রোহিঙ্গা সংকট ক্রমেই জটিল হচ্ছে। যত দিন যাচ্ছে, সংকট নানামুখী ডালপালা বিস্তার করছে। রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন সশস্ত্র সংগঠনের তৎপরতা ক্রমেই প্রকাশ্য হচ্ছে। খুনাখুনি লেগেই আছে।
রোহিঙ্গা সংকট ক্রমেই জটিল হচ্ছে। যত দিন যাচ্ছে, সংকট নানামুখী ডালপালা বিস্তার করছে। রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন সশস্ত্র সংগঠনের তৎপরতা ক্রমেই প্রকাশ্য হচ্ছে। খুনাখুনি লেগেই আছে।
সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ ও ময়মনসিংহে পৃথক অভিযান চালিয়ে আরসা নেতা আতাউল্লাহসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান লে. কর্নেল আশিকুর রহমান গত বৃহস্পতিবার কালের কণ্ঠকে বলেন, আরসার রয়েছে বিপুল অস্ত্রভাণ্ডার।
রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর সশস্ত্র তৎপরতায় সাধারণ রোহিঙ্গারা সব সময় তটস্থ থাকে।
আমরা মনে করি, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশকে আরো সক্রিয় হতে হবে। ক্যাম্পের বাইরে রোহিঙ্গাদের ছড়িয়ে যাওয়া রোধ করতে হবে। সশস্ত্র সংগঠনগুলোর তৎপরতা সর্বোচ্চ কঠোরতায় দমন করতে হবে। প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়া দ্রুততর করতে হবে। চোরাচালান বন্ধে সীমান্তে সর্বোচ্চ কড়াকড়ি আরোপ করা প্রয়োজন।
সম্পর্কিত খবর
চলতি মৌসুমে আলুর ফলন খুবই ভালো হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) তথ্য অনুযায়ী, দেশে আলুর উৎপাদন ছাড়িয়েছে এক কোটি ৯ লাখ টন। অন্যদিকে দেশে এক বছরে আলুর মোট চাহিদা ৯০ লাখ টন। ফলে চাহিদার চেয়েও ১৯ লাখ টন বা ২২ শতাংশ আলু বেশি উৎপাদিত হয়েছে।
আলু পচনশীল পণ্য। যে দামই পান, কৃষককে বিক্রি করে দিতেই হবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আলু চাষিদের রক্ষায় সরকারকে আলু রপ্তানি বাড়ানোর বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে এবং তা করতে হবে অত্যন্ত দ্রুত। হিমাগারগুলোর ওপর নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে হবে। যেকোনো কারসাজির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। দীর্ঘ মেয়াদে দেশে হিমাগারের সংখ্যা বাড়াতে হবে।
দীর্ঘদিন ধরেই জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় ভূমিকা রেখে এসেছে। এখনো তারা একই ভূমিকায় রয়েছে। তারা চায় বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আগামী নির্বাচন হোক সুষ্ঠু, স্বচ্ছ, অবাধ, নিরপেক্ষ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক। নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রতিটি পদক্ষেপে যেন জবাবদিহি নিশ্চিত হয়।
প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের পর জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ অনেক রাজনৈতিক দলে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তবে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী কৌশলী অবস্থান নিয়েছে। তারা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে স্পষ্ট করে কিছু বলেনি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য দেশের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
মানুষ চায় গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দেশ এগিয়ে যাক। সহিংসতা কারোই কাম্য নয়। এই অবস্থায় সবারই উচিত সহনশীলতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা। যেকোনো মূল্যে দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে হবে।
বছরে দুটি ঈদে নাড়ির টানে মানুষ ছুটে যায় আত্মীয়-পরিজনদের কাছে। সামনে পবিত্র ঈদুল ফিতর। পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঈদ উৎসব উদযাপন করতে এরই মধ্যে মানুষ বাড়িমুখো হতে শুরু করেছে। গতকাল কালের কণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এবার ঈদুল ফিতরে এক কোটি ২০ লাখের মতো মানুষ রাজধানী ছেড়ে যাবে।
জননিরাপত্তা বিভাগের তথ্যানুযায়ী, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ৩৮-৩৯টি সড়কের অবস্থা যথেষ্ট খারাপ, যা দ্রুত মেরামত প্রয়োজন। এরই মধ্যে যানজট নিরসনে জননিরাপত্তা বিভাগ ঈদের আগে ও পরে চিহ্নিত স্পটগুলোতে বিশেষ নজরদারি রাখতে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়কে কিছু পরামর্শ দিয়েছে। জাতীয় মহাসড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ করিডরগুলোর সড়ক ঈদের সাত দিন আগেই মেরামত কিংবা সংস্কার করতে বলা হয়েছে। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক সূত্র জানায়, যানজটের আশঙ্কা করা চিহ্নিত ১৫৯টি স্পটের মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে রয়েছে ৪৯টি স্পট।
দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অনেক অবনতি হয়েছে।
আগের তুলনায় রেলওয়ের অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তা সত্ত্বেও প্রায়ই লাইনচ্যুতির অনেক ঘটনা ঘটছে। রেলপথ সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণে দ্রুত উদ্যোগ নিতে হবে। ত্রুটিপূর্ণ নৌযান, অত্যধিক যাত্রী পরিবহন এবং প্রশিক্ষণহীন চালকের কারণে প্রায়ই নৌদুর্ঘটনা ঘটে। এবার যেন সে রকম কোনো দুঃখজনক ঘটনা না ঘটে সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে।
আমরা আশা করি, এবারের ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
দেশের অর্থনীতিতে এখন নানামুখী সংকট চলছে। সংকট উত্তরণে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হলেও অনেক সংকট থেকেই গেছে। আগে থেকেই অর্থনীতির স্থবিরতা, এরপর ক্ষমতার পালাবদলের রেশ, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, ব্যবসা-উদ্যোগে আস্থাহীনতা, ডলার সংকট, উচ্চ সুদহার, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ব্যাংক খাতের দুর্বলতা, রাজস্ব আয়ে বড় ঘাটতি—সব মিলিয়ে অর্থনীতি ঠিকমতো ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। এসবের প্রভাব পড়েছে দেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান খাত নির্মাণশিল্পেও।
সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম বাস্তবায়িত হয়েছে। তা ১৭ শতাংশের কাছাকাছি। এর অর্থ হলো দেশের সরকারি উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বলতে গেলে স্থবির।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমইএ) ও বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএসএমএ) নির্মাণ খাতকে এগিয়ে নিতে এ খাতের শুল্ক-কর কমানোর আহ্বান জানায়। তারা চায় আসছে বাজেটে সিমেন্টের মূল উপকরণ ক্লিংকারের শুল্ক প্রতি মেট্রিক টনে ৫০০ থেকে কমিয়ে ২০০ টাকা করা হোক। একইভাবে নির্মাণশিল্পের অন্যতম প্রয়োজনীয় উপকরণ স্টিলের নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক প্রত্যাহার ও শুল্কহার কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণেরও প্রস্তাব উদ্যোক্তাদের।
আমরা মনে করি, নির্মাণ খাতকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে এ খাতের সঙ্গে জড়িত শতাধিক উপখাতকে টিকিয়ে রাখা, ব্যবসা চাঙ্গা করা এবং নতুন বিনিয়োগ-কর্মসংস্থান করতে হলে উদ্যোক্তাদের দাবিগুলো সদয় বিবেচনায় নিতে হবে। আসছে বাজেটে ব্যবসাবান্ধব নীতি গ্রহণ করা হলে অর্থনীতিতে যে স্থবিরতা বিরাজ করছে, তা অনেকটাই কেটে যাবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।