মৃত্যুর প্রায় পাঁচ মাস পর দাফন করা হচ্ছে হিজবুল্লাহ নেতা নাসরাল্লাহকে

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
মৃত্যুর প্রায় পাঁচ মাস পর দাফন করা হচ্ছে হিজবুল্লাহ নেতা নাসরাল্লাহকে
নিহত হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহ। ছবি : এএফপি

ইসরায়েলি হামলায় নিহত হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহর জানাজা আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল রবিবার এ তথ্য জানিয়েছেন ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীটির বর্তমান প্রধান নাইম কাসেম। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ইসরায়েলি হামলায় হাসান নাসরাল্লাহ নিহত হন। 

কাসেম প্রথমবারের মতো নিশ্চিত করেছেন, ইসরায়েলি অভিযানে নিহত হওয়ার আগে অক্টোবরে নাসরাল্লাহর স্থলাভিষিক্ত হিসেবে শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা হাশেম সাফিউদ্দিনকে নির্বাচিত করা হয়েছিল।

কিন্তু ইসরাইলি বিমান হামলায় হিজবুল্লাহর অন্যতম শীর্ষ এ নেতা হাশেম সাফিউদ্দিনও নিহত হয়েছেন। হিজবুল্লাহ একই দিনে সাফিউদ্দিনেরও জানাজা করবে।

আরো পড়ুন
পেন্টাগন থেকে চার গণমাধ্যমকে যে কারণে সরিয়ে দিচ্ছেন ট্রাম্প

পেন্টাগন থেকে চার গণমাধ্যমকে যে কারণে সরিয়ে দিচ্ছেন ট্রাম্প

 

কাসেম টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে বলেছেন, ‘ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধের সময় নিরাপত্তার কারণে জানাজা অনুষ্ঠিত হতে না পারায় আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি নাসরাল্লাহর জন্য একটি বিশাল জানাজা আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। জনসাধারণও সেখানে অংশগ্রহন করতে পারবে।

কাসেম আরো বলেন, ‘সাফিউদ্দিনকে মহাসচিব বা হিজবুল্লাহর নেতা হিসেবেই দাফন করা হবে, কারণ আমরা ... তাঁর বিশিষ্ট সাইয়্যেদ হাশেমকে মহাসচিব নির্বাচিত করেছিলাম ... কিন্তু ঘোষণার এক বা দুই দিন আগে ৩ অক্টোবর তিনি শহীদ হন।’

নাসরাল্লাহকে বৈরুতের উপকণ্ঠে পুরাতন এবং নতুন বিমানবন্দর সড়কের মাঝখানে আমাদের পছন্দের একটি জমিতে দাফন করা হবে এবং সাফিউদ্দিনকে দক্ষিণ লেবাননের তার নিজ শহর দেইর কানুনে দাফন করা হবে বলে হিজবুল্লাহর বর্তমান প্রধান নাইম কাসেম বলেন।

সূত্র : এএফপি

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

যুদ্ধবিরতিতে সম্মত পুতিন, তবে...

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
যুদ্ধবিরতিতে সম্মত পুতিন, তবে...
ফাইল ছবি : এএফপি

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধবিরতির জন্য দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে নীতিগতভাবে সম্মত হওয়ার কথা জানিয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন।

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) পুতিন শর্তও দিয়েছেন যে, যুদ্ধবিরতির জন্য সংঘাতের মূল কারণগুলোর সমাধান করতে হবে। সেই সঙ্গে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের বিশদ সমাধান করতে হবে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলায় লাখো হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।

বাস্তুচ্যুত হয়েছেন লাখো মানুষ। শহরগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এটি কয়েক দশকের মধ্যে মস্কো ও পশ্চিমাদের মধ্যে তীব্রতম সংঘর্ষের সূত্রপাত করেছে।

মার্কিন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের প্রতি পুতিনের সতর্কতামূলক সমর্থন ওয়াশিংটনের প্রতি সদিচ্ছার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনার দরজাও খুলে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে পুতিনের শর্ত দ্রুত যুদ্ধবিরতির ইঙ্গিতও দিচ্ছে না।

বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে আলোচনার পর ক্রেমলিনে সংবাদ সম্মেলনে বৃহস্পতিবার পুতিন বলেন, ‘আমরা শত্রুতা বন্ধের প্রস্তাবে একমত। ধারণাটি ঠিক আছে।

আমরা অবশ্যই এটি সমর্থন করি।’

তিনি এ-ও বলেন, ‘কিন্তু আমরা এই সত্য থেকে এগিয়ে যাচ্ছি যে, যুদ্ধবিরতি এমন হওয়া উচিত যা দীর্ঘমেয়াদী শান্তির দিকে পরিচালিত করবে এবং এই সংকটের মূল কারণগুলো দূর করবে।’

হোয়াইট হাউসে প্রত্যাবর্তনের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের কথা বলেছিলেন। গত বুধবার হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি আশা করি, ক্রেমলিন ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির মার্কিন প্রস্তাবে সম্মত হবে।’ ইউক্রেন এতে সমর্থনও জানিয়েছে।

এদিকে ভ্লাদিমির পুতিন যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্পের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন। ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছে পুতিন বলেন, ‘এমন কিছু বিষয় রয়েছে, যা আমাদের আলোচনা করা দরকার। আমি মনে করি, আমাদের মার্কিন সহকর্মীদের সঙ্গেও কথা বলা উচিত।’

ট্রাম্পকে ফোন করে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে পারেন বলে জানান পুতিন। তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ উপায়ে এই সংঘাতের অবসানের ধারণাকে সমর্থন করি।’

সূত্র : রয়টার্স

মন্তব্য

গাজায় হাসপাতাল চত্বর থেকে ৪৮ লাশ উত্তোলন, বাকি আরো ১৬০

এএফপি
এএফপি
শেয়ার
গাজায় হাসপাতাল চত্বর থেকে ৪৮ লাশ উত্তোলন, বাকি আরো ১৬০
১৩ মার্চ গাজা সিটির আল-শিফা হাসপাতালের চত্বর থেকে লাশ উদ্ধারের পর একজন নারী কান্নায় ভেঙে পড়েন। ছবি : এএফপি

গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, তাদের কর্মীরা বৃহস্পতিবার আল-শিফা হাসপাতালের চত্বরে থেকে ৪৮টি লাশ উত্তোলন করেছেন। একসময় গাজার বৃহত্তম চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত এই হাসপাতাল বর্তমানে যুদ্ধে ইসরায়েলের একাধিক হামলার ফলে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।

সংস্থাটি এর আগেও একই ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করেছে, যাতে লাশগুলো শনাক্ত করে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া যায় অথবা তা সম্ভব না হলে যথাযথভাবে অন্যত্র দাফন করা যায়।

সংস্থার মুখপাত্র মাহমুদ বাসসাল এএফপিকে বলেন, ‘পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে শনাক্ত হওয়ার পর ৩৮টি মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে, যা পরে অন্য কবরস্থানে পুনরায় দাফন করা হবে।

অন্য ১০টি লাশ শনাক্ত করার জন্য সেগুলো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ফরেনসিক বিভাগে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

বাসসাল আরো জানান, হাসপাতাল কমপ্লেক্সের ভেতরে এখনো প্রায় ১৬০টি লাশ রয়ে গেছে এবং উত্তোলনপ্রক্রিয়া আরো কয়েক দিন ধরে চলবে।

এএফপির ধারণ করা ফুটেজে দেখা গেছে, উদ্ধারকর্মীরা হাসপাতালের চত্বরের বিভিন্ন অংশ খুঁড়ছেন এবং সাদা ব্যাগে রাখা মানুষের দেহাবশেষ বের করছেন, যা পরে কম্বল দিয়ে মুড়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

গাজার বাসিন্দা মোহাম্মদ আবু আসি তার ভাইয়ের মরদেহ শনাক্ত করে গ্রহণ করেছেন।

তিনি বলেন, ‘এটি যেন আবারও যুদ্ধের অভিজ্ঞতা অনুভব করার মতো। আমার ভাইয়ের মরদেহ খুঁজে পাওয়া মানে যেন আজই তাকে দাফন করা হচ্ছে—ব্যথা ও ক্ষত নতুন করে জেগে উঠছে।’

সুহা আল-শরিফ নামের আরেক গাজাবাসী তার ছেলের মরদেহ খুঁজতে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি জানি আমার ছেলে কী পরে ছিল।

এ কারণেই আমি এসেছি। আল্লাহ চাইলে আমি তাকে খুঁজে পাব। আমি তাকে খুঁজে পেতে চাই। আমি একজন মা—আমি ক্লান্ত, জানি না আমার ছেলে কোথায়।’

যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজার হাসপাতাল, বিশেষ করে আল-শিফা ইসরায়েলি বাহিনীর একাধিক হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে।

ইসরায়েলের অভিযোগ, হামাস চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে কমান্ড সেন্টার হিসেবে ব্যবহার করেছে এবং ৭ অক্টোবরের হামলায় জিম্মি হিসেবে নিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের সেখানে আটকে রেখেছে।

এর আগেও গাজার স্বাস্থ্যকর্মীরা আল-শিফা হাসপাতাল থেকে মরদেহ উদ্ধার করেছিলেন। গত বছর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ গাজায় হাসপাতালের ভেতরে ও আশপাশে গণকবরের সন্ধান পাওয়া সংক্রান্ত প্রতিবেদনের পর ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছিল।

ইসরায়েলের তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের নজিরবিহীন হামলায় এক হাজার ২১৮ জন নিহত হন। পাশাপাশি ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায়, যাদের মধ্যে ৫৮ জন এখনো গাজায় আটক রয়েছে। তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মতে, তাদের মধ্যে ৩৪ জন মারা গেছে। অন্যদিকে ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক সামরিক অভিযানে গাজায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৪৮ হাজার ৫২৪ জন নিহত হয়েছে বলে হামাস নিয়ন্ত্রিত ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। জাতিসংঘ এই সংখ্যাকে নির্ভরযোগ্য হিসেবে বিবেচনা করে।

মন্তব্য

সিরিয়ায় সাংবিধানিক ঘোষণায় স্বাক্ষর আল-শারার, কী আছে এতে

    ‘সিরিয়ার নতুন ইতিহাসের সূচনা’ নারীদের অধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা অন্তর্ভুক্ত প্রেসিডেন্টকে অবশ্যই মুসলিম হতে হবে আইন প্রণয়নের প্রধান উৎস শরিয়া অভিশংসনযোগ্য নন প্রেসিডেন্ট বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি
এএফপি
এএফপি
শেয়ার
সিরিয়ায় সাংবিধানিক ঘোষণায় স্বাক্ষর আল-শারার, কী আছে এতে
সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা ১৩ মার্চ দামেস্কে প্রেসিডেন্সিয়াল প্রাসাদে দেশের সাংবিধানিক ঘোষণা স্বাক্ষর করেন, যা পাঁচ বছরের অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে কার্যকর থাকবে। ছবি : এএফপি

সিরিয়ার নেতা আহমেদ আল-শারা বৃহস্পতিবার দেশটির পাঁচ বছরের অন্তর্বর্তীকালীন শাসনব্যবস্থা নির্ধারণকারী সাংবিধানিক ঘোষণা স্বাক্ষর করেছেন। পাশাপাশি তিনি একে ‘সিরিয়ার নতুন ইতিহাসের সূচনা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এই ঘোষণায় নারীদের অধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

ইসলামপন্থী নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহীরা প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের দমনমূলক সরকারকে উৎখাতের তিন মাস পর এই ঘোষণা এলো।

আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর দেশ-বিদেশ থেকে অধিকতর অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এক নতুন সিরিয়ার আহ্বান ওঠে। নতুন কর্তৃপক্ষ আসাদ শাসনামলের সংবিধান বাতিল ও পার্লামেন্ট বিলুপ্ত করেছে।

অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আল-শারা বৃহস্পতিবার প্রেসিডেনশিয়াল প্রাসাদে এই ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করে বলেন, ‘আমরা যেন নিপীড়নের বদলে ন্যায়বিচার, আর কষ্টের বদলে দয়া প্রতিষ্ঠা করতে পারি—এই ঘোষণা সিরিয়ার সেই নতুন ইতিহাসের সূচনা।’

আরো পড়ুন
দামেস্কে ইসলামিক জিহাদের কমান্ড সেন্টারে ইসরায়েলি হামলা

দামেস্কে ইসলামিক জিহাদের কমান্ড সেন্টারে ইসরায়েলি হামলা

 

এই ঘোষণায় পাঁচ বছরের অন্তর্বর্তীকালীন শাসনব্যবস্থা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এই সময়ে একটি ‘অন্তর্বর্তীকালীন বিচার কমিশন’ গঠন করা হবে, যা ‘দায়বদ্ধতা নির্ধারণ, সত্য উন্মোচন ও সাবেক সরকারের অন্যায়-অত্যাচারের শিকারদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার’ দায়িত্ব পালন করবে।

সংবিধান ঘোষণার অন্যতম খসড়া প্রণেতা আবদুল হামিদ আল-আওয়াক বলেন, এতে ‘নারীদের কাজ ও শিক্ষায় অংশগ্রহণের অধিকার এবং তাদের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক—সব অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে।’

এতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, দেশের প্রেসিডেন্টকে অবশ্যই একজন মুসলিম হতে হবে এবং ইসলামী শরিয়াকে ‘আইন প্রণয়নের প্রধান উৎস’ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। আওয়াক আরো বলেন, এতে ‘ক্ষমতার পরিপূর্ণ পৃথককরণ’ নিশ্চিত করা হয়েছে, যা তিনি বাশার আল-আসাদের ‘রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় হস্তক্ষেপের’ বিপরীতে উল্লেখ করেন।

পাশাপাশি এটি প্রেসিডেন্টকে একটি ব্যতিক্রমী ক্ষমতা প্রদান করেছে—জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার অধিকার।

আরো পড়ুন
সিরিয়ায় সরকারি বাহিনীর হাতে ১৩৮৩ বেসামরিক নিহত

সিরিয়ায় সরকারি বাহিনীর হাতে ১৩৮৩ বেসামরিক নিহত

 

তিনি আরো বলেন, জনগণের পরিষদের (পার্লামেন্ট) এক-তৃতীয়াংশ সদস্য প্রেসিডেন্ট কর্তৃক মনোনীত হবেন এবং এই পরিষদ আইন প্রণয়নের দায়িত্ব পালন করবে। একটি সর্বোচ্চ নির্বাচন কমিটি গঠন করা হবে, যা সংসদ সদস্যদের নির্বাচন তদারকি করবে।

অভিশংসনযোগ্য নন প্রেসিডেন্ট
এই ঘোষণার অধীনে সংসদ প্রেসিডেন্টকে অভিশংসন করতে পারবে না, ঠিক যেমন প্রেসিডেন্টও কোনো আইন প্রণেতাকে বরখাস্ত করতে পারবেন না। আওয়াক বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে নির্বাহী ক্ষমতা শুধু প্রেসিডেন্টের হাতে থাকবে, ‘যাতে যেকোনো কঠিন পরিস্থিতি দ্রুত মোকাবেলা করা যায়।

তিনি আরো জানান, এই ঘোষণা ‘মতপ্রকাশ, বাকস্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা’ নিশ্চিত করে। পাশাপাশি এটি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা স্বীকৃতি দিয়েছে এবং ‘বিশেষ আদালত’ প্রতিষ্ঠার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে বহু সিরীয় নাগরিক দীর্ঘদিন ধরে নিপীড়নের শিকার হয়েছেন।

এই ঘোষণা সরকারিভাবে প্রকাশিত হলেই তা কার্যকর হবে জানিয়ে আওয়াক বলেন, ভবিষ্যৎ স্থায়ী সংবিধান প্রণয়নের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হবে।

এর আগে জানুয়ারির শেষ দিকে আল-শারা একটি ‘সাংবিধানিক ঘোষণা’ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, যা অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য ‘আইনি ভিত্তি’ হিসেবে কাজ করবে। এরপর মার্চের শুরুতে তিনি একটি সংবিধান প্রণয়ন কমিটি গঠনের ঘোষণা দেন, যাতে দুজন নারীও অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। সেই সময় প্রেসিডেন্টের দপ্তর থেকে জানানো হয়, ‘সিরিয়ার জনগণের আইনশাসনের ভিত্তিতে তাদের রাষ্ট্র গঠনের আকাঙ্ক্ষা এবং সিরীয় জাতীয় সংলাপ সম্মেলনের ফলাফলের ভিত্তিতে এই ঘোষণা এসেছে।’

ইসলামপন্থী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতৃত্ব দেওয়া ও আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার মূল ভূমিকা পালন করা আল-শারাকে জানুয়ারির শেষ দিকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।

মন্তব্য

হিজাব ছাড়া প্রতিযোগিতা করা ইরানি ক্রীড়াবিদ দেশ ছাড়লেন

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
হিজাব ছাড়া প্রতিযোগিতা করা ইরানি ক্রীড়াবিদ দেশ ছাড়লেন
দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে অনুষ্ঠিত আইএফএসসি এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ইরানি পর্বতারোহী এলনাজ রেকাবি। ফাইল ছবি : এএফপি

একজন ইরানি পর্বতারোহী ক্রীড়াবিদ (স্পোর্টস ক্লাইম্বার) ইরান ছেড়েছেন বলে তার ভাই ও এক ইরানি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যিনি ২০২২ সালে দেশব্যাপী বিক্ষোভের সময় হিজাব ছাড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছিলেন।

এলনাজ রেকাবি ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত এক চ্যাম্পিয়নশিপে ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের বাধ্যতামূলক হিজাববিধি না মেনেই অংশ নেন। এর মাধ্যমে তিনি আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। তবে দেশে ফেরার পর তিনি অনেকটাই দৃশ্যপট থেকে অদৃশ্য হয়ে যান।

ইরানের বাইরে পার্সি ভাষার কিছু গণমাধ্যম তখন জানিয়েছিল, তাকে গৃহবন্দি করা হয়েছে এবং বিদেশে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।  

২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পুলিশি হেফাজতে মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর ইরানজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। বাধ্যতামূলক হিজাব আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে মাহসাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সেই বিক্ষোভ মাসের পর মাস চলেছিল।

তবে কঠোর দমন-পীড়নের মুখে তা ধীরে ধীরে স্তিমিত হয়ে যায়।  

রেকাবি ইরান ছেড়ে গেছেন বলে তার ভাই দাউদ রেকাবি ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে জানিয়েছেন। ইরানওয়্যার ওয়েবসাইট ও ইরান ইন্টারন্যাশনাল টেলিভিশন চ্যানেল তার ওই পোস্টের উদ্ধৃতি দিয়ে খবর প্রকাশ করেছে এবং ভবিষ্যতে তার ফিরে আসার সম্ভাবনার কথাও উল্লেখ করেছে।  

ইরান ইন্টারন্যাশনাল আরো জানায়, একজন সহকর্মী পর্বতারোহীর ইনস্টাগ্রাম পোস্টে রেকাবিকে একটি ইনডোর ওয়ালে প্রশিক্ষণ নিতে দেখা গেছে, যেখানে তিনি ভেস্ট পরে ছিলেন ও হিজাবও পরেননি।

তাদের তথ্য অনুযায়ী, তিনি এখন স্পেনে রয়েছেন। এ ছাড়া ইরানের সংবাদ সংস্থা ইসনাও জানিয়েছে, তিনি স্পেনে চলে গেছেন।

এ ছাড়া দেশটির জাতীয় অলিম্পিক কমিটির প্রধান মাহদি আলিনেজাদ জানিয়েছেন, তিনি দাউদ রেকাবির ইনস্টাগ্রাম পোস্টের বিষয়ে অবগত। তিনি মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘যদি কেউ পেশাদার ক্রীড়াজীবন চালিয়ে যেতে চায়, তাহলে তাদের ইরানে থাকা উচিত। দুই বছর ধরে জাতীয় অলিম্পিক কমিটি রেকাবিকে সমর্থন দিয়েছে এবং তিনি নিজেও তা স্বীকার করবেন।

’ তবে সবাই নিজ নিজ বসবাসের স্থান বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা রাখে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে এখনো স্পষ্ট নয় যে এলনাজ রেকাবি ঠিক কবে ও কী পরিস্থিতিতে ইরান ছেড়েছেন। অন্য এক ঘটনায় আন্তর্জাতিক স্পোর্ট ক্লাইম্বিং ফেডারেশন (আইএফসিএস) গত মাসে ঘোষণা করেছিল, ২০২৬ সালে সেনেগালের ডাকারে অনুষ্ঠিতব্য যুব অলিম্পিক গেমসে রেকাবিকে ‘অ্যাথলেট রোল মডেল’ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

ফেডারেশন জানিয়েছে, সুইজারল্যান্ডের লসান শহরে এক বৈঠকের মাধ্যমে তার এই দায়িত্ব নিশ্চিত করা হয়, যেখানে রেকাবি নিজে উপস্থিত ছিলেন এবং আইএফসিএস প্রেসিডেন্ট মার্কো স্কোলারিস ও আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) প্রেসিডেন্ট টমাস বাখের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

এর আগে ইরানওয়্যারসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম জানিয়েছিল, আইওসি রেকাবির পরিস্থিতির ওপর গভীর নজর রাখছিল এবং বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ না পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল।

২০২২ সালে প্রতিযোগিতার সময় রেকাবি ইনস্টাগ্রামে এক বিবৃতিতে দুঃখপ্রকাশ করে বলেছিলেন, হিজাব ছাড়া তার অংশগ্রহণ ‘অনিচ্ছাকৃত’ ছিল। কিছু প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, দক্ষিণ কোরিয়ায় থাকার সময় ইরানি কর্মকর্তারা তাকে চাপ দিয়েছিলেন। তবে ইরানে অবস্থিত সিউল দূতাবাস এ অভিযোগ জোরালোভাবে অস্বীকার করেছিল।

সূত্র : এএফপি

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ