অনেকে কয় ফকির সাহেব, তোমার বংশপরিচয় কী? ফকির কি তোমার পদবি? আসলে তা নয়। আম্মার সন্তান হয় কিন্তু কোনোটা আর আটকে (বাঁচে) না। এভাবে চারজন মারা গেছে। পরে বড় আপু হলো।
অনেকে কয় ফকির সাহেব, তোমার বংশপরিচয় কী? ফকির কি তোমার পদবি? আসলে তা নয়। আম্মার সন্তান হয় কিন্তু কোনোটা আর আটকে (বাঁচে) না। এভাবে চারজন মারা গেছে। পরে বড় আপু হলো।
চিহ্ন তবু রয়ে গেছে
তখন এসএস হাই স্কুলে ক্লাস এইটে পড়ি। পড়তে পড়তে একসময় হাওয়া। সীমান্তে তখন তারকাঁটার বেড়া ছিল না। শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, মাথাভাঙা, দ্বীপহাটা—নানা জায়গায় গেলাম। সেখানে খোলটোল বাজাইতাম, গাইতাম।
শেষে শিলিগুড়ির রাজন হোটেলে মেসিয়ার হিসেবে কাজ নিলাম। ভালোই সময় কাটছিল। খালি একটা দাগ এখনো রয়ে গেছে পিঠে। একবার কাস্টমারের ভাষা বুঝিনি। এ জন্য আমার পিঠে গরম পানি ঢেলে দিছিল। ম্যালা দিন টাইম লাগছিল সারতে। ওইখান থেইক্যা বাড়িতে চইলা আইলাম। আবার স্কুলে গেলাম। স্কুল কামাই করতাম। এ জন্য একবার হেড স্যার পিডাইছিল ইচ্ছামতো। পরে তো কমার্স থেকে ৪.৬৩ (জিপিএ) পাইলাম। ভর্তি হইলাম আলীমুদ্দিন ডিগ্রি কলেজে।
গুরুর নাম আশরাফ ভাণ্ডারী
আমার একজন শিক্ষাগুরু আছেন। আশরাফ ভাণ্ডারী। মোটা মোটা বই পড়েন; কিন্তু লোকটার কোনো সার্টিফিকেট নাই। তিনি শাকসবজির বীজ বিক্রি করতেন। কলেজে পড়ার সময় তাঁর বাসায় থাকতাম। ওইখানে গানবাজনা হইত। উনি আমাকে রাতের বেলায় সাইকেলে বিভিন্ন জায়গায় নিয়া যাইতেন গানবাজনা শোনার জন্য। কলেজে ভর্তি হইয়া আবার টাউটারি শুরু কইরা দিছি। পাতার বিড়ি খাইতাম খুব। যা হোক, কলেজে আর্টস থেকে ৪.০০ পাইলাম।
মায়ের সঙ্গে
এবার গার্মেন্টে
এইচএসসি পরীক্ষার পরে তো পোলাপাইন ভর্তি কোচিং করে। আমি কী করব? কোচিং করার জন্য টাকা থাকা লাগব না? তারপর গার্মেন্ট করতে আইলাম। সফিপুরে (গাজীপুর) ময়েজউদ্দিন গার্মেন্ট। গার্মেন্টে যাইয়া খাড়াই থাকি। মেজাজ খারাপ। এক মাস ছিলাম। কোয়ালিটিম্যান। বেতন পাঁচ হাজার টাকা।
আমার বন্ধু দিদার
আশরাফুজ্জামান দিদারের বাড়ি হাতীবান্ধার কালীবাড়িতে। আমাকে খুব পছন্দ করত। বলল, তোর জন্য নাট্যকলা পারফেক্ট। কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে এটা আছে তা-ও সে খুঁজে বের করল। সেকেন্ড টাইম ভর্তি পরীক্ষার সময় আমাকে নিয়ে এলো ঢাকায়। ২০১৩-১৪ সেশনে ভর্তি হলাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। টাকা-পয়সা সব সে দিছে। ক্যাম্পাসে আইসা আবার থাকার জায়গা নাই। গাছের তলে ঘুমাই। পরে ঠিকানা হইলো শহীদ রফিক-জব্বার হল।
মোশাররফ করিমের সেলফিতে
ধুতরার গোটা খাইতাম
তখন একটা বাজে অভ্যাস ছিল—ধুতরার গোটা খাইতাম। ধুতরার গোটার নেশাটা ছাড়াইছে ইউসুফ (ইউসুফ হাসান অর্ক) স্যার। এখনো একটা ভালো গান লিখলে আমাকে ডাকেন। আরেকজন শিক্ষক আছেন—আফসার আহমেদ। ভালো কিছু লিখলে ফোন করেন। রায়হান রাইন স্যার তাঁর ‘নিক্রোপলিসের রাত’ বইটা আমাকে উৎসর্গ করেছেন। তখন গাঁজাও খাইছিলাম। অনেক কষ্টে এইটা থেকে মুক্তি লাভ করেছি। ফার্স্ট ইয়ারে একবার প্যারালিসিসে দুই পা অবশ হয়ে গিয়েছিল। আস্তে আস্তে ঠিক হইছে।
গ্যারেজে কাজ করতাম
মনে করেন, চার-পাঁচজন মিইল্যা খাইবার গেছি। প্রতিদিন আপনিই বিল দেন। কেমন লাগে না? এটা তো ইজ্জতের ব্যাপার। এদিকে টিউশনি পাওয়া যায় না। পকেটে টেকাটুকা থাকে না, বই কিনতে পারি না। কয়েক মাস রিকশা চালাইছি। তারপর বাইপাইলে একটা গ্যারেজে কাজে লাগি। মোটরসাইকেল ঠিক করি। যখনই টাকার শর্ট পড়ে, যাই। মোটরসাইকেলের কাম শিখছি ইন্ডিয়ায়। হোটেলে চাকরি করার ফাঁকে ফাঁকে বাইকে চড়ব দেখে এক ছেলের সঙ্গে খুব ভালো সম্পর্ক রাখছিলাম। ওর সঙ্গে বিভিন্ন গ্যারেজে যাইতাম। মধুসূদন নামে এক লোক ছিল গ্যারেজে। তার কাছ থেকেও শিখছি। লোকটা আমারে কইছিল, ‘তোর সঙ্গে আবার দেখা হবে রে। তার আগে তুই মরবি না।’
গ্যারেজে ফকির সাহেব
৫০০ টাকার জন্য ইনজেকশন দিতে পারি নাই
ভাই, ক্ষুধার কী যে কষ্ট, আমি বুঝি। ২০০০ সালে বাবা মারা গেল। বিশ্বাস করবেন না, তখন এমন অভাব আমাদের। বর্ষাকাল। তিন-চার দিন ধরে মুষলধারে বৃষ্টি। ঘর থেকে বাইর হইতে পারি না। ঘরে খাবার নাই। মা একবার অসুখে পড়ছিল। ৫০০ টাকার জন্য একটা ইনজেকশন দিতে পারি নাই! আমি তো ফকির। আমার খারাপ লাগে। তখন থেকে মনে হইলো, হিউজ পরিমাণ টেকার দরকার। পড়াশোনা গোল্লায় গেল। ক্যাম্পাসে ফার্স্ট ইয়ারে পরীক্ষাগুলো ঠিকমতো দেওয়া হয় নাই। একটা মোটরসাইকেল বানাইছি। নাম দিছি ময়ূরপঙ্খী। লিটারে এক শ কিলোমিটার যায়। এইটা দিয়াই লালমনিরহাট যাই, আসি। মা এখন ভালো আছে।
কী বুইঝা কানতাছে ওরা?
বাড়ির পাশে বিশাল এক মন্দির ছিল। রাধাকৃষ্ণ মন্দির। রাসমেলা হয়। সেখানে গান গাইতাম। মন্দিরে প্রতিদিন সন্ধ্যাবেলা পদাবলী কীর্তনসহ নানা গান হইত। একটা গানের কথা মনে আছে, ‘এইবার করুণা করো বৈষ্ণব গোসাই।’ বাবাও গান গাইতেন। নাম ভিক্ষু সাধু। সন্ন্যাসী ছিলেন। তিস্তার চরে বিভিন্ন ভাণ্ডারি অনুষ্ঠানে যাইতাম। মাঝরাতে যখন বিচ্ছেদের গান গাইত, মানুষ হু হু কইরা কানত। ভাবতাম, কী বুইঝা কানতাছে ওরা?
গানটা ভাইরাল হয়েছিল
রের্কড করা গান শুনি। আমার মোবাইলে যত গান দেখবেন, সব রেকর্ডিং। কোনো অনুষ্ঠানে রেকর্ড করেছি। যখন সময় পাইছি শিল্পীরে জিজ্ঞেস করেছি, আপনার গানের ফিলোসফিটা কী। মারফতি, বাউল, ফোক, দেহতত্ত্বের গান বেশি গাই। খালি গলায় গাইতে ভালো লাগে। ‘শহর থেকে দূরে’ নামে একটা অনুষ্ঠান হয় দুরন্ত টিভিতে। সেই অনুষ্ঠানের শুটিংয়ে গেলাম সোনাদিয়া দ্বীপে। সেখানে একটা গান করেছিলাম, ‘ভাব আছে যার গায়, দেখলে তারে চেনা যায়। সর্ব-অঙ্গ তাহার পোড়া রে।’ কে জানি রেকর্ড করে এটা ‘তারকাঁটা’ নামে পেজে (ফেসবুক) ছাড়ছে। এটা ভাইরাল হয়ে গেল। এতে একটা উপকার হলো—কয়েক হাজার বই উপহার পাইছি বাইরের দেশ থেকে। অনেকে মোবাইল, ল্যাপটপসহ নানা কিছু পাঠাইতে চাইছে। বলছি, বই দেন। ত্রিশ হাজারের মতো বই আছে।
সাপ নিয়া ডিপার্টমেন্টে যাইতাম
ভিক্ষু সাধুর এক শিষ্য আছে—নারায়ণ পাগলা। আসামে থাকে। মাঝেমধ্যে আসত। আমাকে কাঁধে নিয়ে বেড়াইছে। তার কাছ থেকে পাখির ভাষা, জীবজন্তুর ভাষা শিখছি। দীর্ঘদিন এটা প্র্যাকটিস করছি। আমি কিন্তু আগে সাপ নিয়া ডিপার্টমেন্টে যাইতাম। একটা সাপ পালতাম। লাউডগা। সবুজ রঙের। বান্দর (বানর) আর শিয়ালও ছিল। এদের নিয়ে গানবাজনা করতাম। বান্দরটা মরে গেছে। শিয়াল ছাইড়া দিছি।
আর কিছু চাই না গান ছাড়া
গানে আমি কোনো দিন বিজনেস পারপাসে যামু না। এ জন্য আলাদা করে টাকা জমাইছি। যেইটা দিয়া ইউনিভার্সিটি লাইফটা সিম্পল করে কাটাইতে পারি। ভিক্ষু সাধুর গানগুলো আমাকে খুব নাড়া দিছে। তাঁর প্রায় ২০০-৩০০ গান আমার কাছে আছে। বুলবুলী আপা সংগ্রহ করেছিলেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গান গাইতে গেছি। আমার বেশ কয়েকটা গান এখন মানুষ জানে। যে গানগুলো প্রচার হয় নাই, সেগুলোই কালেক্ট করছি। ঠমক, একতারা, গাবগুবি, করতাল, ঘুঙুর—সব নিজের বানানো। হাই অ্যাম্বিশন নাই আমার। ডাইনিংয়ে দুই হাজার টাকায় মাস চলে যায়। এক লিটার তেল তুলি। ১০০ কিলোমিটার যাইতে পারি। সুন্দরমতো ঘুরি। কারো সঙ্গে কোনো প্যাঁচগোছ নাই। মাঝেমধ্যে গুরুদুয়ারা নানকশাহিতে যাই। আজীবন গানবাজনা করতে চাই।
অনেকে আসেন
সাহিত্যিক, শিক্ষক, ব্যাংকার থেকে শুরু করে অনেকে আসেন আমার কাছে। মা একটা কথা বলতেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় তোমাকে একটা সার্টিফিকেট দেবে। কিন্তু তুমি বিচার করে দেখো, আমার মাধ্যমেই তোমাকে আসতে হইছিল। আমার মাধ্যমে আসছ বলে তুমি এত মানুষের সঙ্গে কথা বলো, মিশতেছ।’ এই জিনিসটা ভুলি না কখনো। এ জন্য কখনো কোনো মানুষের সঙ্গে রাগ করি না। সারা দিনই মানুষ আসে। মোশাররফ করিমের কথা তো অনেকেই জানে। তাঁর বন্ধু আমার ডিপার্টমেন্টের সাবেক চেয়ারম্যান ইউসুফ হাসান অর্ক। তাঁর মাধ্যমে প্রথম এসেছিনেল। এখন সময় পেলেই আসেন। রিসেন্ট কোরিয়া থেকে আসছিল পাঁচজন। এর আগে চীন ও স্পেন থেকেও আসছিল। বিপিএটিসিতে (বাংলাদেশ লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র) সরকারি কর্মকর্তাদের ট্রেনিং হয়। একবার সেখান থেকে অনেক পুলিশ অফিসার এসেছিলেন। এক ভাই আসেন গুগলে চাকরি করেন। আমার গান শুনে তিনি একটা সফটওয়্যার দিয়েছেন, যেটা দিয়ে গান অনুবাদ করা যায়।
‘মজিয়াছি আপন পিরিতে’
আমাকে অনেকে ‘পাগল’ কয়। লালনের গানের এক জায়গায় আছে, ‘লালন বলে মজিয়াছি আপন পিরিতে।’ ক্লাস যখন থাকে না, তখন জঙ্গলে থাকি। হোন্ডা (মোটরসাইকেল) নিয়ে প্রচুর ঘুরি। মানুষের সঙ্গে থাকি না। যে জায়গায় আমাকে কেউ চেনে না, সেখানে গিয়ে বসে থাকি। প্রতিবন্ধী বাচ্চাদের গান শোনাই। যেখানে প্রতিবন্ধী বাচ্চাদের স্কুল আছে, সেখানে আমি আছি। ওদের কাছে যাই ওদের ভাষা বোঝার জন্য। ধরেন, একজন ঠোঁটকাটা। সে-ও হাসবার চায়; কিন্তু পারে না। তাগো কাছে যাই, হাসিঠাট্টা করি। আমার ফিলোসফি হইলো, জীবনটা উদ্যাপন করে যাইতে হবে। যাপন তো সবাই করে। বার্ট্রান্ড রাসেল, এস এম সুলতান, আখতারুজ্জামান ইলিয়াসসহ এ রকম বড় লোকগুলো সম্পর্কে পড়েছি এই কারণে—শাহ আব্দুল করিম কইছে, মানুষ থুইয়া খোদা ভজে এই মন্ত্রণা কে দিছে? এই কথা ভালো লাগছে। গান টুকটাক লেখি। কয় দিন আগে নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চুর ‘আলফা’ সিনেমা দেখে একটা গান লিখেছি—সখী আমি কোন দেশে যাই/যে দেশে আমার কোনো ঠিকানা নাই! সম্প্রতি কাঠবিড়ালি নামে একটা সিনেমায় কণ্ঠ দিয়েছি, অভিনয়ও করেছি।
সংসার করার ইচ্ছা নাই
বাড়িতে ২০০০ লিচুগাছ লাগাইছি। মা-ও আছে। তাগো নিয়ে থাকব। আমার একটা গান আছে, ‘কূল ভাঙা এক নদীর তীরে বান্ধিয়াছি ঘর/ কুনসুম জানি যায় ভেসে যায় আশার বালুচর।’ তাই সংসার করার ইচ্ছা নাই। এক ইহুদি মেয়ের সঙ্গে রিলেশন ছিল বছর দুয়েক। পরে বাদ দিছি।
ছবি : সংগ্রহ
সম্পর্কিত খবর
রংপুরের গুপ্তপাড়ার ইসহাক আলী ও শাহিদা বিবির সন্তান ইকবাল ঘুরতে ঘুরতে রংপুর থেকে নওগাঁয় আসেন প্রায় ৪৪ বছর আগে। এখন বয়স ৭২ বছর। বাবা ইসহাক আলী চাকরি করতেন বগুড়ার জামিল গ্রুপে। ইকবাল থাকতেন মায়ের সঙ্গে রংপুরে।
সেই থেকে ইকবাল জীবনের সব দুঃখ-কষ্ট বুকে চেপে রেখে হাসিমুখে কথা বলেন শিশু থেকে নানা বয়সী মানুষের সঙ্গে। নওগাঁ শহরের প্রায় সবাই তাঁকে চেনে বই ফেরিওয়ালা হিসেবে। সকালে যা পারেন রান্না করে খেয়ে বের হন বাসা থেকে। বাসা বলতে শহরের দয়ালের মোড়ে ভাড়া নেওয়া টিনের ছাপরা দেওয়া একটি ছোট্ট ঘর।
সারা দিন ঘুরে যা আয় হয়, তা দিয়ে কোনোভাবে খেয়েপরে দিন চলছে তাঁর। করোনা মহামারির সময় খুব কষ্টে কেটেছে তাঁর দিন। জমানো টাকা যা ছিল তা খরচ হয়ে যায়; এমনকি ঘরভাড়ার ৭০০ টাকা জোগাড় করতেও হিমশিম খেতে হয়েছে। তবু কারো কাছে হাত পাতেননি।
হায়দার আলী ইকবাল বলেন, ‘নওগাঁ আমাকে মায়ার বাঁধনে বেঁধে ফেলেছে। স্ত্রী মারা যাওয়ার পর বিয়ে থা আর করা হয়নি। জীবনের সবটাই তো পেরিয়ে এসেছি। আগামী দিনে কী আছে তা নিয়ে আর ভাবি না। বই আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছে, খাবার জুগিয়েছে। তাই বইয়ের কাছে আমি ঋণী। দুই পায়ে ভর দিয়ে চলতে কষ্ট হয়। একটি ভ্যানগাড়ি তৈরি করে নিয়েছি। কিন্তু শিশুতোষ পণ্য ওঠানোর মতো টাকাকড়ি নেই। শিশুতোষ বইয়ের সঙ্গে খেলনাসামগ্রী তুলে স্কুলের সামনে বিক্রি করব। একটি অটোভ্যান পেলে খুব ভালো হতো।’
এখন বাজারে নানা ধরনের কফি পাওয়া যায়, যা বিভিন্ন কম্পানি তাদের নিজস্ব পদ্ধতিতে কৃত্রিম উপায়ে তৈরি করে। বাজারজাতকরণের জন্য এসব কফি পাউডারের সঙ্গে নানা কৃত্রিম উপাদানের মিশ্রণও ঘটানো হয়। তবে বাগান থেকে কফির বীজ সংগ্রহ, পরিচর্যা, গুঁড়া তৈরি—কোনো ক্ষেত্রেই কৃত্রিম কোনো উপাদান ব্যবহার না করে তৈরি কফিই গুণে-মানে সেরা। স্বাদও অপূর্ব।
লুয়াকের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এই কফির বীজ বিড়াল আকৃতির এক ধরনের মঙ্গুস (বেজি) গোত্রের প্রাণীকে খাওয়ানো হয়। বাগানে খাঁচার মধ্যে প্রাণীটিকে রেখে এই ফল খাওয়ানো হয়। কারণ প্রাণীটি এই ফল খায়, তার পাকস্থলীতে গিয়ে এই ফল জার্মিনেটেড হয়; তবে ওই ফল আবার বর্জ্য হিসেবে বের করে দেয়।
বাগানে ওই বর্জ্য সংগ্রহ করা হয়।
এই কফির মান কেমন? মান পরীক্ষা করানোর জন্য বাগানের কর্মী তাঁদের নির্ধারিত স্থানে নিয়ে বসালেন। তবে এখানে কফিপান বিনা মূল্যে নয়। সাধারণ ছোট এক কাপ কফির দাম ৫০ হাজার ইন্দোনেশিয়ান রুপিয়া। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩৫০ টাকা। অবশ্য স্বাদের পার্থক্য অনুভবের জন্য আপনাকে পাশাপাশি আরো সাত রকমের কফি দেওয়া হবে। চুমুক দিয়ে দেখলাম, স্বাদে অনন্য। এই কফি পাউডার প্যাকেট বা বোতলজাত করে বিক্রি করা হয়। ১০০, ২০০ বা ৫০০ গ্রামের প্যাকেট। পরিমাণ বা প্যাকেটের ধরনের ওপর দাম কমবেশি হয়ে থাকে। ১০০ গ্রাম লুয়াক কফি পাউডারের দাম সাত লাখ ২০ হাজার ইন্দোনেশিয়ান রুপিয়া, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা। এই কফি থেকেই তৈরি করা হয়েছে চকোলেট।
ইন্দোনেশিয়ায় পর্যটকদের জন্য তীর্থভূমি বালিজুড়ে এ রকম অনেক কফিবাগান ছড়িয়ে আছে, যেখানে একেবারে প্রাকৃতিক উপায়ে কফি তৈরি ও বিপণন করা হয়।
আমার পাশের সিটটা বলা যায় নীলুর জন্য রেজিস্ট্রিই করা। সেই যে নীলু, শহর থেকে আসা হ্যাংলা মেয়েটা, এক দুপুরে আমার পাশে বসল, সেটা এক দিনের জন্যও বদলায়নি। দিন দিন আমাদের নৈকট্য বেড়েছে। সহপাঠী থেকে আমরা হয়ে গেলাম সই।
ঘণ্টা পড়ে গেছে, কিন্তু নীলু এখনো এলো না। আমার খুব একা একা লাগছে। যদিও মন বলছে সে এক্ষুনি চলে আসবে।
কিন্তু সে আসে না। প্রথম পিরিয়ড শেষ হয়, দ্বিতীয় পিরিয়ড শেষ হয়, শেষ হয় শেষ পিরিয়ডও; তবু সে আসে না। ছুটির পরে আমি বাবার সঙ্গে বাড়ি ফিরছি।
উঠানে পা দিতেই দেখি একটা বকুলগাছের তলায় নীলু শুয়ে আছে। পাশেই তার ছোট ভাই বাবু নীলুর মতোই নিস্তব্ধ, নিথর! যেন এইমাত্র ঝরে পড়া দুটি হলুদ পাতা জড়াজড়ি করে শুয়ে আছে!
আমার নীলু! আমার খেলার সাথি! আমার হরিণী! নিবিড় বনের মতো আচ্ছন্ন চোখের চাহনি তার নীল হয়ে গেছে। এই চোখে তাকিয়ে আমি কত দিন মুগ্ধতায় অবশ হয়েছি। কী হয়েছে নীলুর?
বাবা নীলুকে উপুড় করে কোলে তুলে নিলেন। মুখের ভেতর হাত দিলেন, মুখ দিয়ে গড়গড়িয়ে এক কলসির মতো পানি বেরোলো। বাবা নীলুর মুখে মুখ লাগিয়ে শ্বাস দিলেন; হাতের তালু, পায়ের তালু ঘষে ঘষে গরম করতে চাইলেন। দুই হাতের আঙুল ওপর-নিচে ধরে তার বুকের ওপর চাপ দিলেন। চোখের পাতা উল্টে দেখলেন, হাতের কবজিতেও কী যেন দেখলেন! নীলুর কোনো সাড়া নেই। বাবা নীলুর ভাই বাবুকেও একই রকম করলেন। তার ঠোঁটও নীলচে হয়ে গেছে, হাতের তালু কুচকে গেছে।
নীলুর মা আর্তনাদ করে বাবাকে বললেন, ‘স্যার, কিছু বলছেন না কেন? ওরা কি আর নেই?’
বাবা বললেন, ‘ডাক্তার নিয়ে এসো।’ বলেই পাঞ্জাবির পকেট থেকে রুমাল বের করে বাবা চোখ মুছলেন।
‘আল্লাগোওওওও’ বলে চিৎকার দিয়ে নীলুর মা জ্ঞান হারালেন।
বাড়ি ভর্তি মানুষ গিজগিজ করছে। কানাঘুষা চলছে। একজন বললেন, মা-টা এমন বেখেয়ালি! শোকের বিলাপ তুলে আরেকজন বললেন, আজ ভোরেও চোখ বন্ধ করে ঝরা বকুলের সুবাস নিয়েছিল নীলু। সেই নীলু এখন লাশ হয়ে শুয়ে আছে তারই মৃত ভাইয়ের পাশে!
নীলুর লোটন আপু বললেন, উঠোনে কাপড় শুকাতে দিতে গিয়ে দেখি দুই ভাই-বোন গোসল করছে, মগ কেটে গায়ে পানি ঢালছে। হয়তো বাবু পা পিছলে পানিতে পড়ে যায়, আর নীলু তাকে তুলতে ঝাপ দেয়। কিন্তু নীলু ভুলে যায় সে সাঁতার জানে না। সাঁতার না জানার মতো সামান্য অক্ষমতার কাছে ভাইয়ের প্রতি ভালোবাসার পরাজয় হতে পারে না। তাই বুঝি একসঙ্গে বাঁচতে চেয়ে দুই ভাই-বোন একসঙ্গেই তলিয়ে যায় দিঘির মতো দীর্ঘ পুকুরের অতল জলে। হয়তো ডুবন্ত ভাই-বোনের দপাদপিতে পাতিহাঁসের দল ডানা ঝাপটে উঠে আসে পারে। বেজি কিংবা বাগডাশ ভেবে আমরা ওদিকে যাইনি। আহা যদি একবার যেতাম!
কত অসংখ্য দিন নীলু আমাকে তাদের বাড়ি যেতে বলেছিল! নানা ছুতোয় যাইনি। আজ কোনো অনুরোধ ছাড়াই এসেছি। পিঁপড়ার দলার মতো গিজগিজ করা মানুষের ভিড়ের মধ্যে নীলুর লাশের পাশে বসে আছি।
নীলু বলেছিল, আমাদের একটা বকুলগাছ আছে, বড় একটা পুকুর আছে, তার শান-বাঁধানো ঘাট, পুকুরে পাতিহাঁস সাঁতার কাটে, রক্তজবার ঝোপের ভেতর টুনটুনির বাসা, লজ্জাবতীর ঝাড় স্পর্শ পেলেই নুয়ে পড়ে, একটা সাদা বিড়াল আছে মিনি। বলেছিল, আমার লোটন আপু আছে, সে অনেক বড় বড় নভেল পড়ে আর রেডিওতে অনুরোধের আসরে চিঠি লেখে। আমার ভাইটা খুব দুষ্ট। বাবা খুব ব্যস্ত, খালি ঢাকা যেতে হয়। আর মা? মা আমার খুব প্রিয়। কেক বানাতে পারে, পুডিং বানাতে পারে। এত মজা করে পায়েস রাঁধে যে খেলে তুই ভুলতেই পারবি না! আমার শান্ত জ্যাঠা এমন পাওয়ারের চশমা পরে যে তাকালে চোখ দুটিকে অনেক দূরের মনে হয়। আমাদের কাকাতুয়ার মতো ঝুঁটিওয়ালা মোরগ আছে, খুব ভোরে চিৎকারে করে আমাদের ঘুম ভাঙিয়ে দেয়। আয় না একদিন আমাদের বাড়ি!
চিৎকারে করে বলতে ইচ্ছা করছে, নীলু, আমি এসেছি নীলু!
এই উঠোন পার হয়েই কি পুকুরে গিয়েছিল নীলু? ওই তো ছোট্ট পায়ের ছাপ এখনো মুছে যায়নি! ইচ্ছা করছে সেখানে চুমু খাই। উঠোনের বকুলগাছটাকে দেখি। নীলুর শোকেই কি সব ফুল ঝরে পড়ে আছে?
ঝরা ফুলের বেদনা বুকে নিয়ে আমি আর বাবা ফিরে আসি। আমাদের মন পড়ে থাকে বকুলগাছটার তলায়। নীলুর কাছে। নীলুর ভাইয়ের কাছে। আমার চোখ ভিজে উঠে বারবার। যতই চোখ মুছি নীলুর স্মৃতির কোলাজ বারবার জ্বলে ওঠে মনের মাঝে।
ঢোলকলমির ফুল দিয়ে নীলু প্রায়ই মাইক বানাত। হাবিজাবি মাইকিং করত। স্কুলের পেছনে আমগাছের ডালে বসে একেক দিন একেক ঘোষণা দিত : একটি হারানো বিজ্ঞপ্তি, একটি হারানো বিজ্ঞপ্তি... নীলু নামের একটি মেয়ে হারিয়ে গিয়েছে। তার পরনে ছিল লাল স্কার্ট, সাদা টপস...
নীলু সত্যিই হারিয়ে গেছে। হারিয়ে গেছে বুকের কাছের বকুল ফুলের ঘ্রাণ। হারিয়ে গেছে ‘আয়রে আমার কনকচাঁপার আনন্দ উদ্যান।’
—কাইছুন নেছা কুহেলী
সুবর্ণচর, নোয়াখালী।
বিদ্যালয়টি নাগেশ্বরী উপজেলা শহর থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে সুখাতী গ্রামে অবস্থিত। গত বছরের ৩ ডিসেম্বর মিরপুরে জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রতিবন্ধতা উত্তরণে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখায় প্রতিষ্ঠান ক্যাটাগরিতে ‘সুখাতী বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ও অটিজম বিদ্যালয়’কে দেশসেরার পুরস্কার দেয়।
শুরুর কথা
বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর আলমগীর। ছাত্রাবস্থায় বন্ধুদের নিয়ে ‘উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ সামাজিক সেবা’ নামের একটি সংগঠন গড়ে তোলেন এক দশক আগে।
আব্দুল্লাহ আল নোমানও এখন সুস্থতার পথে।
ব্যতিক্রমী এক প্রতিষ্ঠান
সরকারি হিসাবে কুড়িগ্রামে প্রতিবন্ধীর সংখ্যা প্রায় ৬৪ হাজার।
আলমগীর জানান, কুড়িগ্রাম জেলায় বিশেষ শিশুদের জন্য সমন্বিত উদ্যোগের একমাত্র প্রতিষ্ঠান এটি। অটিজম, সেরিব্রাল পালসি, ডাউন সিনড্রোম, সেন্সরি ডিস-অর্ডার, বিলম্বে কথা বলা, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধিতা এবং অতিচঞ্চল শিশুদের জন্য প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন তিনি। ওদের সমাজের মূলধারায় এনে স্বাভাবিক জীবন নিশ্চিত করাই ছিল উদ্দেশ্য। শুরু থেকে অভিভাবকদের কাছে আস্থা আর বিশ্বাসের প্রতীক হয়ে ওঠে আলমগীরের প্রতিষ্ঠানটি।
এখানে প্রতিবন্ধী শিশুদের চাহিদামতো অকুপেশনাল থেরাপি, ফিজিও থেরাপি, স্পিচ অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপি, মিউজিক, ডান্স ও ইয়োগা থেরাপি এবং গ্রুপ থেরাপির মাধ্যমে শিশুদের সুরক্ষায় কাজ করছেন একদল তরুণ-তরুণী।
যেভাবে চলে
এখন কোনো অভিভাবক তাঁর বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন সন্তানকে স্কুলে নিয়ে এলে প্রথমেই ম্যানেজমেন্ট টিমের মাধ্যমে তার শারীরিক ও মানসিক সমস্যা বা প্রতিবন্ধিতার ধরন চিহ্নিত করা হয়। অভিভাবকসহ শিশুটিকে একটি কক্ষের ভেতরে রেখে সিসি ক্যামেরায় তার আচরণ পর্যবেক্ষণ করা হয়। খোলা হয় তার জন্য পৃথক ফাইল। তারপর শুরু হয় পুনর্বাসনের কাজ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পুরো প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণ সাজানো চিত্রাঙ্কন ও শিশুদের ভালো লাগা ছবিতে। মাঠে শিশুদের খেলার সরঞ্জাম। বিশেষ শিশুদের ভোকেশনাল ট্রেনিং, ডেইলি লিভিং অ্যাক্টিভিটি ট্রেনিং, ভারী কাজ করানো, সোশ্যালাইজেন, আইইপি স্কুলিং ছাড়াও বহির্বিভাগ থেরাপি কার্যক্রম, শিশুদের ১:১ পদ্ধতিতে বিশেষ শিক্ষাদান চলে।
প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান, অভিভাবক প্রশিক্ষণসহ আউটিং কার্যক্রম রয়েছে। প্রয়োজনে আসেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও থেরাপিস্ট। কখনো শিক্ষার্থীদের নেওয়া হয় তাঁদের কাছে। আর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকরা তো আছেনই।
শিক্ষকের সঙ্গে খেলায় মেতেছে মেঘলা। ছবি : লেখক
সাফল্য আসছে
আলমগীর চেষ্টা করেন এখানে আসা সবাইকে সুলভে সেবা দেওয়ার। তাঁদের সেবায় সেরিব্রাল পালসিসম্পন্ন পাঁচ শিশু এখন স্বাভাবিক হয়ে ফিরেছে পরিবারে। একই লক্ষণের ২৩টি শিশু ধীরে ধীরে সুস্থতার দিকে যাচ্ছে। এরই মধ্যে ১৭ জনকে এরই মধ্যে মূলধারার শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। এখন মোট ১১০টি শিশু রয়েছে প্রতিষ্ঠানটিতে।
সুস্থ হয়ে ফেরা শিশুদের একজন সাত বছর বয়সী মেঘলা শীল। তার মা তৃষ্ণা রানী বলেন, ‘আমার বাচ্চা আগে হাঁটতে পারত না। কথা বলতে পারত না। কিন্তু এখন সে হাঁটতে পারে, কথাও বলতে পারে।’ সারাবান তহুরা পুষ্পর বয়স ১০ বছর। তার মা সালেমা বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ে ছিল অস্থির (হাইপার) ও শ্রবণপ্রতিবন্ধী। এখন প্রায় ৭০ শতাংশ সুস্থ হয়েছে। স্কুলটিতে সরকারি সহায়তা পেলে অনেক বাচ্চার উপকার হতো।’ সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত ১২ বছরের আব্দুল্লাহ জয়ের মা জাহানারা বেগম এসেছেন হাসনাবাদ থেকে। বললেন, ‘ও আমার প্রথম সন্তান। মাত্র ছয় মাসে সবার চেষ্টায় ওর অনেক উন্নতি হয়েছে।’ এই সাফল্যের স্বীকৃতিও মিলেছে। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে একাধিক সম্মাননাসহ ২০২০ সালে শেখ হাসিনা ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড জিতেছিল প্রতিষ্ঠানটি। এবার তো হয়েছে দেশসেরা।
ভিডিও লিঙ্ক : https://www.facebook.com/watch/?v=1312484092657030&ref=sharing
ভবিষ্যতের ভাবনা
সহানুভূতিশীল মানুষের আর্থিক অনুদানে প্রতিষ্ঠানটি চলছে। আলমগীর বলেন, ‘স্কুলটি পরিচালনা করতে প্রতি মাসে লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়। আয় হয় প্রায় ২২ হাজার টাকা। প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষক, কর্মচারীসহ মোট ২৮ জন কর্মরত। কাউকে নিয়মিত বেতন দিতে পারছি না।’ তিনি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটি আমার স্বপ্ন। কিন্তু দিন যত যাচ্ছে কুলিয়ে উঠতে পারছি না। আমার দরকার প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি এবং নিয়মিত অনুদান পাওয়ার নিশ্চয়তা। সব শর্ত মেনে আবেদন করা হলেও এখনো সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বীকৃতি মেলেনি।’
কর্মকর্তারা বললেন
নাগেশ্বরী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা জামাল হোসেন বলেন, ‘গ্রামের প্রতিষ্ঠান হলেও সেবার মান উন্নত। অনেক অটিজম শিশুর উন্নতি হয়েছে তাদের মাধ্যমে। আশা করি, অচিরেই প্রতিষ্ঠানটি স্বীকৃতি পেয়ে যাবে।’ নাগেশ্বরী ইউএনও ফারজানা জাহান বলেন, ‘স্কুলটি পরিদর্শন করে খুব ভালো লেগেছে। আমরা আলমগীরকে সহযোগিতার চেষ্টা করছি।’