ফেডারেশন কাপের প্রথম কোয়ালিফায়ারে বসুন্ধরা কিংসকে হারিয়েছে ঢাকা আবাহনী। নির্ধারিত সময়ের পর অতিরিক্ত সময়েও খেলা ১-১ হওয়ায় ম্যাচটি গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে ৪-২ গোলে জিতে ফাইনালে জায়গা করে নেয় আবাহনী।
ভাষাসৈনিক শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার ফাইনালে ওঠার প্রথম কোয়ালিফায়ারে বসুন্ধরা কিংসকে টাইব্রেকারে ৪-২ ব্যবধানে হারিয়ে ফাইনালে পা দিয়েছে আবাহনী।
ঘাড়ের চোটের কারণে রক্ষণে কিংস পায়নি কাজী তারিক ও রায়হানকে। চোট কাটিয়ে ফেরা আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড হুয়ান লেসকানোকেও শুরুর একাদশে রাখার ঝুঁকি নেননি কোচ ভালেরি তিতে। তাতে কিংসের আক্রমণে ছিল না চেনা ধার।
প্রচণ্ড গরমেও দুই দলের স্বাভাবিক খেলার ছন্দে পড়ে টান।
তাতে ২৮ মিনিটে প্রথম কুলিং ব্রেকের আগ পর্যন্ত আক্রমণ, পাল্টা-আক্রমণ দেখা গেল না তেমন একটা। শুরু থেকে নিজেদের শক্তির জায়গা রক্ষণের চাদরে মুড়ে থাকল আবাহনী। চোট জর্জর কিংস যা একটু চেষ্টা করল বটে, কিন্তু মেলেনি গোলের দেখা।
১৬ মিনিটে ম্যাচের প্রথম উল্লেখযোগ্য আক্রমণের দেখা মেলে।
সেটাও সেট-পিস থেকে। জোনাথন ফের্নান্দেসের ফ্রি কিকে ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার দেসিয়েল এলিস দস সান্তোসের হেড আটকে আবাহনীর ত্রাতা গোলকিপার মিতুল মারমা।
কুলিং ব্রেকের পর আক্রমণের ধার বাড়ায় কিংস, কিন্তু মিতুলের বিশ্বস্ত দেয়ালে চিড় ধরানোর জন্য তা ছিল না যথেষ্ট। ৩৭তম মিনিটে রাকিব হোসেনের আড়াআড়ি ক্রস গোলমুখে পান ফয়সাল আহমেদ ফাহিম, কিন্তু মিতুল ঝাঁপিয়ে ফেরান। এরপর মজিবুর রহমান জনির কোনাকুনি শট যায় পোস্টের বাইরে দিয়ে।
৪২ মিনিটে বড় ধাক্কা খায় আবাহনী। ফাহিমকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন আসাদুজ্জামান বাবলু। মাঠ ছেড়ে যাওয়ার সময় পানির গ্লাস মাটিতে ছুড়ে নিজের উপরই হতাশা ঝাড়তে দেখা যায় এই ডিফেন্ডার। ১০ জনের দলে পরিণত হওয়ায় রক্ষণের শক্তি বাড়াতে মিডফিল্ডার রবিউল হাসানকে তুলে ডিফেন্ডার শাকিল হোসেনকে নামান আবাহনী কোচ মারুফুল হক।
দ্বিতীয়ার্ধেই আবাহনীর সে স্বস্তি উবেও যায়। ৫৭ মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোল তুলে নেয় কিংস। ফের্নান্দেসের লং বল দুই ডিফেন্ডার ইয়াসিন খান ও শাকিলের কেউ ক্লিয়ার করতে পারেননি, তাদের ফাঁক গলে বেরিয়ে যাওয়া বল জনি ছুটে গিয়ে টোকায় জড়িয়ে দেন জালে। হতভম্ব মিতুল কিছুই বুঝে উঠতে পারেননি।
৮৪ মিনিটে সমতা ফেরায় আবাহনী। রাফায়েল অগস্তর বাঁকানো ফ্রি-কিক পোস্টে লেগে ফিরলে অনায়াসে তা জালে পাঠান বদলি নামা আরমান ফয়সাল আকাশ।
অতিরিক্ত সময়ের খেলায় দুই দলই রয়ে সয়ে খেলার চেষ্টা করেছে। ১০২ মিনিটে মেহেদি হাসানের দৃঢ়তায় রক্ষা পায় কিংস। বদলি নামা ইব্রাহিমের ভাসানো বলে মিরাজুলের হেড কোনোমতে কর্নারের বিনিময়ে ফেরান মেহেদি। শেষ দিকে মেহেদিকে তুলে গোলরক্ষক আনিসুর রহমানকে নামান ভ্যালেরিও তিতা। তাতেই যেন বাজিমাত কিসের। আবাহনীর প্রথম শট নিতে আসা জাফর ইকবালের আলতো করে নেওয়া শট গ্লাভসে আটকান আনিসুর। এরপর কিংসের প্রথম শট জালে জড়ান জোনাথন ফের্নান্দেস। এরপর শেখ মোরসালিন জালে খুঁজে নিলেও রাব্বি হোসেনের শট ঝাপিয়ে ফেরান মিতুল। চতুর্থ শটে ডেসিয়েলও উড়িয়ে মারেন পোস্টের ওপর দিয়ে।
প্রথম শট মিসের পর আবাহনীর রাফায়েল অগস্ত, এমেকা, সবুজ হোসেন এবং ইব্রাহিম জাল খুজে নিলে ফাইনালে পৌঁছে যায় আবাহনী।