<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">একসময়ের জমজমাট বাঁশখালী ইকো পার্ক এখন নানা অব্যবস্থাপনায় পর্যটকশূন্য হয়ে আছে। এ অবস্থায় বন বিভাগ চলতি বছরের ২১ জুন থেকে এ পার্কের প্রবেশ ফি ১০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ টাকা করা হয়েছে। ২০২৫ সাল পর্যন্ত প্রবেশ ফি ৫০ টাকা আদায়ের কার্যাদেশ পেয়েছেন মেসার্স হামিদ এন্টার প্রাইজের মালিক মো. হামিদ। তাতে রাজস্ব, ভ্যাট ও আয়করসহ বার্ষিক মূল্য ধরা হয়েছে ২৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা। প্রবেশ ফি বৃদ্ধির এই টাকা দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত ইকো পার্কের বিভিন্ন স্থাপনাগুলো দ্রুত সংস্কার দাবি জানিয়েছে পর্যটকরা।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩-০৪ অর্থ বছরে এক হাজার হেক্টর বনভূমির ওপর বাঁশখালী ইকো পার্ক তৈরি করা হয়। বন্য প্রাণী অভয়ারণ্যের আওতাধীন এই ইকো পার্ক। এখানে রয়েছে ১০০ হেক্টর জলাধার, ৫৭০ প্রজাতির প্রাণী ও উদ্ভিদ, দুটি ঝুলন্ত সেতু, দুটি পিকনিক শেড, ৪০০ ফুট উঁচু দুটি টাওয়ার, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ভিআইপি রেস্ট হাউস, সাসপেনশন ব্রিজ, রিফ্রেশমেন্ট কর্নার, কটেজ, তথ্যকেন্দ্রসহ বিভিন্ন স্থাপনা। ২০১২ সালে প্রাকৃতিক দুর্যোগে অধিকাংশ স্থাপনা পাহাড়ি ঢলে ভেসে যায়। এরপর থেকে সংস্কার না করায় এখন সব স্থাপনা পরিত্যক্ত এবং তদারকবিহীন অবস্থায় পড়ে আছে। কয়েকটি স্থাপনার দরজা-জানালা ও লোহার গ্রিল খুলে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। প্রতিবছর বন বিভাগ গেট ও গাড়ি পার্কিং ইজারা দিয়ে লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করে, কৃষি বিভাগ ও উপজেলা এলজিইডি বিভাগ সেচ প্রকল্পের পানি বিক্রয় করে লাখ লাখ টাকা আয় করলেও বাঁশখালী ইকো পার্কের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে কারো সুনজর নেই। ঝোপঝাড়ে ঢেকে গেছে বিভিন্ন স্থাপনা। বিশাল জলাধার কচুরিপানায় ভরে গেছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও বন সংরক্ষকের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, ১৯৯৩ সাল থেকে এই ইকো পার্কের নাম ছিল বামের ছড়া ও ডানের ছড়া প্রকল্প। বিভিন্ন সময় এখানে কোটি টাকার উন্নয়নকাজ হয়েছে। গত ২০০৬-০৭ সাল থেকে ২০১০-১১ সালের অর্থবছর পর্যন্ত ৯ কোটি ৯৪ লাখ ৩০ হাজার টাকার উন্নয়নকাজ হয়েছে। ২০০৩ সাল থেকে  বিরল ও বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতির বাগান এবং ভেষজ উদ্ভিদের বাগানসহ মোট আট হাজার ২৫ হেক্টর বাগান সৃজন করা হয়। ইকো পার্কের পাহাড়গুলোতে প্রাকৃতিক নিয়মে বনাঞ্চল থাকায় হাতি, হরিণ, বানর, চিতাবাঘ, শূকর, রামকুকুর ও বিভিন্ন প্রজাতির শীতের পাখি অবাধে বিচরণ করত। সর্বশেষ ১৯৯৭ সালের প্রাণী জরিপে দেখা গেছে, ৪৫ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৮৫ প্রজাতির পাখি, ২৫ প্রজাতির সরীসৃপ ও সাত প্রজাতির উভচর প্রাণী ছিল। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১৯৯৭ সালের উদ্ভিদ জরিপে দেখা গেছে ৩১০ প্রজাতির উদ্ভিদ ছিল। তার মধ্যে ১৮ প্রজাতির দীর্ঘ বৃক্ষ, ১২ প্রজাতির মাঝারি বৃক্ষ, ১৬ প্রজাতির বেতসহ অসংখ্য অর্কিড ইপিফাইট ও ঘাস জাতীয় গাছ। অনেক প্রজাতির গাছ এরই মধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ইকো পার্কের এক হাজার হেক্টর বনভূমি বৃক্ষশূন্য হয়ে মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। বন বিভাগের কাগজে-কলমে ২০০৩ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে সৃজিত ৮২৫ হেক্টর সৃজিত বাগান থাকলেও বাস্তবে তা নেই। পাশাপাশি বাগান সৃজনের পূর্বের বনায়নের বিশাল বিশাল গাছও পাহাড় থেকে উধাও হয়ে গেছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ইকো পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইসরাইল হক জানান, বাঁশখালী ইকো পার্ককে আগের অবস্থানে ফিরিয়ে আনা হবে। পর্যটকদের আর্কষণ বাড়াতে ১০০ কোটি টাকার মেগা প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p>