<p style="text-align:left"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ১২টি জেলা এবারই প্রথম ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হয়েছে। গত আগস্টের এই বন্যার আগে জুনে বন্যার কবলে পড়েছিল সিলেট অঞ্চল। প্রতিবছরই দেশের কোনো না কোনো অঞ্চলে বন্যা হচ্ছে। এই বন্যার প্রধান কারণ নদী ভরাট ও নদীভাঙন। আন্ত সীমান্ত নদীগুলোতে পানি প্রবাহ স্বাভাবিক না থাকায় নদীগুলো ভরাট হয়ে যাচ্ছে। আবার নদীর কোথাও কোথাও ভাঙন দেখা দিচ্ছে, যা মারাত্মক প্রভাব ফেলছে নদীপারের মানুষের জীবন-জীবিকার ওপর।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এই প্রেক্ষাপটে আজ ২২ সেপ্টেম্বর অন্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিশ্ব নদী দিবস পালিত হচ্ছে। প্রতিবছর সেপ্টেম্বরের চতুর্থ রবিবার বিশ্ব নদী দিবস পালিত হয়। দিবসটি উপলক্ষে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলো বিস্তারিত কর্মসূচি নিয়েছে। এ বছর বিশ্ব নদী দিবসে আমাদের প্রতিপাদ্য </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আন্ত সীমান্ত নদীতে বাংলাদেশের ন্যায্য অধিকার</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ১২টি জেলায় ভয়াবহ বন্যা এবং এ ক্ষেত্রে ভারতের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক ওই প্রতিপাদ্যকে সামনে নিয়ে এসেছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আন্ত সীমান্ত নদীতে অভিন্ন অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নদীর প্রকৃত সংখ্যা জানা জরুরি। কারণ আন্ত সীমান্ত প্রতিটি নদ-নদীর স্বীকৃতি এবং যৌথ নদী ব্যবস্থাপনা নদী ও জীবনের স্বার্থে অপরিহার্য। স্বীকৃতি না পেলে বাদ পড়া নদীর হিস্যা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে। অবশ্য ভারত ও বাংলাদেশের ওপর প্রবাহিত স্বীকৃত নদীগুলোর ন্যায্য হিস্যা জটিলতার এখনো অবসান হয়নি। উজানে বৃহৎ বঁধা, জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, রাস্তা, সেতু, বন উজাড়, মনো কালচার বাগান এবং বহুজাতিক খননের ফলে ভাটির বাংলাদেশের নদীগুলোতে স্বাভাবিক পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে নদী ও নদীর সংযোগ খালগুলো ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ফলে বৃষ্টির কারণে উজানের পানির চাপ বাড়লে তা ধারণ করতে পারছে না নদীগুলো। ফলে নদীপারের জনপদ বন্যায় প্লাবিত হচ্ছে। একই কারণে কোনো কোনো নদীতে ভাঙন তীব্রতর হচ্ছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত কালের কণ্ঠকে বলেন, নদীর অবয়ব নির্ভর করে পানি ও পলল প্রবাহের ওপর। এসবের পরিবর্তন হলে স্বাভাবিকভাবেই নদীর ভৌগোলিক পরিবর্তন আসে। ফলে বন্যা ও নদীভাঙন দেখা দেয়। ভাঙন রোধে নদীশাসনের কথা আসে, আর এই নদীশাসন করতে গেলেই নদীর স্বাভাবিক অবস্থা ও প্রবাহগত চরিত্রের পরিবর্তন আসে। তাই এসব বিষয় বিবেচনা করে টেকসই সমাধানের পথ বের করতে হবে। একইভাবে ভারতসহ অন্য দেশের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আন্ত নদী সমস্যার যৌক্তিক সমাধান করতে হবে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ২০০৫ সালে হাওরের সমস্যাকে যখন ট্রান্সবাউন্ডারি সংকট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, তখন আমাদের অভিন্ন নদী প্রশ্নে কোনো আলোচনা ছিল না। মানুষের ভেতর ফারাক্কা বাঁধ বিরোধিতা ছিল, তিস্তা পানিবণ্টন নিয়ে প্রত্যাশা ছিল। আর কিছু মানুষ টিপাইমুখ বাঁধের বিরোধিতা করতেন। কিন্তু বাস্তবে অভিন্ন নদীর প্রায় প্রতিটিতে ভারত বাঁধ, জলবিদ্যুৎ প্রকল্প বা কোনো স্থাপনা তৈরি বা কোনো না কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে আন্ত রাষ্ট্রিক নদীর প্রবাহ রুদ্ধ করেছে। এই ট্রান্সবাউন্ডারি ডিক্টেটরশিপ কেবল ভাটির বাংলাদেশ নয়, উজানের জনজীবন ও প্রাণ-প্রকৃতিকেও বিপন্ন করে তুলেছে।</span></span></p> <p style="text-align:left"> </p>