গরম শুরু হতে না হতেই শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। পানি খেতে একটু ভুল হলেই হতে পারে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তিরা ডায়রিয়ার আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এমন পরিস্থিতিতে এই গরমে সাবধানতা অবলম্বন করা খুবই জরুরি।
ডায়েরিয়ার সমস্যা খুব অল্প সময়ের জন্য। যা কয়েকদিনের মধ্যে নিজেই সেরে যায়। কিন্তু ডায়েরিয়ার সমস্যা যদি কয়েক সপ্তাহ ধরে থাকে, তাহলে তা অন্ত্রের রোগ বা অন্ত্রে সংক্রমণ বা প্রদাহ হতে পারে।
ডায়রিয়ার লক্ষণ
বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণত সংক্রমণের কারণে ডায়রিয়া হয় এবং এর কারণে পুরো শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে।
বমি ও ডায়রিয়ার মতো গুরুতর সমস্যাগুলো ডায়রিয়ায় দেখা দিতে শুরু করে। ঘন ঘন মলত্যাগ, আলগা মল, বমি বমি ভাব, পেট ব্যথা, ডিহাইড্রেশন সমস্যা, পেট ফোলা ও ডিহাইড্রেশন, জ্বরের সমস্যা।
আরো পড়ুন
চুইংগাম চিবানোতে স্বাস্থ্যের যে ক্ষতি
ডায়েরিয়া হলে কী খাবেন
ডায়েরিয়ার সমস্যা দ্রুত সারাতে কলা, ভাত, আপেল ও রুটি খেতে হবে। এই জিনিসগুলো বেশ হালকা।
এগুলো আপনার পরিপাকতন্ত্রে খারাপ প্রভাব ফেলবে না। এগুলো মলের মধ্যে ঘনত্ব বাড়াতে সাহায্য করে।
ডায়েরিয়ার ক্ষেত্রে প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়া উচিত যাতে, আপনার শরীর হাইড্রেটেড থাকে। পানি ছাড়াও কম পাতার চা, নারকেল পানিও খেতে পারেন। এ ছাড়া ডিম বা রান্না করা শাক-সবজি খেতে পারেন।
এতে তাড়াতাড়ি একটু ভালো অনুভব করতে শুরু করবেন।
ডায়েরিয়া হলে যা খাবেন না
ডায়েরিয়া হলে এমন অনেক জিনিস রয়েছে যা খাওয়া উচিত নয়। এই জিনিসগুলো আপনার পরিপাকতন্ত্রের ওপর খুব খারাপ প্রভাব ফেলে। এ ছাড়া এই জিনিসগুলো আপনার সমস্যা কমানোর পরিবর্তে বাড়িয়ে তুলতে পারে।
আরো পড়ুন
চিনি খাওয়া এতটা খারাপ কেন
এই অবস্থায় দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার, ফল, চর্বিযুক্ত ও মসৃণ জিনিস, মশলাদার খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবার, শূকরের মাংস, কাঁচা শাক-সবজি, পেঁয়াজ, ভুট্টা, সাইট্রাস ফল, অ্যালকোহল, কফি, সোডা, কৃত্রিম মিষ্টি জাতীয় খাবার একেবারেই খাবেন না।
ডায়রিয়া হলে সঙ্গে সঙ্গে যা করবেন
ডায়রিয়া হলে টানা বিশ্রাম নিন এবং সাধারণ খাবার খান। এই অবস্থায় আপনি সহজে হজমযোগ্য জিনিস যেমন কলা, ভাত ও টোস্ট খেতে পারেন। এ ছাড়া এই সময়কালে দুগ্ধজাত পণ্য, ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল খাওয়া এড়িয়ে চলুন। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ওভার-দ্য-কাউন্টার ওষুধ এবং কিছু ওষুধ এর লক্ষণগুলো কমাতে সাহায্য করতে পারে। কিন্তু উপসর্গগুলো যদি অব্যাহত থাকে বা অবস্থার অবনতি হতে দেখা যায়, তাহলে তাড়াতাড়ি চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
আরো পড়ুন
ওজন-ডায়াবেটিস, দুটিই নিয়ন্ত্রণে রাখবে এই ফল
নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন
আপনি যদি ডায়রিয়া বা গ্রীষ্মের অন্যান্য রোগ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে চান, তাহলে সারাদিন পর্যাপ্ত পানি পান করুন এবং হারিয়ে যাওয়া ইলেক্ট্রোলাইট পূরণের জন্য পানি, বাটারমিল্ক বা টাটকা নারকেলের পানি পান করুন।
এ ছাড়া এই প্রচণ্ড গরমে আপনি যাই খান না কেন সে ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। ফল ও শাক-সবজি ভালোভাবে ধুয়ে নিন এবং রাস্তার খাবার বা কম রান্না করা বা ভুলভাবে তৈরি করা খাবার এড়িয়ে চলুন।
ডায়ারিয়া এড়াতে খাওয়ার আগে এবং টয়লেট ব্যবহারের পরে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিন। এ ছাড়া শুধু বোতলজাত বা ফুটানো পানি পান করুন। ভ্রমণের সময় বা দাঁত মাজার সময় পরিষ্কার পানি ব্যবহার করুন।
আরো পড়ুন
মাথা ব্যথা মানেই কি মাইগ্রেনের সমস্যা?
কখন ডাক্তার দেখাবেন
সাধারণত বিশ্রাম, স্বাস্থ্যকর খাবার এবং ওষুধের সাহায্যে ডায়েরিয়া নিরাময় করা যায়। কিন্তু আপনি যদি ২ দিনের বেশি সময় ধরে এই সমস্যার সম্মুখীন হন এবং খুব ডিহাইড্রেটেড বোধ করেন তবে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
ডিহাইড্রেশন ছাড়াও যদি আপনার শরীরে অন্য কোনো উপসর্গ দেখা যায়, তাহলে এমন পরিস্থিতিতে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।
আরো পড়ুন
পুরনো ও গুরুত্বপূর্ণ মেইল সহজে খুঁজে বের করবে জিমেইল
সূত্র : আজতক বাংলা