প্রতিদিনের আমল

কবর জিয়ারতের সময় যে দোয়া পড়া সুন্নত

ইসলামী জীবন ডেস্ক
ইসলামী জীবন ডেস্ক
শেয়ার
কবর জিয়ারতের সময় যে দোয়া পড়া সুন্নত

মানুষের মৃত্যুর পর প্রথম আবাসস্থল কবর। মুমিনদের সেখানকার অধিবাসীর জন্য দোয়া করতে বলা হয়েছে। রাসুল (সা.) নিয়মিত কবর জিয়ারত করতেন এবং দোয়া করতেন। হাদিসে বর্ণিত একটি দোয়া হলো- 

السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ أَهْلَ الدِّيَارِ، مِنَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُسْلِمِينَ، وَإِنَّا إِنْ شَاءَ اللَّهُ بِكُمْ لاَحِقُونَ، أنتُم لنا فرَطٌ ونحنُ لَكم تبعٌ، أَسْاَلُ اللَّهَ لَنَا وَلَكُمُ الْعَافِيَةَ

উচ্চারণ : আসসালামু আলাইকুম আহলাদ দিয়ার।

মিনাল মুমিনিনা ওয়াল মুসলিমিন। ওয়া ইন্না ইনশাআল্লাহু বিকুম লাহিকুন। আনতুম লানা ফারাতুন ওয়া নাহনু লাকুম তাবউন। আসআলুল্লাহ লানা ওয়া লাকুমুল আফিয়াহ।
 

অর্থ : হে গৃহের অধিবাসী মুমিন ও মুসলিমরা, তোমাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর ইচ্ছায় আপনাদের সঙ্গে মিলিত হব। তোমরা আমাদের অগ্রগামী এবং আমরা তোমাদের অনুসরণকারী। আমি আল্লাহর কাছে আমাদের ও তোমাদের জন্য নিরাপত্তা প্রার্থনা করি।

 

হাদিস : বুরাইদাহ আল-আসলামি (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসুল (সা.) কবর জিয়ারতে গেলে তিনি দোয়াটি পড়তেন। (নাসায়ি, হাদিস নং : ২০৩৯)


 

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

আজকের নামাজের সময়সূচি, ১৩ এপ্রিল ২০২৫

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
আজকের নামাজের সময়সূচি, ১৩ এপ্রিল ২০২৫

আজ রবিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ৩০ চৈত্র ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার নামাজের সময়সূচি নিম্নরূপ—

জোহর সময় শুরু- ১২টা ৩ মিনিট। 

আসরের সময় শুরু - ৪টা ৩০ মিনিট।

মাগরিব- ৬টা ২৩ মিনিট।

এশার সময় শুরু - ৭টা ৩৯ মিনিট।

আগামীকাল ফজর শুরু - ৪টা ২৩ মিনিট।

আজ ঢাকায় সূর্যাস্ত - ৬টা ১৯ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয়- ৫টা ৪০ মিনিটে।

সূত্র : ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, বসুন্ধরা, ঢাকা।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য
প্রশ্ন-উত্তর

মৃত ব্যক্তির আকিকা দেওয়া জায়েজ আছে কি?

ইসলামী জীবন ডেস্ক
ইসলামী জীবন ডেস্ক
শেয়ার
মৃত ব্যক্তির আকিকা দেওয়া জায়েজ আছে কি?

প্রশ্ন : মৃত ব্যক্তির আকিকা দেওয়া জায়েজ আছে কি?

-আতিক, মিরপুর

উত্তর : আকিকা জীবিত ব্যক্তির জন্য মুস্তাহাব। মৃত ব্যক্তির আকিকা করা মুস্তাহাবের অন্তর্ভুক্ত নয়, তাই তাতে আকিকার সওয়াব পাওয়া যাবে না। (রদ্দুল মুহতার : ৬/৩৩৬, ফয়জুল বারি : ৪/৩৩৭)

সমাধান : ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বাংলাদেশ, বসুন্ধরা, ঢাকা

মন্তব্য

কোরআনের বর্ণনায় পবিত্র কাবাঘরের গুণাবলি

মো. আবদুল মজিদ মোল্লা
মো. আবদুল মজিদ মোল্লা
শেয়ার
কোরআনের বর্ণনায় পবিত্র কাবাঘরের গুণাবলি

আল্লাহর ইবাদতের জন্য পৃথিবীতে নির্মিত প্রথম ঘর কাবা। কাবাঘর পৃথিবীর সবচেয়ে পবিত্র ও সম্মানিত স্থান। পবিত্র কাবাঘরের দিকে ফিরেই মুসলমানরা নামাজ আদায় করে। কোরআন ও হাদিসে কাবাঘরের একাধিক নাম, গুণাবলি ও বৈশিষ্ট্য বর্ণিত হয়েছে।

কাবাঘরের সম্মান ও মর্যাদা

পবিত্র কাবাঘর আল্লাহর অনন্য নিদর্শন এবং তা হাজরে আসওয়াদ, জমজম কূপ ও মাকামে ইবরাহিমের মতো নিদর্শনকে বুকে ধারণ করে আছে। আল্লাহ কাবাঘরকে নিরাপদ ঘোষণা করেছেন এবং এই পবিত্র ঘরের হজ ফরজ করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তাতে অনেক সুস্পষ্ট নিদর্শন আছে, যেমন—মাকামে ইবরাহিম। আর যে সেখানে প্রবেশ করে সে নিরাপদ।

মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে, আল্লাহর উদ্দেশ্যে এই ঘরের হজ করা তার আবশ্য কর্তব্য। যে প্রত্যাখ্যান করল সে জেনে রাখুক, আল্লাহ বিশ্বজগতের মুখাপেক্ষী নন।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৯৭)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে এই ঘরের হজ করল এবং অশ্লীলতায় লিপ্ত হলো না, আল্লাহর অবাধ্য হলো না, সে সদ্যঃপ্রসূত শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে (হজ থেকে) ফিরল।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৫২১)

কাবাঘরের নামগুলো

কোরআন ও হাদিসে কাবাঘরের সাতটি নাম পাওয়া যায়।

তা হলো—

১. বাইত : পবিত্র কোরআনে ১৫ বার ‘বাইত’ শব্দ দ্বারা কাবাঘরকে ব্যক্ত করা হয়েছে। কখনো শুধু বাইত শব্দটি এসেছে। আবার কখনো এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সর্বনাম ও বিশেষণ। আরবি বাইত শব্দের অর্থ ঘর। যেমন—মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই মানবজাতির জন্য সর্বপ্রথম যে ঘর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা তো বাক্কায় (মক্কায়), তা বরকতময় ও বিশ্বজগতের দিশারি।

’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৯৬)

অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘তারা যেন তাওয়াফ করে প্রাচীন ঘরের।’ (সুরা : হজ, আয়াত : ২৯)

২. কাদিস : আল্লামা আজরাকি (রহ.) বলেন, প্রাচীনকালে আরবের লোকেরা কাবাঘরকে কাদিস বলত। যার অর্থ পবিত্র। লিসানুল আরবে কাদিসের একটি অর্থ লেখা হয়েছে ‘বাইতুল হারাম’ বা কাবাঘর। (আখবারু মক্কা : ১/২৮০; লিসানুল আরব : ৬/১৭০)

৩. নাজির : শাব্দিক অর্থ মানতকারী, তবে তা মানতের স্থান অর্থে ব্যবহৃত হতো। আল্লামা আজরাকি (রহ.) বলেন, প্রাচীনকালে আরবের লোকেরা কাবাঘরকে নাজির বলত। কেননা কাবাঘরের উদ্দেশ্যে নানা জিনিসের মানত করা হতো। (আখবারু মক্কা : ১/২৮০)

৪. নাদির : নাদির শব্দটি ‘নাদরাতুন’ থেকে এসেছে। নাদরাহ হলো এক প্রকার বিরল ও মূল্যবান রত্ন, যা স্বর্ণের খনিতে পাওয়া যায়। তুলনাহীন ও মূল্যবান অর্থে কাবাঘরকে নাদির বলা হতো। (কামুসুল মুহিত, পৃষ্ঠা-৬১৯)

৫. বানিয়্যাহ : শাব্দিক অর্থ স্থাপত্য বা শ্রেষ্ঠ স্থাপত্য। আল্লামা ইবনে আসির (রহ.) বলেন, কাবাঘরকে বানিয়্যাতু ইবরাহিম বলা হতো। কেননা তিনি তা নির্মাণ করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে অধিক ব্যবহারের কারণে তাতে সংকোচন ঘটে এবং বানিয়্যাহ শব্দে রূপান্তরিত হয়। হাদিসেও কাবাঘর বোঝাতে বানিয়্যাহ শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। (আন নিহায়া ফি গারিবিল হাদিস ওয়াল আসার : ১/১৫৮; মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ১৫৮৩৬)

৬. দাওয়ার : আল্লামা ইবনে মানজুর (রহ.) দাওয়ারকে কাবাঘরের একটি নাম হিসেবে উল্লেখ করেছেন। দাওয়ার শব্দটি দাঈর শব্দের বহুবচন। যার অর্থ বৃত্তাকার। যেহেতু কাবাঘরকে ঘিরে মানুষ তাওয়াফ করে। তাই তাকে দাওয়ার বলা হয়। (আসমাউ কাবাতিল মুশাররাফা, পৃষ্ঠা-২৮; লিসানুল আরব : ৪/২৯৮)

৭. কিবলা : পবিত্র কোরআনে কাবাঘরকে কিবলা নামে উল্লেখ করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘তুমি এ যাবৎ যে কিবলা অনুসরণ করছিলে তাকে আমি এই উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম, যাতে জানতে পারি কে রাসুলের অনুসরণ করে এবং কে ফিরে যায়?’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ১৪৩)

কাবাঘরের বৈশিষ্ট্য ও গুণাবলি

কোরআন ও হাদিসের আলোকে কাবাঘরের গুণাবলি ও বৈশিষ্ট্যগুলো তুলে ধরা হলো—

১. পথপ্রদর্শক : পবিত্র কাবাকে আল্লাহ মানুষের জন্য পথপ্রদর্শক বানিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই মানবজাতির জন্য সর্বপ্রথম যে ঘর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা তো বাক্কায় (মক্কায়), তা বরকতময় ও বিশ্বজগতের দিশারি।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৯৬)

২. বরকতময় : কাবাঘরকে আল্লাহ বরকতময় করেছেন। যেমনটি সুরা আলে ইমরানের ৯৬ নং আয়াতে বলা হয়েছে।

৩. মিলনমেলা : কাবাঘরকে আল্লাহ মানুষের জন্য নিরাপদ মিলনমেলা বানিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘সে সময়কে স্মরণ করো, যখন কাবাঘরকে মানবজাতির মিলনকেন্দ্র ও নিরাপত্তাস্থল করেছিলাম।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ১২৫)

৪. কিবলা : আল্লাহ কাবাঘরকে কিবলা বানিয়েছেন। ফলে মানুষ সেদিকে ফিরে ইবাদত করে। ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাকে অবশ্যই এমন কিবলার দিকে ফিরিয়ে দিচ্ছি, যা তুমি পছন্দ করো। অতএব, তুমি মসজিদুল হারামের দিকে মুখ ফিরাও।’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ১৪৪)

৫. কল্যাণের উৎস : মহান আল্লাহ বলেন, ‘পবিত্র কাবাঘর, পবিত্র মাস, কোরবানির জন্য কাবায় প্রেরিত পশু ও গলায় মালা পরিহিত পশুকে আল্লাহ মানুষের কল্যাণের জন্য নির্ধারিত করেছেন।’ (সুরা : মায়িদা, আয়াত : ৯৭)

৬. সম্মানিত : ইবরাহিম (আ.) কাবাকে সম্মানিত ঘর আখ্যা দিয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করেন—‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমি আমার বংশধরদের কতককে বসবাস করালাম অনুর্বর উপত্যকায় তোমার সম্মানিত ঘরের কাছে।’ (সুরা : ইবরাহিম, আয়াত : ৩৭)

৭. পবিত্র : নির্মাণকাল থেকে কাবাঘরকে আল্লাহ পবিত্র করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘স্মরণ করো, যখন আমি ইবরাহিমের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছিলাম সেই ঘরের স্থান, তখন বলেছিলাম, আমার সঙ্গে কোনো শরিক স্থির কোরো না এবং আমার ঘরকে পবিত্র রেখো তাদের জন্য, যারা তাওয়াফ করে, যারা নামাজে দাঁড়ায়, রুকু করে ও সিজদা করে।’ (সুরা : হজ, আয়াত : ২৬)

৮. প্রাচীন : কাবাঘর পৃথিবীর প্রাচীনতম ঘর। কোরআনে কাবাকে প্রাচীন বিশেষণে বিশেষায়িত করা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘অতঃপর তারা যেন তাদের অপরিচ্ছন্নতা দূর করে, তাদের মানত পূর্ণ করে এবং তাওয়াফ করে প্রাচীন ঘরের।’ (সুরা : হজ, আয়াত : ২৯)

আল্লাহ সবাইকে পবিত্র কাবাঘরের জিয়ারত নসিব করুন। আমিন।

মন্তব্য

আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভের আমল

আসআদ শাহীন
আসআদ শাহীন
শেয়ার
আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভের আমল

আল্লাহ তাআলাকে নিজ চোখে দেখা মহা সৌভাগ্যের বিষয়, যা পরকালে মুমিনদের জন্য নির্ধারিত। জান্নাতের অফুরন্ত সুখ-সুবিধা ও অনাবিল আনন্দের মধ্যেও আল্লাহর দিদার হবে এমন এক পরম আনন্দ, যা জান্নাতবাসীরা অন্য সব আনন্দ ভুলে যাবে।

আসুন, জান্নাতে আল্লাহর দিদার লাভের কিছু আমল জেনে নিই—

প্রথম আমল : ঈমানের সঙ্গে মৃত্যুবরণ করা

আল্লাহর দিদার লাভের প্রথম ও প্রধান শর্ত হলো, একজন ব্যক্তি ইসলামের অনুসরণে থেকে মৃত্যুবরণ করবে। কারণ অবিশ্বাসীদের জন্য আল্লাহর দিদার হারাম করা হয়েছে।

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘কখনো নয়! বস্তুত তারা সেদিন তাদের প্রতিপালকের দিদার (দর্শন) থেকে বঞ্চিত থাকবে।’ (সুরা : আল মুতাফফিফীন, আয়াত : ১৫)

অর্থাৎ গুনাহ ও কুফরির জন্য তাদের কঠিন শাস্তি হলো, তারা কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলার দিদার থেকে বঞ্চিত হবে। এ থেকে স্পষ্ট হয় যে মুমিনরা কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলাকে দেখতে পাবে, আর কাফিররা এই মহান নিয়ামত থেকে বঞ্চিত থাকবে।

দ্বিতীয় আমল : আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করা

আল্লাহ তাআলার দিদার লাভের অন্যতম মাধ্যম হলো—তাঁর কাছে এই মহান নিয়ামত লাভের জন্য আন্তরিকভাবে দোয়া করা।

আল্লাহ তাআলা দোয়া কবুলকারী, আর তাঁর বান্দাদের আন্তরিক দোয়া তিনি প্রত্যাখ্যান করেন না। কায়েস ইবনে উবাদা (রা.) বর্ণনা করেন যে রাসুলুল্লাহ (সা.) একটি বিশেষ দোয়া পড়তেন, যাতে আল্লাহর দিদারের জন্য দোয়া করা হয়েছে। সেই দোয়াটি হলো—‘হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে (জান্নাতে) তোমার দিদার লাভ করতে চাই এবং ক্ষতিকর কষ্ট ও পথভ্রষ্টকারীর ফাসাদে পড়া ছাড়া তোমার সাক্ষাতের আশা-আকাঙ্ক্ষা করি। হে আল্লাহ! আমাদের ঈমানের বলে বলীয়ান করো আর হেদায়েতপ্রাপ্ত ও হেদায়েত প্রদর্শনকারী করো।
’ (সুনানে নাসায়ি, হাদিস : ১৩০৫)

তৃতীয় আমল : ফজর ও আসরের নামাজের পাবন্দি করা

জান্নাতে আল্লাহ তাআলার দিদার লাভের অন্যতম মাধ্যম হলো সব নামাজের প্রতি যত্নবান হওয়া, বিশেষত ফজর ও আসরের নামাজ নিয়মিতভাবে আদায় করা। জারির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বর্ণনা করেন : একদা আমরা নবী করিম (সা.)-এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। তিনি রাতে (পূর্ণিমার) চাঁদের দিকে তাকিয়ে বলেন, ওই চাঁদকে তোমরা যেমন দেখছ, ঠিক তেমনি অচিরেই তোমাদের প্রতিপালককে তোমরা দেখতে পাবে। তাঁকে দেখতে তোমরা কোনো ভিড়ের সম্মুখীন হবে না। কাজেই সূর্য উদয়ের ও অস্ত যাওয়ার আগের নামাজ (শয়তানের প্রভাবমুক্ত হয়ে) আদায় করতে পারলে তোমরা তা-ই করবে।

(বুখারি, হাদিস : ৫৫৪)

চতুর্থ আমল : গুনাহ থেকে মুক্ত থাকা

জান্নাতে আল্লাহ তাআলার দিদার লাভের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপায় হলো—সব ধরনের গুনাহ থেকে নিজেকে বিরত রাখা। হজরত আবু জর গিফারি (রা.) বর্ণনা করেন যে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন তিন শ্রেণির লোকের সঙ্গে কথা বলবেন না, তাদের দিকে তাকাবেন না এবং তাদের পবিত্র করবেন না; বরং তাদের জন্য রয়েছে ভয়ানক শাস্তি। বর্ণনাকারী বলেন, রাসুলুল্লাহ‌ (সা.) এ কথাটি তিনবার পাঠ করলেন। আবু জর (রা.) বলে উঠলেন, তারা ধ্বংস হবে, ক্ষতিগ্রস্ত হবে। হে আল্লাহর রাসুল! এরা কারা? তিনি বলেন, যে লোক পায়ের গোছার নিচে কাপড় ঝুলিয়ে চলে, কোনো কিছু দান করে খোঁটা দেয় এবং মিথ্যা শপথ করে পণ্যদ্রব্য বিক্রি করে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৯৪)

পঞ্চম আমল : আল্লাহ তাআলার সাক্ষাৎ ও দিদারের আকাঙ্ক্ষা

জান্নাতে আল্লাহ তাআলার দিদার লাভের অন্যতম মাধ্যম হলো—আল্লাহ তাআলার সঙ্গে সাক্ষাতের প্রবল আকাঙ্ক্ষা। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ পছন্দ করে, আল্লাহও তার সাক্ষাৎ পছন্দ করেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সাক্ষাৎ পছন্দ করে না, আল্লাহও তার সাক্ষাৎ পছন্দ করেন না।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৫০৭)

ষষ্ঠ আমল : ইহসান করা

জান্নাতে আল্লাহ তাআলার দিদার লাভের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো ইহসান বা সৎকর্ম করা।

ইহসানের অর্থ হলো, সৃষ্টিজীবের প্রতি যেকোনো ভালো কাজ করা এবং কল্যাণমূলক কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখা। এটি এমন একটি গুণ, যা মানুষের অন্তরকে পরিশুদ্ধ করে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পথ সুগম করে। ইমাম জুরজানি (রহ.) ইহসানের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেন, ইহসান হলো সেই কাজ, যা দুনিয়াতে প্রশংসিত হয় এবং পরকালে প্রতিদান ও সওয়াবের কারণ হয়। (আল-তারিফাত, পৃষ্ঠা-৯১)

আল্লাহ তাআলা আমাদের উপরিউক্ত আমল পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ