দীর্ঘদিন ধরেই নামের মতোই শান্ত ছিল নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাট। তবে আজ হেসেছে তার ব্যাট। লিজেন্ড অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে আবাহনী লিমিটেডকেও এনে দিয়েছেন দারুণ জয়। আগের ৪ ইনিংসে কোনোটিতেই ফিফটির দেখা পাননি তিনি।
আবাহনীর টানা পঞ্চম জয়টি এসেছে ৪ উইকেটের। ডিপিএলের প্রথম ম্যাচ হার দিয়ে শুরু করলেও এরপর আর কোনো ম্যাচ হারেনি তারা। তবে দল দুর্দান্ত ছন্দে থাকলেও সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে পারছিলেন না শান্ত। আজ বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে অধিনায়কের দায়িত্বটাই পালন করলেন তিনি।
বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে ২৯৩ রান তাড়া করতে নেমে অবশ্য শুরুতেই ধাক্কা খেয়েছিল আবাহনী। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই ‘গোল্ডেন ডাক’ মারেন ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন। উইকেটে এসে আরেক ওপেনার জিসান আলমের সঙ্গে শুধু শুরুর ধাক্কাই সামলালেন না শান্ত, জয়ের ভিতও গড়ে দেন তিনি।
ব্যক্তিগত ৪৩ রানে যখন জিশান আউট হন তখন দুজনের জুটি দাঁড়ায় ১০৭ রানের।
সেঞ্চুরির জুটির পর মোহাম্মদ মিঠুন (৩৪) ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের (১৯) সঙ্গে দুটি পঞ্চাশ রানের জুটি গড়ে তবেই থেমেছেন শান্ত। তাদের সঙ্গে জুটি গড়ার পথে লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারের ১৮তম সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন তিনি। ১২ চার ও ২ ছক্কায় ১০১ রানে যখন থামলেন আবহনীর জয়ের জন্য তখন প্রয়োজন ৮৭ রান। শেষ দিকে সেই সমীকরণটা মেলান দুই অপরাজিত ব্যাটার মমিনুল হক (৩৫) ও মাহফিজুর রহমান রাব্বি (৩১)। দুজনের মাঝে ১৮ রানের ইনিংস খেলে আউট হয়েছেন এসএম মেহেরব হাসান।
এর আগে সাইফ হাসান ও মাহমুদুল হাসান জয়ের ফিফটিতে ৬ উইকেটে ২৯২ রান করেছিল রূপগঞ্জ। ওপেনার সাইফের ৬৭ রানের বিপরীতে ৫৮ রান করেন জয়।
বিজয়ের সেঞ্চুরিতে জিতেছে গাজী গ্রুপ
শান্তর মতোই আজ গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন এনামুল হক বিজয়। তার দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ভর করেই ৬৫ রানের জয় পেয়েছে গাজী গ্রুপ।
এতে টানা চার ম্যাচ জয়ের পর হার দেখল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। ৩৩৭ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে অবশ্য দারুণ শুরু করেছিলেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও রনি তালুকদার। দুজনে মিলে ৭৪ রানের জুটি গড়েন। ৪৫ রানে অধিনায়ক তামিম আউট হলে মোহামেডানের ছন্দপতন ঘটে। কেননা বাঁহাতি ওপেনারের পর পরেই ৩ রানে বিদায় নেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনও।
তবে অন্য প্রান্তে নিজের সহজাত ব্যাটিং করে যাচ্ছিলেন দলের হয়ে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলা রনি। তাওহিদ হৃদয়ের (৩৬) সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে ৮০ রানের জুটি গড়ে আবারো ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন রনি। তবে ১১ রানের ব্যবধানে দুজনই বিদায় নিলে আর ম্যাচে ফেরা হয়নি মোহামেডানের। শেষ দিকে ৪৯ রানের ইনিংস খেলে শুধু পরাজয়ের ব্যবধানটাই কমিয়েছেন মুশফিকুর রহিম।
টানা পঞ্চম জয় পাওয়ার আগে লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারের ২১তম সেঞ্চুরি তুলে নেন বিজয়। তার অপরাজিত ১৪৯ রানের ইনিংসে ৩৩৬ রানের সংগ্রহ পায় গাজী গ্রুপ। ইনিংসটি সাজান ৪ ছক্কা ও ১২ চারে। দলের সংগ্রহে অবশ্য অবদান রেখেছেন জোড়া ফিফটি করা সাদিকুর রহমান (৬০) ও তোফায়েল আহমেদ (৬৩)। মোহামেডানের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেওয়া তাসকিন আহমেদ আজ লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ১০৭ রান দেওয়ার বিব্রতকর রেকর্ড গড়েছেন।
জয়ে ফিরেছে প্রাইম ব্যাংক
সর্বশেষ টানা দুই ম্যাচে হারের মুখ দেখে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। আজ অবশ্য হ্যাটট্রিক হার নয়, জয়ে ফিরেছে তারা। প্রতিপক্ষ ধানমণ্ডি স্পোর্টস ক্লাবের বিপক্ষে ৫৫ রানে জয়ে ফিরেছে তারা।
প্রথমে ব্যাটিং করে ৩০৮ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় প্রাইম ব্যাংক। চার ব্যাটার ফিফটি পেলেও কেউই সেঞ্চুরি করতে পারেননি। ফিফটি করা ব্যাটাররা হচ্ছেন-সাব্বির হোসেন (৫০), জাকির হাসান (৬৪), ইরফান শুক্কুর (৫৬*) ও শামীম হোসেন পাটোয়ারী (৬২*)।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ২৫৩ রানে থেমে যায় ধানমণ্ডির ইনিংস। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৭৯ রানের ইনিংস খেলেন ফজলে মাহমুদ রাব্বি। প্রতিপক্ষকে অল্পতে আটকাতে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন হাসান মাহমুদ ও আরাফাত সানি।