কঠোর অভিযান চালাতে হবে

  • রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা ছড়িয়ে পড়ছে
শেয়ার
কঠোর অভিযান চালাতে হবে

রোহিঙ্গা সংকট ক্রমেই জটিল হচ্ছে। যত দিন যাচ্ছে, সংকট নানামুখী ডালপালা বিস্তার করছে। রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন সশস্ত্র সংগঠনের তৎপরতা ক্রমেই প্রকাশ্য হচ্ছে। খুনাখুনি লেগেই আছে।

মাদক ও অস্ত্র পাচার, অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়সহ আরো অনেক অপরাধের সঙ্গে তাদের একটি অংশ জড়িয়ে গেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে থাকা সন্ত্রাসী-অপরাধীদের সঙ্গেও তাদের সখ্য গড়ে উঠেছে। গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সদস্যরা দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। তারা মাদক বিক্রি করছে আর সেই টাকায় অস্ত্র কিনে ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা বাড়াচ্ছে।
তাদের দৌরাত্ম্যে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সারা দেশে  র‌্যাবের বিশেষ অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে  র‌্যাব সদর দপ্তর সূত্র।

সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ ও ময়মনসিংহে পৃথক অভিযান চালিয়ে আরসা নেতা আতাউল্লাহসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।  র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান লে. কর্নেল আশিকুর রহমান গত বৃহস্পতিবার কালের কণ্ঠকে বলেন, আরসার রয়েছে বিপুল অস্ত্রভাণ্ডার।

তিনি বলেন, ধরা পড়ার আগে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা সিদ্ধিরগঞ্জ ও ময়মনসিংহের সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে চলাফেরা করেছে বলে তথ্য পেয়েছি। গোপন বৈঠকও করেছে। তারা কিভাবে ওই এলাকায় ঢুকল, তাদের টাকার উৎস, অস্ত্রের উৎস কী, তাদের আরো কত সদস্য রয়েছে, কত নেতা এভাবে দেশে আত্মগোপনে রয়েছেএসবের খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। তাদের ধরতে  র‌্যাবের সব ব্যাটালিয়ন অভিযান শুরু করেছে।

রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর সশস্ত্র তৎপরতায় সাধারণ রোহিঙ্গারা সব সময় তটস্থ থাকে।

প্রায়ই হামলা, গোলাগুলি বা খুনখারাবির ঘটনা ঘটে। সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রায়ই সংঘর্ষ হয়। ২০২৩ সালের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, পাঁচ বছরে ১২ ধরনের অপরাধে দেড় হাজারের বেশি মামলাও হয়েছে রোহিঙ্গা অপরাধীদের বিরুদ্ধে। স্থানীয় অপরাধীদের সঙ্গেও তাদের সম্পৃক্ততা তৈরি হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তাদের কাছে প্রচুর পরিমাণে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। পাঁচ বছরে দুই লাখের বেশি রোহিঙ্গা ক্যাম্প ছেড়ে পালিয়ে গেছে। অনেক নিরাপত্তা বিশ্লেষকের ধারণা, এখনই পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া না হলে শিগগিরই তারা জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড় ধরনের সংকট তৈরি করতে পারে, বিশেষ করে যেভাবে সারা দেশে তাদের উপস্থিতি পাওয়া যাচ্ছে।

আমরা মনে করি, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশকে আরো সক্রিয় হতে হবে। ক্যাম্পের বাইরে রোহিঙ্গাদের ছড়িয়ে যাওয়া রোধ করতে হবে। সশস্ত্র সংগঠনগুলোর তৎপরতা সর্বোচ্চ কঠোরতায় দমন করতে হবে। প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়া দ্রুততর করতে হবে। চোরাচালান বন্ধে সীমান্তে সর্বোচ্চ কড়াকড়ি আরোপ করা প্রয়োজন।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

আলু চাষিদের রক্ষা করুন

    হিমাগারে স্লিপ কারসাজি
শেয়ার
আলু চাষিদের রক্ষা করুন

চলতি মৌসুমে আলুর ফলন খুবই ভালো হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) তথ্য অনুযায়ী, দেশে আলুর উৎপাদন ছাড়িয়েছে এক কোটি ৯ লাখ টন। অন্যদিকে দেশে এক বছরে আলুর মোট চাহিদা ৯০ লাখ টন। ফলে চাহিদার চেয়েও ১৯ লাখ টন বা ২২ শতাংশ আলু বেশি উৎপাদিত হয়েছে।

আর এতেই বিপদে পড়েছেন আলু চাষিরা। আলুর দাম এতটাই পড়ে গেছে যে আলুর উৎপাদন খরচও উঠছে না। প্রতি কেজি আলুতে লোকসান দিতে হচ্ছে সাত-আট টাকা। তাঁরা হিমাগারেও আলু রাখতে পারছেন না।
কারণ সরকার নির্ধারিত ভাড়ায় আলু রাখছেন না হিমাগার মালিকরা। কারসাজির মাধ্যমে নামে-বেনামে, আত্মীয়-স্বজন ও পরিজনদের নামে আগে থেকেই স্লিপ কেটে রেখেছেন মালিকরা। এরপর কৃষক আলু রাখতে গেলে তাঁদের বলা হচ্ছে হিমাগারে জায়গা নেই। ফলে যাঁরা স্লিপ কেটে রেখেছেন, তাঁদের কাছে নামমাত্র মূল্যে আলু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষকরা।
আর যেসব ব্যবসায়ী আলু কিনে হিমাগারে রেখে পরে বিক্রি করেন, তাঁদের অনেকে এবার আলু কিনতে পারছেন না। কারণ তাঁরাও স্লিপ পাচ্ছেন না। ফলে হিমাগার মালিকদের এজেন্টরা রীতিমতো শোষণ করছেন।

আলু পচনশীল পণ্য। যে দামই পান, কৃষককে বিক্রি করে দিতেই হবে।

গতবার আলুর অতিরিক্ত দাম থাকায় কৃষকরা এবার বেশি আলু চাষ করে এখন বিপাকে পড়েছেন। জানা যায়, এ বছর প্রতি কেজি আলুর উৎপাদন খরচ হয়েছে ১৯-২০ টাকা। কৃষকরা এখন প্রতি কেজি আলু ১০ থেকে ১২ টাকা বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। গড়ে প্রতিবছর রপ্তানি হয় ৫০ হাজার টন। এ বছর রপ্তানির পরও সাড়ে ১৮ লাখ টন আলু উদ্বৃত্ত থেকে যাবে। অনেক আলু নষ্ট হবে। অথচ মৌসুম শেষে এই আলুই অনেক বেশি মূল্যে হিমাগার থেকে বাইরে আসবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আলু চাষিদের রক্ষায় সরকারকে আলু রপ্তানি বাড়ানোর বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে এবং তা করতে হবে অত্যন্ত দ্রুত। হিমাগারগুলোর ওপর নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে হবে। যেকোনো কারসাজির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। দীর্ঘ মেয়াদে দেশে হিমাগারের সংখ্যা বাড়াতে হবে।

মন্তব্য

সহিংসতা কাম্য নয়

    হঠাৎ উত্তপ্ত রাজনীতির মাঠ
শেয়ার
সহিংসতা কাম্য নয়

দীর্ঘদিন ধরেই জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় ভূমিকা রেখে এসেছে। এখনো তারা একই ভূমিকায় রয়েছে। তারা চায় বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আগামী নির্বাচন হোক সুষ্ঠু, স্বচ্ছ, অবাধ, নিরপেক্ষ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক। নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রতিটি পদক্ষেপে যেন জবাবদিহি নিশ্চিত হয়।

গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের (আইসিজি) প্রেসিডেন্ট ড. কমফোর্ট ইরোর নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই বৈঠকে গণতন্ত্রের বৈশ্বিক প্রত্যাশার সঙ্গে সংগতি রেখেই প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, সরকারের কোনো পরিকল্পনাই নেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার। তবে যেসব নেতার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে, তাঁদের বিচার চলবে এবং তাঁরা আইন অনুযায়ী শাস্তি পাবেন। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টার এই বক্তব্যকে মেনে নিতে পারেনি অনেক রাজনৈতিক দল।
আবার অনেকে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যকে সমর্থনও করেছে। এরই মধ্যে এই বক্তব্যের পক্ষে-বিপক্ষে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকে কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছে। ফলে হঠাৎ করেই রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
দেশ আবার সংঘাতময় হয়ে ওঠে কি না, সে আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন সাধারণ মানুষও।

প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের পর জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ অনেক রাজনৈতিক দলে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তবে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী কৌশলী অবস্থান নিয়েছে। তারা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে স্পষ্ট করে কিছু বলেনি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য দেশের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

একদিকে সরকার আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করার প্রতিশ্রুতি প্রদান করছে, অন্যদিকে দলটির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বিচারের আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। কারো মতে, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে সরকারের কার্যক্রম ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি বলে দেবে এই সিদ্ধান্ত দেশে স্থিতিশীলতা আনবে, নাকি নতুন করে সংঘাতের জন্ম দেবে। এর আগে বিভিন্ন সময়ই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অনেক জ্যেষ্ঠ নেতা বলেছেন, তাঁরা কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার পক্ষে নন। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহবায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে এবং এই মাফিয়াগোষ্ঠীর রাজনীতিতে ফেরার যেকোনো প্রচেষ্টাকে প্রতিহত করা হবে। এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে কোনো ধরনের আপস করার সুযোগ নেই। এনসিপির উত্তরাঞ্চলের সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, লড়াইয়ের দ্বিতীয় অধ্যায়ের জন্য আমরা প্রস্তুত। এদিকে দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ চিন্তা করে অনেকেই উদ্বেগ অনুভব করছে। এদিকে যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গত শুক্রবার রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ নিরাপত্তা চৌকি বসানো হয়। সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সতর্ক অবস্থানে ছিল যৌথ বাহিনী। প্রস্তুত ছিল পুলিশের রায়টকারসহ বিশেষ সরঞ্জাম।

মানুষ চায় গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দেশ এগিয়ে যাক। সহিংসতা কারোই কাম্য নয়। এই অবস্থায় সবারই উচিত সহনশীলতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা। যেকোনো মূল্যে দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে হবে।

মন্তব্য

ভোগান্তি কমানোর উদ্যোগ নিন

    শুরু হচ্ছে ঈদে ঘরমুখো যাত্রা
শেয়ার
ভোগান্তি কমানোর উদ্যোগ নিন

বছরে দুটি ঈদে নাড়ির টানে মানুষ ছুটে যায় আত্মীয়-পরিজনদের কাছে। সামনে পবিত্র ঈদুল ফিতর। পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঈদ উৎসব উদযাপন করতে এরই মধ্যে মানুষ বাড়িমুখো হতে শুরু করেছে। গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এবার ঈদুল ফিতরে এক কোটি ২০ লাখের মতো মানুষ রাজধানী ছেড়ে যাবে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ধারণা, এবারের ঈদ যাত্রা কিছুটা কষ্টকর হতে পারে। একদিকে রয়েছে যানজটের ভোগান্তি, অন্যদিকে রয়েছে নিরাপত্তাঝুঁকি। বিশেষ করে ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা-সিলেটসহ পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কের ১৫৯টি স্পটে যানজটের আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর বাইপাইল ও চন্দ্রা মোড়ে যানবাহনের প্রচণ্ড চাপ থাকতে পারে।

জননিরাপত্তা বিভাগের তথ্যানুযায়ী, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ৩৮-৩৯টি সড়কের অবস্থা যথেষ্ট খারাপ, যা দ্রুত মেরামত প্রয়োজন। এরই মধ্যে যানজট নিরসনে জননিরাপত্তা বিভাগ ঈদের আগে ও পরে চিহ্নিত স্পটগুলোতে বিশেষ নজরদারি রাখতে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়কে কিছু পরামর্শ দিয়েছে। জাতীয় মহাসড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ করিডরগুলোর সড়ক ঈদের সাত দিন আগেই মেরামত কিংবা সংস্কার করতে বলা হয়েছে। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক সূত্র জানায়, যানজটের আশঙ্কা করা চিহ্নিত ১৫৯টি স্পটের মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে রয়েছে ৪৯টি স্পট।

ঢাকা-উত্তরবঙ্গ মহাসড়কে রয়েছে ৫৪টি স্পট। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে রয়েছে ছয়টি স্পট। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে রয়েছে ৪২টি স্পট এবং ঢাকা-পাটুরিয়া-আরিচা মহাসড়কে রয়েছে আটটি স্পট। উত্তরবঙ্গের প্রবেশপথ ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কের টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে সেতু পর্যন্ত এবারও যানজট হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অনেক অবনতি হয়েছে।

ডাকাতি, ছিনতাই অনেক বেড়েছে। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে রাতে মহাসড়কে গাছ ফেলে যানবাহন আটকে গণডাকাতির বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে। হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে প্রায় ৭০০ পুলিশ সদস্য কাজ করবেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন, এই সংখ্যা পর্যাপ্ত নয়। অন্যান্য বাহিনীকেও কাজে লাগাতে হবে। মানুষ শুধু পরিবারের কাছে যাবেই না, ঈদ শেষে আবার কর্মস্থলেও ফিরবে। এতে ঈদের আগে ও পরে কমপক্ষে এক সপ্তাহ করে দুই সপ্তাহের জন্য যানজট নিরসন, দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ও নিরাপত্তার বিশেষ ব্যবস্থা করতে হবে।

আগের তুলনায় রেলওয়ের অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তা সত্ত্বেও প্রায়ই লাইনচ্যুতির অনেক ঘটনা ঘটছে। রেলপথ সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণে দ্রুত উদ্যোগ নিতে হবে। ত্রুটিপূর্ণ নৌযান, অত্যধিক যাত্রী পরিবহন এবং প্রশিক্ষণহীন চালকের কারণে প্রায়ই নৌদুর্ঘটনা ঘটে। এবার যেন সে রকম কোনো দুঃখজনক ঘটনা না ঘটে সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে।

আমরা আশা করি, এবারের ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

 

মন্তব্য

শুল্ক-কর কমানো প্রয়োজন

    সংকটে নির্মাণশিল্প
শেয়ার
শুল্ক-কর কমানো প্রয়োজন

দেশের অর্থনীতিতে এখন নানামুখী সংকট চলছে। সংকট উত্তরণে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হলেও অনেক সংকট থেকেই গেছে। আগে থেকেই অর্থনীতির স্থবিরতা, এরপর ক্ষমতার পালাবদলের রেশ, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, ব্যবসা-উদ্যোগে আস্থাহীনতা, ডলার সংকট, উচ্চ সুদহার, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ব্যাংক খাতের দুর্বলতা, রাজস্ব আয়ে বড় ঘাটতিসব মিলিয়ে অর্থনীতি ঠিকমতো ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। এসবের প্রভাব পড়েছে দেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান খাত নির্মাণশিল্পেও।

বিশেষ করে আবাসন ও অবকাঠামো খাতসহ সরকারের সব ধরনের অবকাঠামো উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ব্যাপক প্রভাব পড়ছে।

সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম বাস্তবায়িত হয়েছে। তা ১৭ শতাংশের কাছাকাছি। এর অর্থ হলো দেশের সরকারি উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বলতে গেলে স্থবির।

এ খাতে সরকারের অর্থায়ন ছাড় হয়েছে কম। ফলে দেশব্যাপী যে কর্মযজ্ঞ হওয়ার কথা ছিল, সেটি হয়নি। বিপুলসংখ্যক মানুষ কাজের সুযোগ হারিয়েছে। আবার এসব কাজের সঙ্গে জড়িত ঠিকাদারিসহ অন্যান্য ব্যবসা বা উদ্যোগও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
একইভাবে বেসরকারি খাতেও নির্মাণ ও অবকাঠামো উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রায় স্থবির হয়ে গেছে। বেসরকারি পর্যায়ে আবাসন খাতের উদ্যোক্তাদের মতে, তাঁদের ব্যবসা ৩০ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমে গেছে। নতুন বিনিয়োগ নেই। কোনো কোনো উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান চালানোর খরচও মেটাতে পারছেন না বলেও খবর প্রকাশিত হয়েছে। মোটকথা, নির্মাণশিল্পের সঙ্গে জড়িতদের অবস্থা এখন খুবই নাজুক।
এমন প্রেক্ষাপটে আসছে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট। নির্মাণশিল্পের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত হাউজিং, সিমেন্ট, স্টিল, বালু, সিরামিক, হার্ডওয়্যারসহ এ রকম শতাধিক ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে এ খাতে শুল্ক-কর কমানোর দাবি জানিয়েছেন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমইএ) ও বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএসএমএ) নির্মাণ খাতকে এগিয়ে নিতে এ খাতের শুল্ক-কর কমানোর আহ্বান জানায়। তারা চায় আসছে বাজেটে সিমেন্টের মূল উপকরণ ক্লিংকারের শুল্ক প্রতি মেট্রিক টনে ৫০০ থেকে কমিয়ে ২০০ টাকা করা হোক। একইভাবে নির্মাণশিল্পের অন্যতম প্রয়োজনীয় উপকরণ স্টিলের নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক প্রত্যাহার ও শুল্কহার কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণেরও প্রস্তাব উদ্যোক্তাদের।

আমরা মনে করি, নির্মাণ খাতকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে এ খাতের সঙ্গে জড়িত শতাধিক উপখাতকে টিকিয়ে রাখা, ব্যবসা চাঙ্গা করা এবং নতুন বিনিয়োগ-কর্মসংস্থান করতে হলে উদ্যোক্তাদের দাবিগুলো সদয় বিবেচনায় নিতে হবে। আসছে বাজেটে ব্যবসাবান্ধব নীতি গ্রহণ করা হলে অর্থনীতিতে যে স্থবিরতা বিরাজ করছে, তা অনেকটাই কেটে যাবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ