<p>বাগদাদ ব্যাটারি নামে পরিচিত একটি প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার প্রাচীনকালে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা সম্পর্কে নতুন জল্পনা তৈরি করেছে। অবশ্য এটিকে আসলেই প্রাচীন বৈদ্যুতিক ব্যাটারি বলা যায় কিনা তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। তবুও এটি প্রাচীন প্রযুক্তির একটি বিস্ময়কর নিদর্শন।</p> <p>১৯৩৬ সালে ইরাকের বাগদাদের কাছে খুজুত রাবু নামক একটি প্রত্নতাত্ত্বিক খননস্থলে গবেষকরা এই জিনিসটি পাওয়া যায়। এটি প্রায় ২০০০ বছরের পুরনো বলে ধারণা করা হয়। আবিষ্কৃত বস্তুটি মূলত একটি মাটির পাত্রের ভেতরে তামার সিলিন্ডার ও লোহার রড সমন্বয়ে তৈরি। এর মধ্যে আরও কিছু রাসায়নিক উপাদান থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে একে একটি বিদ্যুৎ উৎপাদনের সরঞ্জাম মনে করেন অনেকে।</p> <p>বাগদাদ ব্যাটারির মূল কাঠামো ছিল মাটির পাত্র, যার উচ্চতা ছিল প্রায় ৬ ইঞ্চি। পাত্রের ভেতরে তামার একটি সিলিন্ডার স্থাপন করা হয়েছিল এবং এর মধ্যে একটি লোহার রড ছিল। তামার সিলিন্ডারটি পিচের মাধ্যমে সিল করা ছিল। ধারণা করা হয়, এই পাত্রের ভেতরে তামার ও লোহার রডের সঙ্গে কোনো অ্যাসিডিক বা ক্ষারীয় দ্রবণ (যেমন ভিনেগার বা সাইট্রিক অ্যাসিড) মিশিয়ে রাখা হতো, যা ইলেকট্রো-কেমিক্যাল প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারত।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="কেমন ছিল স্বর্ণযুগের বাগদাদ লাইব্রেরি?" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/09/21/1726906133-18848914ec0ae93bf3b7c9ba126bcb65.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>কেমন ছিল স্বর্ণযুগের বাগদাদ লাইব্রেরি?</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/09/21/1427490" target="_blank"> </a></div> </div> <p>বাগদাদ ব্যাটারি নিয়ে একাধিক মতবাদ রয়েছে। কিছু গবেষক বিশ্বাস করেন এটি প্রকৃতপক্ষে একটি প্রাচীন বৈদ্যুতিক ব্যাটারি ছিল, যা প্রাচীন সভ্যতাগুলিতে ধাতব আসবাবপত্র প্রলেপ বা চিকিৎসা কাজের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে ব্যবহৃত হতে পারে। আবার অন্য অনেকে বিশ্বাস করেন, এটি কোনো ধর্মীয় বা আধ্যাত্মিক কাজে ব্যবহৃত হতো, যেখানে রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া শুধুমাত্র একটি গৌণ ব্যাপার ছিল।</p> <p>বিভিন্ন বিজ্ঞানী ও গবেষকরা বাগদাদ ব্যাটারির মডেল তৈরি করে পরীক্ষা করেছেন। তাদের দেখেছেন. যদি পাত্রের ভেতরে সঠিক রাসায়নিক দ্রবণ মেশানো হয়, তাহলে এটি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম হতে পারে। বিদ্যুতের পরিমাণ খুবই সামান্য, প্রায় ০.৮-২.০ ভোল্টের মধ্যে হতে পারে। এই পরিমাণ বিদ্যুতের সাহায্যে ধাতব প্রলেপ দেওয়ার মতো ক্ষুদ্র কাজ করা সম্ভব।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="সাপ কি প্রতিশোধ নেয়? বিজ্ঞান কি বলে?" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/09/21/1726904715-0a02b64ba8de9f14317ee46b3aaa448b.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>সাপ কি প্রতিশোধ নেয়? বিজ্ঞান কি বলে?</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/09/21/1427483" target="_blank"> </a></div> </div> <p>যদিও এর ব্যবহার নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে, কেউ কেউ মনে করেন এটি সোনার গয়না বা মূর্তিতে বৈদ্যুতিক প্রলেপ দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হতো। আবার অনেকে মনে করেন এটি ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের অংশ হতে পারে। কিছু ইতিহাসবিদ মনে করেন, প্রাচীন মেসোপটেমিয়ার মানুষ হয়তো ইলেকট্রো-প্লেটিং প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত ছিল।</p> <p>আধুনিক প্রত্নতাত্ত্বিক এবং বৈজ্ঞানিক গবেষকরা এখনো বাগদাদ ব্যাটারির সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে একমত হতে পারেননি। যদিও প্রাচীন সভ্যতাগুলো বিদ্যুৎ সম্পর্কে সীমিত ধারণা রাখত বলে মনে করা হয়, তবে বাগদাদ ব্যাটারির মতো আবিষ্কার এই ধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="ককেশীয় জনজাতি : ইতিহাস ও পরিচিতি" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/09/17/1726569649-cc1ff155b1307f024c25a7951ed7ecd9.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>ককেশীয় জনজাতি : ইতিহাস ও পরিচিতি</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/09/17/1426255" target="_blank"> </a></div> </div> <p>বাগদাদ ব্যাটারি প্রাচীন যুগের প্রযুক্তিগত ক্ষমতা ও সৃজনশীলতার এক বিস্ময়কর উদাহরণ। এর প্রকৃত ব্যবহার ও উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও, এটি প্রমাণ করে যে প্রাচীন সভ্যতাগুলো বিজ্ঞানের এমন কিছু ধারণা নিয়ে কাজ করেছে যা আমরা আজও পুরোপুরি বুঝতে পারিনি।</p> <p>সূত্র: অল অ্যাবাউট হিস্ট্রি</p>
