক বলেন, চালের দাম মানভেদে গত এক দেড় মাসে বস্তায় ১০০ থেকে ৩০০ টাকা বেড়েছে। এখন শুধুমাত্র বন্যা, ত্রাণ ও আন্তর্জাতিক বাজারের অজুহাত বাড়ানো হচ্ছে চালের দাম। একইসঙ্গে মোকামগুলোতে ধান ও চালের মজুত গড়ে তুলে সিন্ডিকেট গড়ে তোলার মতো অভিযোগও করেছেন। এক্ষেত্রে সিন্ডিকেট প্রথা ভাঙতে চাল আমদানির এলসি উন্মুক্ত করার দাবি ব্যবসায়ীদের।
রায় সাহেব বাজারের খুচরা চাল বিক্রেতা মো. রাজু আহমেদ বলেন, বন্যা শুরুর পর থেকেই হঠাৎ আড়তে গিয়ে দেখি প্রতিবস্তা চালের দাম ১০০ থেকে ৩০০ টাকা করে বেড়েছে। শুনেছি অনেক ফসলের ক্ষতি হয়েছে, মজুত নষ্ট হয়েছে। আবার আন্তর্জাতিক বাজারে দামও বেশি। তাই মনে হচ্ছে দাম সহসা কমবে না। তবে নতুন আমন উঠলে পরে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে মনে করেন তিনি।
সূত্রাপুর বাজারের মেসার্স আদনান অ্যান্ড আরাফাত ট্রেডার্সের মালিক মো. ফারুক বলেন, চালের দাম প্রতিদিনই বাড়ছে। আসলে বন্যায় অনেক ক্ষতি হয়েছে। আর এ মুহূর্তে চাল আমদানি হচ্ছে না। বাজার স্থিতিশীল হতে কিছুটা সময় লাগবে।
এদিকে খাদ্য সচিব ইসমাইল হোসেন বলেছেন, এখন খাদ্যের (চাল ও গম) সরকারি মজুত ১৯ লাখ, এটা নিরাপদ পর্যায়ে আছে। তাই বলা যায়, এ মুহূর্তে দেশে খাদ্যের কোনো সংকট নেই, সরবরাহ পরিস্থিতির ভালো আছে। ফলে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। আমরা আপদকালীন মজুত ধরেছি ১৩ লাখ টন, এরপর এ সংগ্রহ মৌসুমে এখন পর্যন্ত আর ২ লাখ টন হওয়ার কথা। সেখানে আমাদের মজুত অনেক বেশি আছে।
তিনি বলেন, শুধু সরকারি মজুত নয়, বেসরকারি ১৫০০ মিলে মজুত সন্তোষজনক বলে আমরা জেনেছি। কারণ গত বোরো মৌসুমে উৎপাদন ভালো হয়েছে। এছাড়া সরবরাহ মধ্যবর্তী সময়ে কিছুটা বিঘ্ন ছিল। কিন্তু এখন কোনো সমস্যা নেই।
চালের দাম প্রসঙ্গে খাদ্য সচিব বলেন, আগস্টের ৫ তারিখের আগে পর্যন্ত চালের দাম ২-৫ টাকা বেড়েছিল। বাজারে ৪৯-৫১ টাকা সাধারণ মানের চাল পাওয়া যাচ্ছে। এটা স্বস্তিদায়ক।
উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট বোরো মৌসুমের সংগ্রহ কার্যক্রম শেষ হয়েছে। এ মৌসুমি ১১ লাখ টন সিদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল, হয়েছে ১১ লাখ ২৫ হাজার টন। আতপ চালও এক লাখ টনের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৪ হাজার টন বেশি হয়েছে। তবে ধানের সংগ্রহ কম হয়েছে। এটা বরাবর কম হয়। গত বছর ৪০ শতাংশ হয়েছিল। সে তুলনায় ভালো হয়েছে। ৫ লাখ টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীত হয়েছে ২ লাখ ৯৬ হাজার টন।
সম্পর্কিত খবর
বিশ্বকে বদলে দেওয়ার মতো দুর্দান্ত সব আইডিয়া আছে বাংলাদেশের কাছে। বাংলাদেশে ব্যবসার ভালো সুযোগ রয়েছে।
আজ বুধবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলন-২০২৫ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
এক সময় ক্ষুদ্রঋণ বাংলাদেশের একটি ক্ষুদ্র গ্রামে শুরু হলেও এখন এটি আমেরিকার সবচেয়ে বড় ব্যবসায় পরিণত হয়েছে উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে ব্যবসার ভালো সুযোগ রয়েছে।
দুনিয়া বদলাতে চাইলে ব্যবসা সবচেয়ে শক্তিশালী কাঠামো বলে মন্তব্য করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, সবাই মিলে উপার্জন করে মানুষের ভাগ্য বদল করাটা স্বর্গীয় অনুভূতি। কার্বন নিঃসরণ বাদ দিয়ে আমরা নতুন সভ্যতা গড়তে পারি।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ বোর্ডের (বিডা) আয়োজনে চার দিনব্যাপী এ বিনিয়োগ সম্মেলন গত ৭ এপ্রিল শুরু হলেও আজ প্রধান উপদেষ্টা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
এ সময় তিনি বলেন, সামাজিক ব্যবসার আদর্শ স্থান বাংলাদেশ। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর উন্নতির ফ্রেমওয়ার্ক তৈরির মাধ্যমেই সম্ভব দারিদ্র্য বিমোচন।
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ চলাকালে দেশের বিভিন্ন শহরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট ৭২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আজ বুধবার পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে। এসব ঘটনা সংক্রান্তে এখন পর্যন্ত মোট ১০টি মামলা রুজু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, গ্রেপ্তার হওয়াদের মধ্যে খুলনায় ৩৩ জন, সিলেটে ১৯ জন, চট্টগ্রামে ৫ জন, গাজীপুরে ৪ জন, নারায়ণগঞ্জে ৪ জন, কুমিল্লায় ৩ জন এবং কক্সবাজারে ৪ জন।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার ভাঙচুর ও লুটপাটের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ৪৯ জনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়েছিল পুলিশ।
‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি এক সপ্তাহ পেছানোর অনুরোধ জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
নিজের ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এই অনুরোধ জানান তিনি। সরকার এই প্রতিবাদ সমাবেশের মহৎ উদ্দেশ্যকে সম্মান করে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব লিখেছেন, ৯ তারিখ সকাল থেকে বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিটের মূল প্রোগ্রাম শুরু হচ্ছে।
তিনি আরও লিখেছেন, ইসরায়েলি বাহিনীর জাতিগত নিধন এবং গণহত্যার প্রতিবাদে ‘মার্চ ফর গাজা’ আয়োজন করা হয়েছে ১২ এপ্রিল। যেহেতু ফিলিস্তিন আমাদের অন্তরে অত্যন্ত সংবেদনশীল জায়গা দখল করে আছে, আমার ধারণা এই মার্চে লাখ লাখ লোক হবে।
প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ সহকারী লিখেছেন, তথাপি একটা কথা বলতে চাই, আমাদের সম্মিলিত প্রতিবাদের অডিয়েন্স মূলত আন্তর্জাতিক রাজনীতি, কিন্তু বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি নয়। এমন অবস্থায় বিদেশি বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতি, তাদের স্পেশাল ইপিজেড, ইপিজেড, হাইটেক পার্ক এবং স্টার্টআপ ভিজিটের বিষয়গুলো সার্বিকভাবে বিবেচনা করে মার্চ ফর গাজা প্রোগ্রামটি ১২ তারিখের পরিবর্তে এক সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়া যায় কি না, এমন বিবেচনার জন্য বিনীতভাবে আয়োজকদের অনুরোধ করি। এক সপ্তাহের মধ্যে ফিলিস্তিন বিষয়টি কোনোভাবেই হারিয়ে যাবে না।
তিনি লিখেছেন, ইতোমধ্যেই প্রধান উপদেষ্টা ইজরায়েলি বর্বরতার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ অত্যন্ত দরকারি। পাশাপাশি দেশে স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম, ব্যবসা এবং বিনিয়োগ পরিবেশ সৃজন করাও জরুরি।
ফিলিস্তিনের গাজায় সংঘটিত বর্বরোচিত গণহত্যার প্রতিবাদে ‘মার্চ ফর গাজা’ শিরোনামে জমায়েতের ডাক দিয়েছে প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম। ১২ এপ্রিল (শনিবার) ঢাকার শাহবাগ থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ পর্যন্ত এই মার্চ হবে।
বলা হচ্ছে, ফিলিস্তিনের পক্ষে ঢাকার সড়কে এটিই হবে ‘সবচেয়ে বড় মার্চ’। এই কর্মসূচির উদ্যোক্তারা দলমত–নির্বিশেষে সবাইকে এই কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন।
রেভিনিউ শেয়ারিংয়ের ওপর প্রায় ৪২ কোটি টাকা ভ্যাট পরিশোধ করেনি বেসরকারি মোবাইল অপারেটর বাংলালিংক। আদালতের নির্দেশনা থাকার পরেও কম্পানিটি এক যুগ আগের সেই ভ্যাট পরিশোধ করছে না। ভ্যাট পরিশোধে সময় বেঁধে দিলেও বিটিআরসিকে পাত্তা দিচ্ছে না বাংলালিংক।
বিটিআরসি সূত্র জানায়, মোবাইল অপারেটরগুলো গ্রস আয়ের ওপর বিটিআরসির সঙ্গে একটা অংশ রেভিনিউ শেয়ারিং করে।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) বলছে, এই ভ্যাট কোনোভাবেই দ্বৈত কর নয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) যে আদেশ জারি করেছে, সেই আদেশের আগেই এই ভ্যাট। ফলে বাংলালিংককে এই ভ্যাট দিতেই হবে।
বিটিআরসি এই ভ্যাট পরিশোধে ২০২৪ সালের ২৫ জুন বাংলালিংককে যে চিঠি দিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, আপিল বিভাগ শুনানি শেষে বিটিআরসির পক্ষে রায় দিয়েছেন। অর্থাৎ বাংলালিংককে এই ভ্যাট দিতে হবে। এই ভ্যাট পরিশোধে ২০২৩ সালের ২২ জুন ও ২৪ ডিসেম্বর বাংলালিংককে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া ২০১২ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন খাতে কর্তন করা ভ্যাট বাংলালিংককে পরিশোধের জন্য ২০২৪ সালের ৫ জুন বিটিআরসি থেকে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু বাংলালিংক ভ্যাট পরিশোধে সাড়া দেয়নি। পরে ১০ জুন এই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলালিংক বিটিআরসিতে একটি আবেদন করে। আবেদনে এনবিআরের ২০১২ সালের ১২ আগস্ট জারি করা বিশেষ আদেশ অনুযায়ী দ্বৈত করনীতিতে রেভিনিউ শেয়ারিংয়ের ওপর ভ্যাট প্রযোজ্য হবে না বলে উল্লেখ করা হয়।
তবে নথিপত্র ও ওই আদেশ বিশ্লেষণ করে বিটিআরসি বলছে, রেভিনিউ শেয়ারিংয়ের ওপর ভ্যাট বা মূসক হিসেবে পাওনা এনবিআরের আদেশ জারির পূর্ববর্তী বা আগের ১৫ মাস সময়ের (২০১২ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত)। ফলে বাংলালিংকে আবেদনপত্রে দ্বৈত করের যে দাবি করেছে, তা গ্রহণযোগ্য নয়। সেজন্য বাংলালিংক কর্তৃপক্ষকে ভ্যাট হিসেবে ৪২ কোটি ৫৮ লাখ ১৬ হাজার ১৭১ টাকা পরিশোধ করতেই হবে।
এই ভ্যাট পরিশোধে বাংলালিংককে সাত দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। তবে সময় শেষ হলেও বাংলালিংক কোনো ভ্যাট পরিশোধ করেনি। অর্থাৎ এক যুগ পরও বিটিআরসিকে পাত্তা দিচ্ছে না বাংলালিংক।