<p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে উপ-আঞ্চলিক যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত করতে করিডরের অংশ হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নদীবন্দরের সঙ্গে আখাউড়া স্থলবন্দরের সরাসরি যোগাযোগব্যবস্থার লক্ষ্যে ভারতের সঙ্গে একটি সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ২০১৬ সালে। আট বছরে এসে পাঁচ হাজার ৮৯১ কোটি টাকার এ প্রকল্পটির গড়ে প্রায় ৫৭ শতাংশ কাজ শেষ হয়। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর প্রকল্পটি যেন </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হোঁচট</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> খেয়েছে। আশুগঞ্জ স্থলবন্দর-সরাইল-ধরখার-আখাউড়া চার লেন প্রকল্পটির কাজ বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় এক মাস হলো। সংশ্লিষ্ট ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> বাংলাদেশের চলমান সার্বিক পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার কথা ভেবে চলে যাওয়ায় প্রকল্পটি অনিশ্চয়তার মুখে পড়ল। </span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ প্রকল্পে নিয়মিত কাজ করতেন ভারতের এমন ৩৬০ জনের মতো কর্মকর্তা-কর্মচারী নিজ দেশে চলে যাওয়ার পর কাজ পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। এমনকি এ কাজের জন্য তাঁদের নির্ধারিত যে কার্যালয়, সেখানেও কেউ নেই। ওই কার্যালয় থেকে নিয়মিত যন্ত্রাংশও চুরি হয়ে যাচ্ছে।</span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এদিকে কাজ বন্ধ থাকা অবস্থায় বিকল্প যে সড়ক দিয়ে নিয়মিত যান চলাচল করে, সেটি নিয়েও এখন শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই ওই পথ দিয়ে যান চলাচাল অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এতে যাত্রীসহ চালকেদের ভোগান্তির যেন শেষ নেই।  </span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সরেজমিনে গিয়ে ঘুরে দেখা যায়, আশুগঞ্জ থেকে আখাউড়া ধরখার পর্যন্ত অংশে বেশির ভাগ জায়গায় এক দিকের দুই লেনের কাজ শেষ হয়েছে। যানবাহন চলাচলের সুবিধার্থে ওই সব জায়গা খুলে দেওয়ায় অনেকটা স্বস্তি নিয়েই চলা যাচ্ছে। কিন্তু যেসব স্থানে এখনো এক দিকেও কোনো কাজ হয়নি এবং এক দিকে কাজ হলেও সড়ক সংযোগস্থলের কাজ বাকি রয়েছে, সেসব জায়গায় বেশ ভোগান্তি বিরাজ করছে। বিশেষ করে সামান্য একটু বৃষ্টি হলেই পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে।   </span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রকল্পসংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১৯ জুলাই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) প্রকল্পটি অনুমোদন হয়। প্রকল্পের আওতায় ৫০.৫৮ কিলোমিটার চার লেন সড়ক, ১৬টি সেতু, দুটি রেলওয়ে ওভারপাস, তিনটি আন্ডারপাস, ১০টি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করার কথা। ২০১৮ সালে শুরু হয়ে ২০২০ সালের জুন নাগাদ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা। তবে মহামারি করোনা, পণ্যে অপ্রতুলতাসহ নানা কারণে সেটি পিছিয়ে পড়ে। </span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড ২০২২ সাল থেকে প্রকল্পটির কাজ আবার পুরোদমে শুরু করে। এর মধ্যে প্যাকেজ-১-এর অধীনে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জের গোল চত্বর থেকে বিশ্বরোড মোড় পর্যন্ত এক পাশে দুই লেনের কাজ শেষ করা হয়। প্যাকেজ-২-এর অধীনে বিশ্বরোড থেকে ধরখার পর্যন্ত এক পাশের কাজ অনেকাংশেই শেষ হয়। তবে কাজ চলমান অবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর বাইপাস, ঘাটুরা বিরাসার, পৈরতলা, রাধিকা ও উজানিসার এলাকায় মহাসড়কের এক পাশে খানাখন্দ থাকায় অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন।</span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সুলতানপুর এলাকায় কথা হয় বাসচালক মো. আরজ মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমাদের এ দুর্ভোগ যে কবে শেষ হবে, তা বলা মুশকিল। নানা কারণে এত দিন কাজের দেরি হয়। এখন কিছু কাজ হওয়ার পর শুনেছি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজনই চলে গেছেন। আমরা চাই সরকার এ বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিক।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p style="text-align:justify"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আশুগঞ্জ-আখাউড়া চার লেন প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মো. শামীম আহমেদ জানান, ভারতীয়রা নিরাপত্তার কথা বলে দেশে চলে গেছেন। তাঁদের ৩৫০-এর বেশি লোকের একজনও এখানে নেই। কবে তাঁরা ফিরে আসবেন এ বিষয়েও কিছু জানাননি। তিনি আরো জানান, প্যাকেজ-১-এর আশুগঞ্জ থেকে বিশ্বরোড পর্যন্ত মহাসড়কের ৬২ শতাংশ এবং বিশ্বরোড থেকে ধরখার বাজার পর্যন্ত ৫২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। পুরো কাজ যেহেতু ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অধীনে ছিল, সেহেতু বিকল্প সড়ক মেরামতের দায়িত্বও তাদের। এখন ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন না থাকায় কিছু করাও যাচ্ছে না।</span></span></span></span></p>