যুক্তরাজ্যে ইসলামবিদ্বেষী ঘৃণার রেকর্ডসংখ্যক অভিযোগ

  • দায়ী অনলাইন প্ল্যাটফরম ও এআই
অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
যুক্তরাজ্যে ইসলামবিদ্বেষী ঘৃণার রেকর্ডসংখ্যক অভিযোগ
২০১৯ সালে নিউইয়র্ক সিটির টাইমস স্কয়ারে ইসলামবিদ্বেষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নেন বিক্ষোভকারীরা। ছবি : এএফপি

যুক্তরাজ্যে ইসলামবিদ্বেষী ঘৃণামূলক কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণকারী একটি সংস্থা বুধবার জানিয়েছে, ২০২৪ সালে তারা সর্বোচ্চসংখ্যক অভিযোগ পেয়েছে। সংস্থাটি এই বৃদ্ধির জন্য মূলত অনলাইন প্ল্যাটফরম ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে (এআই) দায়ী করেছে।  

টেল মামার পরিচালক ইমান আত্তা বলেন, ‘ইসলামবিদ্বেষী ঘৃণার এই বৃদ্ধি অগ্রহণযোগ্য এবং ভবিষ্যতের জন্য এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। ২০১২ সালে কাজ শুরুর পর থেকে আমরা এবারই সবচেয়ে বেশিসংখ্যক অভিযোগ পেয়েছি।

২০২৪ সালে টেল মামা মোট ছয় হাজার ৩১৩টি ইসলামবিদ্বেষী ঘৃণার ঘটনার প্রতিবেদন পেয়েছে, যার বেশির ভাগই অনলাইনে ঘটেছে। এর মধ্যে পাঁচ হাজার ৮৩৭টি অভিযোগ তারা নিশ্চিত করতে পেরেছে। এর আগের বছর ২০২৩ সালে তারা চার হাজার ৪০৬টি অভিযোগ পেয়েছিল, যার মধ্যে তিন হাজার ৭৬৭টি নিশ্চিত হয়েছিল।  

এ ছাড়া ২০২৪ সালে শারীরিক হামলার ঘটনা ৭৩ শতাংশ বেড়েছে, যেখানে ২০২৩ সালে ৯৯টি হামলার অভিযোগ ছিল, তা বেড়ে ২০২৪ সালে দাঁড়িয়েছে ১৭১টিতে।

পাশাপাশি ২০২৪ সালে টেল মামা অফলাইন নির্যাতনমূলক আচরণের দুই হাজার ১৯৭টি অভিযোগ পেয়েছে।  

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজা সংঘাত ও ২০২৪ সালের জুলাইয়ে সাউথপোর্টে তিন কিশোরীকে হত্যার ঘটনার পর ইসলামবিদ্বেষী কর্মকাণ্ডের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। সাউথপোর্ট হত্যাকাণ্ডের পর শুরুতে ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে পড়ে যে হত্যাকাণ্ডের জন্য একজন মুসলিম অভিবাসী দায়ী। এই মিথ্যা দাবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়।

এর ফলে যুক্তরাজ্যে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ দাঙ্গা ঘটে, যেখানে মসজিদ ও অভিবাসী আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে হামলা চালানো হয়। এই হত্যাকাণ্ডের দায়ে কার্ডিফে রুয়ান্ডার বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক অ্যাক্সেল রুদাকুবানা ১৩টি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছেন।  

টেল মামার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বৃহৎ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ঘটনাগুলো অনলাইনে ইসলামবিদ্বেষী ঘৃণার অভিযোগ বৃদ্ধির জন্য বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে উৎপন্ন ইসলামবিদ্বেষী ছবি তৈরি ও অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।’  

ইমান আত্তা সরকারের প্রতি সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘জনগণকে ঘৃণা ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে একসঙ্গে দাঁড়াতে হবে।

’  

সংস্থাটির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ‘এক্স এখনো ইসলামবিদ্বেষী ঘৃণা ছড়ানোর সবচেয়ে বিষাক্ত অনলাইন প্ল্যাটফরম হিসেবে রয়ে গেছে। এই প্ল্যাটফরমে ইসলামবিদ্বেষী বিদ্বেষমূলক ভাষা ও নির্দিষ্ট ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে পরিচালিত লক্ষ্যভিত্তিক আক্রমণ স্পষ্টভাবে দেখা যায়।’  

টেল মামা সরকারের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলে, ‘অনলাইন ক্ষেত্রে যেসব সমস্যা বাড়ছে তা মোকাবেলা করতে হবে, যাতে এটি সবার মৌলিক অধিকারের নিরাপদ স্থান হিসেবে বজায় থাকে।’

সূত্র : এএফপি

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

বিস্ময়করভাবে ১০৪ শতাংশে পৌঁছেছে চীনা পণ্যের ওপর আরোপিত মার্কিন শুল্ক

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
বিস্ময়করভাবে ১০৪ শতাংশে পৌঁছেছে চীনা পণ্যের ওপর আরোপিত মার্কিন শুল্ক
ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি : এএফপি

চীনের পাল্টা শুল্কের জবাবে ৫০ শতাংশ শুল্কারোপের হুমকি দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, প্রেসিডেন্টের ঘোষণা অনুযায়ী চীনা বেশকিছু পণ্যের ওপর ১০৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। আজ বুধবার থেকে এটি কার্যকর হবে। এ ঘটনা নাটকীয়ভাবে বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধকে আরো তীব্র করে তুলেছে।

এর আগে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। বুধবার থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা জাপানের মতো রপ্তানিকারক দেশ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমদানির হার আরো বেড়েছে।

শুল্ক আরোপের ফলে ওয়াশিংটনের শীর্ষ অর্থনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী কিন্তু একটি প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার চীন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর থেকে চীনের পণ্যের ওপর আরোপিত শুল্ক এখন বিস্ময়করভাবে ১০৪ শতাংশে পৌঁছেছে।

গত বুধবার (২ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্রে চীন থেকে আমদানি করা বেশিরভাগ পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ ন্যূনতম শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন ট্রাম্প।

সেদিন চীনের ওপর নতুন করে ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন তিনি যা পূর্বে আরোপিত শুল্কসহ ৫৪ শতাংশে দাঁড়ায়।
 ট্রাম্পের ঘোষণার পরদিন বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) চীন এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রকে শুল্ক আরোপের পদক্ষেপ বাতিল করার আহ্বান জানায় এবং পরদিন শুক্রবার (৪ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা সব পণ্যের ওপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। জবাবে চীনের ওপর অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দেন ট্রাম্প। যা দাঁড়ায় ১০৪ শতাংশে।
 

সোমবার (৭ এপ্রিল) ট্রুথ সোশ্যালে তিনি লেখেন, ‘চীন যদি মঙ্গলবারের (৮ এপ্রিল) মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার না করে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র বুধবার (৯ এপ্রিল) থেকে কার্যকরভাবে চীনের ওপর অতিরিক্ত আরো ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে। এ ছাড়া চীনের অনুরোধকৃত সব আলোচনা বাতিল করা হবে।’

ট্রাম্প মঙ্গলবার বলেছেন, তার সরকার বাণিজ্যিক অংশীদারদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করছে। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, তারা শুল্কর ক্ষেত্রে জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মতো মিত্রদের অগ্রাধিকার দেবে। মার্কিন শীর্ষ বাণিজ্য কর্মকর্তা জেমিসন গ্রিয়ার সিনেটকে বলেন, আর্জেন্টিনা, ভিয়েতনাম এবং ইসরায়েল তাদের মধ্যে অন্যতম যারা তাদের শুল্ক কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে।

এদিকে মঙ্গলবার রাতে ট্রাম্প তার সহকর্মী রিপাবলিকানদের সঙ্গে এক নৈশভোজে বলেছিলেন, ‘দেশগুলো চুক্তিতে আসতে মরে যাচ্ছে। এই দেশগুলো আমাদের গালে চুমু খাচ্ছে।’ কিন্তু বেইজিং পিছু হটার কোনো লক্ষণ দেখায়নি। শেষ পর্যন্ত দেশটি বাণিজ্য যুদ্ধের দিকে যাচ্ছে এবং দেশের স্বার্থ রক্ষার জন্য পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

মার্কিন পণ্যের ওপর চীনের ৩৪ শতাংশ প্রতিশোধমূলক শুল্ক বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। মার্কিন রাষ্ট্রপতি বিশ্বাস করেন, তার নীতি কম্পানিগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তরিত করতে বাধ্য করে আমেরিকার হারানো উৎপাদন ভিত্তিকে পুনরুজ্জীবিত করবে। কিন্তু অনেক ব্যবসায়িক বিশেষজ্ঞ এবং অর্থনীতিবিদ শুল্কের ফলে দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন। ট্রাম্প মঙ্গলবার বলেছিলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক থেকে ‘প্রতিদিন প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার আয়’ করছে।

এর আগে এক্স, ট্রুথ সোশ্যালসহ একাধিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, 'তেলের দাম কমেছে, সুদের হার কমেছে, খাদ্যের দাম কমেছে, কোনো মূল্যস্ফীতি নেই। যেসব দেশ আমাদের শোষণ করত, শুল্কের মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত যুক্তরাষ্ট্র এখন সপ্তাহে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার আদায় করছে।’ পোস্টে চীনকে ‘সবচেয়ে বড় শোষক’ বলে আখ্যা দেন ট্রাম্প।

সূত্র : এএফপি

মন্তব্য

থাইল্যান্ডে রাজতন্ত্র অবমাননার জন্য মার্কিন শিক্ষক গ্রেপ্তার

ডয়চে ভেলে
ডয়চে ভেলে
শেয়ার
থাইল্যান্ডে রাজতন্ত্র অবমাননার জন্য মার্কিন শিক্ষক গ্রেপ্তার

পল চেম্বার্স নামের ওই মার্কিন নাগরিক উত্তর থাইল্যান্ডের নরেসুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান। দেশের রাজতন্ত্রকে অবমাননার জন্য মঙ্গলবার এক মার্কিন নাগরিককে গ্রেপ্তার করে থাইল্যান্ডের কর্তৃপক্ষ।

পল চেম্বার্স নামের ওই মার্কিন নাগরিক উত্তর থাইল্যান্ডের নরেসুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান। ব্যাংকক থেকে ৩৬০ কিমি দূরে উত্তরাঞ্চলের পিটসানুলোকের একটি পুলিশ স্টেশনে প্রথমে রিপোর্ট করেন চেম্বার্স।

এরপর গ্রেপ্তার হন তিনি। গত সপ্তাহে থাই সামরিক বাহিনীর করা একটি অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাকে ডেকে পাঠায়।

কী অভিযোগ?

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক পিটসানুলোকের এক পুলিশ জানান, মূলত দুটি অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার হন ওই মার্কিন নাগরিক। থাইল্যান্ডের রাজতন্ত্রকে অবমাননার পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে অনলাইন অপরাধেরও অভিযোগ ওঠে।

মানবাধিকার আইনজীবীদের সংস্থা থাই লইয়ার্স ফর হিউম্যান রাইটসের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, শুনানি পূর্ববর্তী গ্রেপ্তারির জন্য চেম্বার্সকে পিটসানুলোক প্রভিন্সিয়াল আদালতে তোলা হয়েছিল। ওই সংস্থা থেকেই চেম্বার্সের হয়ে লড়বেন আইনজীবী ওয়ানাপাট জেনরুমজিট।  

তিনি জানিয়েছেন, একটি অনলাইন সেমিনারকে কেন্দ্র করে এই অধ্যাপকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। উনি ওই সেমিনারে বক্তা ছিলেন।

ওই মানবাধিকার সংস্থা আরো জানিয়েছে, চেম্বার্সের জামিন নামঞ্জুর করেছে আদালত।

রাজতন্ত্র সংক্রান্ত আইনে কী বলে?

থাইল্যান্ডের রাজতন্ত্র অবমাননার বিরুদ্ধে আইন খুবই কঠিন। থাই ক্রিমিনাল কোডের ১১২ নম্বর ধারা অনুযায়ী রাজা, রানি অথবা তাদের উত্তরাধিকারীকে হুমকি দিলে অথবা অপমান করলে তিন থেকে ১৫ বছরের জেল হতে পারে।

মন্তব্য

ধসে পড়ল নাইটক্লাবের ছাদ, নিহত ৯৮

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ধসে পড়ল নাইটক্লাবের ছাদ, নিহত ৯৮
ছবিসূত্র : এএফপি

ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের দেশ ডোমিনিকান রিপাবলিকে একটি নাইট ক্লাবের ছাদ ধসে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৯৮ জনের। স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার এই দুর্ঘটনা ঘটে। বুধবার ভোরে উদ্ধার অভিযানের প্রধান এই তথ্য জানিয়েছেন।

জরুরি অপারেশন সেন্টারের পরিচালক জুয়ান ম্যানুয়েল মেন্ডেজ বলেছেন, ‘প্রাথমিকভাবে মৃতের সংখ্যা ৯৮ জনে পৌঁছেছে।

এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।’ ঘটনার পরে উদ্ধারকারীরা জীবিতদের খুঁজে বের করার জন্য ছুটে যান। ৩৭০ জনেরও বেশি উদ্ধারকর্মী জীবিতদের উদ্ধারের জন্য কাজ করছেন। কয়েক ডজন অ্যাম্বুলেন্স আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যায়।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৪৪ মিনিটে দুর্ঘটনা যখন ঘটে তখন ক্লাবে ৫০০ থেকে ১ হাজার জন লোক ছিল। ক্লাবটিতে ৭০০ জন বসার এবং প্রায় ১ হাজার জন দাঁড়িয়ে থাকার ক্ষমতা রয়েছে।  নাইট ক্লাবটির ছাদ কীভাবে ধসে পড়ল সেটি এখনো জানা যায়নি।

একটি ভিডিওতে দেখা গেছে একটি ব্যান্ড গান পরিবেশন করছে।

এ সময় স্টেজের কাছ থেকে একজনকে আঙুল দিয়ে দেখান যে ক্লাবের পেছনে কিছু একটা পড়েছে। এর কিছুক্ষণের মধ্যে ছাদে থাকা লাইটগুলো ধসে পড়তে থাকে। এর কয়েক মুহূর্ত পরই পুরো ছাদটি ধসে পড়ে।

দেশটির রাষ্ট্রপতি লুইস আবিনাদারের মতে, মৃতদের মধ্যে মন্টে ক্রিস্টি পৌরসভার গভর্নর নেলসি ক্রুজও ছিলেন। মৃতের সংখ্যা ১৫ জন থেকে শুরু হয়েছিল এবং এরপর তা বাড়তে থাকে।

সন্ধ্যা নাগাদ ৭৯ জনে পৌঁছায় এবং আজ সকালে ৯৮ জনে দাঁড়িয়েছে।

ক্লাবের ছাদের একসময় একটি বড় গর্ত দেখা গেছে বলে এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। একটি ক্রেন দিয়ে ধ্বংসস্তূপ সরানো হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ ডোমিনিকানদের রক্তদানের জন্য আহ্বান জানিয়েছে।

জরুরি অপারেশন সেন্টারের পরিচালক জুয়ান ম্যানুয়েল মেন্ডেজ বলেছেন, ‘যতক্ষণ জীবনের আশা থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত সকল কর্তৃপক্ষ এই লোকদের উদ্ধারের জন্য কাজ করবে।’ রাষ্ট্রপতি আবিনাদার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছেন।

সূত্র : এএফপি


 

মন্তব্য

ইসরায়েলি হামলায় জীবন্ত পুড়ে মারা গেলেন ফিলিস্তিনের সাংবাদিক

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ইসরায়েলি হামলায় জীবন্ত পুড়ে মারা গেলেন ফিলিস্তিনের সাংবাদিক
ছবিসূত্র : এক্স থেকে নেওয়া

খান ইউনিসে বসবাসকারী সাংবাদিকদের একটি তাঁবুতে ইসরায়েলি হামলার পর জীবন্ত দগ্ধ হয়ে ফিলিস্তিনি সাংবাদিক আহমেদ মনসুর মারা গেছেন। এ ঘটনায় গাজাবাসী শোক প্রকাশ করেছে।

দুই সন্তানের জনক মনসুর ইসরায়েলি হামলায় নিহত তিনজনের মধ্যে একজন। যাদের মধ্যে সাংবাদিক হিলমি আল-ফাকাওয়ি এবং নাগরিক ইউসুফ আল-খাজিন্দারও ছিলেন।

তাঁবুতে থাকা আরো বেশ কয়েকজন সাংবাদিক আহত হন। যাদের মধ্যে হাসান ইসলায়েহ, আহমেদ আল-আগা, মোহাম্মদ ফায়েক, আবদুল্লাহ আল-আত্তার, ইহাব আল-বারদিনি, মাহমুদ আওয়াদ, মাজেদ কুদাইহ এবং আলী ইসলায়হ রয়েছেন। তাদের মধ্যেও কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। 

জীবন্এত পুড়ে যাওয়ার একটি ভিডিও ব্যাপকভাবে শেয়ার হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

ভিডিওতে স্থানীয় প্যালেস্টাইন টুডে সংবাদ সংস্থার সংবাদদাতাকে গত সোমবার আগুনে পুড়ে যেতে দেখা যায়। তার সহকর্মীরা তাকে বাঁচানোর জন্য মরিয়া চেষ্টা করছে। প্রথমে মনসুরকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তবে ফিলিস্তিনি সংবাদ ওয়েবসাইট আরব৪৮ অনুসারে, গতকাল মঙ্গলবার ফিলিস্তিনি নাগরিক প্রতিরক্ষা মনসুরের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
 

সরকারি বার্তা সংস্থা ওয়াফাও জানিয়েছে, মানসুর গতকাল মঙ্গলবার সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।  মিডল ইস্ট আইয়ের সংবাদদাতা আহমেদ আজিজ হামলার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, ‘তাঁবুতে থাকা মানুষ আহমেদ মনসুরকে আগুন থেকে উদ্ধার করার জন্য মরিয়া চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু পারছিলেন না। কারণ তাঁবুতে থাকা স্পঞ্জ, কাঠ এবং নাইলন দ্রুত আগুন ধরে যায়।’

শাত নামে তার একজন সহকর্মী জানান, হঠাৎ প্রচণ্ড বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে চারপাশ।

তাঁবুতে থাকা সকল সাংবাদিকদের ঘুম ভেঙে যায়। তারা ভীত ও বিভ্রান্ত হয়ে তাঁবু ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। শাত মোবাইল হাতে তুলে ধরেন—অভ্যস্তভাবে ভিডিও ধারণের জন্য প্রস্তুত হন। 

হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া সাংবাদিক আবেদ শাত বলেন, ভোর ৩টার দিকে কোনো পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই সাংবাদিকরা যেখানে অবস্থান করছিলেন, সেই তাঁবুতে ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালায়। শাত বলেন, ‘সাংবাদিকদের জন্য তাঁবুটি সকলের কাছে পরিচিত ছিল। এটা থেকে নিশ্চিত হওয়া যেতে পারে, সাংবাদিকদের ওপর ইচ্ছা করে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।’

যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই সাংবাদিকরা হাসপাতাল চত্বরে আশ্রয় নিচ্ছেন, যেখানে অপেক্ষাকৃত ভালো ইন্টারনেট, বিদ্যুৎ ও নিরাপত্তা থাকে। আবেদ শাত বলেন, আমরা এখানেই থাকি, এখানেই ঘুমাই, এখানেই কাজ করি। পরিবারকে এতটা দেখি না, যতটা একে-অপরকে দেখি। আমাদের বন্ধন এখন শুধু কাজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এটা তার চেয়েও গভীর।

হামলা চালানো হয় টিভি চ্যানেল ‘প্যালেস্টাইন টুডে’-র সাংবাদিকদের তাঁবুতে। দূর থেকে শাত ছবি তুলছিলেন, কিন্তু জ্বলন্ত তাঁবুর কাছাকাছি গিয়েই তিনি দেখেন, তার এক সহকর্মী আগুনের মধ্যে পুড়ছেন। ক্যামেরা নামিয়ে রেখে ছুটে যান তাকে বাঁচাতে। শাত বলেন, আগুন ভয়াবহ ছিল। আমি তার পা ধরে টান দিতে চেষ্টা করি, কিন্তু প্যান্ট ছিঁড়ে যায়। এরপর অন্যভাবে চেষ্টা করি, কিন্তু কিছুতেই পারছিলাম না। শেষমেশ আমাকে সরে যেতে হয়। এরপর কিছু মানুষ পানি এনে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। শাত বলেন, আমি হঠাৎ দুর্বল হয়ে পড়ি, তারপর আর কিছু মনে নেই। জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলাম।

গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করার পর থেকে ইসরায়েল ২১১ জন ফিলিস্তিনি সাংবাদিককে হত্যা করেছে। ওয়াটসন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড পাবলিক অ্যাফেয়ার্সের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, গাজার বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধ সাংবাদিকদের জন্য ‘সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি।’

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্স-এ (সাবেক টুইটার) দাবি করেছে, তারা এই হামলা চালিয়েছে হাসান আবদেল ফাত্তাহ মুহাম্মদ ইসলাইহকে লক্ষ্য করে। ইসরায়েলের অভিযোগ, তিনি হামাসের সদস্য, সাংবাদিকের ছদ্মবেশে ছিলেন। কিন্তু সেই দাবি প্রমাণে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।

সাংবাদিক ইসলাইহর সোশ্যাল মিডিয়ায় বিপুল অনুসারী রয়েছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে দক্ষিণ ইসরায়েলের ওপর চালানো হামলার সময় তিনি ঘটনাস্থল থেকে রিপোর্ট করেছিলেন, যার জেরে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ তাকে বারবার হুমকি দিয়েছ ঘুমন্ত সাংবাদিকদের তাঁবুতে বোমা হামলা চালিয়ে একজনকে ধরার সিদ্ধান্তের পেছনে যুক্তির ব্যাখ্যা দেয়নি ইসরায়েলি বাহিনী।

সূত্র : মিডিল ইষ্ট আই, আলজাজিরা, আরব নিউজ

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ