ইউক্রেন রাজি হওয়ার পর যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনা করতে এবার রাশিয়া যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দল। বুধবার এ খবর জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে যুক্তরাষ্ট্র যে প্রতিনিধি দলটি পাঠাচ্ছে সেখানে ঠিক কারা কারা আছেন, তা স্পষ্ট করেননি ট্রাম্প।
তবে হোয়াইট হাউসের এক সংবাদ সম্মেলনে প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্টের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলেছেন।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে হোয়াইট হাউসের ঘনিষ্ট একটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছিল, জেদ্দায় আলোচনা শেষে মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ যুদ্ধবিরতির আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব নিয়ে মস্কো যেতে পারেন। বুধবার হোয়াইট হাউসের ব্রিফিংয়েও প্রস্তাব পাঠানোর বিষয়ে নিশ্চিত করা হয়েছে।
এদিকে ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে জানানো হয়েছে যে, তারা যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবটি বিশদভাবে পর্যালোচনা করে দেখছেন। যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে রাশিয়া রাজি হবে কি না, বিষয়টি আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই পরিষ্কার হয়ে যাবে বলে জানান রুশ প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ।
এদিকে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি বিষয়ে আলোচনা চলমান থাকার মধ্যেই ইউক্রেনে যুদ্ধ আবারও তীব্র আকার ধারণ করেছে। রাশিয়ার ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রগুলো জেলেনস্কির জন্মস্থান ক্রিভি রিহ ছাড়াও বন্দর শহর ওডেসা, ডিনিপ্রোপেট্রোভস্ক এবং খারকিভের একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে বলে জানা যাচ্ছে। রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলেও সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে।
আরো পড়ুন
পাথরের সঙ্গে ধাক্কা লেগে উল্টে গেল বাস, নিহত ১৩
রুশ প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র দিমিত্রে পেসকভ বলেছেন, রুশ সেনারা ‘সফলভাবে অগ্রসর হচ্ছে।
’ যেসব এলাকায় ইউক্রেনের সেনারা আগে দখলে নিয়েছিল, সেগুলো পুনরুদ্ধার করা হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে।
ক্রেমলিন জানিয়েছে, বুধবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কুরস্ক অঞ্চলের একটি কমান্ড পোস্ট পরিদর্শন করেছেন। ওই অঞ্চলে পুতিনের এটাই প্রথম সফর। রুশ সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সফরকাল রুশ প্রেসিডেন্ট ওই অঞ্চলটিকে ‘সম্পূর্ণরূপে মুক্ত’ করার জন্য সেনাদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন।
আরো পড়ুন
গ্রিনল্যান্ডে মধ্য-ডানপন্থী বিরোধী ডেমোক্র্যাটদের আশ্চর্যজনক জয়
এ ছাড়া মঙ্গলবার ইউক্রেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার আলোচনায় যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে যে প্রস্তাব উঠে এসেছে, সেটা নিয়ে পুতিন এখনও কোনো মন্তব্য করেননি।
অন্যদিকে, ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর প্রধান ওলেকজান্ডার সিরস্কি বুধবার ইঙ্গিত দিয়েছেন, তাদের কিছু সেনা কুরস্ক থেকে সরে যাচ্ছে।
টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপে একটি পোস্টে তিনি বলেছেন, ‘সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতিতেও আমাদের অগ্রাধিকার ছিল ইউক্রেনের সেনাদের জীবন বাঁচানো।’ এমন জটিল পরিস্থিতির মধ্যেও যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়া ব্যাপারে আশাবাদী ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুদ্ধবিরতির বিষয়ে ইউক্রেনকে রাজি করানোর জন্য রীতিমত চাপ প্রয়োগ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
সূত্র: বিবিসি