নিউজ অ্যারেনা ইন্ডিয়া নামের একটি অনলাইন পোর্টালে ‘কাশ্মীর হামলার পর বাংলাদেশি আইন উপদেষ্টা লস্কর নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণভাবে মিথ্যা, মানহানিকর এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাতে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
ওই বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ওই প্রতিবেদনে (বৃহস্পতিবার প্রকাশিত) বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে লস্কর-ই-তৈয়বার শীর্ষ নেতার সঙ্গে সাক্ষাতের অভিযোগ আনা হয়েছে—যা আদৌ সত্য নয় এবং এর কোনো প্রমাণ নেই।
ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, হেফাজতে ইসলাম একটি বৈধ, নিবন্ধিত ওলামা সংগঠন, যারা বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মীয় ও সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।
প্রতিবেদনটিতে যে ব্যক্তিদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তারা হেফাজতে ইসলামের নেতা, যাদের কোনো আন্তর্জাতিক বা স্থানীয় সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নেই।
‘নিউজ অ্যারেনা ইন্ডিয়া যে তারিখ উল্লেখ করেছে, তার কমপক্ষে তিন দিন আগেই ড. নজরুল তাদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন। বৈঠকটি ছিল সম্পূর্ণরূপে আইনি প্রক্রিয়া ও ন্যায়বিচার বিষয়ক আলোচনাভিত্তিক। যেখানে তারা তাদের বিরুদ্ধে পূর্ববর্তী সরকারের আমলে দায়ের করা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলার তালিকা উপস্থাপন করেন।
ছবি তোলার অনুরোধটি ছিল বৈঠকের আনুষ্ঠানিকতা হিসেবে প্রথাগত।’
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো হেফাজতের বিরুদ্ধে আগের সরকারের নিপীড়নের বিষয়টি নথিভুক্ত করেছে এবং তা নিন্দা করেছে জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, এতে স্পষ্ট যে এসব মামলা ছিল রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং সেখানে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা বর্তমান সরকারের অঙ্গীকার।
এতে বলা হয়, প্রতিবেদনটিতে দাবি করা হয়েছে যে ড. নজরুল ফেসবুকে একটি উসকানিমূলক পোস্ট করেছেন। প্রকৃত সত্য হচ্ছে, ওই পোস্টটি একজন ভারতীয় নাগরিকের ছিল, যিনি কাশ্মীর হামলার পর ভারতের নিরাপত্তাব্যবস্থার ত্রুটি নিয়ে সমালোচনা করেন।
ড. নজরুল পোস্টটি নিন্দাসূচক ক্যাপশনসহ শেয়ার করলেও, অপব্যাখ্যার আশঙ্কায় কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তা নিজ উদ্যোগে মুছে ফেলেন।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আইন উপদেষ্টা পেহেলগ্রামের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানান, শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা ও হামলার দ্রুত বিচার কামনা করেন। নিউজ অ্যারেনা ইন্ডিয়ার এই অসতর্ক ও অপ্রমাণিত প্রতিবেদন সাংবাদিকতার নীতিমালা ও সত্যনিষ্ঠতা থেকে বিপজ্জনক বিচ্যুতি। আমরা সকল মিডিয়াকে দায়িত্বশীল প্রতিবেদন ও প্রকাশনার আগে সত্যতা যাচাইয়ের আহ্বান জানাই।’