ঢাকা, বুধবার ১৯ মার্চ ২০২৫
৫ চৈত্র ১৪৩১, ১৮ রমজান ১৪৪৬

ঢাকা, বুধবার ১৯ মার্চ ২০২৫
৫ চৈত্র ১৪৩১, ১৮ রমজান ১৪৪৬

এক বছরে সড়কে ঝরল ৬ হাজার ৫২৪ প্রাণ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
এক বছরে সড়কে ঝরল ৬ হাজার ৫২৪ প্রাণ

সারা দেশে গেল বছর ছয় হাজার ৯১১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ছয় হাজার ৫২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। দিনে গড়ে মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের। সবচেয়ে বেশি মোটরসাইকেলে মৃত্যু হয়েছে ৩৮.১২ শতাংশ। এ সময় আহত হয়েছে অন্তত আরো ১১ হাজার ৪০৭ জন।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের দুর্ঘটনাসংক্রান্ত বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল শনিবার সকালে প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ৯টি জাতীয় দৈনিক, সাতটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম এবং সংস্থাটির নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, নিহতের মধ্যে এক হাজার ৫৩ জন শিক্ষার্থী, ৯৭৪ জন নারী এবং শিশু এক হাজার ১২৮ জন।

এ ছাড়া দুই হাজার ৫৩২টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুই হাজার ৪৮৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা মোট নিহতের ৩৮.১২ শতাংশ। দুর্ঘটনায় এক হাজার ৪৫২ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ২২.২৫ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৯৪২ জন, অর্থাৎ ১৪.৪৩ শতাংশ। এই সময়ে ১০৭টি নৌ দুর্ঘটনায় ১৪৮ জন নিহত, ৭২ জন আহত ও ৪৬ জন নিখোঁজ রয়েছে।
২৮৭টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ৩১৮ জন নিহত এবং ২৯৬ জন আহত হয়েছে।

দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বাসে ২৭৪, ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ড ভ্যান-ট্রাক্টর, ট্রলি-লরিতে ৩৮৪, প্রাইভেট কার-মাইক্রোবাস-অ্যাম্বুল্যান্স-জিপে ২২৯ এবং তিন চাকার যানে এক হাজার ২০৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসব দুর্ঘটনার মধ্যে দুই হাজার ৩৭৩টি জাতীয় মহাসড়কে, দুই হাজার ৮৮৭টি আঞ্চলিক সড়কে, ৯৯৪টি গ্রামীণ সড়কে, ৫৮৩টি শহরের সড়কে এবং অন্য স্থানে ৭৪টি সংঘটিত হয়েছে।

মোটরসাইকেলে মৃত্যু বেশি

২০২৩ সালে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে দুই হাজার ৫৩২টি। এতে নিহত হয়েছে দুই হাজার ৪৮৭ জন।

আহত হয়েছে এক হাজার ৯৪৩ জন। এর মধ্যে ৭৫.৩৯ শতাংশ ১৪ থেকে ৪৫ বছর বয়সী। অন্য যানবাহনের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটেছে ২২.৫৯ শতাংশ, মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩৫.৭০ শতাংশ, মোটরসাইকেলে ভারী যানবাহনের চাপা ও ধাক্কা দেওয়ার ঘটনা ৪০.৪৮ শতাংশ এবং অন্য কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে ১.২২ শতাংশ।

শিশুমৃত্যু আশঙ্কাজনক

গত বছর সড়ক দুর্ঘটনায় এক হাজার ১২৮টি শিশু নিহত হয়েছে। শিশু মৃত্যুর ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, যাত্রী ও চালক হিসেবে নিহত হয়েছে ৩২৯ শিশু। রাস্তা পারাপার ও রাস্তা ধরে হাঁটার সময় যানবাহনের চাপায় অথবা ধাক্কায় নিহত হয়েছে ৫৩২ শিশু। মোটরসাইকেলচালক ও আরোহী হিসেবে নিহত হয়েছে ২৬৭ শিশু। এসব দুর্ঘটনার মধ্যে জাতীয় মহাসড়কে ৩৩৮ শিশু, আঞ্চলিক সড়কে ৪১৬ শিশু, গ্রামীণ সড়কে ৩২৪ শিশু এবং শহরের সড়কে ৫০ শিশু নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে এক মাস থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশু নিহত হয়েছে ২১৫ জন, ছয় বছর থেকে ১২ বছর বয়সী শিশু নিহত হয়েছে ৪৯২টি এবং ১৩ বছর থেকে ১৮ বছর বয়সী শিশু নিহত হয়েছে ৪২১টি।

দুর্ঘটনায় মৃত্যু ঊর্ধ্বমুখী

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে দুর্ঘটনা বেড়েছে ১৩.৪৩ শতাংশ, প্রাণহানি বেড়েছে ১৫.৭০ শতাংশ এবং আহত বেড়েছে ১.২০ শতাংশ। ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে দুর্ঘটনা বেড়েছে ২৭.১৪ শতাংশ, প্রাণহানি বেড়েছে ২২.৭৪ শতাংশ এবং আহত বেড়েছে ৬৮.৯২ শতাংশ। ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে দুর্ঘটনা বেড়েছে ১.২ শতাংশ, প্রাণহানি কমেছে ১৫.৪১ শতাংশ এবং আহত কমেছে ৯.৫৭ শতাংশ। সড়ক দুর্ঘটনার কারণ প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকদের অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল, তরুণ-যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা অন্যতম।  দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণের ১০ দফা সুপারিশে বলা হয়, দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে হবে, চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করতে হবে, বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে, পরিবহন মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে, রেল ও নৌপথ সংস্কার করে সড়ক পথের ওপর চাপ কমাতে হবে এবং সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ বাধাহীনভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

নাঈমুল ইসলাম খানের ১৬৩ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
নাঈমুল ইসলাম খানের ১৬৩ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক প্রেসসচিব নাঈমুল ইসলাম খান ও তাঁর পরিবারের ১৬৩টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। এসব হিসাবে ছয় কোটি ২৫ লাখ ৪৯ হাজার ৯৪৪ টাকা রয়েছে। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।

  আদালত সূত্রে জানা গেছে, দুদকের উপপরিচালক আফরোজ হক খান এসব হিসাব অবরুদ্ধ চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, অভিযোগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি নাঈমুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে ভিন্ন কোনো উৎস অর্থাৎ ঘুষ বা অবৈধ উপায়ে অর্থ অর্জনপূর্বক এ অর্থের উৎস আড়াল করার জন্য তাঁর নামে, তাঁর স্ত্রী নাসিমা খান মন্টি এবং তাঁদের তিন সন্তান লাবিবা নাঈম খান, আদিবা নাঈম খান ও মূলিকা নাঈম খানের ১৬৩টি ব্যাংক হিসাবে ৩৮৬ কোটি টাকা জমা করেন। এর মধ্যে ৩৭৯ কোটি টাকা উত্তোলন করা হয়েছে এবং বর্তমানে ৮ কোটি ৭৬ কোটি টাকা স্থিতি রয়েছে।

মন্তব্য
সংক্ষিপ্ত

সাবেক এমপি বাবুর দুই বাড়িসহ স্থাবর সম্পদ জব্দ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
সাবেক এমপি বাবুর দুই বাড়িসহ স্থাবর সম্পদ জব্দ

খুলনা-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মো. আক্তারুজ্জামান বাবুর দুই বাড়ি, প্লট, দোকানসহ ১৩ বিঘা স্থাবর সম্পদ জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ১৪টি ব্যাংক অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়েছে। এসব হিসাবে ৩১ লাখ আট হাজার ৮৭৩ টাকা রয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।

জব্দ হওয়া সম্পদের মধ্যে মোহাম্মদপুরে দুই একর জমি, খুলনায় দুটি বাড়ি ও কেসিসি মার্কেটে তিনটি দোকান রয়েছে। এসব সম্পদের বাজারমূল্য সাত কোটি ৩২ লাখ ছয় হাজার ৮৭০ টাকা উল্লেখ করা হয়েছে। আদালত সূত্রে জানা গেছে, দুদকের উপপরিচালক জয়নাল আবেদীন এ আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়েছে, মো. আক্তারুজ্জামান বাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো অনুসন্ধানপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে।
তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজ নামে ঠিকাদারি ব্যবসাসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাত্পূর্বক নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ করা হয়েছে।

মন্তব্য
অভ্যুত্থানে হামলা

‘ঢাবির ১২৮ জনের তালিকা পূর্ণাঙ্গ নয়’

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
শেয়ার
‘ঢাবির ১২৮ জনের তালিকা পূর্ণাঙ্গ নয়’

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় গত ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে হামলার ঘটনায় সত্যানুসন্ধান কমিটি দায়ী হিসেবে যে ১২৮ জনের তালিকা করেছে, সেটি পূর্ণাঙ্গ নয় বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় অধিকতর তদন্ত করা হবে বলে গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সত্যানুসন্ধান কমিটি চিহ্নিত ১২৮ জনের তালিকাটি পূর্ণাঙ্গ নয়। এ নিয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সবার প্রতি আহবান জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলামকে প্রধান করে গঠিত কমিটি ক্যাম্পাসে ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সংঘটিত বেআইনি ও সহিংস ঘটনার অধিকতর তদন্ত করবে। এই কমিটি সত্যানুসন্ধান কমিটি চিহ্নিত ১২৮ জনের বিষয়টি আমলে নিয়ে পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হল, বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে সহিংস ঘটনায় জড়িতদের তথ্য চেয়ে চিঠি দেবে। প্রাপ্ত তথ্য যাচাই-বাছাই করে খুব শিগগির তদন্ত কমিটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করবে। সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দোষীদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্তব্য

জুলাই যোদ্ধাদের ইফতারি পাঠালেন তারেক রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
জুলাই যোদ্ধাদের ইফতারি পাঠালেন তারেক রহমান

জুলাই অভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধাদের জন্য ইফতারসামগ্রী এবং শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাঁর নির্দেশে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে ১০৯ জন এবং জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে ১২০ জন যোদ্ধাকে নিয়ে পৃথক ইফতার মাহফিল করে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ)।

এ সময় ইফতারসামগ্রীসংবলিত দৃষ্টিনন্দন বক্স এবং জেডআরএফের প্রেসিডেন্ট তারেক রহমানের পক্ষে প্রত্যেকের নামে একটি শুভেচ্ছা চিঠি পৌঁছে দেওয়া হয়।

পঙ্গু হাসপাতালে ১০৯ জন আহত যোদ্ধার মাঝে ইফতারি বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন জেডআরএফের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনার, পঙ্গু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক আবুল কেনান, জেডআরএফের ইফতার মাহফিল উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক আনোয়ারুন্নবী মজুমদার বাবলা প্রমুখ।

অন্যদিকে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে ১২০ জন যোদ্ধার হাতে ইফতারি তুলে দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন পরিচালক অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, ডা. সৈয়দা তাজনিন ওয়ারিস সিমকী, জেডআরএফের ডা. এ এইচ এস হায়দার পারভেজ, ডা. পারভেজ রেজা কাকন, জেডআরএফের ইফতার মাহফিল উদযাপন কমিটির সদস্যসচিব ডা. মোস্তফা আজিজ সুমন, আমিরুল ইসলাম কাগজী, ডা. সায়ীদ মেহবুব উল কাদির, শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ