<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তেরো শতকের গোড়ায় বাংলার বৃদ্ধ রাজা লক্ষ্মণ সেন নদীয়া থেকে পালিয়ে যাওয়ার আগে কি কোনো পদত্যাগপত্র রেখে গিয়েছিলেন, নাকি সেটা জানালা দিয়ে পালিয়ে যাওয়া রাজার পক্ষে সম্ভব ছিল? দিল্লি সালতানাতের ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বখতিয়ার খলজি নামক একজন মুসলিম সেনাপতির অতর্কিত আক্রমণে রাজাকে পালিয়ে জান বাঁচাতে হয়েছিল। তিনি (রাজা) নৌপথে পাড়ি জমান পূর্ব বাংলার ঢাকার দিকে। অপশাসন, সামাজিক বৈষম্য, ধর্মান্ধতা ও নানা রকম কারণে লক্ষ্মণ সেনের রাজত্বের অবস্থা ছিল তখন টলমলে। তবু শেখ হাসিনার মতো রাজ্য শাসনের আধিপত্যবাদী খায়েশ ষোলো আনাই ছিল লক্ষ্মণ সেনের মধ্যে। অনেকটা সে কারণে ৮২০ বছরের ব্যবধানে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার একই পরিণতি হয়েছে। রাজা লক্ষ্মণ সেন পালিয়েছিলেন নৌপথে আর বাংলার আরেক অধিপতি শেখ হাসিনা পালাতে বাধ্য হয়েছিলেন আকাশপথে। লক্ষ্মণ সেন দেশ ছেড়ে যাননি, কিন্তু শেখ হাসিনা প্রতিবেশী রাষ্ট্রে পালিয়ে গিয়ে নিজের জান বাঁচিয়েছেন। এ অবস্থায় পালানোর প্রাক্কালে তিনি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে তাঁর পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে  গেছেন কি না, সেটা নিয়ে বিতর্কের চূড়ান্ত অবসান এখনো হয়নি। রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে একবার বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগপত্রটি তাঁর কাছে রয়েছে। আবার বলা হচ্ছে, পদত্যাগের বিষয়টি রাষ্ট্রপতিকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছিল। এ ব্যাপারে তাঁর বিভিন্ন উক্তি সংগত কারণেই কিছু বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে একবার বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের <img alt="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/10.October/28-10-2024/kalerkantho-ed-1a.jpg" height="322" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/10.October/28-10-2024/kalerkantho-ed-1a.jpg" style="float:left" width="350" />বিষয়টি রাষ্ট্রপতিকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছিল। এর কোনো দালিলিক কিছু তাঁর কাছে নেই। যদি তা-ই হয়ে থাকে, তাহলে তো লিখিত আকারে প্রদত্ত পদত্যাগপত্রের </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হার্ডকপি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> পাওয়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই। ঢাকার গণভবন থেকে উড়াল দেওয়ার আগে অর্থাৎ ৫ আগস্ট শেষ পর্যন্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সামনে ছিলেন বাংলাদেশের সেনাবাহিনী প্রধান লে. জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তিনি এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্টভাবে এ কথা কখনো বলেননি যে তাঁর কাছে শেখ হাসিনার স্বাক্ষরিত পদত্যাগপত্র সংরক্ষিত রয়েছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের বা বৃহত্তর অর্থে পদত্যাগের ফলে দেশে তাৎক্ষণিকভাবে সাংবিধানিক এবং প্রশাসনিক শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছিল। বিষয়টি শুধু সেখানেই থেমে থাকেনি, শেখ হাসিনার দেশত্যাগের ফলে একে একে তাঁর সরকার বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয় এবং জাতীয় সংসদও ভেঙে দেওয়া হয়। এবং রাষ্ট্রপতির আহবান কিংবা অনুরোধক্রমে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সে অবস্থায় দেশে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পরামর্শ দেন। সে কারণেই শেখ হাসিনার পলায়ন কিংবা পদত্যাগের ব্যাপারে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন শেষ পর্যন্ত শুধু একটি কথাই এখন বলছেন যে উচ্চ আদালতের মতামত অনুযায়ী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের বিষয়টি সেখানেই চূড়ান্ত হয়ে গেছে। এটি নিয়ে আর কোনো বিতর্কের অবকাশ থাকে না, কিন্তু এর পরও বিতর্ক আমাদের পিছু ছাড়েনি। শেখ হাসিনার লিখিতভাবে পদত্যাগ না করার ব্যাপারে রাষ্ট্রপতির কোনো কোনো বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, যা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এবং এমনকি আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার জন্য বিব্রতকর। সে সমস্যা পলাতক রাজা লক্ষ্মণ সেন কিংবা সেনাপতি বখতিয়ার খলজির ছিল না। কারণ তখন ছিল রাজতন্ত্র, জোর যার মুল্লুক তার। এখন সে যুগ বা পরিস্থিতি নেই। এখন গণতন্ত্রের যুগ। সে কারণেই জনগণ তার গণতান্ত্রিক অধিকারের বলে অনেক তর্কবিতর্ক উত্থাপন করে থাকে। এতে বিভিন্ন বিতর্কিত ইস্যু সৃষ্টি হতেই পারে। আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এম এ মতিন বলেছেন, জনগণের রাজনৈতিক ঐকমত্য থাকলে সংবিধান কোনো বাধা নয়।  </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উল্লিখিত অর্থাৎ শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে পালানো এবং পদত্যাগের বিষয়টিকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের পরস্পরবিরোধী উক্তি বেশ কিছু বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। সেগুলোকে কেন্দ্র করেই ছাত্র-জনতার মধ্য থেকে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবি উঠেছিল। বিশিষ্ট ছাত্রনেতা এবং তথ্যবিষয়ক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, এ অবস্থায় রাষ্ট্রপতি থাকবেন কি থাকবেন না, এটি কোনো সাংবিধানিক প্রশ্ন নয়, এটি একটি রাজনৈতিক বিষয়। অন্যান্য ছাত্রনেতাসহ আরো অনেকে বলেছেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী গণ-অভ্যুত্থানের মূল স্পিরিটকে ধরে রাখার জন্য সব রাজনৈতিক দলের একটি জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা প্রয়োজন, কিন্তু এখানে একটি ফারাক পরিলক্ষিত হচ্ছে। এই ফারাক সংগ্রামী ছাত্র-জনতা এবং অন্যান্য প্রথাগত রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে যে কিছুটা দেখা যাচ্ছে না, তা নয়। এটি হয়তো যথাসময়ে সঠিক কাজটি সুসম্পন্ন করতে না পারার কারণে হচ্ছে। তবে যা বিগত হয়েছে, তা নিয়ে বিবাদ করলে জাতীয় ঐক্য বা সংহতি যতটুকু আছে, তা-ও বিনষ্ট হবে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে ছাত্র-জনতার একটি অংশ কিংবা বিক্ষুব্ধ জনতার একটি অংশের বঙ্গভবন ঘেরাওয়ের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের রাজনৈতিক মহল ও জনগণের কোনো কোনো অংশের মধ্যে কিছুটা বিচলিত হয়ে ওঠার ভাব দেখা দিয়েছে। তাদের বক্তব্য হচ্ছে, এ পর্যন্ত যখন দেশের বিতর্কিত সংবিধানটি বাতিল করা হয়নি, তাই একটি নতুন সংবিধান গৃহীত (পুনর্লেখন কিংবা সংস্কার) না হওয়া পর্যন্ত সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখা প্রত্যাশিত হবে। সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা বিপর্যস্ত করা এ সময়ের জন্য উপযোগী না-ও হতে পারে। কারণ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এরই মধ্যে বিভিন্ন কমিশন গঠন করে সংস্কার ও রাষ্ট্র মেরামতের প্রত্যাশিত কাজগুলো শুরু করেছে। তা ছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলীয় নেতাদের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার মতবিনিময় কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে আগামী সংসদ নির্বাচনের একটি সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণার আগ পর্যন্ত। এ অবস্থায় জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মহান গণ-অভ্যুত্থানের প্রকৃত উদ্দেশ্য বা প্রার্থিত কর্মসূচির কথা ভুলে গিয়ে শুধু ভবিষ্যৎ সংসদ নির্বাচন নিয়ে আকণ্ঠ নিমজ্জিত হয়ে পড়লে দেশের আর্থ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি আবার আগের বর্গে ফিরে যেতে দেরি হবে না। সে কারণেই রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের বিষয়টি অনেকের কাছে গুরুত্ব পেয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। এরই মধ্যে অনেকে বলেছে, রাষ্ট্রপতি নিজে থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিলে ভালো। না হলে সরকারের পক্ষ থেকে এ সপ্তাহের মধ্যেই একটি অবস্থান পরিষ্কার করা হতে পারে। সুতরাং এ ব্যাপারে আগ বাড়িয়ে আর কিছু না বলাই ভালো বলে মনে করি। তবে এ ক্ষেত্রে সংগ্রামী ছাত্র-জনতা বসে নেই। মাঠ পর্যায়ে মহান গণ-অভ্যুত্থানের রাজনৈতিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে তারা এরই মধ্যে তাদের একটি পাঁচ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এ ক্ষেত্রে সময় কিছুটা রয়ে গেলেও তা হাতের নাগালের কিংবা চিন্তা-চেতনার বাইরে চলে যায়নি। উল্লেখ্য, বিভিন্ন সুযোগ ও পরিস্থিতি বিবেচনা করে পতিত আওয়ামী লীগ সরকার, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাসহ অনেকে এখন মাঠে নামতে শুরু করেছে। সে কারণে এরই মধ্যে নিষিদ্ধ করা হয়েছে ছাত্রলীগকে। তা ছাড়া ঢাকাস্থ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের কার্যক্রম যতটা গতি পাচ্ছে, তার সঙ্গে সময়োপযোগী কার্যক্রম নিয়ে মাঠে নামতে চেষ্টা করছে বিরোধীরা। তারা জাতীয় জীবন কিংবা সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সীমাহীন দ্বিধাদ্বন্দ্ব সৃষ্টি করার প্রয়াস পাচ্ছে বলে অভিযোগ। দিনে দিনে কিংবা ক্রমে ক্রমে তা দৃশ্যমান হয়ে উঠছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা তাঁদের ভাষায়, বাহাত্তরের মুজিববাদী সংবিধান বাতিল করে চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে নতুন সংবিধান লেখার দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি ফ্যাসিবাদের দোসর রাষ্ট্রপতিকে এ সপ্তাহের মধ্যেই পদচ্যুত করতে বলেছেন। অভ্যুত্থান ও জুলাই বিপ্লবের চেতনার আলোকে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রক্লেমেশন অব রিপাবলিক</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> ঘোষণা করতে বলা হয়েছে। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনকে অবৈধ ঘোষণা করার দাবি উত্থাপন করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এই তিন নির্বাচনে যাঁরা অংশ নিয়েছেন, তাঁরা যেন ২০২৪-পরবর্তী নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন, সে জন্য আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উল্লিখিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের দাবিগুলো অত্যন্ত কঠিন হলেও অবশ্যই যথেষ্ট শক্তিশালী। গণ-অভ্যুত্থান কিংবা গণবিপ্লব-উত্তর একটি দেশে যদি সত্যিকার অর্থেই একটি দৃশ্যমান পরিবর্তন আনতে হয়, তাহলে এর বিকল্প আর কী আছে? তবে প্রক্লেমেশন অব রিপাবলিক এবং বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত বিগত তিনটি সাধারণ নির্বাচনে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের ক্ষেত্রবিশেষে ভবিষ্যৎ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে আলোচনা করে দেখার সুযোগ রয়েছে। প্রক্লেমেশন অব রিপাবলিকের বিষয়টির পরিপ্রেক্ষিত কিংবা প্রেক্ষাপট অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী এবং ব্যাপক। এই বিষয়টি দেশের আইন ও সংবিধান বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার দাবি রাখে। একটি দেশের সংবিধান পুনর্লিখন যেমন একটি দুঃসাধ্য ও জটিল বিষয়, তেমনি একটি দেশের সরকারপদ্ধতি পরিবর্তনও ব্যাপক জনগোষ্ঠীর মতামতের দাবি রাখে। সব সংস্কার বা পরিবর্তনের লক্ষ্যই হচ্ছে একটি দেশের আপামর জনসাধারণের বৃহত্তর স্বার্থ ও ভবিষ্যৎ সমৃদ্ধির গতিপথ। এ বিষয়গুলো যেমন অবহেলা করা যায় না, তেমনি ত্বরিত গতিতে এক ঘোষণায়ই অর্জন করা যায় না। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের জ্ঞানী ও বিচক্ষণ উপদেষ্টাদের বাইরেও দেশে অনেক বিদগ্ধ ও বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। সবার সঙ্গে পরামর্শ করেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা আবশ্যক। মাঠে-ময়দানে আন্দোলন করে যেমন অনেক বিজ্ঞানবিষয়ক প্রাপ্তি নিশ্চিত করা যায় না, তেমনি মানুষের আবেগ-অনুভূতি ছাড়াও অনেক অধিকার আদায়ের সংগ্রাম সার্থক করা যায় না। এ ক্ষেত্রে সময়োচিত প্রয়াস ও চিন্তা-ভাবনার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এখানে একটি কথা বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে দেশের সব কটি রাজনৈতিক গণসংগঠন এখন সম্ভাব্য সংস্কার বা মেরামত শেষে একটি সবার অংশগ্রহণমূলক অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের অপেক্ষায় রয়েছে বা প্রস্তুত হচ্ছে। তারা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তাদের ন্যূনতম প্রার্থিত সময়টুকু দিতে প্রস্তুত। সংবিধান থেকে সংসদ, বিচার বিভাগ থেকে পুলিশ প্রশাসন এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব বর্তাবে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের ওপর। সুতরাং সব ক্ষেত্রেই সমন্বয় সাধন করে আমাদের জাতীয় ঐকমত্যের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। সংগ্রামী ছাত্র-জনতার বিপ্লবী স্পিরিট বা চেতনা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর গঠনশীল প্রক্রিয়ার সব সমন্বয় থাকা এ ক্ষেত্রে অত্যন্ত বাঞ্ছনীয়। নতুবা আমাদের কাঙ্ক্ষিত রাজনৈতিক কার্যক্রমে মতবিরোধ বা ফাটল সৃষ্টি হতে পারে, এ মুহূর্তে যা সম্পূর্ণ অবাঞ্ছিত। এ ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও অন্যান্য বিজ্ঞ উপদেষ্টার সঙ্গে সব বিষয়েই পরামর্শ ও মতবিনিময় প্রয়োজন। নতুবা একটি দ্বন্দ্ব কিংবা সংঘাত অনিবার্য হয়ে উঠতে পারে। দেশের আপামর সাধারণ মানুষ এ মুহূর্তে আর কোনো বিভেদ-বিশৃঙ্খলা দেখতে চায় না। তারা চায় পরিবর্তনের সুফলগুলো একে একে ঘরে তুলতে। এই গণ-অভ্যুত্থানকে নতুন বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে প্রকৃত দিকনির্দেশক হিসেবে অর্থবহ করে তুলতে।</span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">লেখক : বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাবেক প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">gaziul h khan@gmail.com </span></span></span></span></p>