রাখাল রাহাকে এনসিটিবির কারিকুলাম কমিটি থেকে অপসরণের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
রাখাল রাহাকে এনসিটিবির কারিকুলাম কমিটি থেকে অপসরণের দাবি

রাখাল রাহা ওরফে সাজ্জাদুর রহমানকে এনসিটিবির কারিকুলাম কমিটি থেকে দ্রুত অপসরণের দাবি জানিয়েছে সম্মিলিত শিক্ষা আন্দোলন।

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান সম্মিলিত শিক্ষা আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবীর। এ সময় তিনি ৮ দফা দাবি তুলে ধরেন। সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত শিক্ষা আন্দোলনের সভাপতি কাজী সাইফুল হক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল আমিন, জেসমিন, ডা. রিপা, তানিয়া আক্তার, কামাল হোসেন।

লিখিত বক্তব্যে জাহাঙ্গীর কবীর বলেন, সম্প্রতি এনসিটিবির চেয়ারম্যান বিতর্কিত রাখাল রাহাকে নিয়ে দায়সারা বক্তব্য দেওয়ায় তার প্রতিবাদে আজকের এই সংবাদ সম্মেলন। গত স্বৈরশাসকের আমলে চালু করা গণবিরোধী নতুন শিক্ষাক্রম বাতিলে আমাদের অংশগ্রহণ ছিল আপোষহীন লড়াইয়ের। ২০২৩ সালে শুরু করে দীর্ঘ সংগ্রামের এই পথ পাড়ি দিতে আমাদেরকে অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষার সম্মুখীন হতে হয়েছে। ন্যায়ের পক্ষে থেকেও আমরা তৎকালীন সরকারের রোষানলে পড়েছিলাম।

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় আমাদের অনেকের জেল খেটেছি। আন্দোলনের শুরুটা দুএকজন করলেও পরবর্তীতে গণমানুষের আন্দোলনে রূপ নেয়। ধীরে ধীরে আন্দোলন দানা বাঁধতে থাকে, দেশের শিক্ষিত জনসাধারণ সোচ্চার হয় সরকারের গণবিরোধী সিদ্ধান্তে। আমাদের আন্দোলনটি কোনো একক ব্যক্তির ফসল নয়।
আমরা আন্দোলনে সম্মিলিতভাবে লড়েছি। তারই ধারাবাহিকতায় আন্দোলনের নামকরণও হয়েছিল সম্মিলিত শিক্ষা আন্দোলন। 

তিনি বলেন, ২০২৩ সালের ১০ নভেম্বর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সংবাদ সম্মেলনে রাখাল রাহাকে শুধুমাত্র লিখিত বক্তব্য দিতে দেওয়া হয়। লিখিত বক্তব্য পাঠ করতে দেওয়া হলে পরবর্তীতে তিনি এই আন্দোলনে তাকে নিয়ে কমিটি গঠন করতে চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে গুম হওয়া, গ্রেপ্তার হওয়ার ভয় দেখিয়ে তার অফিসে ডেকে আগের কমিটির অনুমোদন ছাড়াই নতুন কমিটি ঘোষণা করতে বলেন।

আগের কমিটির ১১ জনের মধ্যে মাত্র দুজনের উপস্থিতিতে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হলে মেজোরিটির তোপের মুখে কমিটি স্থগিত করা হয়।

সম্মিলিত শিক্ষা আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ২০২৩ সালের ২৩ নভেম্বর আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জাহাঙ্গীর কবীর ও কাজী সাইফুল হক পনিরকে এনসিটিবির দায়ের করা মতিঝিল থানার মামলায় গ্রেপ্তার করে ডিবি। তাদের সাথে আরো গ্রেপ্তার হয় আবুল হাসনাত ও গোলাম রাব্বি। আন্দোলনে সামনের সারিতে নেতৃত্ব দেয়ায় মডারেটর তাপসী তাজ খানকে গ্রেপ্তার করার অভিযান চালায় ২৩ নভেম্বর। ২৪ নভেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সম্মিলিত শিক্ষা আন্দোলনের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ২৯ নভেম্বর আন্দোলনের আরেক নেতা আল আমিন হোসেনকে গ্রেপ্তার করলে আন্দোলন নেতৃত্ব শূন্য হয়ে পড়ে এবং সচেতন অভিভাবক সমাজের ব্যানারে এডভোকেট মুসলিম বিন হাইয়ের নেতৃত্বে আন্দোলন চলতে থাকে। এই সময় রাখাল রাখার কোনো ভূমিকা আমরা দেখতে পাইনি।

তিনি বলেন, পরবর্তী সম্মিলিত শিক্ষা আন্দোলনের নেতারা ফেনীর বন্যা কবলিত এলাকায় ত্রাণ দিতে গেলে রাখাল রাহা সম্মিলিত শিক্ষা আন্দোলনের অথরিটিকে অবগত না করেই এই সংগঠনের নামে শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদ উদ্দিনের কাছে স্মারকলিপি দেন এবং এই আন্দোলন তার নেতৃত্বে হয়েছিল বলে উপদেষ্টাকে জানায়। পরবর্তীতে এই সংগঠনের নাম ব্যবহার করে তিনি এনসিটিবির পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জন কমিটির সদস্য সচিব নিযুক্ত হন এবং এনসিটিবিতে একক আধিপত্য কায়েমের মাধ্যমে পাঠ্যপুস্তকে আদিবাসী গ্রাফিতি, জাতীয় সঙ্গীত ও জাতীয় পতাকা বইয়ের পেছনে ছাপা, টেন্ডার কেলেঙ্কারি ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানাসহ একের পর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করতে থাকেন। 

রাখাল রাহা আমাদের সঙ্গে শেষ দিকে যুক্ত হলেও তিনি উল্লেখযোগ্য কোনো ভূমিকা পালন করেননি। উপরন্তু তিনি ঐতিহাসিক এই প্ল্যাটফর্মকে ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার করেছেন যা শুধু আমাদের সাথেই না, পুরো জাতির সাথে প্রতারণা করা হয়েছে বলে জানান জাহাঙ্গীর কবীর।

তিনি বলেন, সম্প্রতি এনসিটিবি চেয়ারম্যান রিয়াজুল হাসান এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন, রাখাল রাহার নেতৃত্বে অভিভাবকরা আন্দোলন করেছেন এবং সে কারণেই শিক্ষাক্রম পরিবর্তন হয়েছে। তার এই বক্তব্য দুরভিসন্ধিমূলক। এই বক্তব্য প্রত্যাহারের আহবান জানাচ্ছি এবং আমরা মনে করছি, বিতর্কিত রাখাল রাহাকে জাতির নায়ক বানিয়ে এনসিটিবি তাদের ব্যর্থতা, দুর্নীতি ও অনিয়ম আড়াল করতেই এই অপকৌশলের আশ্রয় নিয়েছেন। আমরা এনসিটিবির চেয়ারম্যানের এই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করছি এবং এই বক্তব্য প্রত্যাহার করে গণমাধ্যমে ক্ষমা চাইতে হবে।

এ সময় তিনি ৮ দফা দাবি তুলে ধরেন তিনি। তাদের দাবিগুলো হচ্ছে— রাখাল রাহাকে এনসিটিবির সকল কমিটি থেকে অপসারণ করে গণমাধ্যমে স্পষ্ট বিবৃতি দিতে হবে ও তাকে হিরো বানিয়ে ভবিষ্যতে কোনভাবে পুনর্বহাল করা যাবে না এবং তারমতো বিতর্কিত কাউকেই এনসিটিবির পরিমার্জন বা সংস্কার কমিটিতে যুক্ত করা যাবে না। ২০২৩ সালে দায়ের করা মামলা থেকে আমরা অব্যাহতি পেয়েছি। কিন্তু জব্দ করা মালামাল ও ফেসবুক আইডি ফেসবুক আইডি ফেরত পাইনি। এগুলো দ্রুত ফেরত দিতে হবে। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অবিলম্বে মামলায় ক্ষতিগ্রস্তদেরকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। পরিমার্জন কমিটি থেকে কত টাকা পারিশ্রমিক নিয়েছেন তার দালিলিক প্রমাণ দিতে হবে। পাঠ্যপুস্তক মূদ্রণে ওভার প্রাইসিং রেটে প্রেসগুলোকে কাজ দিয়েছে এবং এনসিটিবির সিন্ডিকেট কোটি টাকার দুর্নীতি করেছে বলে অভিযোগ এসেছে তার তদন্ত করতে হবে। পত্রিকায় এসেছে, ৪০টি মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান সিঙ্গেল বিডার হওয়ার পরও তাদেরকে কোনো কম্পিটিশন না করিয়ে এনসিটিবি কর্তৃপক্ষ তাদেরকে কাজ দিয়ে সরকারের বিপুল অর্থের ক্ষতি করেছে তার সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। অবিলম্বে শিক্ষা কমিশন গঠন করে যুগোপযোগী শিক্ষানীতি এবং বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও দেশীয় মূল্যবোধের আলোকে কারিকুলাম প্রণয়ন করতে হবে এবং ইউনেস্কোর পরামর্শ অনুসারে দেশের মোট জিডিপির ৬ শতাংশ শিক্ষাখাতে ব্যয় করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলন শেষে জাহাঙ্গীর কবীর বলেন, আগামী ১০ দিনের মধ্যে যেসব স্কুলের শিক্ষার্থীরা এখনো বই পায়নি সেই বইগুলো দিতে হবে। অন্যথায় এনসিটিবি ঘেরাও করা হবে।
 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

আলোচিত-১০ (২১ মার্চ)

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার

দলগুলো অন্তঃসংঘাত বন্ধ করলে সঠিক সময়ে সংসদ নির্বাচন : উপদেষ্টা মাহফুজ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
দলগুলো অন্তঃসংঘাত বন্ধ করলে সঠিক সময়ে সংসদ নির্বাচন : উপদেষ্টা মাহফুজ
সংগৃহীত ছবি

অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলো অন্তঃসংঘাত বন্ধ করলে সঠিক সময়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

শুক্রবার (২১ মার্চ) জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের স্মরণে রাজধানীতে নোফেল সোসাইটি আয়োজিত দোয়া ও ইফতার মাহফিলে তিনি এ মন্তব্য করেন।

উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, নির্বাচনের আগে হত্যাকারীদের বিচার ও সংস্কার দৃশ্যমান হবে। ’৭২ ও ’৭৫-এ দিল্লি থেকে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসানো হয় এবং সেখান থেকে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিকে অন্তঃকোন্দলে ব্যস্ত না থেকে সবাইকে এক থাকার আহ্বানও জানান তথ্য উপদেষ্টা।

মন্তব্য

বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে ইউনূস-মোদি বৈঠকের সম্ভাবনা ‘ক্ষীণ’

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে ইউনূস-মোদি বৈঠকের সম্ভাবনা ‘ক্ষীণ’
সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগামী মাসে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য বিমসটেকের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন। সেখানে দুই দেশের প্রধানের দেখা হওয়ার সুযোগ থাকলেও আনুষ্ঠানিক বৈঠকের সম্ভাবনা কম বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস। গতকাল বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বরাতে এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।

ষষ্ঠ বিমসটেক সম্মেলনে যোগ দিতে দুই নেতার ২ এপ্রিল থেকে ৪ এপ্রিল ব্যাংকক সফর করার কথা রয়েছে।

সম্মেলনের ফাঁকে দুই দেশের সরকারপ্রধানের বৈঠকের জন্য দিল্লিকে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করেছে ঢাকা। গতকাল ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এএনআইকে এ তথ্য জানিয়েছিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিষয়টির সঙ্গে সম্পৃক্ত তিনজন ব্যক্তি হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেছেন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বর্তমান অবস্থা দুই দেশের শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে বৈঠকের জন্য অনুকূল নয়।

তাদের একজন অবশ্য বলেন, ‘সাক্ষাৎ বা শুভেচ্ছা বিনিময়ের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

কারণ শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সকল নেতা বেশ কয়েকবার একে অপরের সঙ্গে থাকবেন। তবে এর চেয়ে বেশি কিছু আশা করা যায় না।’

আরেকজন বলেন, ‘আনুষ্ঠানিক বৈঠক করা কঠিন বলে মনে হচ্ছে। বিশেষ করে যখন ঢাকায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কেউ কেউ প্রায়ই ভারতের বিরুদ্ধে কথা বলছেন।

এই পরিস্থিতি বৈঠকের জন্য উপযুক্ত নয়।’

বৃহস্পতিবার এএনআইকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে দুই নেতার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক আয়োজনের চেষ্টা চলছে। এ নিয়ে আমরা ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ করেছি।’

এদিকে, আগামী ২৮ মার্চ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের কথা রয়েছে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের।

এর আগে, ফেব্রুয়ারিতে ওমানের রাজধানী মাস্কাটে ৮ম ভারত মহাসাগর সম্মেলনের সাইডলাইনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে উপদেষ্টা তৌহিদের বৈঠক হয়।

মন্তব্য

ঈদযাত্রায় সড়কপথে শৃঙ্খলায় কঠোর অবস্থানে সরকার

বাসস
বাসস
শেয়ার
ঈদযাত্রায় সড়কপথে শৃঙ্খলায় কঠোর অবস্থানে সরকার
ফাইল ছবি

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সড়ক পথে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নিরাপদ, নির্বিঘ্ন করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার ও বিভিন্ন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। ঈদ যাত্রা উপলক্ষে নতুন সেতু ও সড়ক খুলে দিয়েছে সরকার। যানজট নিরসন, যাত্রী নিরাপত্তা, টিকিটের অতিরিক্ত দাম ও টিকিট কালোবাজারি বন্ধসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো।

এবারের ঈদ যাত্রায় অন্যান্য বারের মতো যেন বিড়ম্বনা তৈরি না হয়, সে জন্য সারাদেশে একযোগে কাজ করবে বাংলাদেশ হাইওয়ে পুলিশ।

৩ হাজার ৯৯১ কিলোমিটার মহাসড়কে ১০১৮টি চেকপোস্ট ও টহলে থাকবে হাইওয়ে পুলিশ ও বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সদস্যরা। ঈদ যাত্রাকে বছরের সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান হিসেবে দেখছে ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ।

ঈদ উপলক্ষে আগামী ২৫ মার্চ হতে ‘ঈদ স্পেশাল সার্ভিস’ চালু করছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন (বিআরটিসি)। ২০ মার্চ হতে বিআরটিসি’র ডিপো থেকে অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হয়েছে এবং আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত ঈদ সার্ভিসের বাস চলাচল করবে।

সঙ্গে বাস রিজার্ভের সুবিধাও রেখেছে বিআরটিসি।

সড়কপথে ঈদযাত্রাকে নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ করতে সারাদেশে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের হাইওয়ে ও ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। সারাদেশে তাদের কাজকে আরো গতিশীল করতে সড়ক-মহাসড়কে কাজ করবে জেলা পুলিশ, যা অন্যান্যবারের চেয়ে ব্যতিক্রম। আর ঈদে যাত্রী পরিবহনের সুবিধার্থে ঢাকার মূল সড়কগুলোয় ট্রাক চলাচল বন্ধ রাখবে ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ।

সারাদেশের ৩ হাজার ৯৯১ কিলোমিটার মহাসড়কে নিরাপত্তা জোরদার করার লক্ষ্যে হাইওয়ে পুলিশ ৩৭৭টি চেকপোস্ট এবং জেলা পুলিশ ১১৪টি চেকপোস্ট ও ৫২৭টি টহল দল পরিচালনা করবে।

যানজট নিরসনে সারাদেশে ৬৪টি ‘ব্লাক স্পট’ চিহ্নিত করেছে হাইওয়ে পুলিশ। এসব এলাকায় পুলিশের অতিরিক্ত সদস্য কাজ করবে। এছাড়া যেসব এলাকায় সংস্কার কাজ ও বাজারের জন্য যানজট লেগে যায়, সেসব এলাকায় স্থানীয় প্রশাসনকে নিয়ে কাজ করা কথা জানিয়েছে হাইওয়ে পুলিশ। এর পাশাপাশি সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও যানচলাচল নির্বিঘ্ন করতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

হাইওয়ে পুলিশ জানায়, সারাদেশের চেকপোস্টগুলো লাইভ ভিডিও’র মাধ্যমে কেন্দ্র থেকে পর্যবেক্ষণ করা হবে। পুলিশের ৮টি রেঞ্জের ডিআইজিগণ এসব চেকপোস্ট তদারকি করবেন। ইতোমধ্যে এলেঙ্গা, চট্টগ্রাম হাইওয়ে, মহিপাল ও নোয়াখালীসহ সড়কে ডাকাতির ঘটনায় অভিযুক্তদের ধরতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। 

ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) খোন্দকার নাজমুল হাসান বাসস’কে বলেছেন, ঢাকা থেকে যেন বাস সহজে বের হতে পারে সেজন্য আমরা নানা উদ্যোগ নিয়েছি। ঢাকায় প্রবেশ ও বহির্গমনে যেন কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি না হয় সেজন্য আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। যাত্রী পরিবহনের সুবিধার্থে ঈদের তিন দিন আগে থেকে সড়কে ট্রাক-লরি চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে। প্রয়োজনে এক টনের পিকআপ ট্রাকগুলোর চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হবে। 

বাংলাদেশ হাইওয়ে পুলিশের প্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিচালক মো. দেলোয়ার মিঞা বাসস’কে বলেছেন, এবারের ঈদে আমরা যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করে যাবো। একইসাথে যানজট নিরসনে আমরা কাজ করছি। যাত্রীদের মধ্যে নিরাপত্তার কোনো শঙ্কা যেন না থাকে সেজন্য আমরা সারাদেশের মহাসড়কে টহল, চেকপোস্টসহ নিরাপত্তা জোরদার করছি। এবার সুন্দর ঈদ যাত্রা নিশ্চিত করার বিষয়ে আমরা আশাবাদী।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ