ক্রীড়া প্রতিবেদক : শুরুতে প্রায় দুই ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদ, এরপর দুই অভিযুক্ত ব্যাটারকে নিয়ে মিরপুরের একাডেমি মাঠে হাজির হন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) দুর্নীতিবিরোধী ইউনিটের (আকু) প্রধান রাইয়ান আজাদ। গতকাল দুপুরে সেখানে আগে থেকে প্রস্তুত রাখা দুটি ক্যামেরার সামনে স্টাম্পিং হওয়ার অভিনয় করে দেখান মিনহাজুল আবেদীন সাব্বির এবং রহিম আহমেদ, যেভাবে গত বুধবার বসুন্ধরা ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে (ডিপিএল) স্টাম্পিং হয়েছিলেন শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের এই দুই ব্যাটার। সেই ঘটনা মুহূর্তে বিতর্কের ঝড় তুললে তদন্তের ঘোষণা দিয়েছে বিসিবি।
গতকাল এক সংবাদ বিবৃতিতে বিসিবি জানিয়েছে, ‘বিসিবির দুর্নীতিবিরোধী ইউনিট ও লিগের টেকনিক্যাল কমিটি একটি তদন্ত শুরু করেছে।
ম্যাচে কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না তা দেখতে। তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর নির্ভর করে বিসিবি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’
এই বিবৃতির পর ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিস (সিসিডিএম) চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বললেন, ‘আকু এবং টেকনিক্যাল কমিটির তদন্ত থেকে যে রিপোর্ট আমাদের হাতে আসবে, আমরা সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেব। এ ব্যাপারে (তদন্ত) কিন্তু আমরা অভিযোগ আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করিনি।
নিজেদের উদ্যোগে কাজটা শুরু করেছি।’ টেকনিক্যাল কমিটির অন্যতম সদস্য সেলিম শাহেদ অবশ্য তদন্তের পুরো ভার আকুর কাঁধে দিলেন, ‘তদন্ত করা তো আমাদের কাজ নয়। এ জন্য তদন্ত কমিটি আছে। আকু এই কাজটা করবে। আমাদের প্রোটোকল অনুযায়ী আমরা এখানে হস্তক্ষেপ করতে পারি না।’
আকু বিসিবির আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়ার আগে নিজেদের কাজ শুরু করেছে। এ জন্য গতকাল অভিযুক্ত দুই ক্রিকেটার মিনহাজুল ও রহিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সংস্থাটি। যদিও দীর্ঘ জেরার পরেও দুই ক্রিকেটারের কাছ থেকে অভিযোগ প্রমাণ হওয়ার মতো কিছু উদ্ধার করতে পারেনি বলেই জানা গেছে। এ জন্য তদন্তের স্বার্থে এই দুই ক্রিকেটার ম্যাচে যেভাবে আউট হন, সেই ঘটনা পুনরায় মঞ্চায়ন করতে বলা হয়।
গুলশানের বিপক্ষে শাইনপুকুরের বিতর্কিত ম্যাচটি টেলিভিশন এবং ইউটিউবে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়েছে, এবং নির্দিষ্ট দুই ঘটনার ভিডিও চিত্র রয়েছে, তবু অভিযুক্তদের দিয়ে গতকাল অভিনয়ের কারণ জানালেন সেখানে উপস্থিত এক সদস্য। তিনি বললেন, ‘এই দুই ক্রিকেটারকে দিয়ে তাদের আউটের ধরন পুনরায় করানো তদন্তের একটি কৌশল। তারা যদি ম্যাচে অভিনয় না করত তাহলে পুনরাবৃতি করতে তাদের সমস্যা হবে। আকু মূলত ক্যামেরার সামনে তাদের শরীরী ভাষা দেখতে চেয়েছে।’
এদিকে গত বুধবার সংবাদমাধ্যমে নিজ দলের ক্রিকেটারদের বিপক্ষে ফিক্সিংয়ের অভিযোগ করেন পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবের প্রধান কোচ আনোয়ারুল মোস্তাকিম। এটা নিয়ে তদন্ত হচ্ছে কি না জানতে চাইলে সিসিডিএম চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন বলেন, ‘এ ব্যাপারে উনি আমাদের সঙ্গে কোনো আলাপ করেননি। আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।’