<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কোনো নিয়মের তোয়াক্কা না করেই যখন-তখন  ডাক্তারের কোনো পরামর্শ ছাড়াই ফার্মেসি থেকে অ্যান্টিবায়োটিক কিনে খেয়ে ফেলছেন অনেকে। সেটির মাত্রা খেয়াল নেই আর কয় দিন খেতে হবে তাও ঠিক নেই। ফলে যা হতে পারে তা হয়</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অ্যান্টিবায়োটিক হয়ে গেল অকাজের। প্রয়োগ করলেও তেমন কোনো কাজ হয় না। জীবাণুকে বিনাশ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে এটি। জীবাণু হয়ে যায় অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্টেন্ট। রোগী বা ব্যবহারকারীর দোষ হলো এটি অপব্যবহার করার জন্য। শুধু তা-ই নয়, নিয়ম না মেনে খেলে অ্যান্টিবায়োটিক হয়ে যায় শত্রু। অথচ শরীরে ব্যাক্টেরিয়ার  সংক্রামণ হলে একে দমাতে হয় অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে। আর এটা প্রয়োজনে খাওয়ার পরামর্শ দেন ডাক্তার। কিন্তু অনেকেই নিজ উদ্যোগে ফার্মেসি থেকে কিনে খেয়ে নেন। জ্বর কিংবা মামুলি অসুখ হলেও। তারা বুঝতে চান না যে হিসাব ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করলে ভাইরাসের বিরুদ্ধে এটি যথাযথভাবে কাজ করে না। অ্যান্টিবায়োটিক চলাকালে শরীর একটু ভালো হলে অনেকেই মাঝপথে এটি গ্রহণ করা থামিয়ে দেন, যা খুবই অনুচিত। সুস্থবোধ করলেও অ্যান্টিবায়োটিকের পুরো কোর্স ডাক্তার যেভাবে বলে দেবেন সেভাবে শেষ করতে হবে। তা না হলে পরবর্তীকালে কোনো রোগে এই অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করবে না, শরীরে প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি হয় না। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাধারণত সেই ওষুধ আর কাজ করবে না। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সর্দি-কাশি বা ডায়রিয়া এসব হয় সাধারণ ভাইরাসের জন্য। তাই এসব হলে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। মুড়িমুড়কির মতো তাই অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার দরকার পড়ে না।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সেই প্রাচীনকালে প্রাচীন গ্রিসে নানা উদ্ভিদের অংশবিশেষ ব্যবহার করা হতো। এতে ছিল এন্টিমাইক্রব উপাদান। পরে বিজ্ঞানের অনেক উন্নতি হলো। এমন এক সময় ছিল, এই ব্যাক্টেরিয়াজনিত কারণে মৃত্যু হতো। আর অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কারের পর সেই মৃত্যু অনেক কমে গেল।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কিন্তু পরিতাপের বিষয়, অপরিকল্পিত আর যথেচ্ছ ব্যবহারের ফলে অ্যান্টিবায়োটিকের জীবাণু বিনাশি শক্তি দুর্বল হয়ে যায়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আর এ কারণে ওষুধ দিয়ে জীবাণুদের বিনাশ করা যায় না। জীবাণু হয়ে পড়ে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এখন তো অনেক ব্যাক্টেরিয়া বেশ কিছু অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে এমন প্রতিরোধশক্তি অর্জন করেছে যে এগুলোকে মোকাবেলা করাটাই  হচ্ছে চিকিৎসা শাস্ত্রের বড় চ্যালেঞ্জ।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী নিয়ে সারা বিশ্বের তাবদ বিজ্ঞানীরা চিন্তিত। বিষয়টি নিয়ে ২০১৬ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি বড় সম্মেলনেও বসেছিলেন তাঁরা।  </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এর পেছনে যেমন সাধারণ মানুষের গাফিলতি আছে, তেমনি অনেক চিকিৎসক, বিশেষ করে যাঁরা অপচিকিৎসক আর হাতুড়ে ডাক্তার, তাঁদের  অপব্যবহারও দায়ী।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ রকম ঘন ঘন অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার ফলে সৃষ্টি হচ্ছে সুপার বাগ। তাই যেকোনো জ্বর বা অসুখে অ্যান্টিবায়োটিক নয়। শুধু তা-ই নয়, এ জন্য ডাক্তারকে চাপ দেওয়াটাও ঠিক নয়। অনেকের শরীর অতি সংবেদনশীল। ফলে অ্যান্টিবায়োটিক অতিরিক্ত গ্রহণ করলে এলার্জি হয় তাঁদের। শুধু তা-ই নয়, অনেক অ্যান্টিবায়োটিক অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের জন্য ব্যবহার করা নিষেধ বা বিপজ্জনক।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অনেক অ্যান্টিবায়োটিকের সঙ্গে অন্য ওষুধ খেলে হিতে বিপরীত প্রতিক্রিয়া হতে পারে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">একজনের গলাব্যথা যে অ্যান্টিবায়োটিকে সেরেছে, তাঁর কাছ থেকে তা শুনে নিজে নিজে সেই অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়াটা ঠিক নয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শিশুদের ওজন অনুসারে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করতে হয়। কোনো এক ডোজ খেতে ভুল হলে পরে ডাবল ডোজ খাওয়া যায় না। চিকিৎসক না বললে অন্য কারো কথায় অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া একদমই অনুচিত। আর খেলে পূর্ণ মেয়াদ শেষ করতে হবে, মাঝপথে বন্ধ করা যাবে না। এটা অবশ্যই মনে রাখতে হবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">লেখক : সাবেক অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ</span></span></span></span></p>