<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্বাধীনতার পর থেকে অদ্যাবধি খাদ্যশস্যের উৎপাদন বেড়েছে বছরে গড়ে প্রায় ৩ শতাংশ হারে। এর পরও চাল, গম, ভুট্টাসহ অন্যান্য পণ্য আমদানির তালিকায় থাকছে নিয়মিত। মোট আমদানির পরিমাণ ৯০ থেকে ১০০ লাখ টন, যা টাকার অঙ্কে ৮০ থেকে ৯০ হাজার কোটি টাকা। তার পরও বলছেন এক সমাজবিজ্ঞানি এবং গবেষক, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেশে খাদ্য নিরাপত্তার ঘাটতি আছে, বৃদ্ধি পাচ্ছে খাদ্য মূল্যস্ফীতি। বর্তমানে দেশের প্রায় ২২ শতাংশ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এটি দূর করতে হলে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্য খাদ্য ও পুষ্টির নিশ্চয়তা বিধান করতে হলে কৃষিপণ্যের উৎপাদন আরো দ্রুত বাড়াতে হবে। তার মাত্রা হতে হবে ন্যূনপক্ষে বছরে গড়ে ৪-৫ শতাংশ। সেই সঙ্গে বিতরণব্যবস্থার উন্নতি সাধন করতে হবে। কৃষিপণ্যের বাজারজাত উদ্বৃত্ত আরো বাড়াতে হবে। এ ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ অনেক। উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে আছে কৃষিজমি হ্রাস, আবাদযোগ্য জমি চাষের বাইরে ফেলে রাখা, জমির উর্বরতা হ্রাস, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব, খাদ্য অপচয়, অদক্ষ বাজার ব্যবস্থা ইত্যাদি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> সুতরাং একটি কৃষি কমিশন গঠন করা সময়ের দাবি, যে কমিশন ভূমি ব্যবস্থাপনা, ভূমির ব্যবহার ইত্যাদির ওপর সুপারিশ রাখবে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দুই.</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দারিদ্র্য হ্রাসে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধির প্রভাব মূল্যায়ন করতে গেলে দারিদ্র্য হ্রাসে প্রবৃদ্ধির স্থিতিস্থাপকতা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ইলাস্টিসিটি অব গ্রোথ অন পভার্টি রিডাকশন পর্যালোচনা করার প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ গড় জাতীয় আয় যদি ১ শতাংশ বাড়ে, তাহলে দারিদ্র্যের হার কী পরিমাণ কমে সেই সম্পর্কটা দেখার প্রয়াস নেওয়া দরকার বলে গবেষকরা মনে করেন। এক গবেষণায় দেখা যায়, সাধারণত উন্নয়নশীল দেশে সহগটির মান গড়পড়তা মাইনাস ২ অর্থাৎ গড়পড়তা প্রকৃত মাথাপিছু আয় ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেলে দারিদ্র্যের হার কমবে ২০ শতাংশ। তাহলে পাঠক বুঝে নিন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দারিদ্র্য হ্রাসে কেন এবং কতটা গুরুত্বপূর্ণ। একটু ঘুরিয়ে বলতে হয়, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তোরা যে যা বলিস ভাই, প্রবৃদ্ধি আমার চাই</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশেষত বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল একটি দেশে। তবে বাংলাদেশে সহনীয় দারিদ্র্যের প্রবৃদ্ধি স্থিতিস্থাপকতা সত্যি খুব কম এবং তা-ও ২০০৫ সাল <img alt="কৃষি এখনো বাংলাদেশের প্রাণ " height="279" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/10.October/03-10-2024/Untitled-1.jpg" style="float:left" width="321" />থেকে নিম্নগামী। হিসাব কষে দেখানো হচ্ছে যে ২০১৬-২০২২ সময়কালে সহগটির মান ছিল মাত্র ০.৮০। এর অর্থ দাঁড়ায়, বাংলাদেশে মাথাপিছু প্রকৃত আয় ১০ শতাংশ বাড়লে সহনীয় দারিদ্র্য কমে মাত্র ৮ শতাংশ (উন্নয়নশীল দেশের গড় ২০ শতাংশ)। এর বিপরীতে ২০১০-২০১৬ সময়ে সহগটি ছিল ০.৮৪ এবং ২০০৫-২০১০ সময়ে ০.৯৬। মোটকথা, এটি প্রমাণ করে যে বাংলাদেশে সহনীয় দারিদ্র্য হ্রাসে প্রবৃদ্ধির পারঙ্গমতা বেশ কম এবং সেটি গেল ১৭ বছর ধরে ক্রমাগত নিম্নমুখী হচ্ছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিন.</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এখন মিলিয়ন ডলার প্রশ্ন হলো দারিদ্র্য হ্রাসে কৃষি খাতের ভূমিকা কী? ঐতিহাসিকভাবে উন্নয়নশীল দেশে দারিদ্র্য কমাতে কৃষি খাত একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। কৃষি থেকে জিডিপির যে হিস্যাটা আসে, তা সমাজের সবচেয়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে তাৎপর্যপূর্ণ আয়ের সূত্রপাত ঘটায়। তা ছাড়া শুধু সরাসরি দারিদ্র্য হ্রাস নয়, পুরো অর্থনীতিতে শক্তিশালী লিংকেজ প্রভাব নিয়ে হাজির হয় কৃষি খাত। কৃষির পরোক্ষ অবদান আসে খামারবহির্ভূত কর্মকাণ্ডে; যেমন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সার, সেচযন্ত্র, কীটনাশক এবং অন্যান্য উপকরণের চাহিদাসমেত ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ এবং প্যাকেজিং, পরিবহন, শিল্পজাত প্রক্রিয়াকরণ, সংরক্ষণ এবং কৃষিপণ্যের বাজারসমেত ফরওয়ার্ড লিংকেজ গড়ার মাধ্যমে। এই কর্মকাণ্ডগুলো ব্যাপক প্রবৃদ্ধি ঘটায় খামারবহির্ভূত খাতে, যার মধ্য দিয়ে সংঘটিত হয় বর্ধিত কর্মসংস্থান ও আয়। যা হোক, দেশ যত সম্পদশালী হবে, দারিদ্র্য হ্রাসে কৃষির প্রবৃদ্ধির ধার খামারবহির্ভূত খাতের তুলনায় ততই কমবে বলে ধারণা করা হয়ে থাকে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রসঙ্গত এও বলে রাখা দরকার যে দুই বছর আগেও বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭০ শতাংশ জীবিকার জন্য মূলত কৃষির ওপর নির্ভরশীল ছিল এবং জিডিপিতে মাত্র ১২ শতাংশ অবদান নিয়ে শ্রমশক্তির ৪৫ শতাংশ নিয়োজিত কৃষি খাতে। সুতরাং কৃষি খাতকে কোনোভাবেই অবহেলা করার অবকাশ আছে বলে মনে হয় না। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যেমন একটি উদাহরণই যথেষ্ট। বিবিএসের তথ্য ব্যবহার করে দেখানো যেতে পারে যে দারিদ্র্য হ্রাসে কৃষির প্রবৃদ্ধি স্থিতিস্থাপকতার মান ২.২৬ অর্থাৎ ২০১৬-২০২২ সময়কালে মাথাপিছু প্রকৃত কৃষি জিডিপি ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ২৩ শতাংশ দারিদ্র্য হ্রাস ঘটায়, অথচ এর বিপরীতে অকৃষি প্রবৃদ্ধি স্থিতিস্থাপকতা হচ্ছে ০.৭২, যার অর্থ অকৃষি কর্মকাণ্ডে ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলে দারিদ্র্য হ্রাস পায় মাত্র ৭ শতাংশের কোঠায়। মনে হয়, এমনতর পরিসংখ্যান এটি প্রমাণ করতে চায় যে অন্তত দারিদ্র্য হ্রাসে, কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধি অকৃষি খাতের তুলনায় তিন গুণের চেয়ে বেশি শক্তিশালী। অর্থাৎ বাংলাদেশের দারিদ্র্য হ্রাসে একই হারে প্রবৃদ্ধি অকৃষির চেয়ে কৃষিতে বেশি কার্যকর।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চার.</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তাহলে দেয় লিংকেজ প্রভাব সাপেক্ষে, কৃষিকে কিভাবে আরো গতিশীল, আরো বেগবান করা যায়, যাতে বাংলাদেশে দারিদ্র্য হ্রাস দ্রুততর করা যায়? সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি বিষয় সামনে আনা যায়, যা নীতিনির্ধারকদের জন্য নীতিমালা ও কৌশল প্রণয়নে চিন্তার খোরাক হতে পারে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভবিষ্যতে কৃষি খাতে প্রবৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন এমন প্রযুক্তি প্রসার করা, যা উৎপাদন বাড়ায় এবং উঁচু মূল্যের ফসল, মাছ, গবাদি পশুসহ ফসলবহির্ভূত কর্মকাণ্ডে মনোযোগ আকর্ষণ করে। কৃষি খাতের দারিদ্র্য নিরসন ক্ষমতা বৃদ্ধিকল্পে প্রযুক্তিতে ব্যক্তি ও সরকারি খাতের নজর দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ক্রমহ্রাসমান চাষের জমি, ক্ষয়িষ্ণু উর্বরতা, পোকার আক্রমণে বিশেষ ফসলের ঝুঁকি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, লবণাক্ততা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মাথায় রেখে উৎপাদন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন সময়ের দাবি। উপরন্তু, গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের ও খামারের মধ্যকার উৎপাদন তারতম্য কমিয়ে আনা জরুরি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খুব গুরুত্বসহকারে ভাবতে হবে কৃষিতে অর্থায়নের কথা। বিশেষত ক্ষুদ্র চাষিদের জন্য ঋণের বাজারে খুব সীমিত প্রবেশগম্যতা তাদের প্রযুক্তি প্রসারণ, জীবিকা বহুমুখীকরণ এবং পণ্য বাজারজাতকরণের পথে বড় বাধা। তা ছাড়া সময়মতো এবং ব্যয়সাশ্রয়ী উপকরণ লভ্যতা তাদের লাভের মুখ দেখায়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মোটকথা, কৃষি খাতের উন্নয়ন তথা দারিদ্র্য হ্রাসে কৃষির ভূমিকা বলিষ্ঠ করতে হলে একটি সমন্বিত পরিকল্পনার ছাতার নিচে থাকতে হবে প্রযুক্তির প্রসারণ, উঁচু মূল্যের ফসল উৎপাদনে স্থানান্তর, চলমান পুঁজির লভ্যতা, যা কৃষিকে দেবে দারিদ্র্য হ্রাস করার অধিকতর শক্তি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশের কৃষির ভবিষ্যৎ নির্ভর করে আধুনিকায়ন, উঁচু মূল্যের পণ্য উৎপাদন এবং ফসল বহুমুখীকরণের ওপর। বহু আগে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পুত্রকে লিখেছিলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অনুগ্রহ করে ওদেরকে বলো বসতভিটা ও ক্ষেতের সীমানায় যেখানে সম্ভব আনারস, কলা, খেজুর এবং অন্যান্য ফলের গাছ লাগাতে। আনারসের পাতা থেকে খুব ভাল এবং শক্ত আঁশ বের করা যায়। এই ফলটা আবার খুব সহজেই বাজারজাত করা যায়। ঝোপঝাড়ের বেড়া হিসাবে ব্যবহৃত হতে পারে এবং শেকড় থেকে কীভাবে খাদ্য উপাদান বের করা যায় সে সম্পর্কে কৃষকদের জ্ঞান দেয়া দরকার। যদি তাদেরকে গোল আলু চাষে উদ্বুদ্ধ করা যায় সেটা হবে খুব লাভজনক। অফিসরুমে আমেরিকান ভুট্টা আছে, দ্যাখো এগুলো বোনা যায় কিনা।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পাঁচ.</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশের কৃষি নিয়ে কিছু চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাবনার কথা না বললেই নয়। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার সত্তরের দশকের প্রায় ৩ শতাংশের তুলনায় প্রায় অর্ধেকে নেমে এলেও এখনো বছরে প্রায় ১৮ লাখ মানুষ যোগ দিচ্ছে বাংলাদেশের মানবমহাসমুদ্রে। এই বর্ধিত জনসংখ্যার চাহিদা মেটাতে প্রতিবছর অতিরিক্ত তিন লাখ টন চাল উৎপাদন বাড়াতে হবে। অন্যদিকে কৃষিজমি হ্রাস পাচ্ছে বার্ষিক ১ শতাংশ হারে। তবে সুখবর এই যে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি সাপেক্ষে মাথাপিছু চালের ভোগের পরিমাণ কমছে বলে বাঁচোয়া। জলবায়ু পরিবর্তন চরম বিপর্যয় ডেকে আনবে কৃষিতে, যা মোকাবেলায় প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি। সমস্যা দাঁড়িয়েছে খাবার ও খাবারবহির্ভূত পণ্য বাজারজাতকরণে করপোরেট সেক্টরের প্রবল প্রভাবে কৃষক ও ভোক্তা উভয়ের উদ্বৃত্ত হ্রাস করছে। এ ধরনের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান জরুরি। খাবার এবং বিশেষত চালবহির্ভূত পণ্য উৎপাদনে গবেষণাগত এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নে অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ অত্যন্ত জরুরি। কারণ অদূর ভবিষ্যতে, উন্নয়নের গতিধারা সাপেক্ষে, কৃষি খাতে ধানের চেয়ে অন্যান্য ফসল ও গবাদি পশু এবং মাছ চাষের ভূমিকা বৃদ্ধি পাবে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ছয়.</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমরা যেন ভুলে না যাই যে এখনো কৃষি হচ্ছে বাংলাদেশের প্রাণ। কৃষিকে অবজ্ঞা করে তথাকথিত শিল্পায়ন বা উন্নয়ন অভিযাত্রা হোঁচট খেতে পারে। মাঝেমধ্যে ভয় জাগে কারণ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অদ্ভুত আঁধার এক </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এসেছে পৃথিবীতে আজ</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যারা অন্ধ সবচেয়ে বেশী</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আজ চোখে দ্যাখে তারা;</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যাদের হৃদয়ে কোনো</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রেম নেই</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রীতি নেই</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পৃথিবী অচল আজ </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তাদের  সুপরামর্শ ছাড়া।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> (জীবনানন্দ দাশ)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বলা বাহুল্য, জলবায়ুর পরিবর্তন, কৃষিজমির ওপর অপরিকল্পিত রাস্তাঘাট, নগরায়ণ, কৃষিতে করপোরেট খাতের প্রভাব, সিন্ডিকেট, উপকরণের ঊর্ধ্বমুখী এবং উৎপাদনের নিম্নমুখী দাম ইত্যাদি কৃষি খাতকে বধ করার জন্য যথেষ্ট। আমরা আশা করব, বর্তমান এবং আগামী সরকারগুলো কৃষি খাতকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে পরিবর্তিত পরিস্থিতি সাপেক্ষে পুরনো কৌশল ও নীতিমালা ঢেলে সাজাবে।</span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">লেখক : অর্থনীতিবিদ, সাবেক উপাচার্য </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়</span></span></span></span></p> <p> </p> <p> </p>