ক্রীড়া প্রতিবেদক : ‘প্রস্তুতির জন্য আমরা ঈদের ছুটিতে বাসায় যেতে পারিনি, অনুশীলন করতে হয়েছে। আমরা জানি এই টুর্নামেন্ট কতটা গুরুত্বপূর্ণ দলের জন্য’—নিগার সুলতানার এই কথায় পরিষ্কার ওয়ানডে বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের বাধা উতরাতে কতটা মরিয়া বাংলাদেশ। এবার সুযোগ ছিল সরাসরি বিশ্বকাপে জায়গা করে নেওয়ার। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মেয়েদের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজে সুযোগটা কাজে লাগাতে না পারায় বাছাই পর্বের কঠিন পরীক্ষায় নামতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।
যে পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে দেশে নারী ক্রিকেটের অগ্রযাত্রায় বড় ধাক্কা লাগবে বলেই মনে করেন নিগার। বাছাইপর্ব খেলতে আজ সকাল ১০টা ১৫ মিনিটের ফ্লাইটে পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার আগে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলছিলেন, ‘একটা দল যখন আইসিসির আসর খেলে, তাদের ভিন্ন চোখে দেখা হয়। আমাদের ক্যারিয়ারের জন্য এটা অনেক বড় একটা ব্যাপার। গতবার আমরা যখন ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলেছি, এরপর আমাদের ম্যাচ অনেক বেড়ে গিয়েছিল।
সম্মানের দিক থেকে, অর্থনৈতিক দিক থেকে খেলোয়াড়রা অনেক লাভবান হয়েছি। দেশে নারীদের ক্রিকেটের জন্য আমাদের বিশ্বকাপে জায়গা করে নেওয়াটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’
আগামী ৯ এপ্রিল থেকে শুরু হবে ছয় দলের এই বাছাইপর্ব। যেখান থেকে সেরা দুই দল বিশ্বকাপে খেলবে।
এই ছয় দলের মধ্যে পাকিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ থাকায় চিন্তাটা বেশি বাংলাদেশের। ১০ এপ্রিল লাহোরে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ। দলের প্রস্তুতি নিয়ে নিগারের ভাষ্য, ‘বাছাইপর্ব সামনে রেখে যা যা করণীয় ছিল করেছি। যদিও রোজা ছিল, অনেক কঠিন ছিল। আমরা রাতেও অনুশীলন করেছি, যেহেতু আমাদের দুটো দিবা-রাত্রির ম্যাচ আছে। প্রতিটা পয়েন্ট অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।’
টুর্নামেন্ট শুরুর আগে বাংলাদেশের একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচের প্রতিপক্ষ স্কটল্যান্ডের মেয়েরা। মূল ম্যাচের আগে ব্যাটিংটা ঝালিয়ে নেওয়ার তাই ভালো সুযোগ থাকছে নিগারদের জন্য। কারণ পাকিস্তানের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে ব্যাটারদের বাড়তি দায়িত্ব দেখছেন নিগার। বাছাইপর্ব থেকে সেরা দুই দলের একটি হতে তাই ব্যাটারদের দিকে তাকিয়ে থাকার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘আমরা যদি দল হিসেবে খেলতে পারি, বড় রান করতে পারি, তাহলে ভালো কিছু সম্ভব। আমরা জানি পাকিস্তানের উইকেট কেমন হয়। ব্যাটাররা যদি রান করতে পারে, আমরা জানি বোলাররা সব সময় ব্যাকআপ দেয়। গত কয়েকটি সিরিজ আমরা যখন বাইরে খেলেছি, তারা অনেক ভালো করেছে। ভালো উইকেটে যত আঁটসাঁট বোলিং করা যায়, তত ভালো। কারণ এসব উইকেটে বল তেমন টার্ন করে না।’
বাংলাদেশ প্রথম তিন ম্যাচ খেলবে তুলনামূলক দুর্বল থাইল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে। তবে নিগারদের আসল লড়াইয়ের মুখে পড়তে হবে নিজেদের শেষ দুই ম্যাচে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে সেই লড়াইয়ে এগিয়ে থাকতে আসরের শুরু থেকেই ছন্দ ধরতে চান নিগার, ‘প্রথম দিকেই যদি আমরা ছন্দ পেয়ে যাই, তাহলে (শেষ দুই ম্যাচের জন্য) ভালো হবে।’