অমর একুশে বইমেলার দ্বিতীয় দিনে ১৩টি বই এসেছে। আজ রবিবার মেলার সময় ছিল বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।
নতুন বইগুলোর মধ্যে দুটি গল্পের বই, একটি উপন্যাস, চারটি কবিতার বই, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক বই একটি, ইতিহাসভিত্তিক একটি, বিজ্ঞানবিষয়ক দুটি ও অন্যান্য দুটি।
আগামীকাল সোমবার বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘হায়দার আকবর খান রনো’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান।
এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন সোহরাব হাসান। আলোচনায় অংশ নেবেন আবদুল্লাহ আল ক্বাফী রতন এবং জলি তালুকদার।
আজ ‘হেলাল হাফিজের রাজনৈতিক পাঠ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বইমেলার মূলমঞ্চে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সুমন রহমানের সভাপতিত্বে এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. কুদরত-ই-হুদা।
আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মৃদুল মাহবুব।
প্রাবন্ধিক বলেন, ‘ঊনসত্তরের গর্ভ থেকে যেসব কবির জন্ম হয়েছিল, কবি হেলাল হাফিজ তাদের মধ্যে অন্যতম। তার কবিতার উচ্চারণ ছিল রাখঢাকহীন, স্পষ্ট, অনাবিল ও অভাবিত। কবিতা তাঁর কাছে কেবল ব্যক্তিগত দীর্ঘশ্বাসের বিষয় ছিল না।
তিনি মনে করতেন, সমষ্টির জন্যও কবিতার একটা দায় আছে। সত্তর থেকে চুয়াত্তরের মধ্যে যে রাজনৈতিক কবিতাগুলো তিনি লিখেছেন, সেগুলোর মূল সুর কখনো মুক্তিযুদ্ধ, কখনো স্বাধীনতাত্তোর রাজনৈতিক পরিস্থিতিজাত হতাশা, আশাবাদ, উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা। রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রের সাধারণ মানুষের অবস্থা ও অবস্থান, রাষ্ট্রের কাছে কবির প্রত্যাশা, দ্রোহ-এসবই তার কবিতায় কখনো প্রত্যক্ষভাবে কখনো পরোক্ষভাবে উঠে এসেছে।’
আলোচক আরো বলেন, “কবি হেলাল হাফিজের কবিতার কথা বললেই পাঠকের মানসপটে ভেসে ওঠে ‘এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’ পঙক্তিটি। বাংলা ভাষার যেসব কবি কবিতা, নিজস্ব জীবনদর্শন ও জীবনযাপন দিয়ে মিথ হয়ে উঠতে পেরেছেন, কবি হেলাল হাফিজ তাদের একজন।
কবিতার ভেতর প্রেম, বিদ্রোহ ও রাজনৈতিক চেতনা কবিকে মানুষের অনুভূতির কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারে। হেলাল হাফিজ তার কবিতার মাধ্যমে মানুষের অনুভূতির সেই সুরটি স্পর্শ করতে পেরেছিলেন।”
সভাপতির বক্তব্যে সুমন রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে ঊনসত্তর ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি সময়। কবি হেলাল হাফিজ তার কবিতায় সেই সময়টিকে ধারণ করেছেন। পাশাপাশি, স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতায় উদ্ভূত দ্রোহ, সংগ্রাম, আশাবাদ, বিষাদ সব কিছুই তিনি কবিতায় তুলে এনেছেন।’
‘লেখক বলছি’ মঞ্চে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কবি রাসেল রায়হান, কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন শফিক এবং শিশুসাহিত্যিক আশিক মুস্তাফা।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন কবি হাসান হাফিজ এবং জাকির আবু জাফর। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী অনন্যা লাবণী এবং শিপন হোসেন মানব।
সুমন মজুমদারের পরিচালনায় ছিল সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সঙ্গীতমঞ্জুরী শিল্পীগোষ্ঠী’র পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী রিজিয়া পারভীন, প্রিয়াংকা গোপ, ইসরাত জাহান, মিজান মাহমুদ রাজীব, মো. মাইদুল হক এবং নাফিজা ইবনাত কবির। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন শিমুল বড়ুয়া (তবলা), রাজিব আহমেদ (কি-বোর্ড), মো. মেজবাহ উদ্দিন (অক্টোপ্যাড), সাইদ হাসান ফারুকী (লিড গিটার), পল্লব দাস (বেইজ গিটার)।