ঢাকা, বুধবার ১৯ মার্চ ২০২৫
৫ চৈত্র ১৪৩১, ১৮ রমজান ১৪৪৬

ঢাকা, বুধবার ১৯ মার্চ ২০২৫
৫ চৈত্র ১৪৩১, ১৮ রমজান ১৪৪৬

বাবার বিয়েতে বাধা দিয়ে প্রাণ হারালেন ছেলে, প্রাণে বেঁচে গেলেন স্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
বাবার বিয়েতে বাধা দিয়ে প্রাণ হারালেন ছেলে, প্রাণে বেঁচে গেলেন স্ত্রী
প্রতীকী ছবি

৮০ বছর বয়সে দ্বিতীয় বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন এক বৃদ্ধ। কিন্তু এই বয়সে বাবার বিয়ে করা মানতে পারেননি ৫২ বছরের ছেলে। শুরু হয় বাবা-ছেলের দ্বন্দ্ব। এক পর্যায়ে বিয়ে বাঁধা দেওয়ায় ছেলেকে গুলি করে হত্যা করেন ওই বৃদ্ধ।

এমনকি আক্রমণের চেষ্টা করেন ছেলের স্ত্রীকেও। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের গুজরাটের রাজকোটে। ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

গুজরাটা পুলিশ জানায়, রাজকোটের জশদানে একটি বাড়িতে গুলির খবর পেয়ে সোমবার সেখানে যান তারা।

গুলিবিদ্ধ এক যুবককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক জানান, আগেই মৃত্যু হয়েছে তার।

এরপর তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, নিহতের নাম প্রভাত বোরিচা। আর তাকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ ওঠে ৮০ বছর বয়সী বাবার ওপর। নিহতের স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত রামভাই বোরিচাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

নিহতের স্ত্রী জয়াবেনের দাবি, তার শ্বশুর দ্বিতীয় বিয়ে করবেন বলে জানানোর পরই পরিবারে শুরু হয় অশান্তি। এই বয়সে বাবা কেন বিয়ে করবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন করেন ছেলে। আপত্তি জানান পরিবারের অন্য সদস্যরাও। কয়েক দিন ধরে এই নিয়ে অশান্তি চলছিল। তখন একবার শ্বশুর হুমকি দেন, তার বিয়েতে যে-ই বাধা হয়ে দাঁড়াবে, তাকেই তিনি খুন করবেন।

জয়াবেন আরো জানান, গত সোমবার সকালে তিনি স্বামী ও শ্বশুরকে চা খেতে দেন। বাবা-ছেলে একই ঘরে ছিলেন। চা দিয়ে তিনি রান্নাঘরের দিকে যাওয়ার সময় হঠাৎ দুটি গুলির আওয়াজ শোনেন। তিনি দৌড়ে বাড়ির দিকে ছুটে গিয়ে দেখেন দরজা বন্ধ। কয়েক সেকেন্ড পর শ্বশুর বন্দুক হাতে ঘর থেকে বেরিয়ে এসে তাকেও আক্রমণ করতে যান। কিন্তু তিনি কোনো রকমে পালিয়ে যান।

এর কিছুক্ষণ পর প্রভাত ও জয়াবেনের ছেলে বাড়িতে আসেন। মায়ের কাছে সব শুনে তিনি ঘরে ঢুকে দেখেন, মেঝেতে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে বাবার দেহ। আর দাদা বাড়িতে নেই। এরপর পুলিশকে খবর দেওয়া হয় এবং তার পরই প্রভাতকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু রাস্তাতেই তার মৃত্যু হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের স্ত্রী মারা যান ২০ বছর আগে। সম্প্রতি তিনি বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু পরিবারের সবাই তাতে আপত্তি জানায়। সে কারণে ছেলেকে তিনি গুলি করে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করা হলে তাকে পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

নাগপুরে এখনো কারফিউ চলছে, আটক ৬৫

বিবিসি
বিবিসি
শেয়ার
নাগপুরে এখনো কারফিউ চলছে, আটক ৬৫
ভারতের মহারাষ্ট্রের নাগপুরে হিন্দু-মুসলিম সহিংসতার দুই দিন পর এখনো কারফিউ জারি রয়েছে। ছবি : বিবিসি

ভারতের মহারাষ্ট্রের নাগপুরে হিন্দু-মুসলিম সহিংসতার দুই দিন পর এখনো কারফিউ জারি রয়েছে। সহিংসতার অভিযোগে এখনো পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৬৫ জনকে। অন্যদিকে যে শহরে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ইতিহাস নেই, সেখানে কিভাবে এরকম একটা ঘটনা ঘটে গেল, সেটাই ভেবে পাচ্ছে না উভয় সম্প্রদায়ের সাধারণ মানুষ।

সংবাদ সংস্থা এএনআই ও পিটিআই জানিয়েছে, নাগপুর শহরের ১০টি থানা এলাকায় এখনো কারফিউ জারি করে রেখেছে পুলিশ।

অন্যদিকে সোমবার রাত থেকে যে সহিংসতা শুরু হয়েছিল সেখানে, তার প্রেক্ষিতে পুলিশের পক্ষ থেকে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, অস্ত্র আইন, জন-সম্পত্তি ক্ষতিসাধন রোধ আইনসহ বিভিন্ন আইনের ধারায় ওই এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। এফআইআরে ৫১ জনের নাম করে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন নাবালক আছে বলেও জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা এএনআই।
তারা আরো জানিয়েছে, অভিযুক্তরা মূলত শহরের জাফরনগর, তাজবাগ, মোমিনপুরা ও ভালাদাপুরা অঞ্চলের বাসিন্দা।

পুলিশ সূত্র উদ্ধৃত করে ভারতের সংবাদমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, মূল চক্রান্তকারীকে হিসেবে ফাহিম খান নামের এক স্থানীয় রাজনৈতিক নেতার উসকানিমূলক ভাষণের একটি ভিডিও পাওয়া গেছে। তার ভিত্তিতেই বুধবার দুপুরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাকে।

নারী পুলিশের ওপরে হামলা
এদিকে পুলিশের দায়ের করা এফআইআরের উদ্ধৃতি দিয়ে এএনআই জানিয়েছে, ‘পুলিশ সদস্যদের দিকে পাথর আর পেট্রল বোমা ছোঁড়ার পরই বিক্ষোভটি সহিংস হয়ে ওঠে।

পুলিশ বারবার সতর্ক করলেও ওই জমায়েত থেকে সহিংসতা চালানো হতে থাকে, যার ফলে পুলিশ সদস্য ও বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়ে পড়ে।’

এ ছাড়া অন্ধকারের সুযোগ নারী পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয় এবং তাদের গায়ে হাত দেওয়া হয়। অশালীন অঙ্গভঙ্গিও করা হয় নারী পুলিশ সদস্য-কর্মকর্তাদের কয়েকজনের উদ্দেশে—এমনটাই জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা এএনআই।

নাগপুর শহরে যা দেখল বিবিসি
সোমবার রাতের সহিংসতার পর কেমন আছে শহর—তা দেখতে নাগপুরের নানা এলাকায় ঘুরেছেন বিবিসি সংবাদদাতা ভাগ্যশ্রী রাউত। তিনি জানিয়েছেন, যেসব এলাকায় সহিংসতা হয়েছিল, সেখানে এখন পরিস্থিতি শান্ত।

তবে দোকানপাট বন্ধ। চারদিকেই পুলিশের পাহারা আছে। তবে সহিংসতার চিহ্ন চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে।

কোনো দোকানের জানালা ভেঙে ঝুলছে। আবার কোথাও পাথর আর ইঁটের টুকরা জড়ো করে রাখা আছে। যেসব গাড়ি বা বাইক আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে জনতা, সেইসব গাড়ির কঙ্কাল পড়ে আছে রাস্তার পাশে। এর মধ্যে বসেই শহরের কয়েকজন সাধারণ মানুষ বিবিসিকে বলেছেন, নাগপুর শহর আগে কখনো এরকম সাম্প্রদায়িক সহিংসতা দেখেনি।

কী বলছেন সাধারণ মানুষ?
ভাগ্যশ্রী রাউত কথা বলেছেন হিন্দু ও মুসলিম—দুই সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে। মুসলমান প্রধান একটি এলাকার বাসিন্দা পেশায় উকিল রাকেশ দাভরিয়া বলছিলেন, ‘এই শহরের জন্য এটা আশ্চর্যজনক দৃশ্য, কিছু বুঝতেই পারছি না। দোকান খোলা আছে অথচ খদ্দের নেই। সবাই কি সেদিন দেশের আইনকানুন ভুলে গিয়েছিল? ভাইয়ের সঙ্গে ভাইয়ের সম্পর্ক ভুলে গেল সবাই?’

তিনি আরো বলেন, ‘৪০০ বছর আগে এক সম্রাট না হয় কিছু একটা করেছিলেন। কিন্তু আমরা তো থাকি বর্তমানে। আমার মুসলমানদের সঙ্গে ব্যবসা করি। আমাদের বাচ্চারা ওদের বাচ্চাদের সঙ্গে পড়াশোনা করে। তো তাদের ক্ষতি করে তো আমরা নিজেদেরই ক্ষতি করছি।’

আবার চিটনিস পার্কের কাছে দোকান মালিক আব্দুল খালেক তো কথা বলতে বলতে কেঁদেই ফেললেন। তিনি বলছিলেন, ‘আমি তো আমার জীবনেও এরকম কোনো ঘটনা দেখিনি। আমাদের শহরে তো এরকম ঘটনা হয় না। দেশের অন্যান্য শহরে যাই হোক না কেন এখানে কোনো প্রভাব পড়ে না কখনো। সেদিন রাতের সহিংসতার পর থেকে আমার দোকান বন্ধ। রোজা রাখার পরে সন্ধ্যায় মসজিদে গিয়েছিলাম। ফেরার সময়ে দেখি চারদিকে সহিংসতা শুরু হয়ে গেছে।’

কুণ্ডা যাদব নামের এক বাসিন্দা বিবিসিকে জানান, সহিংসতার সময়ে বাড়িতে শুধু নারীরাই ছিলেন। তাদের বাড়িতে পাথর ছোঁড়া হয়েছে, কাঁচের বোতল ছোঁড়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ‘ভীষণ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম ওই সময়টায়।’

মন্তব্য

শান্তিচুক্তির পরও উত্তপ্ত মণিপুর

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
শান্তিচুক্তির পরও উত্তপ্ত মণিপুর
ভারতের মণিপুরে সেনাবাহিনীর টহল। ছবি : সংগৃহীত

মার ও জোমি আদিবাসীদের সংঘর্ষে আরো একবার উত্তপ্ত হলো ভারতের মণিপুর রাজ্য। চুরাচান্দপুর জেলায় চলতি সপ্তাহের শুরু থেকেই মারদের এক নেতার ওপর হামলাকে কেন্দ্র করে অশান্তি শুরু হয়। সেই আবহে মঙ্গলবার রাতে ফের দুই আদিবাসী গোষ্ঠীর সংঘর্ষ বাধে জেলার বিস্তীর্ণ অংশজুড়ে। ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদন অনুসারে, সোমবার এলাকায় কারফিউ জারি হওয়ার পরই বৈঠকে বসেছিলেন মার ও জোমিদের প্রতিনিধিরা। দীর্ঘ বৈঠকের পর দুই পক্ষে শান্তিচুক্তিও হয়। কিন্তু তার ২৪ ঘণ্টা পেরোতে না পেরোতেই ফের সংঘর্ষ বাধে।

স্থানীয় সূত্রে জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাত থেকে সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে ওঠে চুরাচান্দপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা।

ছোড়া হয় পাথর, ভাঙচুর করা হয় বহু যানবাহন। কোথাও কোথাও গোলাগুলিও চলেছে। তবে ওই ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয়।

গত রবিবার সন্ধ্যায় চুরাচান্দপুরের জেনহাঙে ভিকে মন্টেসরি স্কুল চত্বরের ভেতর মারদের সংগঠন মার ইনপুইয়ের সাধারণ সম্পাদক রিচার্ড মারের ওপর হামলা চালায় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতিরা।

সেই হামলার পর থেকেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন মাররা। গোটা জেলায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। 
অভিযোগ, রিচার্ডের গাড়িতে ধাক্কা মেরেছিল আরেকটি গাড়ি। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিবাদ শুরু হয়। বিবাদ বাড়তে বাড়তে এক পর্যায়ে রিচার্ডের ওপর হামলা চালানো হয়।

রিচার্ডের ওপর হামলার খবর ছড়িয়ে পড়তেই প্রতিবাদে রাস্তায় নামে মাররা। পরিস্থিতি সামাল দিতে সোমবার সকাল থেকে ওই জেলায় ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার (বিএনএসএস) ১৬৩ ধারা জারি করা হয়। চুরাচান্দপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক জানিয়ে দেন, নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকাকালীন অনুমতি ছাড়া কোনো মিছিল, সমাবেশের আয়োজন করা যাবে না। কেউ লাঠি, পাথর বা কোনো রকমের অস্ত্রও বহন করতে পারবে না।

২০২৩ সাল থেকেই কুকি ও মেইতেইদের দ্বন্দ্বে অশান্ত মণিপুর। রাষ্ট্রপতি শাসন জারির পর পরিস্থিতি খানিক নিয়ন্ত্রণে এলেও এখনো বিক্ষিপ্ত অশান্তি চলছে রাজ্যজুড়ে। চলতি মাসের শুরুতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর ‘অবাধ চলাচল’ নির্দেশের প্রতিবাদে মণিপুরের কুকি অধ্যুষিত এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। গত ১৩ মার্চ ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হলেও কুকিরা জানিয়ে দেয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশ তারা মানবে না৷ কুকিদের দাবিদাওয়া পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা ‘অবাধ চলাচলের’ বিরোধিতা করে যাবে।

মন্তব্য

কেনেডি হত্যা সম্পর্কিত চূড়ান্ত নথি প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
কেনেডি হত্যা সম্পর্কিত চূড়ান্ত নথি প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র
ছবিসূত্র : এএফপি

মার্কিন জাতীয় আর্কাইভ যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পর্কিত নথির চূড়ান্ত দলিল প্রকাশ করেছে। গতকাল মঙ্গলবার এই দলিল প্রকাশ করে। মৃত্যুর ৬০ বছরেরও বেশি সময় পরেও ষড়যন্ত্র তত্ত্বকে উসকে দিয়েছে এই মামলাটি।

আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা গ্রহণের পর জানুয়ারিতে জেএফকে হত্যাকাণ্ডের সব অবশিষ্ট রেকর্ড প্রকাশের আহ্বান জানিয়ে একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

যেখানে তার ভাই, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল রবার্ট এফ কেনেডি এবং নাগরিক অধিকার নেতা মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পর্কিত অবশিষ্ট ফাইলগুলো অসম্পাদিতভাবে প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আনুষ্ঠানিকভাবে জানুয়ারিতে ক্ষমতাগ্রহণ করেন ট্রাম্প। তার জারি করা একটি নির্বাহী আদেশ অনুসরণ করে কেনেডি হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত নথি প্রকাশ করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। শুধু কেনেডিই নয়, কেনেডির ভাই, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল রবার্ট এফ কেনেডি এবং নাগরিক অধিকার নেতা মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের হত্যার সঙ্গে সম্পর্কিত অবশিষ্ট নথিগুলো অসম্পাদিতভাবে প্রকাশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আর্কাইভস তাদের ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশ অনুসারে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট  জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের নথি সংগ্রহের অংশ হিসেবে শ্রেণীবদ্ধকরণের জন্য পূর্বে আটকে রাখা সব নথি বা দলিল প্রকাশ করা হয়েছে।’

জাতীয় আর্কাইভস গত কয়েক দশক ধরে ১৯৬৩ সালের নভেম্বরে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট কেনেডির হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পর্কিত লাখ লাখ পৃষ্ঠার রেকর্ড প্রকাশ করেছে, কিন্তু জাতীয় নিরাপত্তা উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এবং ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের অনুরোধে হাজার হাজার নথি আটকে রাখা হয়েছিল।

ওয়ারেন কমিশন যারা প্রেসিডেন্টেকে গুলি চালানোর ঘটনা নিয়ে তদন্ত করেছিল। ওয়ারেন কমিশন এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে অত্যন্ত দক্ষ একজন শ্যুটার সাবেক মেরিন লি হার্ভে ওসওয়াল্ড একাই এই কাজ করেছিলেন।

কিন্তু এই আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্তটি টেক্সাসের ডালাসে কেনেডির হত্যার পেছনে আরো ভয়াবহ ষড়যন্ত্রের জড়িত থাকার জল্পনাকে থামাতে খুব একটা সাহায্য করেনি এবং সরকারি নথিগুলোর ধীরগতিতে প্রকাশ বিভিন্ন ষড়যন্ত্র তত্ত্বকে আরো বাড়িয়ে তুলেছে। 

১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বর টেক্সাসের ডালাসে নিহত হন জনএফ কেনেডি। কেনেডি হত্যার দুই দিন পর, ১৯৬৩ সালের ২৪ নভেম্বর একটি কাউন্টি কারাগারে স্থানান্তরিত হওয়ার সময়, ওসওয়াল্ডকে একজন ক্লাবের মালিক জ্যাক রুবি গুলি করে হত্যা করে। 

ইতোমধ্যে প্রকাশিত অনেক রেকর্ডই ছিল অপ্রচলিত গোয়েন্দা তথ্য। যার মধ্যে রয়েছে এফবিআই এজেন্টদের কাছ থেকে পাওয়া অসংখ্য তথ্য অনুসরণ করে এমন প্রতিবেদন যা কোনো ফলাফল দেয়নি।

এগুলোতে যা আছে তার বেশির ভাগই আগে থেকেই জানা ছিল। যেমন সিআইএ কিউবার ফিদেল কাস্ত্রোকে হত্যার জন্য বেশ কয়েকটি অদ্ভুত ষড়যন্ত্র তৈরি করেছিল।

সূত্র : এএফপি

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

জীবাশ্ম জ্বালানির গুরুতর প্রভাব, কোথায় দাঁড়িয়ে বিশ্বের উষ্ণায়ন?

ডয়চে ভেলে
ডয়চে ভেলে
শেয়ার
জীবাশ্ম জ্বালানির গুরুতর প্রভাব, কোথায় দাঁড়িয়ে বিশ্বের উষ্ণায়ন?
ছবিসূত্র : এএফপি

বিশ্ব আবহাওয়া দপ্তর বা ডাব্লিউএমও-এর তথ্য বলছে, ২০২৪ ছিল উষ্ণতম বছর। জলবায়ু পরিবর্তনই তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণ। গত ১২ মাসের হিসেবও খুব একটা আশাব্যাঞ্জক নয়। 

১৮৫০ থেকে ১৯০০ সালের তুলনায় গত এক বছরে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা এক দশমিক ৫৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস (দুই দশমিক ৭৮ ফারেনহাইট) বেশি থেকেছে।

এর আগে এতটা ব্যাপক হারে ফসিল ফুয়েল বা জীবাশ্ম থেকে তৈরি জ্বালানির ব্যবহার ছিল না। বর্তমান তাপমাত্রা ২০২৩ এর রেকর্ডকেও ছাপিয়ে গেছে।

প্যারিস জলবায়ু চুক্তি অনুসারে সরকারগুলো বিশ্বের উষ্ণায়নকে শিল্পযুগের আগের পর্যায়ের তুলনায় দুই ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের মধ্যে রাখার অঙ্গিকার করেছিল। একইসঙ্গে তারা উষ্ণায়নের মাত্রাকে এক দশমিক পাঁচ ডিগ্রির নিচে রাখতে চেষ্টা চালাবে বলেও জানিয়েছিল।

উষ্ণায়নের গড় তাপমাত্রা দশক ধরে মাপা হয়।

ডাব্লিউএমও বার্ষিক রিপোর্টে প্যারিসের লক্ষ্যমাত্রা না ছাড়ালেও উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ আছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই রিপোর্ট অনুযায়ী বর্তমানে দীর্ঘমেয়াদী উষ্ণায়ন এক দশমিক ৩৪ থেকে এক দশমিক ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রয়েছে।

জীবাশ্ম জ্বালানির প্রভাব গুরুতর

জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে তৈরি কার্বন ডাই অক্সাইড আমাদের ক্ষতির পরিমাণ বাড়াচ্ছে বলে জানাচ্ছেন গবেষকরা।

তাদের মতে কার্বন ডাই অক্সাইড বিগত ২০ লক্ষ বছরের তুলনায় বেশি জমা হচ্ছে।

ডাব্লিউএমও-এর প্রধান সেলেস্টে সাউলোর মতে, এই নতুন তথ্য আমাদের জীবন, অর্থনীতি এবং সর্বোপরি পৃথিবীর জন্য যথেষ্ট উদ্বেগের। ডাব্লিউএমও-র রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৪ এর তাপমাত্রার পরিবর্তনের পিছনে শৈত্য প্রবাহ লা নিনা থেকে উষ্ণ প্রবাহ এল নিনোতে পরিবর্তনই দায়ি। যদিও গবেষকদের মতে হাওয়ার উষ্ণতা বৃদ্ধি আসলে একটা বড় পরিবর্তনের অংশ মাত্র।

আরো পড়ুন
নাইট্রোজেন গ্যাস দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

নাইট্রোজেন গ্যাস দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

 

 

এই উষ্ণায়নের প্রভাব পড়ছে সামুদ্রিক ইকোসিস্টেমে।

এর ফলে সমুদ্রের জীববৈচিত্র হ্রাস পাচ্ছে। সমুদ্রের কার্বন শোষণের ক্ষমতা কমছে। একই ভাবে তাপমাত্রা বাড়ার জন্য সামুদ্রিক ঝড় তৈরি হচ্ছে। পানিতে অ্যাসিড বেড়ে যাওয়ার কারণে মাছেদের ক্ষতি হচ্ছে, যার প্রভাব পড়ছে মৎস্যজীবীদের ওপর। উপরন্তু, সমুদ্র-স্তর বেড়ে যাওয়ার কারণে উপকূলবর্তী অঞ্চলের স্বাভাবিক জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

পরিবেশ-বান্ধব জ্বালানি কি পারবে পৃথিবীকে রক্ষা করতে?

২০২৩-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিশ্বের সামগ্রিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৩০ শতাংশ সৌর ও বায়ু শক্তির সাহায্যে তৈরি হয়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের কথা বললেও সে দেশে সৌরশক্তির ব্যবহার বাড়ছে। গত বছরের তথ্য অনুযায়ী সৌরশক্তি দিয়ে দেশের সাত শতাংশ বিদ্যুৎ প্রয়োজন মিটতে পারে। পরিবেশ বান্ধব শক্তি ব্যবহারের ব্যয় বিগত কয়েক বছরে অনেক কমেছে। তা সত্ত্বেও চিন্তিত বিশ্বের বৈজ্ঞানিকরা। 

আরো পড়ুন
ট্রান্সজেন্ডার নিয়ে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের ওপর আদালতের স্থগিতাদেশ

ট্রান্সজেন্ডার নিয়ে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের ওপর আদালতের স্থগিতাদেশ

 

ডাব্লিউএমও-এর রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পরে যুক্তরাজ্যের জাতীয় আবহাওয়া ও জলবায়ু দপ্তরের প্রধান বিজ্ঞানী স্টিফেন বেলচার জানিয়েছেন, ‘পৃথিবীর শরীর ভাল নেই।’ তিনি আরো জানান এই পরিস্থিতিতেই সাবধান না হলে বন্যা বা খরার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্ভবনা ক্রমশই বাড়বে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ