<p>পৃথিবীতে ব্যবহৃত সাধারণ ম্যাগনিফাইং লেন্স, এর ভেতর দিয়ে যাওয়া আলো-কে ফোকাস করে কাজ করে। আলো এমনিতে সরলপথে চলে। কিন্তু একরকম ঘনত্বের মাধ্যম থেকে আরেক রকম ঘনত্বের মাধ্যমে যাওয়ার সময় আলোর গতিপথ বেঁকে যায়। একে প্রতিসরণ বেলে। বায়ুমাধ্যম থেকে যদি কাচের মধ্যে যায় তাহলে এ ধরনের প্রতিসরণ দেখা দেয়। </p> <p>আগেই বলেছি বায়ুশূন্য মাধ্যমে কিংবা মহাকাশে আলো সরলপথে সোজা চলে। প্রাথমিক সরলতা থেকে কখনো ধর্মচ্যুত হয় না। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, বিশাল বারী বস্তুর পাশ দিয়ে গেলেও কি আলো তার এই গুণ বজায় রাখতে পারবে? <br /> অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতার তত্ত্বানুসারে, স্থান নিজেকেই কিছুটা বাঁকিয়ে নেয়। বস্তুর ভরের সাথে সেঁটে থাকা শক্তিশালী মহাকর্ষের প্রভাব এটি। যদি স্থানের বাঁক ঘটে তাহলে তার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত আলোও বেঁকেছে বলে মনে হবে।</p> <p>সৌরজগতের কেন্দ্র সূর্যের ১,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০ গুণ ওজনের গ্যালাক্সিগুচ্ছ শক্তিশালী মহাকর্ষীয় লেন্স হিসেবে কাজ করে। আবহ গ্যালাক্সি থেকে আসা আলো বিবর্ধিত করে। আবার মাঝে মাঝে এদের আকৃতি-বিকৃত করে উপস্থাপন করে। কিছু বিরল মহাকর্ষীয় লেন্স আমাদের সহায়তাও করে। এরা আমাদের টেলিস্কোপ বরাবর মুখ করে থাকে। বিধায়, মহাকর্ষীয় লেন্সটি প্রাকৃতিক জুম লেন্সের মতো মহাকাশের অনেক সূক্ষ্ম বিষয় বিবর্ধিত করে দেখায়। এর সহায়তাও জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা সদ্য গঠিত হওয়া নক্ষত্রের গঠনপথ পর্যালোচনা করতে পারেন। এই মহাকর্ষীয় লেন্স মহাজাগতিক ছোট্ট বস্তু থেকে কৃষ্ণগহ্বরকেও বিশাল পরিসরে ফুটিয়ে তোলতে পারে।</p> <p>মহাবিশ্বের আর সব বস্তুর সাথে মহাকর্ষীয় লেন্সও ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে মহাশূন্যে। এই লেন্সটি আমাদের টেলিস্কোপে ধরা দেওয়ার আগেই মূলত আবহ নক্ষত্র ফোকাস করে বা আকার বিকৃত করে। </p> <p><strong>পরিমণ্ডল</strong><br /> লাখ লাখ নক্ষত্র, মহাজাগতিক বস্তুর উজ্জ্বলতা পর্যবেক্ষণ-পর্যালোচনা করে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আমাদের গ্যালাক্সির নক্ষত্র থেকে মহাকর্ষীয় মাইক্রোলেন্সিং সহায়তায় আলোর বিরল এক ঝলক খুঁজে পেয়েছেন। মহাকাশে ছুটে চলে নক্ষত্র ও গ্রহগুলো কাল বিশেষে দূরবর্তী আবহ নক্ষত্রের সাথে সারিবদ্ধ হয়। এই সারি পৃথিবী থেকে বেশ বিশাল ও চিত্তাকর্ষক দেখায়। মাইক্রোলেন্সিং বিবর্ধককরণ কৌশলে আজ পর্যন্ত ১ ডজনের বেশি গ্রহ/বামন গ্রহ পাওয়া গিয়েছে।</p> <p><strong>আলোক বর্ণালি সম্পর্কিত বিষয়</strong><br /> কৃষ্ণগহ্বর<br /> মহাকর্ষ<br /> ডার্ক ম্যাটার<br /> আপেক্ষিকতা</p> <p> </p> <p><strong>জীবনী</strong><br /> ফ্রিৎস জুইকি<br /> ১৮৯৮-১৯৭৪<br /> সুইস জ্যোতির্বিজ্ঞানী।</p> <p><strong>বোহদান প্যাকজিনস্কি</strong><br /> ১৯৪০-২০০৭<br /> পোলিশ জ্যোতির্বিজ্ঞানী। মহাকর্ষীয় লেন্সিং এবং মাইক্রোলেন্সিং গবেষণায় শীর্ষ গবেষক।</p> <p><strong>বর্ণনা</strong><br /> জ্যাচরি কে. বার্টা।<br />  </p>