দেশে ৫৪ বছরে রাসায়নিক সারের ব্যবহার ৫৪ গুণ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান ফজলুল কাদের। একশনএইড বাংলাদেশ আয়োজিত সেমিনারে তিনি জানান, ১৯৭০ সালের তুলনায় বর্তমান বাংলাদেশে খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে ৩ গুণ।
আরো পড়ুন
আমাকে এখনো মানুষ ভালোবাসে : আরফিন রুমি
অথচ রাসায়নিক সারের ব্যবহার ৫৪ গুণ বৃদ্ধির কারণে মাটির স্বাস্থ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেজন্য আসলে মানুষের আচরণগত পরিবর্তন আনা প্রয়োজন।
টেকসই কৃষি, মাটি ও খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তিনি।
আরো পড়ুন
যৌথবাহিনীর অভিযান, মাদক ও নগদ টাকাসহ আটক ৩
আজ রবিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। রাজধানীর খামারবাড়িতে তুলা উন্নয়ন বোর্ডের মিলনায়তনে ‘টেকসই কৃষি, মাটির স্বাস্থ্য, নিরাপদ খাদ্য এবং যুব ও নারী ক্ষমতায়নে জৈব সারে ভর্তুকি’ শীর্ষক সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন একশনএইড বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির। দুইদিনের সেমিনারে ছয়টি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।
আরো পড়ুন
ক্ষুব্ধ এডমিন ক্যাডাররা, জনপ্রশাসন সচিবের কার্যালয়ে অবস্থান
প্রথম দিনে মাটির স্বাস্থ্য ও স্থায়িত্বশীল কৃষি; স্থায়িত্বশীল কৃষি ব্যবস্থায় জৈব সারের ভূমিকা এবং জলবায়ু সহনশীল কৃষি চর্চা বিষয়ক অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয় এবং দ্বিতীয় ও সমাপনী দিনে কৃষিতে যুব ও নারী কৃষকের ক্ষমতায়ন; জৈব সারে ভর্তুকি প্রদানে ফ্রেমওয়ার্ক এবং বাংলাদেশ জৈব কৃষি চর্চা বৃদ্ধির রোডম্যাপ বিষয়ক অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে পিকেএসএফ চেয়ারম্যান ফজলুল কাদের বলেন, তরুণদের মূলত একটা আস্থার জায়গা দাঁড় করাতে হবে। রাসায়নিক কৃষির মাঝখানে এক টুকরো জমিতে জৈব কৃষি শুরু করলে হবে না, এর জন্য বড় আকারে কিছু সফলতার চিত্র দাঁড় করতে হবে। তাহলে আমরা সরকার এবং সাধারণ জনগণের কাছে একটা গ্রহণযোগ্য নজির স্থাপন করতে পারব।
তার জন্য জৈব কৃষিতে ভর্তুকি প্রদান করতে হবে।
আরো পড়ুন
মেঘনায় মাঝরাতে ঘন কুয়াশা, দুই লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষ
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিআরসি) সাবেক নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. খালেকুজ্জামান আকন্দ চৌধুরী বলেন, রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারের ফলে পরিবেশ ও মানব স্বাস্থ্যের ওপর সরাসরি নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক ব্যবহারের ফলে মাটির উর্বরতা নষ্ট হতে হতে মাটি বন্ধ্যাও হয়ে যেতে পারে যার প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি এবং পরবর্তী প্রজন্মের উপর এটার প্রভাব মারাত্মক। টেকসই কৃষির জন্য যুব ও নারীদের ক্ষমতায়নে জৈব চাষে তাদের আগ্রহ বাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
দেশের পরিবেশ-প্রতিবেশ-এর বিষয় মাথায় রেখে যুগোপযোগী কৃষি যন্ত্রপাতির উদ্ভাবন ও বর্জ্য পুনর্ব্যবহার নিশ্চিত করার বিষয়টি গুরুত্বারোপ করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মঞ্জুরুল আলম।
তিনি বলেন, সমবায়কে গুরুত্ব দিতে হবে। কৃষক ফেডারেশনগুলোকে শক্তিশালী ও তাদেরকে একটা লাভজনক জায়গায় নিতে হবে। কৃষক সার উৎপাদন করছে কিন্তু লাইসেন্স পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এই লাইসেন্স প্রাপ্তির বিষয়টি সহজতর করতে হবে।
একশনএইড বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, সবার আগে মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা ভাবতে হবে এবং কৃষককে সম্মান করতে হবে। কৃষিকে শুধু ফসলে আটকে রাখলে হবে না, এটাকে সমন্বিতভাবে দেখতে হবে। ফসলের সাথে পোলট্রি, মাছ, গরু-ছাগল সবকিছুর সমন্বিতভাবে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন করতে হবে।
আরো পড়ুন
১৫০ জনের বেশি টিভি সাংবাদিক চাকরি হারিয়েছেন চলতি বছরে : জরিপ
রেজাউল করিম সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় সেমিনারে সুপারিশমালা তুলে ধরেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের সিনিয়র সায়েন্টিফিক অফিসার ড. নাজিমউদ্দিন। তিনি বলেন, কৃষির জন্য মাটি অত্যাবশ্যকীয় সম্পদ। সুতরাং মাটির স্বাস্থ্যের উপর গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি বলেন, এতদিন আমরা গাছকে খাবার দিতাম কিন্তু এখন সময় এসেছে মাটিকে খাবার দেওয়ার। মাটিকে খাবার দিলে গাছ খাবার পাবে।