ঢাবির কিছু শিক্ষক নিজেদের ‘ফ্যাসিবাদের দালাল’ প্রমাণে ব্যস্ত ছিলেন: নাহিদ ইসলাম

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ঢাবির কিছু শিক্ষক নিজেদের ‘ফ্যাসিবাদের দালাল’ প্রমাণে ব্যস্ত ছিলেন: নাহিদ ইসলাম
তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম

অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘বিগত ১৫ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একটি অংশ নিজেদের ফ্যাসিবাদের দালাল হিসেবে প্রমাণে ব্যস্ত ছিলেন। আবার কিছু শিক্ষক মেরুদণ্ড নিয়ে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।’

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে জুলাই আন্দোলনে ঢাবির আহত শিক্ষার্থীদের সম্মাননা দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। ‘দ্যা হিরোজ অব ঢাকা ইউনিভার্সিটি’ শীর্ষক এই সম্মাননা অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এসব কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা সামনের দিকে এগোবো ঠিকই কিন্তু আমরা পেছনের ঘটনা ভুলে যাব না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিগত ১৫ বছরে যে নির্যাতন হয়েছে সে নির্যাতনের ইতিহাস সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ হওয়া উচিত। আমরা যখন প্রথম, দ্বিতীয় বর্ষে ছিলাম তখন দেখেছি, যে কোনও আন্দোলন হলে সেখানে দমন করা হতো। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসবের বিচার নিশ্চিত করতে কোনো ধরনের ভূমিকা রাখেনি।

আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা আইনের ভিত্তিতে বিচার নিশ্চিত করতে চাচ্ছি। আইনের ভিত্তিতে আওয়ামী লীগকে দল হিসেবে কাঠগড়ায় দাঁড় করাব। আমরা বলেছি, আওয়ামী  লীগ ও ছাত্রলীগ এই মতাদর্শ ও এই নামে বাংলাদেশে আর রাজনীতি করতে পারবে না। এটিই আমাদের শহীদদের প্রতি অঙ্গীকার।

তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘স্বৈরশাসকের সময়ে বিগত ১৫ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে ও ক্যাম্পাসে নির্যাতন, নিপীড়ন ও ভয়ের সংস্কৃতি চালুর মধ্য দিয়ে আমাদের সকল কণ্ঠকে স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কারণ স্বৈরশাসকরা ভালো করেই জানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দাঁড়িয়ে গেলে সমগ্র জাতি দাঁড়িয়ে যাবে এবং পরিবর্তন আসন্ন হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে বিগত সময়ে শিক্ষার্থীদের শত শত নিপীড়নের ঘটনার অভিযোগপত্র পাওয়া যাবে। কোনো অভিযোগপত্রের বিচার বিগত সময়ে করা হয়নি।’

নাহিদ বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি দেয়াল, প্রতিটি জায়গা এক একটা ইতিহাস বহন করে।

বাংলাদেশের ইতিহাস বলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সব সময় পরিবর্তনের লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেয়। ফলে সব স্বৈরশাসকরাই সব সময় চেষ্টা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে দমন করে রাখতে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আমরা যে পরিবর্তনের স্বাদ এখন পাচ্ছি তা যদি অব্যাহত থাকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যদি আত্মমর্যাদা নিয়ে দাঁড়াতে পারে, মেধার স্বাক্ষর যদি অব্যাহত রাখতে পারে, যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও অ্যাকাডেমিক পরিবেশ অব্যাহত থাকে তাহলে এই জাতির পরিবর্তন হতে খুব বেশি সময় লাগবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জাতিকে যে পথ দেখিয়েছে সেই পথ ধরে আমরা এগিয়ে যাব।’ 

তিনি বলেন, ‘২০১৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আমাকে আক্রমণ করা হয়েছিল। এনআরসিসি নিয়ে আমরা একটি প্রোগ্রাম করেছিলাম সেই প্রোগ্রামে ‘মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ’ নামে একটি ফ্যাসিস্ট সংগঠন আমাকে আক্রমণ করেছিল। সেই হামলার বিচার চাইতে আমরা কয়েকজন উপাচার্যের কাছে গেলে গেট থেকে বলা হয় উপাচার্য স্যার নামাজ শেষ করে আমাদের সঙ্গে দেখা করবে। আমাদেরকে সেখানে অপেক্ষা করতে বলা হয়। কিছুক্ষণ পরেই দেখলাম দুইদিক থেকে সন্ত্রাসী বাহিনী লাঠি নিয়ে আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে। অর্থাৎ ভিসি স্যার আমাদের দাঁড়াতে বলে নিজে ফোন করে সন্ত্রাসীদের এনেছেন। ভিসির বাসার সামনেই আমাদের আক্রমণ করা হয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমান প্রশাসনকে আহ্বান করব, যারা এই নির্যাতনগুলোকে প্রশ্রয় দিয়ে গেছে আপনারা তার সঠিক তদন্ত ও বিচার করুন। যাতে ভবিষ্যতে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় এই ধরনের অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়ার সাহস না পায়।’

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা বলেন, ‘শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সারাদেশের সকল পাবলিক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমাদের সাথে কাঁধে কাঁধ লাগিয়ে লড়াই করেছে। ১৭ জুলাই আমরা ভেবেছিলাম আমরা হেরে গেছি, হয়তো আমাদের সামনে আর পথ নেই, আমরা নিরুপায় হয়ে গিয়েছিলাম, তখন আমরা শেষ আশা হিসেবে ১৮ তারিখের শাট ডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলাম। সে সময় প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নেমে এসে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে।’

১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হামলার ঘটনা নিয়ে উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘১৫ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। সেদিন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা আমাদের বোনদের লক্ষ্য করে আক্রমণ করে। সেদিনের ঘটনা ছিল অত্যন্ত মর্মান্তিক। সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের আর্তনাদ দেখেছি ঢাকা মেডিক্যালে। সেদিন বাংলাদেশের জনগণ আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমাদের বাঁচাতে এগিয়ে এসেছে। জনগণের প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে দায়বদ্ধতা এটি আমরা সব সময় মনে রাখব।’

তথ্য উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘আমাদের এখন প্রয়োজন এই স্বাধীনতা ও গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটকে রক্ষা করা। আমাদের লড়াই এখনো শেষ হয়নি। বিভিন্ন জায়গা থেকে ফ্যাসিবাদের দোসররা নানা আস্ফালন দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা বলতে চাই, জুলাই মাসকে ভুলে যাবেন না। জুলাইয়ের চেতনা শেষ হয়ে যায়নি। যদি বিন্দু পরিমাণ আস্ফালনের চেষ্টা করা হয় আমরা দ্বিগুণ শক্তিতে প্রতিহত করব আপনাদেরকে। জুলাইয়ের স্পিরিটকে ধারণ করেই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, ঢাবি সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসুদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক তরিকুল ইসলাম, আব্দুল কাদের, আবু বাকের মজুমদার, ঢাবি ছাত্রফ্রন্টের সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হক, রিফাত রশিদ এবং ঢাবি ছাত্র শিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ। সূত্র : বাসস

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

দলগুলো অন্তঃসংঘাত বন্ধ করলে সঠিক সময়ে সংসদ নির্বাচন : উপদেষ্টা মাহফুজ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
দলগুলো অন্তঃসংঘাত বন্ধ করলে সঠিক সময়ে সংসদ নির্বাচন : উপদেষ্টা মাহফুজ
সংগৃহীত ছবি

অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলো অন্তঃসংঘাত বন্ধ করলে সঠিক সময়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

শুক্রবার (২১ মার্চ) জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের স্মরণে রাজধানীতে নোফেল সোসাইটি আয়োজিত দোয়া ও ইফতার মাহফিলে তিনি এ মন্তব্য করেন।

উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, নির্বাচনের আগে হত্যাকারীদের বিচার ও সংস্কার দৃশ্যমান হবে। ’৭২ ও ’৭৫-এ দিল্লি থেকে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসানো হয় এবং সেখান থেকে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিকে অন্তঃকোন্দলে ব্যস্ত না থেকে সবাইকে এক থাকার আহ্বানও জানান তথ্য উপদেষ্টা।

মন্তব্য

বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে ইউনূস-মোদি বৈঠকের সম্ভাবনা ‘ক্ষীণ’

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে ইউনূস-মোদি বৈঠকের সম্ভাবনা ‘ক্ষীণ’
সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগামী মাসে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য বিমসটেকের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন। সেখানে দুই দেশের প্রধানের দেখা হওয়ার সুযোগ থাকলেও আনুষ্ঠানিক বৈঠকের সম্ভাবনা কম বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস। গতকাল বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বরাতে এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।

ষষ্ঠ বিমসটেক সম্মেলনে যোগ দিতে দুই নেতার ২ এপ্রিল থেকে ৪ এপ্রিল ব্যাংকক সফর করার কথা রয়েছে।

সম্মেলনের ফাঁকে দুই দেশের সরকারপ্রধানের বৈঠকের জন্য দিল্লিকে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করেছে ঢাকা। গতকাল ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এএনআইকে এ তথ্য জানিয়েছিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিষয়টির সঙ্গে সম্পৃক্ত তিনজন ব্যক্তি হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেছেন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বর্তমান অবস্থা দুই দেশের শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে বৈঠকের জন্য অনুকূল নয়।

তাদের একজন অবশ্য বলেন, ‘সাক্ষাৎ বা শুভেচ্ছা বিনিময়ের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

কারণ শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সকল নেতা বেশ কয়েকবার একে অপরের সঙ্গে থাকবেন। তবে এর চেয়ে বেশি কিছু আশা করা যায় না।’

আরেকজন বলেন, ‘আনুষ্ঠানিক বৈঠক করা কঠিন বলে মনে হচ্ছে। বিশেষ করে যখন ঢাকায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কেউ কেউ প্রায়ই ভারতের বিরুদ্ধে কথা বলছেন।

এই পরিস্থিতি বৈঠকের জন্য উপযুক্ত নয়।’

বৃহস্পতিবার এএনআইকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে দুই নেতার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক আয়োজনের চেষ্টা চলছে। এ নিয়ে আমরা ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ করেছি।’

এদিকে, আগামী ২৮ মার্চ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা রয়েছে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের।

এর আগে, ফেব্রুয়ারিতে ওমানের রাজধানী মাস্কাটে ৮ম ভারত মহাসাগর সম্মেলনের সাইডলাইনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে উপদেষ্টা তৌহিদের বৈঠক হয়।

মন্তব্য

ঈদযাত্রায় সড়কপথে শৃঙ্খলায় কঠোর অবস্থানে সরকার

বাসস
বাসস
শেয়ার
ঈদযাত্রায় সড়কপথে শৃঙ্খলায় কঠোর অবস্থানে সরকার
ফাইল ছবি

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সড়ক পথে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নিরাপদ, নির্বিঘ্ন করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার ও বিভিন্ন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। ঈদ যাত্রা উপলক্ষে নতুন সেতু ও সড়ক খুলে দিয়েছে সরকার। যানজট নিরসন, যাত্রী নিরাপত্তা, টিকিটের অতিরিক্ত দাম ও টিকিট কালোবাজারি বন্ধসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো।

এবারের ঈদ যাত্রায় অন্যান্য বারের মতো যেন বিড়ম্বনা তৈরি না হয়, সে জন্য সারাদেশে একযোগে কাজ করবে বাংলাদেশ হাইওয়ে পুলিশ।

৩ হাজার ৯৯১ কিলোমিটার মহাসড়কে ১০১৮টি চেকপোস্ট ও টহলে থাকবে হাইওয়ে পুলিশ ও বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সদস্যরা। ঈদ যাত্রাকে বছরের সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান হিসেবে দেখছে ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ।

ঈদ উপলক্ষে আগামী ২৫ মার্চ হতে ‘ঈদ স্পেশাল সার্ভিস’ চালু করছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন (বিআরটিসি)। ২০ মার্চ হতে বিআরটিসি’র ডিপো থেকে অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হয়েছে এবং আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত ঈদ সার্ভিসের বাস চলাচল করবে।

সঙ্গে বাস রিজার্ভের সুবিধাও রেখেছে বিআরটিসি।

সড়কপথে ঈদযাত্রাকে নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ করতে সারাদেশে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের হাইওয়ে ও ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। সারাদেশে তাদের কাজকে আরো গতিশীল করতে সড়ক-মহাসড়কে কাজ করবে জেলা পুলিশ, যা অন্যান্যবারের চেয়ে ব্যতিক্রম। আর ঈদে যাত্রী পরিবহনের সুবিধার্থে ঢাকার মূল সড়কগুলোয় ট্রাক চলাচল বন্ধ রাখবে ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ।

সারাদেশের ৩ হাজার ৯৯১ কিলোমিটার মহাসড়কে নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে হাইওয়ে পুলিশ ৩৭৭টি চেকপোস্ট এবং জেলা পুলিশ ১১৪টি চেকপোস্ট ও ৫২৭টি টহল দল পরিচালনা করবে।

যানজট নিরসনে সারাদেশে ৬৪টি ‘ব্লাক স্পট’ চিহ্নিত করেছে হাইওয়ে পুলিশ। এসব এলাকায় পুলিশের অতিরিক্ত সদস্য কাজ করবে। এছাড়া যেসব এলাকায় সংস্কার কাজ ও বাজারের জন্য যানজট লেগে যায়, সেসব এলাকায় স্থানীয় প্রশাসনকে নিয়ে কাজ করা কথা জানিয়েছে হাইওয়ে পুলিশ। এর পাশাপাশি সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও যানচলাচল নির্বিঘ্ন করতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

হাইওয়ে পুলিশ জানায়, সারাদেশের চেকপোস্টগুলো লাইভ ভিডিও’র মাধ্যমে কেন্দ্র থেকে পর্যবেক্ষণ করা হবে। পুলিশের ৮টি রেঞ্জের ডিআইজিগণ এসব চেকপোস্ট তদারকি করবেন। ইতোমধ্যে এলেঙ্গা, চট্টগ্রাম হাইওয়ে, মহিপাল ও নোয়াখালীসহ সড়কে ডাকাতির ঘটনায় অভিযুক্তদের ধরতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। 

ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) খোন্দকার নাজমুল হাসান বাসস’কে বলেছেন, ঢাকা থেকে যেন বাস সহজে বের হতে পারে সেজন্য আমরা নানা উদ্যোগ নিয়েছি। ঢাকায় প্রবেশ ও বহির্গমনে যেন কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি না হয় সেজন্য আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। যাত্রী পরিবহনের সুবিধার্থে ঈদের তিন দিন আগে থেকে সড়কে ট্রাক-লরি চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে। প্রয়োজনে এক টনের পিকআপ ট্রাকগুলোর চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হবে। 

বাংলাদেশ হাইওয়ে পুলিশের প্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিচালক মো. দেলোয়ার মিঞা বাসস’কে বলেছেন, এবারের ঈদে আমরা যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করে যাবো। একইসাথে যানজট নিরসনে আমরা কাজ করছি। যাত্রীদের মধ্যে নিরাপত্তার কোনো শঙ্কা যেন না থাকে সেজন্য আমরা সারাদেশের মহাসড়কে টহল, চেকপোস্টসহ নিরাপত্তা জোরদার করছি। এবার সুন্দর ঈদ যাত্রা নিশ্চিত করার বিষয়ে আমরা আশাবাদী।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

লিবিয়া প্রবাসীদের জন্য দূতাবাসের জরুরি বার্তা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
লিবিয়া প্রবাসীদের জন্য দূতাবাসের জরুরি বার্তা
সংগৃহীত ছবি

লিবিয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে অবৈধ অভিবাসনের সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয় জনগণের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ ও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে অভিবাসন-বিরোধী মনোভাব প্রকাশ পাচ্ছে, পাশাপাশি লিবিয়ার বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় লিবিয়া সরকার সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার, শহরের প্রবেশপথ ও প্রধান সড়কগুলোতে কঠোর তদারকি, অবৈধ অভিবাসীদের প্রত্যাবাসন এবং মানবপাচার চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান তীব্র করার নির্দেশ জারি করেছে। 

এরই ধারাবাহিকতায় লিবিয়ার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু করেছে এবং বিভিন্ন শহরে তাদের আটকের খবর পাওয়া যাচ্ছে।

বিশেষ করে রমজান মাসের পর থেকে অবৈধ অভিবাসীদের ব্যাপক আকারে আটক এবং প্রত্যাবাসন কার্যক্রম শুরু হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

শুক্রবার (১২ মার্চ) লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়।

পোস্টে বলা হয়, এমন পরিস্থিতিতে লিবিয়ায় বসবাসরত সকল প্রবাসী বাংলাদেশিকে প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। প্রবাসীদের চলাফেরা সীমিত রাখা, নিজের পাসপোর্ট ও নিয়োগকর্তার আইডি কার্ড সবসময় সঙ্গে রাখা এবং নিয়োগকর্তা ও স্থানীয় কয়েকজন লিবিয়ান শুভাকাঙ্ক্ষীর সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ বজায় রাখা জরুরি।

এছাড়া অহেতুক বাহিরে বা বাজারে দলবেঁধে ঘোরাঘুরি ও জনসমাগম এড়িয়ে চলা, প্রতিবেশী ও স্থানীয় জনগণের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ বজায় রাখা এবং আবাসস্থল যথাসম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা উচিত। একইসঙ্গে প্রবাসীদের লিবিয়ার আইন, রীতিনীতি, সংস্কৃতি ও ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন করা প্রয়োজন। জরুরি প্রয়োজনে প্রবাসীদের বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার আহ্বান জানিয়েছে দূতাবাস।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ও লিবিয়া দুটি ভ্রাতৃত্বপূর্ণ মুসলিম দেশ এবং দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরে সুদৃঢ়।

লিবিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিরা সার্ভিস সেক্টর, স্বাস্থ্য, নির্মাণ ও অবকাঠামো খাতে দক্ষতা ও নিষ্ঠার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছেন। ফলে বাংলাদেশিরা লিবিয়ার সাধারণ জনগণ, নিয়োগকর্তা এবং সরকারের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ দূতাবাস লিবিয়া সরকারের বিশেষত পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ইতোমধ্যে বৈঠক করে প্রবাসীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

এছাড়াও দূতাবাস লিবিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে সচেষ্ট রয়েছে।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ