দুই সপ্তাহ আগেই পালন করা হয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। এর পরই ব্যাপক আনন্দ-উদ্দীপনায় সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের অংশগ্রহণে বাংলা নববর্ষ জাতীয় উৎসব হিসেবে পালিত হচ্ছে। এ উৎসবেও বড় ধরনের বেচাকেনার আশা থাকে ব্যবসায়ীদের। কিন্তু কিছুদিন আগেই ঈদ উদযাপন হয়ে যাওয়ার কারণে এবারও তেমন জমেনি পহেলা বৈশাখকেন্দ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্য।
স্বাগত ১৪৩২
বৈশাখী বাজার এবারও মন্দা
এম সায়েম টিপু

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, মূলত ঈদের পরপরই পহেলা বৈশাখ হওয়ায় মানুষের হাত একরকম অর্থশূন্য। এ জন্য ক্রেতারা বৈশাখের বাজারে এসেছেন কম। আর
ক্রেতা না আসায় বিক্রিবাট্টা তেমন জমেনি।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘দুই উৎসবের মধ্যে কয়েক মাসের ব্যবধান থাকলে সাধারণ ক্রেতারা বাজেট করে প্রস্তুতি নিয়ে কেনাকাটা করতে পারেন। কিন্তু এবার ব্যবধানটি কম। সে কারণে এবার ব্যাপক আয়োজন করে বাংলা নববর্ষ পালন হলেও ব্যবসায়ীদের বিক্রিবাট্টা তেমন জমেনি।
দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সহসভাপতি ও বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেছেন, ‘ঈদুল ফিতর এবং বর্ষবরণ দুটি ভিন্ন উৎসব।
তিনি বলেন, ‘এবার কেনাকাটার ধরন দেখে বলা যায়, সাধারণ আয়ের মানুষ খরচের চাপ কমাতে এক কেনাকাটায় দুই উৎসব পার করার চেষ্টা করছে। ক্রেতারা ঈদের কেনাকাটাতেই প্রায় সব অর্থ খরচ করে ফেলেছে। তাই বৈশাখকেন্দ্রিক কেনাকাটা কম। বৈশাখী বাণিজ্য প্রতিবার যেমন হয় এবার তা হচ্ছে না।’
ফেরিওয়ালার ঝুড়ি থেকে নামিদামি শপিংমল—সব জায়গায় ঈদ ও বৈশাখী বেচাকেনা চলে। দুই উৎসব ঘিরে বাণিজ্যের প্রাতিষ্ঠানিক হিসাব না থাকলেও বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান সূত্র জানায়, পহেলা বৈশাখে ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার কোটি টাকার বেশি বাণিজ্য হয়, কিন্তু এবার এর অর্ধেকও হবে না বলে মত ব্যবসায়ীদের।
নতুন বছরকে বরণ করতে বছরের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখে চাই নতুন পোশাক। শাড়ি, সালোয়ার কিংবা পাঞ্জাবি—সব কিছুতে থাকবে বাঙালিত্বের ছোঁয়া। এই দিন নতুন পোশাক পরার প্রচলন বহু বছরের। তাই পহেলা বৈশাখ ঘিরে দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলোও বাহারি পণ্যের পসরায় সেজেছে।
ফ্যাশন সচেতনরা বলছেন, গত কয়েক বছর ধরে পহেলা বৈশাখ রমজান মাসে অনুষ্ঠিত হওয়ায় এবং করোনা অতিমারির কারণে উৎসবের জৌলুস কিছুটা কম ছিল। এবার পরিস্থিতি ভিন্ন হওয়ায় দেশবাসী নববর্ষকে নতুন রূপে এবং উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেছে। কিন্তু কেনাকাটায় তেমন আগ্রহ নেই।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দেশীয় ফ্যাশন হাউস অঞ্জনসের প্রধান নির্বাহী শাহীন আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘চলতি বছর ঈদের পরপরই হওয়ায় বৈশাখী পোশাকের আয়োজনটা এমনিতেই একটু কম ছিল। তবে গত বছরের চেয়ে একটু ভালো হয়েছে। গতবার বৈশাখী উৎসব ছিল একেবারে ঈদের দুই দিন পরই। তবে আগামী বছর বাজার ভালো হবে বলে আমার বিশ্বাস।’ তিনি জানান, এবারের উৎসবে অঞ্জনসের পোশাকগুলো ছিল মহিলাদের। শাড়ি ছিল এক হাজার ৫০০ টাকা থেকে চার হাজার টাকার। আর ছেলেদের পাঞ্জাবির দর ছিল ৫০০ থেকে তিন হাজার টাকা।
ফ্যাশন এন্টারপ্রেনারস অ্যাসোশিয়েশন অব বাংলাদেশ (এফইএবি) সভাপতি আজহারুল হক আজাদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ঈদের পরপরই হওয়ায় এবারের আয়োজনটাও ছিল বেশ ছোট। ফলে আশা-আকাঙ্ক্ষায় তেমন প্রভাব ফেলেনি আয়োজনে। এ ছাড়া লম্বা ছুটির কারণে অফিস-আদালতও ভালোভাবে শুরু হয়নি। ফলে ওইভাবে জমেনি এবারের বৈশাখী আয়োজন। কৃষি ও গ্রামীণ অর্থনীতি নিয়ে কাজ করা অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পহেলা বৈশাখে আগে গ্রামে মেলা হতো। নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হতো। এখন সেগুলো প্রায় বন্ধ হওয়ার পথে। ওই মেলাগুলোতে প্রচুর মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হতো। একসময় পহেলা বৈখাখে এক হাজার কোটি টাকার লেনদেন হতো। এখন অনেকটাই কমে গেছে।
সম্পর্কিত খবর

লালমনিরহাট সীমান্ত
বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত
লালমনিরহাট প্রতিনিধি

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সিংগীমারী সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে হাসিবুল ইসলাম (২২) নামের এক বাংলাদেশি কৃষক নিহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার এ ঘটনা ঘটে। হাসিবুল সিংগীমারী গ্রামের জাহিদুল ইসলামের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে হাসিবুলকে গুলি করে বিএসএফ।
ভুক্তভোগীর পরিবার জানায়, সীমান্ত এলাকায় নিজেদের জমিতে দুপুরে কাটতে যান হাসিবুল। এক পর্যায়ে কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে বিএসএফের একটি টহলদল বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে কোনো কারণ ছাড়াই হাসিবুলকে গুলি করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন হাসিবুল।
ভুক্তভোগীর পরিবার ও ভারতীয় সূত্র জানিয়েছে, গতকাল বিকেলে কোচবিহারের এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসিবুলের মৃত্যু হয়েছে।
বিজিবি সূত্র জানায়, বাংলাদেশিকে গুলি করার ঘটনায় বিজিবির আহ্বানে গতকাল বিকেলে ওই সীমান্তে পতাকা বৈঠকে অংশ নেয় বিএসএফ।
হাতীবান্ধা থানার ওসি মাহামুদুন-নবী জানান, বাংলাদেশি এক যুবককে গুলি করে বিএসএফ ভারতে নিয়ে গেছে বলে খবর মিলেছে।

বিএনপির সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ আজ
রাষ্ট্রের নাম বদলে বেশির ভাগ দলের আপত্তি
নিখিল ভদ্র

রাষ্ট্র সংস্কারে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর করা সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ১৬৬টির মধ্যে শতাধিক প্রস্তাবে একমত প্রকাশ করেছে এযাবৎ মতামত প্রদানকারী সব রাজনৈতিক দল। তবে রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কিছু সংস্কার প্রস্তাবে বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল আপত্তি জানিয়েছে।
ঐকমত্য কমিশনে এ পর্যন্ত ৩৫টি রাজনৈতিক দল লিখিত মতামত দিয়েছে। এর মধ্য থেকে ১১টি রাজনৈতিক দল কমিশনের সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়েছে।
জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর গঠিত ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করে। এরপর সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ চূড়ান্ত করতে গঠন করা হয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি কাজ শুরু করেছে এই কমিশন। প্রথম পর্যায়ে গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিশনের মধ্যে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬ সুপারিশ বিষয়ে ঐকমত্য কমিশন ১৬৬টি প্রস্তাব তৈরি করে ৩৮টি রাজনৈতিক দল ও জোটের মতামত আহবান করে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। তিনি কালের কণ্ঠকে জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সুপারিশগুলো চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ চলছে।
কমিশন সূত্র জানায়, এরই মধ্যে মতামত জানানো রাজনৈতিক দলগুলো শতাধিক প্রস্তাবে একমত প্রকাশ করেছে। তবে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু ইস্যুতে দলগুলো পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়েছে। আবার কয়েকটি বিষয়ে বেশির ভাগ দল জোর আপত্তি জানিয়েছে। বিশেষ করে রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে আপত্তি এসেছে। কমিশনের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সংবিধানের প্রযোজ্য সব ক্ষেত্রে ‘প্রজাতন্ত্র’ ও ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ শব্দগুলোর পরিবর্তে ‘নাগরিকতন্ত্র’ ও ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ শব্দগুলো ব্যবহার করা হবে। এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বাম গণতান্ত্রিক জোট, গণতন্ত্র মঞ্চ এবং ১২ দলীয় জোটভুক্ত রাজনৈতিক দলগুলো। এমনকি জাতীয় নাগরিক পার্টিও (এনসিপি) ‘প্রজাতন্ত্র’ ও ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ বহাল রাখার পক্ষে মত দিয়েছে।
সূত্র জানায়, এনসিপিসহ কয়েকটি দল সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি থেকে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দিয়ে কমিশন প্রস্তাবিত ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, বহুত্ববাদ ও গণতন্ত্র’ অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশের সঙ্গে একমত পোষণ করেছে। এ ক্ষেত্রে জামায়াত শুধু ‘বহুত্ববাদ’ শব্দটি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে। দলটি এর পরিবর্তে ‘সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস, ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ’—এই শব্দগুলো যোগ করার প্রস্তাব দিয়েছে। তবে বেশির ভাগ দল চার মূলনীতি বাদ দেওয়ার প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছে। তারা গণপরিষদ ও গণভোটের বিষয়ে আপত্তি জানানোর পাশাপাশি সংসদের মেয়াদ পাঁচ বছর বহাল রাখার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। একাত্তর আর চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানকে একসঙ্গে মিলিয়ে ফেলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিএনপিসহ বেশির ভাগ দল। কেউ কেউ এর সঙ্গে নব্বইকে যুক্ত করার দাবি জানিয়েছে। বিএনপি আপত্তি জানালেও অনেকেই সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থার সুপারিশ করেছে।
জানা গেছে, লিখিত মতামতে কোনো কোনো রাজনৈতিক দল কমিশন প্রদত্ত স্প্রেডশিট (ফরম) ব্যবহার করেনি। তারা আলাদাভাবে লিখিত মতামত দিয়েছে। শুধু নির্বাচনকেন্দ্রিক সংস্কার ছাড়া বাকি সংস্কার নির্বাচিত সংসদ দ্বারা বাস্তবায়নের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বেশির ভাগ দলের পক্ষে বলা হয়েছে, বর্তমানে দেশে যে অস্থিরতা ও সংকট বিরাজ করছে, তা উত্তরণের একমাত্র উপায় দ্রুত সংসদ নির্বাচন। তবে এনসিপি, গণ অধিকার পরিষদসহ কয়েকটি দল সামগ্রিক সংস্কার শেষ করার পর নির্বাচনের কথা বলছে। ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, ‘আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহে রাজনৈতিক দল ও জোটগতভাবে প্রথম পর্যায়ের সংলাপ শেষ হবে। এরপর আমরা দ্বিতীয় ধাপে প্রবেশ করতে পারব। সে ক্ষেত্রে যেসব বিষয়ে ভিন্নমত আছে বা কোনো ক্ষেত্রে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের প্রয়োজন আছে, সেগুলো নিয়ে আগামী মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে আলোচনা করতে পারব।’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক
মৌলিক সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে আপত্তি এনসিপির
- ঢাকা সফররত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি নিকোল চুলিক গতকাল বৈঠক করেছেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির সঙ্গে
নিজস্ব প্রতিবেদক

‘আমরা ন্যূনতম সংস্কার নয় বরং মৌলিক সংস্কার ও রাষ্ট্রের গুণগত পরিবর্তনের জন্যই কাজ করছি। মৌলিক সংস্কার ছাড়া নির্বাচনের দিকে গেলে সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। সেই নির্বাচনে জাতীয় নাগরিক পার্টি অংশগ্রহণ করবে কি না সেটাও বিবেচনাধীন থাকবে। গতকাল বুধবার রাজধানীর গুলশানে মার্কিন ডেপুটি অব মিশনের বাসভবনে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি নিকোল চুলিকের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘মূলত বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সংস্কার কার্যক্রম ও নির্বাচন বিষয়ে নিকোল চুলিকের প্রধান ফোকাস ছিল। এ ছাড়া দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তাসহ বাংলাদেশের সামনের রাজনীতি কোনদিকে যাবে এবং আমাদের রাজনৈতিক দলের গঠনপ্রক্রিয়া, সাংগঠনিক কার্যক্রম ও আদর্শিকতার বিষয়ে তাঁদের আগ্রহ ছিল। আমরা আমাদের জায়গা থেকে ব্যাখ্যা করেছি। আমাদের রাজনৈতিক দল কোন প্রেক্ষিতে কেন এবং কোন লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, তা জানিয়েছি।
বর্তমান সময় নিরপেক্ষ আচরণ করছে না অভিযোগ করে তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমান সময় মাঠ পর্যায়ে যে প্রশাসন রয়েছে সেই প্রশাসন আমাদের কাছে মনে হয়েছে নিরপেক্ষ আচরণ করছে না।
নিরপেক্ষ না বলতে বা প্রশাসন কার পক্ষে ভূমিকা পালন করছে বলতে আপনারা কী মনে করছেন জানতে চাইলে এনসিপির এই আহ্বায়ক বলেন, ‘প্রশাসন আমরা দেখছি অনেক জায়গায় প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির পক্ষ অবলম্বন করছে। মাঠ পর্যায়ে যে ধরনের চাঁদাবাজি চলছে সে জায়গায়ও প্রশাসন আসলে নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক
আগামী রমজানের আগেই জাতীয় নির্বাচন চায় জামায়াত
- ঢাকা সফররত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি নিকোল চুলিক গতকাল বৈঠক করেছেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির সঙ্গে
বিশেষ প্রতিনিধি

আগামী রমজানের আগেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক—বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এমনটাই চায় বলে জানিয়েছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান।
গতকাল বুধবার রাজধানীর গুলশানে মার্কিন ডেপুটি হেড অব মিশনের বাসভবনে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি নিকোল চুলিকের সঙ্গে বৈঠক করেন জামায়াতের আমির। এ সময় জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘তারা (যুক্তরাষ্ট্র) জানতে চেয়েছে আমরা কবে নির্বাচন চাই।
বৈঠক নিয়ে জামায়াতের আমির আরো জানান, ‘তাঁদের সঙ্গে আমাদের খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। যদি ভবিষ্যতে আমরা দেশের দায়িত্ব গ্রহণ করি, তাহলে আমাদের অর্থনৈতিক ও বৈদেশিক নীতিমালা কী হবে তা জানতে চেয়েছেন তাঁরা। অঞ্চলভিত্তিক বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। আমরা সংখ্যালঘু, নারী অধিকার ও শ্রম অধিকার নিয়েও কথা বলেছি।
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করেছি, আমাদের দেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় পার করছে। এই সময় যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত ৩৭ শতাংশ শুল্ক যেন তারা পুনর্বিবেচনা করে। আমরা আশা করি, তারা সহযোগিতা করবে।’ বৈঠকে আওয়ামী লীগের বিচার নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান ডা. শফিকুর রহমান। তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমরা ন্যায়বিচারের ভিত্তিতেই আওয়ামী লীগের বিচার চেয়েছি।
উল্লেখ্য, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর এই প্রথমবারের মতো ঢাকা সফরে এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি চুলিক, পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলবিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অ্যান্ড্রু হেরাপ এবং মায়ানমারে ভারপ্রাপ্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত সুসান স্টিভেনসন।