<p> নতুন শিক্ষানীতির আলোকে নতুন কারিকুলামে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কম প্রচলিত পাঁচটি পাঠ্য বই দেওয়া নিয়ে বিপাকে পড়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। বেসরকারি প্রকাশকরা এই পাঠ্যপুস্তকগুলো প্রকাশে রাজি হচ্ছেন না। এমনকি এ বিষয়ে আলোচনায় বসতেও তাঁরা রাজি নন। এ অবস্থায় এনসিটিবি কর্তৃপক্ষ নিজেরাই বইগুলো প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে।</p> <p> এদিকে একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এবার নতুন শিক্ষাবর্ষ থেকে ইংরেজি প্রথম পত্রের নতুন বই পেতে যাচ্ছে। চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে বইটি দেওয়ার কথা থাকলেও রচনার কাজ শেষ না হওয়ায় দেওয়া সম্ভব হয়নি বলে জানা গেছে।</p> <p> এনসিটিবির সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) অধ্যাপক ড. রতন সিদ্দিকী জানিয়েছেন, নতুন কারিকুলাম অনুসারে শিক্ষার্থীদের হাতে সব নতুন বই তুলে দেওয়ার কাজটি নতুন শিক্ষাবর্ষে যেকোনোভাবেই হোক সম্পন্ন করা হবে। তিনি জানান, কম প্রচলিত পাঠ্য বই যেগুলো প্রকাশকরা প্রকাশ করতে রাজি হচ্ছেন না সেগুলো সংশ্লিষ্ট বিষয়ের বিশেষজ্ঞদের দিয়ে রচনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রচনার কাজ শেষ হলে এনসিটিবির পক্ষ থেকেই ছাপানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে।</p> <p> যে পাঁচটি বই প্রকাশ করতে প্রকাশকরা রাজি হচ্ছেন না সেগুলো হলো- শিশু বিকাশ, খাদ্য ও পুষ্টি, গৃহ ব্যবস্থাপনা ও পারিবারিক জীবন, শিল্পকলা ও বস্ত্র পরিচ্ছদ এবং ট্যুরিজম ও হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট। অনুমোদনের জন্য এই বইগুলোর পাণ্ডুলিপি জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল গত ১৫ মার্চ। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো পাণ্ডুলিপি জমা পড়েনি। এমন পরিস্থিতিতে এ বইগুলো প্রকাশের বিষয়ে কথা বলার জন্য প্রকাশকদের নিয়ে এনসিটিবির পক্ষ থেকে একটি মতবিনিময় সভা আহ্বান করা হয়েছিল গত সপ্তাহে। কিন্তু কোনো প্রকাশকই সেই সভায় যোগ দেননি। ফলে অনেকটা বাধ্য হয়ে এনসিটিবিই বইগুলো প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।</p> <p> এসব বিষয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম হওয়ায় বইও প্রকাশ করতে হয় কম। ফলে বইগুলো ছাপতে প্রকাশকরা রাজি হচ্ছেন না বলে জানা গেছে। এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, এসএসসি ও সমমানের পর্যায়ে বর্তমানে ছাত্রছাত্রী প্রায় ১৩ লাখ। কিন্তু উপরোল্লিখিত বিষয়ের শিক্ষার্থী সারা দেশে কয়েক হাজারের বেশি হবে না। লাখ লাখ কপি বিক্রি হয় এমন বিষয়ের বই ছাপতেই প্রকাশকদের আগ্রহ বেশি। উল্লেখ্য, দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্য বই সরকার বিনা মূল্যে দেয়। তবে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির বইয়ের মধ্যে বাংলা ও ইংরেজি বাদে বাকি বই বেসরকারি প্রকাশকদের মাধ্যমে রচনা ও প্রকাশ করে বাজারে ছাড়া হয়, যা কিনে নিতে হয় ছাত্রছাত্রীদের।</p> <p> ২০১০ নতুন শিক্ষানীতি প্রণীত হওয়ার পর তার আলোকে ২০১২ সালে নতুন পাঠ্য বই রচনা শুরু হয়। ২০১৩ সাল থেকে ধাপে ধাপে নতুন কারিকুলামের বই প্রবর্তন শুরু হয়। ২০১৩ সালে একাদশে এবং ২০১৪ সালে দ্বাদশ শ্রেণিতে নতুন পাঠ্য বই দেওয়া শুরু হয়।</p> <p> এনসিটিবির প্রধান সম্পাদক প্রীতিশ কুমার সরকার জানান, উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের ৩৩টি পাঠ্য বইয়ের মধ্যে গত বছর কম প্রচলিত আটটি বই প্রকাশকরা না প্রকাশ করার কারণে এবং ইংরেজি প্রথম পত্র রচনা সম্পন্ন না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া সম্ভব হয়নি। গত বছর জমা না পড়লেও এবার লঘুসংগীত ও উচ্চাঙ্গসংগীত বই দুটি প্রকাশের অনুমোদনের জন্য জমা পড়েছে। আর ইংরেজি প্রথম পত্র বইও এবার দেওয়া সম্ভব হবে।</p>