<p><span style="font-size:14pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="font-family:SolaimanLipi">বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়েই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছিল একটি বৈষম্যহীন ও স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্নে। সেই স্বপ্নের ধারাবাহিকতায় ছাত্রসমাজের স্বপ্ন, শিক্ষার নানা স্তরের ও নানা রকমের বৈষম্যগুলো দূর হবে, তেমনি শিক্ষার নানা বিষয়েও প্রশাসনের স্বৈরাচারী মনোভাব ও আচরণ দূর হবে। বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা স্তরের অনেক বৈষম্যের মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে উদ্ভূত একটি বৈষম্য হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক অধিভুক্ত কলেজের প্রতি বিমাতাসূলভ আচরণ। বিশেষত রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যেখানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করছে, সেসব প্রতিষ্ঠানে তাদের জন্য মানসম্মত শিক্ষার সুযোগ খুবই সীমিত এবং নানা ক্ষেত্রে তারা বৈষম্যমূলক ব্যবস্থার শিকার। ঢাকার সাতটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কলেজ</span><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span><span style="font-family:SolaimanLipi">ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, কাজী নজরুল সরকারি কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত। তবে এই অধিভুক্তি ছিল একটি ভুল সিদ্ধান্ত এবং অধিভুক্তির মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার মানোন্নয়ন তো হয়ইনি, বরং সৃষ্টি হয়েছে সেশনজটসহ নানা জটিলতা। </span></span></span></p> <p><span style="font-size:14pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="font-family:SolaimanLipi">বহু আগে (১ জুন ২০০৯) </span><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা : জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও একটি বিকল্প প্রস্তাব</span><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span><span style="font-family:SolaimanLipi"> শিরোনামের একটি লেখায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক জটিলতা নিরসনে আমি সে সময়কার ছয়টি বিভাগকে কেন্দ্র করে ছয়টি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেছিলাম। সম্পৃক্ত বিভাগের কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পাঠদানকারী কলেজগুলোকে নিয়ে একটি রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গঠন করার প্রস্তাব রেখেছিলাম। সে লেখায় আমি এটিও বলেছিলাম যে শিক্ষা মন্ত্রণায়ের অধীন কলেজগুলোকে কোনো অবস্থায়ই আমাদের মূলধারার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অধীনে নেওয়া উচিত হবে না। সে পরামর্শ উপেক্ষা করেই পরে ঢাকার সাতটি গুরুত্বপূর্ণ কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়। এই অদূরদর্শী সিদ্ধান্ত এখন নানামুখী বৈষম্যসহ বিভিন্ন সমস্যার জন্ম দিয়েছে এবং ছাত্রদের মধ্যে অসন্তোষের জন্ম দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের নানা ভোগান্তি ও হীনম্মন্যতা থেকে বাঁচাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ ও অর্থনৈতিক শোষণ থেকে নিষ্কৃতি দেওয়া উচিত। তাই বৈষম্য দূর করতে কলেজগুলোর জন্য ঢাকায় একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় চালু করা জরুরি হয়ে উঠেছে।</span></span></span></p> <p><span style="font-size:14pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="font-family:SolaimanLipi">উচ্চশিক্ষা সবার জন্য উন্মুক্ত করা উচিত কি না? অথবা দেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ আরো সম্প্রসারিত করা উচিত কি না? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে নানা তর্কবিতর্ক চলতে পারে। </span></span></span></p> <p><span style="font-size:14pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="font-family:SolaimanLipi">উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অধিভুক্ত সাতটি কলেজের উচ্চশিক্ষার মান নিশ্চিত করতে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বিভাগ ও ইনস্টিটিউটগুলোর সঙ্গে সেগুলোর শিক্ষার মানের সমতা বিধান করার জন্য ফলপ্রসূ ব্যবস্থা নিয়ে বৈষম্য দূর করতে হবে, নয়তো অধিভুক্ত কলেজগুলো নিয়ে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় চালু করতে হবে। এখানে বলে রাখা উচিত, অধিভুক্ত কলেজগুলোর শিক্ষার্থীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তুলনায় অনেক বেশি টাকা গুনতে হয় বিভিন্ন ফি বাবদ। কিন্তু শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের সার্টিফিকেট ও শিক্ষার মানে নেই কোনো সমতা। ঢাকার এই কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খল থেকে মুক্তির আশায় যুক্ত হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে, কিন্তু তাদের সে আশায় গুড়ে বালি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা-প্রচেষ্টার পরও এই কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূলধারার সমমানের শিক্ষার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। </span></span></span></p> <p><span style="font-size:14pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের আলোচনায় যাওয়ার আগে শিক্ষার্থীদের প্রতি বৈষম্যের প্রেক্ষাপট তুলে ধরা জরুরি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নানাভাবে অধিভুক্ত কলেজগুলোর শিক্ষার্থীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করে থাকে। ২০১৭ সালে এই সরকারি কলেজগুলোকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আনার সিদ্ধান্তটি কার্যকর হয়। এই সিদ্ধান্তের পেছনে মূল যুক্তি ছিল শিক্ষা কার্যক্রমে মানসম্মত পরিবর্তন এবং প্রশাসনিক সুশাসন নিশ্চিত করা। কিন্তু বাস্তবে এর ফলে তৈরি হয়েছে আরো নানা সমস্যা। অধিভুক্ত কলেজগুলোর শিক্ষার্থীদের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তুলনায় অনেক বেশি ফি নির্ধারিত। উদাহরণস্বরূপ, পরীক্ষা এবং সার্টিফিকেটের জন্য প্রয়োজনীয় ফি নিয়মিত ছাত্র-ছাত্রীদের তুলনায় দ্বিগুণ বা তারও বেশি। অথচ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব শিক্ষার্থীদের তুলনায় নানা সুযোগ-সুবিধার বৈষম্য প্রকট। তাদের প্রাপ্ত শিক্ষা, গবেষণার সুযোগ, এমনকি সার্টিফিকেটেও পার্থক্য থেকে যায়। তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ছাত্র হিসেবে শিক্ষার সনদ পেলেও তাদের শিক্ষালাভের সমান সুযোগ থাকে না। অন্যদিকে তাদের পড়তে হয় নানা প্রশাসনিক জটিলতায়। ফলে দেখা দিয়েছে সেশনজটের মতো জটিলতা। </span></span></span></p> <p><span style="font-size:14pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="font-family:SolaimanLipi">নানা বৈষম্যের শিকার হয়ে অধিভুক্ত এই কলেজগুলোর শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি সাধারণ ধারণা বা বিশ্বাসের জন্ম নেয় যে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি </span><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span><span style="font-family:SolaimanLipi">দ্বিতীয় সারির</span><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span><span style="font-family:SolaimanLipi"> শিক্ষার্থী। ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা, হীনম্মন্যতা এবং অনুপ্রেরণার অভাব দেখা দেয়। কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মতো সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের ক্যাম্পাসে লাইব্রেরি, ল্যাবরেটরি এবং গবেষণার সুযোগ পেয়ে থাকে। কিন্তু অধিভুক্ত কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা এই সুবিধাগুলো থেকে বঞ্চিত। এর ফলে শিক্ষার মান এবং কার্যকারিতা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বৈষম্যহীন শিক্ষাব্যবস্থার নিশ্চয়তা দিতে বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের ওপর আরোপিত উচ্চ ফি, প্রাপ্ত নিম্নমানের শিক্ষা এবং সময়মতো শিক্ষা সমাপনের অনিশ্চিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কলেজগুলো নিয়ে একটি পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা অনিবার্য করে তুলেছে।</span></span></span></p> <p><span style="font-size:14pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="font-family:SolaimanLipi">বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের বিশ্বাস, রাজধানী ঢাকায় স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাঠদানকারী কলেজগুলোর জন্য পৃথক একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার বৈষম্যহীন ও স্বৈরাচারমুক্ত রাষ্ট্র পুনর্গঠনের যে অঙ্গীকার নিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে, সেই অঙ্গীকার রক্ষা করবে। প্রত্যাশিত নতুন এই বিশ্ববিদ্যালয়টি রাষ্ট্রীয় পরিচালনায় চলবে এবং ঢাকার অধিভুক্ত কলেজগুলো এর অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এই প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়টির নাম হতে পারে </span><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span><span style="font-family:SolaimanLipi">ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়</span><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span><span style="font-family:SolaimanLipi"> এবং যার জন্য প্রাথমিকভাবে নতুন কোনো অবকাঠামো তৈরি কিংবা অর্থ বরাদ্দের দরকার হবে না। আমাদের মনে রাখতে হবে, এই ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় নামে উচ্চশিক্ষার এই জোট প্রতিষ্ঠানটি চালু করতে যেমন নানা রকমের প্রতিবন্ধকতা দেখা দেবে, তেমনি সুবিধাভোগী শ্রেণি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় চালুর এই প্রচেষ্টায় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে কিংবা অসুবিধা সৃষ্টির প্রচেষ্টা চালাতে পারে। আর নানামুখী রাজনীতি ও অংশীজনের লাভ-ক্ষতির বিচারে সেটি হওয়াই স্বাভাবিক। সেসব বিষয় মাথায় রেখেই এই গুরুদায়িত্ব যোগ্য ব্যক্তিদের সহযোগিতা নিয়ে সম্পন্ন করতে হবে। </span></span></span></p> <p><span style="font-size:14pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="font-family:SolaimanLipi">এই নতুন বিশ্ববিদ্যালয়টি বর্তমানে বিদ্যমান বৈষম্যগুলো দূর করতে এবং উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। একটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের কথা শুনে ঘাবড়ানোর কোনো কারণ নেই। এই প্রস্তাবিত নতুন বিশ্ববিদ্যালয়টি চালু করতে গিয়ে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে তেমন কোনো অর্থকড়ি ব্যয় করতে হবে না। এই বিশ্ববিদ্যালয় হবে সরকারি কলেজগুলোর একটি জোট এবং সেটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত থাকবে। এর অর্থ হলো বর্তমান প্রশাসনিক ও আর্থিক কাঠামোয় কোনো রকম পরিবর্তন আনতে হবে না। সে যা হোক, এই বিশ্ববিদ্যালয়টি তার নিজস্ব শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচি প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি কর্মকাণ্ড অন্যান্য সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই স্বাধীনভাবে করবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি নিজস্ব একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি ধীরে ধীরে ঢাকা বিভাগের অন্য সব কলেজের অন্তর্ভুক্তিকরণ, তাদের অনুমোদন প্রদান, পরিদর্শন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ, ফলাফল প্রকাশ ইত্যাদি দায়দায়িত্বও নেবে। ফলে একদিকে বিশ্ববিদ্যালয়টির নিজস্ব আয়ের উৎস তৈরি হবে, অন্যদিকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর চাপ কমবে এবং কলেজগুলোতে উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন ঘটবে। </span></span></span></p> <p><span style="font-size:14pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="font-family:SolaimanLipi">এই নতুন বিশ্ববিদ্যালয়টি চালু করতে হবে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে। প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি অধিভুক্ত কলেজ নিয়ে এটি যাত্রা শুরু করবে। পরের বছর ঢাকা শহরের সব কলেজ এর আওতায় আসবে। সরকারের শিক্ষামন্ত্রী হবেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য। কোনো সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নন, বরং কোনো একজন অধ্যক্ষকে উপাচার্য ও অন্যান্য অধ্যক্ষকে উপ-উপাচার্য এবং উপাধ্যক্ষকে বিভিন্ন অনুষদের ডিন হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে। প্রাথমিকভাবে এই বিশ্ববিদ্যালয়টির অবকাঠামোগত উন্নয়নের প্রয়োজন পড়বে না। কারণ প্রতিটি সরকারি কলেজেরই রয়েছে নিজস্ব ভবন, কোনো কোনোটির আবাসিক হল ও শিক্ষক-কর্মচারীর আবাসনের ব্যবস্থাও আছে। ফলে অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য এ মুহূর্তে কোনো বরাদ্দের দরকার হবে না। উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ডিনরা নিজ নিজ কলেজে নিজস্ব অফিস থেকে তার দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। </span></span></span></p> <p><span style="font-size:14pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="font-family:SolaimanLipi">এই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সরাসরি শিক্ষক বা কর্মকর্তা নিয়োগ প্রদানে বিধান থাকবে না। দেশের বিভিন্ন কলেজ থেকে যোগ্য শিক্ষক বা কর্মকর্তাদের পদোন্নতি বা বদলি করে নিয়ে আসতে হবে শিক্ষক বা কর্মকর্তাদের শূন্যতা পূরণের জন্য। বিসিএস (শিক্ষা) মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্তরাই কেবল এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার সুযোগ পাবেন। এতে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগের নামে স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি বা অনিয়মের সুযোগ থাকবে না। প্রয়োজনে এই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় লোকবল সরবরাহের অনুরোধ জানাবে এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় দেশের অন্যান্য সরকারি কলেজগুলো থেকে যোগ্যতাসম্পন্ন লোকবল নিয়ে আসার ব্যবস্থা করবে। তা ছাড়া অন্যান্য সরকারি কলেজের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের মতোই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকবল তাদের বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবে, যেমনটি করছে তারা বর্তমানে। ফলে নতুন করে অর্থ বরাদ্দের প্রয়োজন পড়বে না এবং তাদের ও অন্যান্য সরকারি কলেজর শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের মধ্যে কোনো রকম বৈষম্য থাকবে না।</span></span></span></p> <p><span style="font-size:14pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঢাকা মহানগরের উচ্চশিক্ষায় নতুন দিগন্ত উন্মোচনে প্রস্তাবিত ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় হতে পারে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। তাই ঢাকা শহরের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় শুধু প্রয়োজনীয় নয়, এটি সময়ের দাবিও। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমানে অধিভুক্ত কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরাই শুধু নয়, অন্যান্য স্নাতক ও স্নাতকোত্তর কোর্স প্রদানকারী কলেজের শিক্ষার্থীরাও মানসম্মত উচ্চশিক্ষার সুযোগ এবং উন্নত শিক্ষাসেবা পাওয়ার অধিকার রাখে। তাই আমাদের প্রত্যাশা অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত উদ্যোগ নিয়ে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করে বৈষম্যহীন ও স্বৈরাচারমুক্ত রাষ্ট্র বিনির্মাণের অঙ্গীকার পূরণে এক ধাপ এগিয়ে যাবে। </span></span></span></p> <p><span style="font-size:14pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="font-family:SolaimanLipi">লেখক : ভিজিটিং ফ্যাকাল্টি, ইউনিভার্সিটি অব রোহ্যাম্পটন, যুক্তরাজ্য </span></span></span></p> <p><span style="font-size:14pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""> mahruf@ymail.com</span>   </span></span></p>