<p>নাসার ইউরোপা ক্লিপার মিশন বিজ্ঞানীদের আশার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে চলেছে। এই মহাকাশযান পাঠানো হচ্ছে বৃহস্পতির অন্যতম উপগ্রহ ইউরোপাতে। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, সেখানে বরফের নিচে একটি বিশাল সমুদ্র রয়েছে। এই অভিযান আগামী ১০ অক্টোবর শুরু হবে এবং এর মাধ্যমে নতুন করে খোঁজা হবে প্রাণের সম্ভাবনা।</p> <p>বৃহস্পতির ৯৫টি উপগ্রহের মধ্যে ইউরোপা অন্যতম। এর বিশেষত্ব হলো এর পৃষ্ঠে বরফের আস্তরণ আছে। সেই বরফের নিচে তরল পানির উপস্থিতি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এই পানিতে প্রাণের উপস্থিতি থাকতে পারে। কারণ পৃথিবীতেও যেখানে পানি রয়েছে, সেখানে জীবনের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। ইউরোপা ক্লিপার মিশনের প্রধান লক্ষ্য এই সমুদ্রের গভীরে কী রয়েছে, তা জানার চেষ্টা করা।</p> <p>নাসার ইউরোপা ক্লিপার মিশন হলো বৃহত্তম মহাকাশযান যা আগে কখনো তৈরি করা হয়নি। এই প্রকল্পের জন্য প্রায় ৫০০ কোটি ডলার খরচ করা হয়েছে। ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেসএক্সের রকেটে করে মহাকাশযানটি উৎক্ষেপণ করা হবে। একবার মহাকাশে পৌঁছানোর পর এই মহাকাশযানটি পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ বল এবং মঙ্গল গ্রহের সাহায্যে বৃহস্পতির দিকে ধাবিত হবে।</p> <p>নাসার এই মহাকাশযানটি পৃথিবী থেকে বৃহস্পতির পথে যাত্রা শুরু করবে এবং পৃথিবীর সময় অনুসারে সেখানে পৌঁছাতে ছয় বছর সময় নেবে। বৃহস্পতিতে পৌঁছানোর পর, ইউরোপা ক্লিপার বৃহস্পতির চারপাশে পাক খাবে এবং একাধিকবার ইউরোপার কাছাকাছি আসবে। বিজ্ঞানীরা এই মহাকাশযানের মাধ্যমে ইউরোপার পৃষ্ঠ এবং নিচের সমুদ্র সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করবেন। সেসব তথ্য হয়তো ভবিষ্যতে মহাকাশ গবেষণার এক নতুন অধ্যায় উন্মোচন করতে পারে।</p> <p>নাসা এই অভিযানের নিয়ে অত্যন্ত আশাবাদী। চার মাস ধরে ইউরোপা ক্লিপারের বিভিন্ন যন্ত্রপাতির ব্যাপক পরীক্ষা করা হয়েছে। যদিও প্রাথমিকভাবে কিছু যন্ত্রপাতি নিয়ে উদ্বেগ ছিল, শেষ পর্যন্ত সব সমস্যার সমাধান করা হয়েছে এবং মিশনটি সবুজ সংকেত পেয়েছে। মিশনের সাফল্য জীবন ও মহাকাশের অন্য জগৎ সম্পর্কে আমাদের বোঝাপড়া বাড়াবে।</p> <p>এই মিশন সফল হলে এটি মহাবিশ্বে জীবন খোঁজার ক্ষেত্রে এক বিপ্লবী পদক্ষেপ হতে পারে। ইউরোপার বরফের নিচে প্রাণের অস্তিত্ব প্রমাণিত হলে তা শুধু বৃহস্পতির উপগ্রহই নয়, অন্যান্য গ্রহ ও উপগ্রহের সম্ভাব্য জীবন খুঁজতে বিজ্ঞানীদের নতুন উৎসাহ দেবে।</p> <p>সূত্র : নাসা</p>