<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তিন বছর মেয়াদি (২০১৭-২০) পুকুর ও খাল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় দেশজুড়ে খাল খননের পর পারে গাছ লাগানোর কথা ছিল। তবে খাল খনন করা হলেও খালের পারে গাছ না লাগিয়েই তুলে নেওয়া হয়েছে বরাদ্দের ১৬৯ কোটি টাকা। সম্প্রতি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) নিবিড় পরিবীক্ষণ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনের পরিদর্শন পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, সংশোধিত ডিপিপিতে খাল উন্নয়নে খালের উভয় পারে গাছ লাগানোর কথা থাকলেও সরেজমিনে গাছ লাগানোর বিষয়টি তেমন পরিলক্ষিত হয়নি। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আইএমইডি সূত্রে জানা গেছে, ভূ-উপরস্থ পানির ব্যবহার বাড়াতে এক হাজার ৭৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে দেশজুড়ে পুকুর ও খাল উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। পার যাতে ভেঙে না পড়ে সে জন্য এক হাজার ৭০০ কিলোমিটার খালের পারে গাছ লাগানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। আর খাল উন্নয়ন ও বৃক্ষরোপণ প্রকল্পের জন্য নির্ধারণ করা হয় ৬৬৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে গত এপ্রিল পর্যন্ত এই খাতে খরচের ১৬৯ কোটি টাকা তুলে নেওয়া হলেও খননের পর খালের পারে গাছ লাগানো হয়নি। অথচ তুলে নেওয়া হয়েছে গাছ লাগানোর টাকাও। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">প্রকল্পটি ২০১৭ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন করার কথা থাকলেও তিন বছরের প্রকল্পটি সাত বছরেও শেষ হয়নি। দুই দফায় ছয় বছর সময় বাড়িয়ে ২০২৬ সাল পর্যন্ত প্রকল্পটির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। আর প্রকল্পের ব্যয় কমিয়ে এক হাজার ৫৯৪ কোটি ৮৮ লাখ টাকা করা হয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">দেশের বেশ কয়েকটি এলাকায় খাল খনন ও গাছ লাগানোর বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, বেশির ভাগ জায়গায় খাল খনন করা হলেও গাছ লাগানো হয়নি। সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা এলজিইডির কর্মকর্তা জাকির হোসেন জানান, গুমনাতলী কাটাখালী খাল খনন করা হলেও গাছ লাগানো হয়নি। বর্ষায় হয়তো লাগানো হতে পারে। আবার জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলায় খোঁজ নিলে বলা হয় তারা গাছ লাগিয়েছে। তবে আইএমইডি সেখানে গাছ লাগানো বিষয়টি খুঁজে পায়নি। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">প্রকল্প পরিচালক ফজলে হাবিবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, কিছু গাছ লাগানো হয়েছে। তবে অনেক জায়গায় স্থানীয়দের বাধার কারণে গাছ লাগানো যায়নি। তাদের যুক্তি, গাছ লাগানো হলে খালে ছায়া পড়বে আর পাতা পড়ে খালের পানি নষ্ট হয়ে যাবে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">একই বিষয়ে আইএমইডি সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ডিপিপিতে গাছ লাগানোর কথা থাকলে গাছ লাগাতে হবে। গাছ না লাগিয়ে টাকা উত্তোলনের কোনো সুযোগ নেই। সরকারি খালের পারে গাছ লাগাতে স্থানীয়রা বাধা দেবে কেন! বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সরেজমিনে আইএমইডির পরিদর্শন পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলায় আঞ্জুরহাট খালের উভয় পারের স্লোপ অতিরিক্ত খাড়া হওয়ায় এবং খনন করা মাটি লেভেলিং না করায় ধসে খালের পারে বসবাসরত মানুষের ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। তজুমদ্দিন উপজেলার বেতুয়া খাল, পটুয়াখালী সদর উপজেলার ইসহাক মৃধাবাড়ী খালসহ কয়েকটি খালের সাইড স্লোপ খাড়া হওয়ায় অতিবৃষ্টিতে খালের পারের মাটি ফের খালে পড়ে খাল ভরাট হয়ে যাবে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">খনন করা বেশির ভাগ খালে দেখা গেছে, খালের পারেই অতিরিক্ত মাটি রাখা হলেও গাছ লাগানোর পর্যাপ্ত চিহ্ন নেই। ওই স্থানগুলোতে গাছ লাগানোর চিহ্ন রেখে নির্দিষ্ট স্লোপে লেভেলিং করা প্রয়োজন। আরডিপিপিতে খাল উন্নয়নে খালের উভয় পারে গাছ লাগানোর কথা থাকলেও সরেজমিনে গিয়ে তেমনটি পরিলক্ষিত হয়নি।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">পর্যবেক্ষণে আরো বলা হয়েছে, কিছু স্থানে খালের আশপাশের বাজারের ময়লা-আবর্জনা ফেলে পানির গতিপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে। ফলে খালে জোয়ার-ভাটা বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। ফরিদপুর জেলার সদর উপজেলায় মাসুদ জয়ার খালে সরাসরি ল্যাট্রিনের সংযোগ দেওয়ায় ওই খালের পানি ব্যবহারের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">প্রতিবেদন সূত্রে আরো জানা গেছে, প্রকল্পের মূল কার্যক্রমের মধ্যে খাল উন্নয়ন বা পুনঃখনন ৭৬৮টি বা এক হাজার ৭০০ কিলোমিটারের মধ্যে ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ৬০৯ কিলোমিটার খাল উন্নয়নের কাজ শেষ হয়েছে আর ২১৯ কিলোমিটার খালের উন্নয়নের কাজ চলমান। পুকুর/দিঘি (প্রাতিষ্ঠানিক) উন্নয়ন/পুনঃখনন এক হাজার ৯০০ একরের মধ্যে ১২২০.৪১ একর প্রাতিষ্ঠানিক পুকুর উন্নয়ন কাজ শেষ হয়েছে এবং ৯৫.৩৩ একর প্রাতিষ্ঠানিক পুকুর উন্নয়নের কাজ চলমান। খাস খাল ও প্রাতিষ্ঠানিক পুকুরের চলমান খননকাজের অগ্রগতি ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় ৫০ শতাংশ। অবশিষ্ট ৮৭০.৯৯৮ কিলোমিটার খাল এবং ৫৮৪.২৬ একর প্রাতিষ্ঠানিক পুকুর উন্নয়নের কাজ ধারাবাহিকভাবে চলবে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">প্রকল্প পরিচালকের দপ্তর সূত্র জানায়, এক হাজার ৭৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্পটিতে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত অর্থছাড় হয়েছে ৬২১ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এর মধ্যে ব্যয় হয়েছে ৫৩৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। অব্যয়িত আছে ৮৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">প্রকল্পের বছরভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০১৭-২০২০ অর্থবছর পর্যন্ত গাছ লাগানোসহ খাল খননে ব্যয় হয়েছে পাঁচ কোটি ৯০ লাখ টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরে লক্ষ্য ছিল ১৪৯ কোটি ৭২ লাখ টাকা। ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে ছিল ২২৪ কোটি ৫৮ লাখ টাকা করে। কিন্তু প্রকল্পের কাজে অগ্রগতি না থাকায় পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p> </p>