ঢাকা, বুধবার ১৬ এপ্রিল ২০২৫
২ বৈশাখ ১৪৩২, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, বুধবার ১৬ এপ্রিল ২০২৫
২ বৈশাখ ১৪৩২, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৬
ঘোষণাপত্র

ইসরায়েলি পণ্য বয়কটের আহ্বান, বিরোধিতা ওয়াকফ সংশোধনীর

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
ইসরায়েলি পণ্য বয়কটের আহ্বান, বিরোধিতা ওয়াকফ সংশোধনীর
লোকারণ্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। ছবি : ফোকাস বাংলা

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শুরু হয়েছে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি। সেখানে ঘোষণাপত্র পাঠ করেছেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।

শনিবার (১২ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ ঘোষণাপত্র পাঠ করেন।

ঘোষণাপত্রে ইসরায়েলের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করতে মুসলিমবিশ্বের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

এ ছাড়া গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধের দাবি জানানো হয়।

এর পাশাপাশি এতে উঠে আসে সারা বিশ্বে মুসলিমদের ওপর আগ্রাসন ও ওআইসিসহ মুসলিম নেতাদের নির্লিপ্ততার কথা।

ঘোষণাপত্রে সম্প্রতি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরোধিতা করা হয়। এর পাশাপাশি বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে ‘এক্সেপ্ট ইসরায়েল’ শব্দটি ফের ফিরিয়ে আনার দাবি জানানো হয়।

ইসরায়েল ও এর সমর্থকদের পণ্য বয়কটেরও আহ্বান জানানো হয়।

ঘোষণাপত্রে বলা হয়, ‘আজ আমরা, বাংলাদেশের জনতা—যারা জুলুমের ইতিহাস জানি, প্রতিবাদের চেতনা ধারণ করি—সমবেত হয়েছি গাজার শহীদদের পাশে দাঁড়াতে। আজকের এই সমাবেশ শুধু প্রতিবাদ নয়, এটি ইতিহাসের সামনে দেওয়া আমাদের জবাব, একটি অঙ্গীকার, একটি শপথ।’

‘এই পদযাত্রা ও গণজমায়েত থেকে আজ আমরা চারটি স্তরে আমাদের দাবিগুলো উপস্থাপন করব।


আমাদের প্রথম দাবিগুলো জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি ঘোষণা। যেহেতু—জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সব জাতির অধিকার রক্ষার, দখলদারি ও গণহত্যা রোধের সংকল্প প্রকাশ করে এবং আমরা দেখেছি গাজায় প্রতিদিন যে রক্তপাত, যে ধ্বংস চলছে, তা কোনো একক সরকারের ব্যর্থতা নয়—বরং এটি একটি আন্তর্জাতিক ব্যর্থতার ফল। এই ব্যর্থতা শুধু নীরবতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং পশ্চিমা শক্তিবলয়ের অনেক রাষ্ট্র সরাসরি দখলদারকে অস্ত্র, অর্থ ও কূটনৈতিক সহায়তা দিয়ে এই গণহত্যাকে দীর্ঘস্থায়ী করেছে। এই বিশ্বব্যবস্থা দখলদার ইসরায়েলকে প্রশ্নবিদ্ধ না করে বরং রক্ষা করার প্রতিযোগিতায় নেমেছে।’

‘সেহেতু আমরা জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি বলছি—১. জায়নবাদী ইসরায়েলের গণহত্যার বিচার আন্তর্জাতিক আদালতে নিশ্চিত করতে হবে।

২. যুদ্ধবিরতি নয়, গণহত্যা বন্ধে কার্যকর ও সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ৩. ১৯৬৭ সালের পূর্ববর্তী ভূমি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য বাধ্যবাধকতা তৈরি করতে হবে। ৪. পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি দিতে হবে। ৫. ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণ, নিরাপত্তা এবং রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার পথ উন্মুক্ত করতে হবে। কারণ এই মুহূর্তে বিশ্বব্যবস্থা যে ন্যায়ের মুখোশ পরে আছে,
গাজার ধ্বংসস্তূপে সেই মুখোশ নির্লজ্জভাবে খুলে পড়ে গেছে।

‘আমাদের দ্বিতীয় দাবিগুলো মুসলিম উম্মাহর নেতৃবৃন্দের প্রতি। যেহেতু আমরা বিশ্বাস করি, ফিলিস্তিন কেবল একটি ভূখণ্ড নয়, এটি মুসলিম উম্মাহর আত্মপরিচয়ের অংশ এবং গাজা এখন কেবল একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত শহর নয়—এটি আমাদের সম্মিলিত ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি। উম্মাহর প্রতিটি সদস্য, প্রতিটি রাষ্ট্র এবং প্রতিটি নেতৃত্বের ওপর অর্পিত আছে সেই আমানত, যা আল্লাহ প্রদত্ত ভ্রাতৃত্ব ও দায়িত্বের সূত্রে আবদ্ধ। ইসরায়েল একটি অবৈধ, দখলদার, গণহত্যাকারী রাষ্ট্র—যা মুসলিমদের প্রথম কিবলা ও একটি পুরো জনগোষ্ঠীর অস্তিত্ব নিশ্চিহ্ন করতে উদ্যত হয়েছে। ভারতের হিন্দুত্ববাদ আজ এই অঞ্চলে জায়নবাদী প্রকল্পের প্রতিবিম্বে পরিণত হয়েছে—মুসলমানদের বিরুদ্ধে সুপরিকল্পিত দমন-নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে।

ভারতে সম্প্রতি ওয়াকফ সম্পত্তি আইন সংশোধনের মাধ্যমে মুসলিমদের ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক স্বত্বাধিকার হরণ করা হয়েছে, যা উম্মাহর জন্য একটি স্পষ্ট সতর্কবার্তা।’

‘সেহেতু আমরা মুসলিমবিশ্বের সরকার ও ওআইসির মতো বহুজাতিক সংগঠনগুলোর নিকট দৃঢ়ভাবে আহ্বান জানাই—১. ইসরায়েলের সঙ্গে অর্থনৈতিক, সামরিক ও কূটনৈতিক সব সম্পর্ক অবিলম্বে ছিন্ন করতে হবে। ২. জায়নবাদী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বাণিজ্যিক অবরোধ ও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে।
৩. গাজার মজলুম জনগণের পাশে সর্বাত্মক সহযোগিতা নিয়ে দাঁড়াতে হবে—চিকিৎসা, খাদ্য, আবাসন ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতাসহ। ৪. আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইসরায়েলকে এক ঘরে করতে সক্রিয় কূটনৈতিক অভিযান শুরু করতে হবে। ৫. জায়নবাদের দোসর ভারতের হিন্দুত্ববাদী শাসনের অধীনে মুসলিমদের অধিকার হরণ, বিশেষ করে ওয়াকফ আইন সংশোধনের মতো রাষ্ট্রীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ওআইসি ও মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে দৃঢ় প্রতিবাদ ও কার্যকর কূটনৈতিক অবস্থান নিতে হবে। কারণ, গাজার রক্তে রঞ্জিত হওয়ার আগেই, গাজার পাশে দাঁড়ানোই উম্মাহর জন্য সম্মানের একমাত্র পথ এবং—যে নেতৃত্ব আজ নীরব, কাল ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে বাধ্য হবে।’

‘আমাদের তৃতীয় দাবিগুলো বাংলাদেশ সরকারের প্রতি। যেহেতু বাংলাদেশ একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্র, যার স্বাধীনতা সংগ্রামের ভিত্তিতেই নিহিত রয়েছে অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের চেতনা এবং আমরা বিশ্বাস করি, ফিলিস্তিনের প্রশ্নে বাংলাদেশ কেবল মানবতার নয়—ঈমানের পক্ষেও এক ঐতিহাসিক অবস্থানে আছে। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে সরকারের দায়িত্ব, জনগণের ঈমানি ও নৈতিক আকাঙ্ক্ষার প্রতি শ্রদ্ধা রাখা। বাংলাদেশের জনগণ গাজার পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছে। তাই রাষ্ট্রেরও দায়িত্ব জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলনে দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।’

সেহেতু আমরা বাংলাদেশের সরকারের প্রতি দৃঢ়ভাবে আহ্বান জানাই—১. বাংলাদেশি পাসপোর্টে ‘এক্সেপ্ট ইসরায়েল’ শর্ত পুনর্বহাল করা, ইসরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়ার অবস্থান আরো সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ করতে হবে। ২. সরকারের ইসরায়েলি যত প্রতিষ্ঠানের সাথে যত চুক্তি হয়েছে, তা বাতিল করতে হবে। ৩. রাষ্ট্রীয়ভাবে গাজায় ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়তা পাঠানোর কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। ৪. সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানে এবং আমদানি নীতিতে জায়নবাদী কম্পানির পণ্য বর্জনের নির্দেশনা দিতে হবে। ৫. জায়নবাদের দোসর ভারতের হিন্দুত্ববাদী সরকারের অধীনে মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর চলমান নির্যাতনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিবাদ জানাতে হবে; যেহেতু, হিন্দুত্ববাদ আজ শুধু একটি স্থানীয় মতবাদ নয়—বরং আন্তর্জাতিক জায়নিস্ট ব্লকের অন্যতম দোসর। ৬. পাঠ্যবই ও শিক্ষা নীতিতে আল-আকসা, ফিলিস্তিন, এবং মুসলিমদের সংগ্রামী ইতিহাসকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে—
যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম মুসলিম আত্মপরিচয়ের সাথে গড়ে ওঠে। কারণ, রাষ্ট্র কেবল সীমানা নয়, রাষ্ট্র এক আমানত। আর এই আমানত রক্ষা করতে না পারলে ইতিহাস কাউকেই ক্ষমা করে না।’

‘আমাদের সর্বশেষ দাবিগুলো নিজেদের প্রতি যা মূলত একটি অঙ্গীকারনামা। যেহেতু, আমরা বিশ্বাস করি, আল-কুদস কেবল একটি শহর নয়—এটি ঈমানের অংশ। আমরা জানি, বাইতুল মাকদিসের মুক্তি অন্য কারো হাতে নয়, আমাদেরই কোনো প্রজন্মের হাতে তা লেখা হবে। আমরা বুঝি, জায়নবাদ কেবল বাইরের দখলদার নয়, এটি ভেতরের আত্মবিস্মৃতির সুযোগে দাঁড়ায়। আজ যদি আমরা প্রস্তুত না হই, কাল আমাদের সন্তানেরা হয়তো এমন এক বাংলাদেশ পাবে, যেখানে হিন্দুত্ববাদ ও জায়নবাদ একত্রে নতুন গাজা তৈরি করবে। গাজা আমাদের জন্য এক আয়না, যেখানে আমরা দেখতে পাই, কিভাবে বিশ্বাসী হওয়া মানে কেবল বেঁচে থাকা নয়, সংগ্রামে দৃঢ় থাকা।’

‘সেহেতু, আমরা এই মাটির মানুষ, এই মুসলিমবঙ্গের নাগরিক, এই কওমের সন্তান, একটি অঙ্গীকার করছি— ১. আমরা বয়কট করব, প্রত্যেক সেই পণ্য, কম্পানি ও শক্তিকে যারা ইসরায়েলের দখলদারিত্বকে টিকিয়ে রাখে। ২. আমরা আমাদের সমাজকে প্রস্তুত করব—এমন নুরউদ্দীন, এমন সালাহউদ্দিন তৈরি করার জন্য যারা বাইতুল মাকদিসের মিম্বার পুনরুদ্ধার করবে, ইনশাআল্লাহ।
৩. আমরা আমাদের সন্তানদের এমনভাবে গড়ে তুলব—যারা নিজেদের আদর্শ ও ভূখণ্ড রক্ষায় জান ও মালের সর্বোচ্চ ত্যাগে প্রস্তুত থাকবে। ৪. আমরা বিভাজিত হব না, কারণ আমরা জানি, বিভক্ত জনগণকে দখল করতে দেরি হয় না। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব, যাতে এই বাংলাদেশ কখনো কোনো হিন্দুত্ববাদী প্রকল্পের পরবর্তী গাজায় পরিণত না হয়। আমরা শুরু করব নিজেদের ঘর থেকে—ভাষা, ইতিহাস, শিক্ষা, অর্থনীতি, সমাজ—সবখানে এই অঙ্গীকারের ছাপ রেখে। আমরা মনে রাখব, গাজার শহীদরা কেবল আমাদের দোয়া চান না—তাঁরা আমাদের প্রস্তুতি চান।’

সমাপ্তি— শান্তি বর্ষিত হোক গাজার সম্মানিত অধিবাসীদের ওপর—তাঁদের উপর, যাঁরা সবর করেছেন, যাঁরা ঈমানের প্রমাণ দিয়েছেন। যাঁরা ধ্বংসস্তূপের মাঝেও প্রতিরোধের আগুন জ্বেলেছেন, বিশ্বের নীরবতা ও উদাসীনতার যন্ত্রণা হাসিমুখে বুকের মাঝে ধারণ করেছেন। শান্তি বর্ষিত হোক হিন্দ রজব, রীম, ফাদি আবু সালেহ এবং মুহাম্মাদ আল-দুরাদের ওপর, যাঁদের রক্তে আকাশ রঙিন হয়েছে, যাঁদের চোখে ছিল প্রতিরোধের দীপ্তি। শান্তি বর্ষিত হোক বাইতুল মাকদিসের গর্বিত অধিবাসীদের ওপর, যাঁদের হৃদয়ে এখনো ধ্বনিত হয় ‘আল-কুদস লানা’। গাজার জনগণকে অভিনন্দন— আপনারা ঈমান, সবর আর কুরবানীর মহাকাব্য রচনা করেছেন। দুনিয়াকে দেখিয়েছেন—ঈমান আর তাওয়াক্কুলের শক্তি
আমরা, বাংলাদেশের মানুষ—শাহ জালাল আর শরীয়তুল্লাহর ভূমি থেকে দাঁড়িয়ে, আপনাদের সালাম জানাই। আপনাদের শহীদদের প্রতি ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা জানাই, আর আমাদের কণ্ঠে উচ্চারিত হয় এই দোয়া— হে আল্লাহ, গাজার এই সাহসী জনপদকে তুমি সেই পাথর বানাও, যার ওপর গিয়ে ভেঙে পড়বে সব জায়োনিস্টদের ষড়যন্ত্র।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

প্রথম আলোর ঈদ কার্টুনে কুকুরের ছবি : আলেমসমাজসহ সাধারণ মানুষের ক্ষোভ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
প্রথম আলোর ঈদ কার্টুনে কুকুরের ছবি : আলেমসমাজসহ সাধারণ মানুষের ক্ষোভ

ঈদুল ফিতরের প্রাক্কালে প্রথম আলো পত্রিকার একটি ঈদ শুভেচ্ছা কার্টুনে ‘ঈদ মোবারক’ লেখার পাশাপাশি কুকুরের ছবি প্রকাশের ঘটনায় দেশের আলেম-ওলামা ও সাধারণ মুসলিম জনতা ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন।

এটি প্রথম আলোর প্রথম এমন ঘটনা নয়। ২০০৭ সালেও ইসলাম ধর্মকে অবমাননা করে কার্টুন প্রকাশের অভিযোগে পত্রিকাটির বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছিল। সে সময় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মাওলানা উবায়দুল হকের উপস্থিতিতে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করেছিলেন সম্পাদক মতিউর রহমান।

তিনি শপথ নিয়েছিলেন যে ভবিষ্যতে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়, এমন কিছু প্রকাশ করবেন না।

কিন্তু এবার ঈদ উপলক্ষে প্রকাশিত কার্টুনে কুকুরের ছবি ব্যবহার করে সেই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যেও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

অনেকের মতে, কুকুরের ছবিসহ ঈদ শুভেচ্ছা জানানোর মাধ্যমে পত্রিকাটি ইচ্ছাকৃতভাবে মুসলিম ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়েছে।

কিছু ব্যবহারকারী বলছেন, এটা যেন কুকুরদের জন্য ঈদ শুভেচ্ছা বার্তা। আবার কেউ কেউ এটিকে পশ্চিমা এজেন্ডার অংশ হিসেবে দেখছেন।

এ ঘটনায় পত্রিকাটির বিরুদ্ধে পূর্বের মতোই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন ধর্মীয় নেতা ও সাধারণ মানুষ।

বিস্তারিত ভিডিওতে...

 

মন্তব্য

এলডিসি উত্তরণে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
এলডিসি উত্তরণে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা
সংগৃহীত ছবি

স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের পূর্ণ উদ্যমে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এলডিসি উত্তরণবিষয়ক এক সভায় প্রধান উপদেষ্টা এই নির্দেশনা দেন।

পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম প্রধান উপদেষ্টার বরাত দিয়ে বলেন, ‘অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন, এলডিসি উত্তরণের বিষয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গেছে। এখন পূর্ণ উদ্যমে কাজ এগিয়ে নিতে হবে।

সে অনুযায়ী যত ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া দরকার তা নিতে হবে, একই সঙ্গে সতর্ক থাকতে হবে এলডিসি উত্তরণের প্রেক্ষিতে কোনো খাত যেন কোনো ধরনের ক্ষতির মুখে না পড়ে। পাশাপাশি এলডিসি উত্তরণের প্রেক্ষিতে সর্বোচ্চ সুবিধা কিভাবে আদায় করা যায়, সেটাও নিশ্চিত করতে হবে।’

তিনি জানান, এলডিসি উত্তরণের বিষয়টি সার্বক্ষণিক মনিটর করতে একটি ডেডিকেটেড টিম গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। শফিকুল আলম বলেন, অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার কথা বারবার বলে আসছেন।

তিনি আজ বলেছেন, ‘এলডিসি উত্তরণের পরে এই কাজে যেন আরো গতি পায়।’

এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী অধ্যাপক ইউনূসের বরাত দিয়ে জানান, পোশাকসহ রপ্তানি খাতের কোথাও যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে জন্য প্রধান উপদেষ্টা দ্রুতগতিতে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, সংস্কার কমিশনের সুপারিশসমূহ বাস্তবায়ন হলে দেশের শ্রম পরিস্থিতির ক্ষেত্রে বিদেশি ক্রেতাদের শর্ত পূরণের অনেক জায়গায় দ্রুত উন্নতি ঘটবে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেসসচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

আরো ৭ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শেখ মুজিব ও আ. লীগ নেতার নাম বাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
আরো ৭ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শেখ মুজিব ও আ. লীগ নেতার নাম বাদ
সংগৃহীত ছবি

দেশের সাতটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শেখ মুজিবুর রহমান, যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মণি ও নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলাম বাবুর নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। স্কুলগুলোর নাম পরিবর্তন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

আরো পড়ুন
রংপুরে বুধবার আধাবেলা ধর্মঘটের ডাক

রংপুরে বুধবার আধাবেলা ধর্মঘটের ডাক

 

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রজ্ঞাপনটি প্রকাশ করা হয়। এর আগে গত ৮ এপ্রিল মন্ত্রণালয়ের বিদ্যালয়-২ শাখার যুগ্ম সচিব রেবেকা সুলতানা স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়।

আরো পড়ুন
সুদান যুদ্ধের ২ বছর, এখনো অন্ধকারে শান্তির পথ

সুদান যুদ্ধের ২ বছর, এখনো অন্ধকারে শান্তির পথ

 

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপনে জানিয়েছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামকরণ ও বিদ্যমান নাম পরিবর্তনের নীতিমালা-২০২৩ অনুযায়ী স্কুলগুলোর নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ১৭৫ নম্বর হাতিকাটা শেখ মনি জ্ঞানেন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম ১৭৫ নম্বর জ্ঞানেন্দ্রনাথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার নোয়াদ্দা নজরুল ইসলাম বাবু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম নোয়াদ্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একই উপজেলার চরলক্ষ্মীপুর নজরুল ইসলাম বাবু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম চরলক্ষ্মীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একই উপজেলার পিরদা চৌধুরীপাড়া আলফাজ নজরুল ইসলাম বাবু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পিরদা চৌধুরীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একই উপজেলার পাল্লা আলফাজ নজরুল ইসলাম বাবু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পাল্লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ বালিয়াপাড়া নজরুল ইসলাম বাবু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম দক্ষিণ বালিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় করা হয়েছে। আর কিশোরগঞ্জের সদর উপজেলার বঙ্গবন্ধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম বত্রিশ নতুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় করা হয়েছে। এ স্কুলটির নাম গত ২৬ ফেব্রুয়ারি জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে বত্রিশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় করা হলেও তা বাতিল করা হয়েছে।

আরো পড়ুন
আরো কল্যাণকর জনস্বাস্থ্যনীতি প্রণয়নের আহ্বান বিশেষজ্ঞদের

আরো কল্যাণকর জনস্বাস্থ্যনীতি প্রণয়নের আহ্বান বিশেষজ্ঞদের

 

এর আগে, গত ফেব্রুয়ারির শেষে ও মার্চের শুরুতে দেশের ৫৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ পরিবারের সদস্য ও ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ নেতাদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছিল।

মন্তব্য

বাংলাদেশে পূর্ণ সক্ষমতায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু আদানির

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
বাংলাদেশে পূর্ণ সক্ষমতায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু আদানির
সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশে পুরো বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করেছে ভারতের ব্যবসায়ী গৌতম আদানির কম্পানি আদানি পাওয়ার লিমিটেড। দেশটির ঝাড়খণ্ড রাজ্যের গোড্ডা পাওয়ার প্লান্টের দুই ইউনিট থেকেই বাংলাদেশে পূর্ণ সক্ষমতায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করেছে। গত শুক্রবার রাতে আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর গত শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটের সময় পুনরায় একটি ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়।

 মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সন্ধ্যার সময় দ্বিতীয় ইউনিট থেকেও বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করেছে আদানি।

আদানি পাওয়ার থেকে পাঠানো এক বার্তায় জানানো হয়েছে, আজ সন্ধ্যা ৭টার দিকে আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুই ইউনিট থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিমাণ ছিল ১৩৭৪ মেগাওয়াট। এ সময় প্রথম ইউনিট থেকে ৭৩৮ মেগাওয়াট এবং দ্বিতীয় ইউনিট থেকে ৬৩৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।

আরো পড়ুন
গ্যাস-তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে জনজীবনের সংকট বাড়াবে

গ্যাস-তেলের মূল্যবৃদ্ধি জনজীবনে সংকট বাড়াবে

 

জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সঞ্চালনে দায়িত্বে থাকা একমাত্র রাষ্ট্রীয় সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা এই বিষয়টি কালের কণ্ঠকে নিশ্চিত করেছেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কেন্দ্রটির দুটি ইউনিট থেকে গড়ে এক হাজার ৪০০ মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ পাওয়া যেত। কারিগরি ত্রুটির কারণে প্রথম ইউনিট থেকে উৎপাদন বন্ধ হয় ৮ এপ্রিল। আর দ্বিতীয় ইউনিট বন্ধ হয় গত শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার দিকে। এতে দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহে বড় ঘাটতি তৈরি হয়।

আদানির বিদ্যুেকন্দ্রে ব্যবহৃত কয়লার দাম নিয়ে বিরোধ আছে। এটি নিয়ে আদানি ও বিপিডিবির মধ্যে আলোচনা চলছে। বকেয়া শোধ নিয়েও বিভিন্ন সময় তাগাদা দিয়েছে আদানি। গত বছর একবার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করেছিল আদানি। এরপর নিয়মিত চলতি বিল পরিশোধ করায় তারা একটি ইউনিটের উৎপাদন চালু করে।

গত ফেব্রুয়ারিতে পুরো বিদ্যুৎ সরবরাহের অনুরোধ করে বিপিডিবি। গত মার্চে শুরু থেকেই দুটি ইউনিটের বিদ্যুৎ সরবরাহ করে তারা।

আরো পড়ুন
রংপুরে বুধবার আধাবেলা ধর্মঘটের ডাক

রংপুরে বুধবার আধাবেলা ধর্মঘটের ডাক

 

আদানির কয়লাভিত্তিক বিদ্যুকেন্দ্রটি এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার। ৮০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার দুটি ইউনিট আছে এ কেন্দ্রে। এতে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ২৫ বছর ধরে কিনবে বাংলাদেশ। প্রথম ইউনিট থেকে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয় ২০২৩ সালের এপ্রিলে। দ্বিতীয় ইউনিট থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয় একই বছরের জুনে। ২০১৭ সালে আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি করে বিপিডিবি। আদানির সঙ্গে বিপিডিবির চুক্তি পর্যালোচনায় অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত একটি কমিটি কাজ করছে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ