মানিকগঞ্জের ধলেশ্বরী নদী প্রায় ৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে খননের দুই বছরের মাথায় পানিশূন্য হয়ে পড়েছে। নদীর বিস্তীর্ণ এলাকা শুকিয়ে জেগে উঠেছে বালুচর। চরে গজিয়েছে ঘাস। কুয়া খুঁড়ে সেই পানি ব্যবহার করা হচ্ছে রান্নার কাজে।
মানিকগঞ্জের ধলেশ্বরী নদী প্রায় ৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে খননের দুই বছরের মাথায় পানিশূন্য হয়ে পড়েছে। নদীর বিস্তীর্ণ এলাকা শুকিয়ে জেগে উঠেছে বালুচর। চরে গজিয়েছে ঘাস। কুয়া খুঁড়ে সেই পানি ব্যবহার করা হচ্ছে রান্নার কাজে।
মানিকগঞ্জে ধলেশ্বরীর দৈর্ঘ্য ৪৫ কিলোমিটার। ২৫ বছর আগেও এই ধলেশ্বরীতে সারা বছর পানির প্রবাহ থাকত। কিন্তু ১৯৯৮ সালের ভয়াবহ বন্যার পর থেকে পলি পড়ে নদীটি দ্রুত ভরাট হতে থাকে। নদী খননের দাবিতে মানিকগঞ্জের সর্বস্তরের মানুষদের নিয়ে গঠিত হয় ধলেশ্বরী নদী বাঁচাও কমিটি।
ধলেশ্বরী নদী বাঁচাও আন্দোলনের সদস্য জাহাঙ্গীর বিশ্বাস বলেন, পরিকল্পিতভাবে খনন না করায় ধলেশ্বরী নদীর অবস্থার উন্নতি হয়নি। আগের মতোই বেশির ভাগ সময় পানিশূন্য থাকে ধলেশ্বরী।
গত শনিবার কালীগঙ্গা ও ধলেশ্বরীর সংযোগস্থলে গিয়ে এর সত্যতা পাওয়া গেল। দেখা গেছে, সেখানে উঁচু চর পড়েছে। কালীগঙ্গায় পানির প্রবাহ থাকলেও চরের জন্য ধলেশ্বরীতে পানি ঢুকতে পারছে না। সংযোগস্থলের প্রায় আধাকিলোমিটার ভাটিতে ধলেশ্বরীর ওপর মাস্তানঘাট সেতু। নদী পারাপারের জন্যই বেশ বড়সড় সেতুটি নির্মাণ করা হয় প্রায় ১০ বছর আগে। কিন্তু এখন সেতুর নিচে শুকনো ঠনঠনে। সেখানে পড়ে আছে ভাঙাচোরা একটি নৌকা। স্থানীয়রা শুকাতে দিয়েছেন জ্বালানি হিসেবে ব্যবহারের জন্য গরুর গোবর।
এর কিছুটা ভাটিতে নদীর বুকে চার-পাঁচ ফুট গভীর করে খোঁড়া হয়েছে বেশ কয়েকটি কুয়া। একটিতে দড়ির সঙ্গে পাত্র ঝুলিয়ে পানি তুলতে দেখা গেল দুই কিশোরীকে। তারা জানাল, টিউবওয়েলের পানিতে আয়রন থাকায় রান্নার কাজ করা যায় না। তাই শুকনো নদীর বুকে কুয়া খুঁড়ে সেই পানি তারা ব্যবহার করে রান্নার কাজে।
নদীপারের বাসিন্দা চর তিল্লি গ্রামের ষাটোর্ধ্ব আবদুল বারি বলেন, খননে নদীতে পানিপ্রবাহ হয়নি। তবে লাভ হয়েছে মাটি ব্যবসায়ীদের। নদীর মূল প্রবাহ বাদ দিয়ে ঠিকাদারের পছন্দ অনুযায়ী জায়গা থেকে মাটি কাটা হয়েছে, যাতে ট্রাকে করে মাটি সরিয়ে নেওয়া যায়। হাজার হাজার ট্রাক মাটি সরিয়ে নেওয়া হলো, কিন্তু নদীর গভীরতা তাতে একটুও বাড়ল না। সিংগাইর উপজেলার তালেবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রমজান আলী বলেন, নদী খননের কোনো উপকারিতা পাওয়া যাচ্ছে না। তাঁর ইউনিয়নের অনেক স্থানে খনন হয়নি। কোথায় কোথায় হাঁটুপানি থাকলেও প্রবাহ নেই।
ধলেশ্বরী নদীতে পানি না থাকার কথা স্বীকার করলেন মানিকগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মাঈন উদ্দীন। তবে তিনি বলেন, মূল নদীর (কালীগঙ্গা) স্তর নেমে যাওয়ার কারণে ধলেশ্বরীতে পানি ঢুকতে পারছে না। তিনি দাবি করেন, এই অবস্থা সারা দেশের। শাখা নদীতে পানি রাখতে হলে মূল নদীতেও খনন করতে হবে। পাশাপাশি শাখা নদীগুলোতে অব্যাহতভাবে খননের প্রয়োজন। তিনি জানান, ধলেশ্বরী পুনরায় খননের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই খননকাজ শুরু করা হবে।
[প্রতিবেদনে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন কালের কণ্ঠর সিংগাইর প্রতিনিধি মোবারক হোসেন]
সম্পর্কিত খবর
সংস্কার কমিশনের সুপারিশের ব্যাপারে আরো চারটি রাজনৈতিক দল তাদের মতামত জানিয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ১১টি দল তাদের মতামত জমা দিয়েছে। এ দলগুলোকে নিয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার ও পরদিন বুধবার নাগাদ আলোচনা শুরু করা হতে পারে। দলগুলোর সঙ্গে আলাদাভাবে এসব আলোচনা জাতীয় সংসদ ভবনে করা হবে।
গতকাল রবিবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জানায়, মতামতের বিষয়ে কোনো কিছু না জানানো দলগুলোর সঙ্গে কমিশন পুনরায় যোগাযোগ করছে। এর আগে ৩৮টি রাজনৈতিক দলের কাছে মতামত চেয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। গতকাল রবিবার বিকেলে পুনাক সভানেত্রী আফরোজা হেলেন জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট হাসপাতাল ও জাতীয় অর্থোপেডিক ইনস্টিটিউট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ২৫০ জনকে দেখতে যান। এ সময় তিনি তাঁদের হাতে আর্থিক সহায়তার অর্থ তুলে দেন। তিনি তাঁদের খোঁজখবর নেন এবং চিকিৎসা সম্পর্কে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের সঙ্গে আলাপ করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পুনাকের সহসভানেত্রী আইরিন রহমান, সাধারণ সম্পাদিকা কানিজ ফাতেমা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদিকা তৌহিদা নূপুর।
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিস্ফোরক আইনে করা মামলায় কারাগারে থাকা ২৩৯ বিডিআর জওয়ানের জামিনের বিষয়ে আদেশের জন্য আজ সোমবার দিন ধার্য করেছেন আদালত। গতকাল রবিবার ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক মো. ইব্রাহিম মিয়ার আদালত এ দিন ধার্য করেন। এর আগে বৃহস্পতিবার জামিনের বিষয়ে শুনানি হয়েছিল। ওই দিন শুনানি শেষে আদালত এ বিষয়ে আদেশের জন্য রবিবার দিন ধার্য করেন।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। সে ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। হত্যা মামলায় ৮৫০ জনের বিচার শেষ হয় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর।