শৈত্যপ্রবাহ চলছিল তখন। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহের সেই তীব্র শীত গায়ে জড়িয়ে উঠে পড়লাম বরিশালের লঞ্চে। সফরসঙ্গী আদনান। আমাদের গন্তব্য পটুয়াখালী।
শৈত্যপ্রবাহ চলছিল তখন। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহের সেই তীব্র শীত গায়ে জড়িয়ে উঠে পড়লাম বরিশালের লঞ্চে। সফরসঙ্গী আদনান। আমাদের গন্তব্য পটুয়াখালী।
পরদিন ভোরে লঞ্চ পৌঁছাল বরিশাল। আমতলী ঘাট থেকে রিকশা ও ভ্যানে করে কয়েক ঘণ্টায় কুয়াকাটা।
রাখাইনপাড়া ঘোরার সময় একটা ছোট্ট চায়ের দোকানে পরিচয় হলো এক তরুণের সঙ্গে। নাম ঈমান। অল্প সময়ে দারুণ জমে গেল। গল্পে গল্পে তার কাছ থেকে জানতে পারলাম, এক আজব দ্বীপের কথা। পুরো পৃথিবীতে দুটি আর দক্ষিণ এশিয়ায় এমন একটিমাত্র দ্বীপ আছে, যেখানে একই স্থানে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দুটোই দেখা যায়। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এই দ্বীপ থেকে বিস্ময়কর প্রকৃতির সাক্ষী হওয়া যায়। নাম ‘কাউয়ার চর’ বা লোকমুখে ‘সূর্যোদয় দ্বীপ’। কুয়াকাটায় সূর্যোদয় দেখা নতুন কোনো কথা নয়। অনেকে মূল সৈকত থেকে ছয় কিলোমিটার দূরের গঙ্গামতির চরে যায় সূর্যোদয় উপভোগ করতে। কিন্তু বঙ্গোপসাগরের বুক থেকে সূর্যের একটি আলোক কণাও মিস না করে, পূর্ণাঙ্গ সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দেখতে যেতে হবে আরো দূরে। মোহনীয় গঙ্গামতি চরের সবুজ বন, খাল পেরিয়ে আরো তিন কিলোমিটার দূরের কাউয়ার চরে। ঠিক করলাম, বিশেষ ওই সূর্যের সঙ্গে সাক্ষাত্ করতে পরদিনই যাব সেখানে। ঈমান বলল, তাহলে ভোররাতে রওনা দিতে হবে। ঠিক হয় ঈমান রাত ৪টা ৩০ মিনিটে আমাদের নিতে বাইক নিয়ে চলে আসবে।
পরদিন ভোর ৪টা বেজে ২৫ মিনিট। সময়ের আগেই হাজির ঈমান। আমরাও দেরি করলাম না। রওনা হলাম কুয়াকাটা থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরের একটি দ্বীপের উদ্দেশ্যে। ভোর ৬টা ১৬ মিনিটের আগে ওখানে পৌঁছাতে হবে। নয়তো সূর্যোদয় দেখা যাবে না। তীব্র শৈত্যপ্রবাহের কনকনে ঠাণ্ডাও আটকাতে পারছে না আমাদের। না পারছে ঘুটঘুটে অন্ধকার পথ রোধ করতে। চোখজুড়ে মেখে থাকা ঘুম, বাইকের গতির বদৌলতে ভয়ংকর রূপ নেওয়া হিমেল বাতাস আর কাদায় ভরা রাস্তা। এসব প্রাকৃতিক বাধার কোনোটিই কাজে আসছে না আজ। সমুদ্রের তীর ঘেঁষে, সৈকতের বালুময় পথ ধরে এগিয়ে যাচ্ছি। বাইক যতবার কাদায় আটকে যাচ্ছে, ততবার নামতে হচ্ছে। পথ কোথাও উঁচু-নিচু, কোথাও ভাঙা বা কোথাও অন্ধকার। এসব সঙ্গে নিয়েই শীতে জবুথবু হয়ে ছুটে চলেছি। কান, মাথা, হাত-পা সব জমে আসছে।
প্রায় ছয় কিলোমিটার পেরিয়ে এবার দৃশ্যপটে হাজির হলো সেই গঙ্গামতির খাল। পূর্ব দিকে এই খাল পর্যন্ত এসেই কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত শেষ হয়েছে। শীতের মৌসুমেও বেশ চওড়া সেটি। দেখেই অনুমান করা যাচ্ছে বর্ষায় এটি কী রূপ ধারণ করবে। কিনারে বিশাল আকারের একটি নৌকা বাঁধা। অত ভোরে এক মাঝিও এসে বসে আছে। ঈমান খুব ধীরে ধীরে সাবধানে বাইকটি নৌকায় ওঠাতে লাগল। একটু এদিক-সেদিক হলেই পানিতে পড়ে যাবে। এদিকে আমার মন চিন্তামগ্ন হয়ে আছে। সময়ের আগে পৌঁছাতে পারব তো! এসবের মধ্যেই নৌকা ঘাট ছাড়ল। গঙ্গামতির খালের কুয়াশায় ডুব দেওয়া রূপ, অপার মুগ্ধতা ছড়িয়ে দিল চারপাশে। ধীরে ধীরে বিদায় নিচ্ছে আঁধার। সময় ঘনিয়ে আসছে। খাল পার হয়ে আবারও বাইকে গতি তুলল ঈমান। বালিয়াড়ি, গাছগাছালি সব পেছনে ফেলে সূর্যের আগে ছুটছি আমরা।
এটি কোনো সাদামাটা সূর্যোদয় নয়। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত একটি এলাকায়, অনেক দূরের একটি দ্বীপে সূর্য উঠবে। সূর্য উঠবে তার সব কয়টি রং নিয়ে। পসরা সাজিয়ে অকৃপণ হাতে ছড়িয়ে দেবে তার উজ্জ্বলতার শেষ বিন্দুটুকু। যেখানে থাকবে না শহরের সরু জানালার ফাঁক গলে দালানকোঠার বাধা বা দূষিত বাতাসে ধূসর হওয়া আলো। সেই দ্বীপের সূর্য বিশুদ্ধ ও স্বাধীন। যেখানে তাকে দেখা যায় আপন মহিমায়। তার সর্বোচ্চ সৌন্দর্যকে ক্যামেরাবন্দি করতে আমিও প্রস্তুত।
অবশেষে পৌঁছালাম সেই সূর্যের আস্তানায় এবং সময়মতোই। নৈসর্গিক সুন্দর এক দ্বীপ। এক দিক দিয়ে বিশাল সবুজ বন সৈকত ঘেঁষে চলে গেছে আরো অনেক গভীরে। আরেক দিকে বঙ্গোপসাগরের নীলাভ জলরাশি। অবারিত ঢেউ আর নানা রকম পাখির কলকাকলিতে ক্ষণে ক্ষণে নীরবতা ভেঙে যাচ্ছে। চোখ মেলে সবই দেখছি। কিন্তু সূর্য! তার দেখা কখন পাব? গঙ্গামতির খালের সঙ্গে আঁতাত করে তিনিও যে ডুব দিয়েছেন কুয়াশার সাগরে। সময় বয়ে চলেছে। দেখা মিলছে না সুয্যি মামার। কোনো অভিমান নাকি এটি নিছকই তার স্বেচ্ছাচারিতা? ভোর ৬টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত ক্যামেরা হাতে ঠায় দাঁড়িয়ে রইলাম। কুয়াশা ভেদ করে সূর্যের আলোকচ্ছটার একটি চিহ্নেরও দেখা মিলল না। কি আর করা। মনের সব আশা শূন্যে নেমে এলো। ভাবলাম, দ্বীপটিই না হয় একটু ঘুরে দেখি। শীতের এই ভোরে আশপাশের সৌন্দর্য দেখে হয়তো মনের দুঃখ লাঘব হবে। ৭টা ২২ মিনিটে হঠাত্ই আমাদের হতাশা কাটিয়ে বঙ্গোপসাগরের পুব আকাশে অমোঘ বাধা পেরিয়ে হঠাত্ দেখা দিল এক বিন্দু ‘লাল’ আভা। তা দেখে আমাদের সে কী খুশি! সত্যিই দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র সেই দ্বীপের সূর্য আর তাকে দেখতে পাওয়ার আনন্দ, দুটোই অনেক স্পেশাল।
যেভাবে যাবেন
ঢাকার সদরঘাট থেকে নৌপথে চলে যাবেন বরিশাল বা পটুয়াখালী। টিকিট পড়বে কমবেশি ১২০০-২৫০০ টাকা। সেখান থেকে বাস বা সিএনজিতে কুয়াকাটা। থাকার জন্য ১৫০০-৩০০০ টাকার মধ্যে ভালো হোটেল পাবেন। দ্বীপে যেতে বাইক ভাড়া ৫০০-৬০০ টাকার মতো। ঢাকা থেকে সড়কপথেও যাওয়া যায় পটুয়াখালী।
সম্পর্কিত খবর
ছোটদের কাছে ঈদ মানেই নতুন জামা। এ জন্য ছোটদের পোশাক হওয়া চাই মনের মতো। গরমের এই সময়ে পোশাকে যতটা আরাম রাখা যায় ততটাই ভালো। হালকা নকশার ছিমছাম পোশাকেই বেশি মনোযোগ দিয়েছেন ডিজাইনাররা।
রং
ছোটদের পোশাকে রঙিন আবহ বেশি ভালো লাগে। এ জন্য লাল, হলুদ, কমলা, নীল, গোলাপি, আকাশি রঙের পোশাক বেশি এসেছে। গরমের জন্য সাদা রঙের আরামদায়ক পোশাকও আছে। ছেলেশিশুদের পোশাকে সাদা, প্যাস্টেল ঘরানার রং, সাদার সঙ্গে হলুদ, নীলের ব্যবহার অনেক বেশি।
বাহারি পোশাক
মেয়েশিশুদের ঈদের পোশাকে উত্সবের আমেজ রাখতে গ্লিটার কাপড়ের ব্যবহার করা হয়েছে।
ম্যাটেরিয়াল
সুতি, লিনেন, পাতলা খাদি, জামদানি, মসলিন ও গেঞ্জি কাপড় প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে ছোটদের ঈদ পোশাকে। একরঙা পাঞ্জাবি যেমন আছে তেমনি পাতলা খাদি কাপড়ে চেকের ব্যবহারে ভিন্নতা এসেছে। পাঞ্জাবির বুক ও হাতায় এমব্রয়ডারির ছিমছাম কাজ বেশি দেখা যাচ্ছে। মেয়েশিশুদের সুতি ও নেটের পোশাকে সুতা, পুঁতি, পাথর, লেস, জরির কাজ করা হয়েছে। মোটিফ হিসেবে আছে ফুল, পাতা ও প্রকৃতির নকশা। আরামের বিষয়টি মাথায় রেখে লিনেন বা সুতি কাপড়ের ওপর জোর দিয়েছে ব্র্যান্ডগুলো।
দরদাম
ছেলেদের পাঞ্জাবি, শার্ট, টি-শার্ট পাবেন ৬৫০ থেকে ৩০০০ টাকার মধ্যে। মেয়েদের থ্রিপিস, ফ্রক, টপ, টিউনিক, কাফতানের দাম পড়বে ৫০০ থেকে ২৫০০ টাকা।
আফগানি চানা চাট
উপকরণ
সিদ্ধ করা কাবুলি ছোলা ৫০০ গ্রাম, তেল ২ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ, আদা কুচি ১ টেবিল চামচ, রসুন কুচি ১ টেবিল চামচ, ধনেপাতা কুচি আধা কাপ, কাঁচা মরিচ ৪টি, গরম মসলা পাউডার ১ চা চামচ, টমেটো কুচি আধা কাপ, চাটমসলা ১ টেবিল চামচ, পানি ১ কাপ।
যেভাবে তৈরি করবেন
১. হাঁড়িতে তেল দিয়ে পেঁয়াজ ও রসুন কুচি দিয়ে লালচে হওয়া পর্যন্ত ভাজুন।
২. এবার এর মধ্যে সিদ্ধ করা কাবুলি ছোলা দিয়ে ৫-৭ মিনিট রান্না করুন। এরপর বাকি উপকরণ দিয়ে হালকা আঁচে আরো ৫-৭ মিনিট রান্না করুন।
৩. মাখা মাখা হয়ে এলে নামিয়ে পরিবেশন করুন।
হাঁড়ি কাবাব
উপকরণ
গরুর রানের মাংস ১ কেজি, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, তেল আধা কাপ, পেঁপে বাটা ২ টেবিল চামচ, লাল মরিচ গুঁড়া ২ চা চামচ,
লবণ স্বাদমতো, চিনি ২ চা চামচ, আদা বাটা ১ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ, দারচিনি বাটা আধা চা চামচ, কালো গোলমরিচ ১০টি, টক দই আধা কাপ, কাঁচা মরিচ বাটা ১ টেবিল চামচ।
যেভাবে তৈরি করবেন
১. মাংস ধুয়ে পরিষ্কার করে কিমা করে নিন। একটি বাটিতে কিমা করা মাংস নিয়ে তেল, পেঁয়াজ ও চিনি বাদে বাকি সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে ৫-৬ ঘণ্টা ফ্রিজে রেখে দিন।
২. একটি প্যানে তেল গরম করে পেঁয়াজ বেরেস্তা করে নিন। সামান্য বেরেস্তায় পরিমাণমতো চিনি দিয়ে মাখিয়ে নিন। বাকিটা মাংসের জন্য রেখে দিন।
৩. আরেকটি প্যানে মাংস চড়িয়ে দিন।
৪. ঝোল শুকিয়ে মাখা মাখা হলে চিনি মাখা বেরেস্তা দিয়ে আরো ৫ মিনিট হালকা আঁচে রান্না করুন। পাঁচ মিনিট পর নামিয়ে পরিবেশন করুন।
মাটন দম বিরিয়ানি
উপকরণ
বাসমতী চাল ১ কেজি, খাসির মাংস হাড়সহ ২ কেজি, আদা বাটা ২ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ, দারচিনি ৩-৪টি, সবুজ এলাচ ৮-১০টি, কালো এলাচ ৪-৫টি, লবঙ্গ আধা চা চামচ, জয়ত্রি গুঁড়া ১ চা চামচ, জায়ফল আধা চা চামচ, টক দই ১ কাপ, ঘি ৩-৪ কাপ, শাহি জিরা আধা চা চামচ, আলু ৪-৫টি, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, পানি ৬ কাপ, লবণ স্বাদমতো, গুঁড়া দুধ ২ টেবিল চামচ, জাফরান ১ চিমটি, আলুবোখারা ১০-১২টি, ময়দা ২ কাপ।
যেভাবে তৈরি করবেন
১. চাল ধুয়ে ২০ মিনিট ভিজিয়ে রেখে পানি ঝরিয়ে নিন। মাংস ধুয়ে লবণ দিয়ে ১৫-২০ মিনিট ভিজিয়ে রেখে দিন।
২. শুকনা মরিচ, দারচিনি, এলাচ, জিরা, লবঙ্গ, জয়ত্রি, জায়ফল, কাবাব চিনি এবং শাহি জিরাসহ সব মসলা গুঁড়া করে নিন।
৩. একটি হাঁড়িতে মাংস, গুঁড়া করে রাখা মসলা এবং দই মাখিয়ে ৩০ মিনিট রেখে দিন। অন্য একটি হাঁড়িতে ৬ কাপ পানি ফুটিয়ে নিন। পানি ফুটে উঠলে চাল দিন। চাল একটু ফুটে এলে পানি ঝরিয়ে আরেকটি পাত্রে রেখে দিন।
৪. কুসুম গরম পানিতে জাফরান গুলে নিন। চাল ঝরানো গরম পানিতে ঘি মিশিয়ে নিন। মাংসের হাঁড়িতে ভাজা আলু, পেঁয়াজ বেরেস্তা, আলুবোখারা ও ঘি মিশ্রিত গরম পানি দিয়ে দিন। ওপরে চাল দিয়ে জাফরানের মিশ্রণ ঢেলে দিন। এরপর ঘি মিশ্রিত গরম পানি দিয়ে দিন।
৫. মনে রাখতে হবে, পানি যেন চালের ওপরে না আসে। এবার ময়দা গুলে হাঁড়ির ঢাকনা দিয়ে ভালোমতো সিল করে চুলায় চড়িয়ে দিন। কোনো ফাঁকা যেন না থাকে। এক থেকে দেড় ঘণ্টা মাঝারি আঁচে রান্না করুন। এবার নামিয়ে ঢাকনা খুলে কাবাব ও চাটনি সহযোগে পরিবেশন করুন।
গোলাপজাম
উপকরণ
গুঁড়া দুধ ১ কাপ, ঘি ২ টেবিল চামচ, তরল দুধ আধা কাপ, ময়দা ৪ টেবিল চামচ, বেকিং সোডা ১ চা চামচ, এলাচ গুঁড়া সিকি চা চামচ, তরল দুধ ১ কাপ।
সিরার জন্য
চিনি ২ কাপ, পানি ১ কাপ, আস্ত এলাচ ৩-৪টি।
যেভাবে তৈরি করবেন
১. ফ্রাইপ্যানে ঘি দিয়ে গরম করে নিন। এবার তরল দুধ দিয়ে ভালো করে নেড়েচেড়ে কিছুক্ষণ রেখে দিন।
২. গুঁড়া দুধ একটু একটু করে দিন যেন দানা দানা না হয়। অনবরত হালকা আঁচে নাড়তে থাকুন। একসময় প্যান থেকে নরম হয়ে ওঠে আসবে। তখন নামিয়ে ঠাণ্ডা করে নিন।
৩. অন্য একটি হাঁড়িতে চিনি ও পানি দিয়ে সিরা তৈরি করে নিন। হালকা আঁচে সিরা চুলায় রেখে দিন।
৪. এবার ঠাণ্ডা করে রাখা মিশ্রণটিতে ময়দা ও দুধ দিয়ে ছেনে নিন। খেয়াল রাখতে হবে যেন দানা দানা না হয়।
৫. ছানা হয়ে গেলে গোল গোল মিষ্টি আকারে বানিয়ে গরম ঘিতে ভেজে সরাসরি মিষ্টির সিরায় দিয়ে ঢেকে দিন। ৩-৪ ঘণ্টা পর পরিবেশন করুন।
শাহি টুকরা
উপকরণ
ক্রিম ১ লিটার, কনডেন্সড মিল্ক ১ কৌটা, এলাচ গুঁড়া ১ চা চামচ, পাউরুটি ৬-৮ টুকরা, কিশমিশ ২ কাপ, ঘি ভাজার জন্য, কাঠবাদাম সাজানোর জন্য।
যেভাবে তৈরি করবেন
১. হাঁড়িতে দুধ ও কনডেন্সড মিল্ক মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি অর্ধেক করে ক্রমাগত নাড়তে থাকুন যেন লেগে না যায়।
২. এরপর নামিয়ে এলাচ গুঁড়া দিন। কড়াইয়ে ঘি দিয়ে তাতে পাউরুটি টুকরা সোনালি করে ভেজে নিন। এরপর কিশমিশগুলো ভেজে নিন।
৩. একটি ট্রেতে পাউরুটিগুলো সাজিয়ে এর ওপর দুধের মিশ্রণটি দিয়ে ঢেকে দিন।
৪. এরপর কাঠবাদাম ও কিশমিশ দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
ব্যস্ত নগরীর দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছে যে শব্দটি তার নাম ভ্যান মার্কেট। চলতি পথেই দেখা যায় এমন অসংখ্য দোকান। কী নেই এখানে। জামাকাপড়, জুতা, স্টেশনারি, ক্রোকারিজ, বেডকভার, মশারি, পর্দা, জুয়েলারি, ব্যাগ, কসমেটিকস, হস্তশিল্প, রান্নাঘরের খুঁটিনাটি, মোবাইল অ্যাকসেসরিজ থেকে শুরু করে টয়লেট্রিজ পণ্য, সবজি, ফল, মুখরোচক খাদ্য প্রায় সব ধরনের সামগ্রীই সস্তায় কিনতে পাওয়া যায় ভ্যান মার্কেটে।
জামাকাপড়
সালোয়ার, কামিজ, শাড়ি, পাঞ্জাবি, লুঙ্গি, টি-শার্ট, লেগিংস, প্যান্ট, মিডি, ক্রপ টপ, ট্যাং টপ, হাফপ্যান্ট, স্কার্ফ, কুর্তিসহ প্রায় পোশাকই পাওয়া যায় ভ্যান মার্কেটে।
জুতা
পাওয়া যাবে কম দামে পছন্দসই নানা রকম ডিজাইনের জুতা।
গয়না ও অন্যান্য
টিপ, চুলের কাঁটা, মালা, চুড়ি, কানের দুল, নাকছাবি, আংটি সবই মেলে ভ্যানে। লিপলাইনার, কাজল, লিপস্টিক, মেকআপ কিটস আরো নানা পণ্য পাওয়া যায়। দাম ২০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।
পর্দা ও বেড কভার
ব্লকপ্রিন্ট, টাইডাই, স্ক্রিনপ্রিন্টসহ নানা নকশার পর্দাও পাবেন সুলভে। এ ছাড়া প্রিন্ট বা নেটের পর্দাও পাবেন। পাশেই সাজানো থাকে বালিশ কভার, বেড কভার, কোলবালিশ কভার, কুশন ইত্যাদি। এসব পর্দা বা কভারে কাপড় হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে সুতি, সিনথেটিক, লিলেন এবং মিক্স কটন। প্রতি পিস পর্দার দাম ২৫০ থেকে ৬০০ টাকা। বেড কভারের দাম পড়বে ৩৫০ থেকে ৯০০ টাকার মধ্যে।
সিরামিকের তৈজসপত্র
ভ্যান মার্কেটের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পণ্য হলো সিরামিকের জিনিসপত্র। থালা, বাটি, জগ, মগ, টি-পট, সুগার পট, মিল্ক পট, সার্ভিং ডিশ, চামচ, লবণদানি, সস রাখার পাত্র—সবই পাওয়া যায় কম দামে। ঈদে রান্নাঘর ও খাবার টেবিলে বাহার আনতে কিনতে পারেন এমন পণ্য। সেট কিংবা পিস হিসেবেও কিনতে পারেন। মগ পাবেন ১০০ থেকে ২০০ টাকায়। নানা আকৃতির সার্ভিং ডিশ পাবেন ৫০০ থেকে ১২০০ টাকায়। স্যুপ সেট, ফিরনি সেট এক হাজারের মধ্যে কিনতে পাবেন। ২০০ থেকে ৩০০ টাকায় পাবেন ছোট ছোট নানা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র।
অল্প তেলে ভুনা ছোলা
ইফতারে ছোলা ভুনা খাওয়ার চল। বেশির ভাগ সময় বেশি তেল ও মসলা দিয়ে তৈরি করা হয় ছোলা ভুনা। যাঁরা কম তেল খেতে চান তাঁরা প্রথমে ছোলা সিদ্ধ করে নিন। এরপর সামান্য তেল দিয়ে ভুনা করে নিন।
দই-চিড়া
দই ও চিড়ার সঙ্গে পাকা কলা মিশিয়ে নিন। সঙ্গে সামান্য দুধ মিশিয়ে ইফতারে খেতে পারেন। শুধু চিড়া ও কলা মেখেও খেতে পারেন।
কাঁচা ছোলা
কাঁচা ছোলার সঙ্গে আদা ও সামান্য লবণ মিশিয়ে খেতে পারেন। এটি অত্যন্ত উপাদেয় এবং শরীরের জন্য ভালো একটি খাবার। সারা দিন রোজার পর সহজেই শরীরে শক্তি জোগাবে খাবারটি।
খেজুর ও দুধ
খেজুর দুধে ভিজিয়ে রেখে খেতে পারেন। এটি একটু খেলেই পেট অনেকটা ভরে যায়
মৌসুমি ফল
শরীরের জন্য উপকারী মৌসুমি ফলমূল। রোজার সময় নানা রকম ফলের শরবত তৈরি করে খাওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া ফলের সালাদ তৈরি করা যায়। আপেল, শসা, আঙুর, বরই, ডালিম একত্র করে সালাদের মতো বানিয়ে টক দই মিক্স করে খেতে পারেন।
ওটস ও ডিমের প্যানকেক
ওটস এবং ডিম দিয়ে প্যানকেক তৈরি করে খেতে পারেন। এতে একদমই তেল প্রয়োজন হয় না। প্যানকেক তৈরি করার পর মধু দিয়েও খেতে পারেন।
চিয়া সিড
চিয়া সিড, দুধ এবং ফল সারা দিন একত্রে ভিজিয়ে রেখে ইফতারে খেতে পারেন। অনেকে পানিতে চিয়া সিড অথবা মেথি ভিজিয়ে রেখে সেই পানি পান করে থাকেন। আপনি চাইলে ইফতারেও এটি রাখতে পারেন।
ডিম, মুরগি সিদ্ধ
সালাদের সঙ্গে সিদ্ধ ডিম বা মুরগির মাংস যোগ করেও খেতে পারেন ইফতারে।
মোমো
জাপানিজ খাবার মোমো তেলবিহীন ভালো খাবার। এটি সবজি বা মুরগির মাংস দিয়ে তৈরি করা হয়। খেলে অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকে। এটি তৈরিতে একদমই তেলের ব্যবহার নেই। গরম পানির ভাপে সিদ্ধ করে তৈরি করা হয়। ইফতারে মোমো রাখতে পারেন। খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে যিনি খাচ্ছেন তাঁর যেন কোনো শারীরিক সমস্যা না হয়। অনেকের ডায়াবেটিস, এসিডিটি, গ্যাস্ট্রিক এবং অন্যান্য সমস্যা থাকতে পারে। এসব বিবেচনায় রেখে রমজানের ইফতার খেতে হবে।