যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে বসবাসরত মুসলিমদের হুমকি দেওয়া নতুন কিছু নয়। তবে সম্প্রতি সেখানকার মুসলিম আবাসন সম্প্রসারণ প্রকল্পের নির্মাতা ইমরান চৌধুরীর কাছে হুমকি দেওয়া ফোনকলের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।
পূর্ব টেক্সাসের ঘনবসতিপূর্ণ ইস্ট প্লানো এলাকার কাছে ক্রমবর্ধমান মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য এক হাজার নতুন বাড়ি, একটি কমিউনিটি সেন্টার, স্কুল, হাসপাতাল, একটি মসজিদ ও ইসলামিক স্কুল নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে ইমরানের।
সম্প্রতি অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি ইমরানকে ফোন করে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘আমি আপনাকে আমেরিকা থেকে বের হয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি।
এটি এখনো একটি বিকল্প।’
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত এই অঙ্গরাজ্যের রক্ষণশীল, শ্বেতাঙ্গ ও খ্রিস্টানরা ইমরানের প্রকল্পকে মোটেও স্বাগত জানাচ্ছে না। তারা এরই মধ্যে প্রকল্পের বৈধতার তদন্ত চেয়েছে।
তবে ইমরান বলছেন, ভুল বুঝিয়ে চাপ দেওয়া হচ্ছে।
তাঁর ভাষ্য, ‘অঙ্গরাজ্য থেকে শুরু করে কেন্দ্র পর্যন্ত প্রতিটি আইন অনুসরণের চেষ্টা করছি আমরা।’
তবে গত সপ্তাহে সিনেটর জন কর্নিন এই প্রকল্পের সাংবিধানিক বৈধতা তদন্তের আহবান জানিয়েছেন, যা ইস্ট প্লানো ইসলামিক সেন্টার নামের বিদ্যমান প্রকল্পের সম্প্রসারণ। তিনি বলেন, ‘এই প্রকল্প ইহুদি ও খ্রিস্টানদের সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করতে পারে।’
এদিকে টেক্সাসের গভর্নর ও ট্রাম্পের মিত্র গ্রেগ অ্যাবট এই প্রকল্পকে ইসলামী আইন প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা আখ্যা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘স্পষ্ট করে বলতে চাই, টেক্সাসে শরিয়াহ আইনের অনুমোদন নেই।’
যুক্তরাষ্ট্রের যেসব অঙ্গরাজ্যে শরিয়াহ আইনবিরোধী বিল কার্যকর হয়েছে, তার একটি টেক্সাস। বিদ্বেষবিরোধী সংগঠন সাউদার্ন পভার্টি ল সেন্টার শরিয়াহ আইনবিরোধী বিলকে অতি ডানপন্থী ষড়যন্ত্র আখ্যা দিয়েছে।
ষড়যন্ত্র তত্ত্বের আওতায় দাবি করা হয়, শরিয়াহ আইন আমেরিকান আইনি ব্যবস্থার ওপর হস্তক্ষেপ করছে। তবে আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন ও অন্য আইন বিশেষজ্ঞরা তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।
শুধু মুসলিমদের জন্য একটি শহরের পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করে ইমরান বলেন, ‘এটি সবার জন্য উন্মুক্ত, যে কেউ আমাদের পরিষেবা, কমিউনিটি সেন্টার ও স্কুল ব্যবহার করতে পারবে।’
বছর বিশেক আগে ডালাসের উত্তরে প্লানোতে এপিক ইসলামিক কমিউনিটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই এলাকায় প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের বাস। সেখানকার মসজিদের ইমাম ইয়াসির কাধি বলেন, উষ্ণ আবহাওয়া, কম কর এবং ভালো খাবারের কারণে মুসলিমরা টেক্সাসকে পছন্দ করে।
ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউয়ের হিসাব অনুযায়ী, টেক্সাসে তিন কোটি ১০ লাখ মানুষের বসবাস। এর মধ্যে মুসলিম তিন লাখ ১৩ হাজার। সূত্র : এএফপি