<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সৃষ্ট বন্যায় দেশের ১২টি জেলায় কৃষির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কয়েক দিনে এসব জেলায় দুই লাখ ৩০ হাজার হেক্টর আবাদি জমি আক্রান্ত হয়েছে, যা মোট আবাদি জমির ৩০ শতাংশ। ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কৃষি মন্ত্রণালয় নানান উদ্যোগ নিতে শুরু করেছে। পানি সরে গেলেই ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত হিসাব করে কৃষকদের প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ ও কৃষি উপকরণ সহায়তা দেওয়া হবে। কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার পাশ ঘেঁষে রয়েছে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য। রাজ্যটি থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই উপজেলাটি। এ ছাড়া চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া কাঁকড়ি ও ডাকাতিয়া নদীর বাঁধ ভেঙে শতভাগ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বর্তমানে উপজেলাটির সব ফসলি জমি পানির নিচে। একই ধরনের পরিস্থিতি বিরাজ করছে দেশের ১২টি জেলায়।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, সৃষ্ট বন্যায় মুন্সীগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চাঁদপুর জেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এসব জেলায় আবাদ করা ফসলি জমির পরিমাণ সাত লাখ ৭২ হাজার ৩২১ হেক্টর। এর মধ্যে আক্রান্ত হয়েছে দুই লাখ ৩০ হাজার ৪০২ হেক্টর। এর মধ্যে আমন এক লাখ ৩৮ হাজার ৬১৯ হেক্টর, বোনা আমন ৫৭০ হেক্টর, রোপা আমন বীজতলা ১২ হাজার ৯১০ হেক্টর, আউশ ৬৮ হাজার ২০৯ হেক্টর,  শাক-সবজি ৯ হাজার ৫১৯ হেক্টর, আখ ৩৮৪ হেক্টর এবং পান ১৯১ হেক্টর।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সুশান্ত সাহা জানান, পাহাড়ি ঢলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৯৫ হেক্টর শাক-সবজির জমি, ১২২ হেক্টর আমনের বীজতলা, তিন হাজার ৪৪০ হেক্টর রোপা আমন ধানের জমি বন্যার পানির নিচে তলিয়ে আছে। দ্রুত পানি সরে গেলে ক্ষয়ক্ষতি কিছুটা কমে আসবে। তবে পানি দীর্ঘস্থায়ী হলে ক্ষয়ক্ষতি বাড়তে পারে। এক সপ্তাহ পর ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করা হবে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এদিকে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলায় শত শত মাছের ঘের, পুকুর, দিঘিসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত তলিয়ে গেছে। বসতবাড়িতে পালিত পশু-পাখি পানিতে ভেসে গেছে। নদীর চর তীরবর্তী শাক-সবজিসহ নিম্নাঞ্চলের ফসলাদি তলিয়ে গেছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">নাঙ্গলকোটের সাতবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা সামছুল আলম বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আমাদের পুরো গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বেশির ভাগ বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে। ফসলসহ সব কিছু তলিয়ে গেছে। বন্যা আগেও দেখেছি, তবে এমন বন্যা কখনো দেখিনি।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এরই মধ্যে বন্যাকবলিত জেলায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সব দপ্তর, সংস্থা বা কৃষিবিষয়ক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। নিজ নিজ স্থানে কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে কৃষকের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে শিগগিরই কৃষকদের প্রণোদনা দেওয়া হবে। এ ছাড়া আগামী কয়েক দিনের মধ্যে যাতে নতুন করে বীজতলা তৈরি করা যায় সে জন্য বিকল্প জেলায় আমন বীজতলা তৈরির পরিকল্পনা করা হচ্ছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এ বিষয়ে কৃষিসচিব মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অপ্রত্যাশিত এই বন্যা মোকাবেলায় কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে। পানি নেমে গেলেই পরিপূর্ণ ক্ষতি নির্ধারণ করে কৃষকের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এ ছাড়া উপকরণ সহায়তা দেওয়া হবে। আমাদের মাঠ পর্যায়ের সব কৃষি কর্মকর্তা এই মুহূর্তে কৃষকদের সঙ্গে রয়েছেন। ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বিকল্প সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">যোগাযোগ করা হলে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর (ডিএলএস) থেকে জানানো হয়, ক্ষয়ক্ষতির হিসাব এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি। আজ শুক্রবার অথবা আগামীকালের মধ্যে একটি প্রাথমিক হিসাব দেওয়া সম্ভব হবে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সৃষ্ট বন্যার কারণে যেসব আশ্রয়কেন্দ্রে বন্যা আক্রান্ত মানুষ আশ্রয় নিয়েছে সেগুলোতে সাত হাজার ৭৫৫টি গবাদি পশুকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p> </p>