ঢাকা, রবিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৫
১৪ বৈশাখ ১৪৩২, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৬

ঢাকা, রবিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৫
১৪ বৈশাখ ১৪৩২, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৬

নেত্রকোনায় বজ্রাঘাতে প্রাণ গেল ৩ কৃষকের

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, নেত্রকোনা
আঞ্চলিক প্রতিনিধি, নেত্রকোনা
শেয়ার
নেত্রকোনায় বজ্রাঘাতে প্রাণ গেল ৩ কৃষকের
প্রতীকী ছবি

নেত্রকোনার খালিয়াজুরীতে বজ্রাঘাতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় একজন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার রসুলপুর, কৃষ্ণপুর ও হায়াতপুর গ্রামে এসব ঘটনা ঘটে। 

মৃতরা হলেন উপজেলার রসুলপুর গ্রামের সম্বর মিয়ার ছেলে নিজাম উদ্দিন (৩২), কৃষ্ণপুর গ্রামের রমজান আলীর ছেলে কবীর মিয়া (৪৫) ও হায়াতপুর গ্রামের রাখাল সরকার (৬৬)।

এ ছাড়া এ ঘটনায় উপজেলার রসুলপুর গ্রামের রানু মিয়া (৪৫) নামের একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। হতাহতরা সবাই পেশায় কৃষক।

আরো পড়ুন
এসএসসির দ্বিতীয় দিনে অনুপস্থিত ২৯ হাজার, শতাধিক বহিষ্কার

এসএসসির দ্বিতীয় দিনে অনুপস্থিত ২৯ হাজার, শতাধিক বহিষ্কার

 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. উজ্জ্বল হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘প্রশাসনের পক্ষ থেকে বজ্রাঘাতে হতাহতের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আকাশে মেঘ দেখে বিকেলে বাড়ির সামনে শুকাতে দেওয়া খড় জমা করছিলেন নিজাম উদ্দিন।

এ সময় হঠাৎ বজ্রাঘাতে ঘটনাস্থলে নিজাম উদ্দিনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পাশে থাকা রানু মিয়া গুরুতর আহত হন। পরে রানু মিয়াকে উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এদিকে একই উপজেলার ছায়ার হাওরে বজ্রাঘাতের ঘটনায় কবীর মিয়া নামের এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হন।
তাকে উদ্ধার করে সিলেট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উদ্দেশে পাঠানো হলে পথেই তিনি মারা যান। এ ছাড়া বিকেলে উপজেলার হায়াতপুরে বজ্রাঘাতে মারা যান রাখাল সরকার নামে আরেক কৃষক। তিনি বাড়ির সামনের হাওর থেকে গরু আনার জন্য গিয়েছিলেন। বজ্রাঘাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। 

খালিয়াজুরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মকবুল হোসেন বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

হবিগঞ্জে যৌথবাহিনীর অভিযানে ইয়াবাসহ আটক ৩

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
হবিগঞ্জে যৌথবাহিনীর অভিযানে ইয়াবাসহ আটক ৩
সংগৃহীত ছবি

হবিগঞ্জের নোয়াপাড়া রেলস্টেশন এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে ৬৫ পিস ইয়াবাসহ একই পরিবারের তিন সদস্যকে আটক করেছে যৌথবাহিনী। আটককৃতরা হলেন মাধবপুর উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামের শাহজাহান মিয়া (৪৫), তার স্ত্রী রিয়া বেগম (৩৮) ও তাদের ১৭ বছর বয়সী মেয়ে কুলসুমা।

গতকাল শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাত পৌনে ১০টার দিকে যৌথবাহিনীর একটি টিম অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর রাতেই তাদের শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ডিউটি অফিসার মো. লাল মিয়ার কাছে হস্তান্তর করা হয়।

আজ শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই সাজিদুল ইসলাম সোহাগ বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

মন্তব্য

বান্দরবানে ২১ কি.মি হাফ ম্যারাথনে দৌড়ালেন তিন শতাধিক দৌড়বিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
বান্দরবানে ২১ কি.মি হাফ ম্যারাথনে দৌড়ালেন তিন শতাধিক দৌড়বিদ
ছবি: কালের কণ্ঠ

বান্দরবানে সফলভাবে সম্পন্ন হলো ‘হিল ম্যারাথন ২০২৫’ হাফ ম্যারাথন দৌড় প্রতিযোগিতা। ২১ কিলোমিটার দীর্ঘ এই ম্যারাথনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত তিন শতাধিক নারী-পুরুষ দৌড়বিদ অংশ নেন। দৌড়ের পাশাপাশি অংশগ্রহণকারীদের মাঝে ছিল উৎসাহ ও রোমাঞ্চ।

শুধু দেশীয় প্রতিযোগীরাই নন, পাহাড়ি আঁকাবাঁকা, উঁচু-নিচু পথে দৌড়ে অংশ নিয়ে উচ্ছ্বসিত ছিলেন বিদেশি দৌড়বিদরাও।

তরুণ সমাজকে খেলাধুলার প্রতি আগ্রহী করা ও স্বাস্থ্যসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যেই বান্দরবান পার্বত্য জেলার ক্রীড়া উন্নয়ন ফোরাম এবং হিল রানার্সের উদ্যোগে এই হাফ ম্যারাথনের আয়োজন করা হয়।

দৌড় প্রতিযোগিতা শুরু হয় শনিবার (২৬ এপ্রিল) ভোর সাড়ে ৫টায় বান্দরবানের রাজার মাঠ থেকে। সুয়ালক হয়ে আবার রাজার মাঠেই এসে শেষ হয় এই ২১ কিলোমিটার দীর্ঘ দৌড়।

হিল ম্যারাথন ২০২৫–এর আহ্বায়ক শহিদুর রহমান সোহেল জানান, ‘তরুণদের খেলাধুলার দিকে আকৃষ্ট করতেই প্রতিবছর আমরা এমন আয়োজন করছি।

এর আগেও ২০২৪ সালে বান্দরবানে অনুষ্ঠিত হয়েছিল ‘ভার্টিকাল ড্রিমারস আল্ট্রা ম্যারাথন’। যেখানে অংশ নিয়েছিলেন প্রায় ৪০০ প্রতিযোগী।’

প্রতিযোগিতায় সিলেটের মৌলভীবাজার জেলার আশরাফুল ইসলাম ১ ঘণ্টা ২২ মিনিটে ম্যারাথন সম্পন্ন করে চ্যাম্পিয়ন হন। তিনটি ক্যাটাগরিতে প্রথম ২০ জন বিজয়ীর হাতে তুলে দেওয়া হয় পুরস্কার।

মন্তব্য
নারায়ণগঞ্জ

আলোচিত ৭ খুনের ১১ বছর, আসামিদের দ্রুত ফাঁসি চান স্বজনরা

রাশেদুল ইসলাম রাজু, নারায়ণগঞ্জ থেকে
রাশেদুল ইসলাম রাজু, নারায়ণগঞ্জ থেকে
শেয়ার
আলোচিত ৭ খুনের ১১ বছর, আসামিদের দ্রুত ফাঁসি চান স্বজনরা
সংগৃহীত ছবি

আলোচিত সাত খুনের ১১ বছর পূর্ণ হবে আগামীকাল (২৭ এপ্রিল)। ১১ বছর পার হলেও এর বিচার কার্যক্রম আজও শেষ হয়নি। ৮ বছর আগে নিম্ন আদালত ও ৭ বছর আগে উচ্চ আদালত রায় ঘোষণা করলেও মামলাটি আপিল বিভাগে ঝুলে রয়েছে। রায়ের ধীরগতির কারণে এখনো ভয় ও আতংকে রয়েছেন নিহতের পরিবারের সদস্যরা।

একই সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে সাহায্য সহযোগিতার ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে নানাভাবে আশ্বাস দেওয়া হলেও বাস্তবে তা না হওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন ভুক্তভোগী অধিকাংশ পরিবারগুলো। সরকারের কাছে বর্তমানে তাদের একটাই দাবি, উচ্চ আদালতের রায় যেন অতি দ্রুত কার্যকর করা হয়।

জানা যায়, বহুল আলোচিত নারায়ণগঞ্জের সাত খুন মামলাটির গত এগারো বছরে বিচারের দুটি ধাপ শেষ হয়েছে। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ২২ আগস্ট ৩৫ আসামির মধ্যে ১৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১১ জনকে যাবজ্জীবন এবং ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয় উচ্চ আদালত।

মামলাটি এখন চুড়ান্ত নিষ্পত্তির জন্য অপেক্ষায় রয়েছে। 

আরো পড়ুন
আড়াল ভেঙে ফিরলেন শরিফুল রাজ

আড়াল ভেঙে ফিরলেন শরিফুল রাজ

 

হাইকোর্টে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা ১৫ আসামি হলেন, র‌্যাব-১১-এর সাবেক অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) তারেক সাঈদ, সাবেক দুই কোম্পানি কমান্ডার মেজর (অব.) আরিফ হোসেন, লে. কমান্ডার (চাকরিচ্যুত) এম মাসুদ রানা, নাসিক সাবেক কাউন্সিলর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি নূর হোসেন, ল্যান্সনায়েক বেলাল হোসেন, হাবিলদার মো. এমদাদুল হক, আরওজি-১ মো. আরিফ হোসেন, ল্যান্সনায়েক হিরা মিয়া, সিপাহি আবু তৈয়ব আলী, কনস্টেবল মো. শিহাব উদ্দিন, এসআই পূর্ণেন্দু বালা, সৈনিক আবদুল আলিম, সৈনিক মহিউদ্দিন মুনশি, সৈনিক আল আমিন ও সৈনিক তাজুল ইসলাম।

মৃত্যুদণ্ড পরিবর্তন হয়ে যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত ১১ আসামি হলেন, সৈনিক আসাদুজ্জামান নূর, সার্জেন্ট এনামুল কবির, নূর হোসেনের সহযোগী আলী মোহাম্মদ, মিজানুর রহমান, রহম আলী, আবুল বাশার, মোর্তুজা জামান, সেলিম, সানাউল্লাহ, শাহজাহান ও জামালউদ্দিন। 

এদের মধ্যে পলাতক পাঁচ আসামি হলেন, সৈনিক মহিউদ্দিন মুনশি, সৈনিক আল আমিন, সৈনিক তাজুল ইসলাম, নূর হোসেনের সহকারী সানাউল্লাহ সানা ও ম্যানেজার শাহজাহান।

এ ছাড়া বিচারিক আদালতের রায়ে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ৯ আসামিও র‌্যাবের বরখাস্ত কর্মকর্তা ও সদস্য। 

তাদের মধ্যে কনস্টেবল হাবিবুর রহমানের ১৭ বছর, এএসআই আবুল কালাম আজাদ, এএসআই কামাল হোসেন, কনস্টেবল বাবুল হাসান, করপোরাল মোখলেসুর রহমান, ল্যান্স করপোরাল রুহুল আমিন ও সিপাহি নুরুজ্জামানের ১০ বছর করে এবং এএসআই বজলুর রহমান ও হাবিলদার নাসির উদ্দিন সাত বছর করে কারাদণ্ডাদেশ উচ্চ আদালতে বহাল রয়েছে। তাদের মধ্যে মোখলেসুর রহমান ও কামাল হোসেন পলাতক।

আরো পড়ুন
হত্যাসহ ৫ মামলার আসামি আ. লীগ নেতা শমসের আলী গ্রেপ্তার

হত্যাসহ ৫ মামলার আসামি আ. লীগ নেতা শমসের আলী গ্রেপ্তার

 

এদিকে নিম্ন আদালত থেকে শুরু করে উচ্চ আদালতের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করলেও রায় কার্যকরের ব্যাপারটি বিলম্ব হওয়ায় সংশয় প্রকাশ করেন মামলার বাদী নিহত সাবেক প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি। তিনি জানান, নারায়ণগঞ্জের সাত খুন মামলা সারাদেশের আলোচিত একটি মামলা।

এই ঘটনার নৃশংসতা দেশ বিদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা বারবার সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরেছি। আজ এগার বছর হয়েছে। আজও এই আলোচিত হত্যা মামলার রায় বাস্তবায়নের মুখ দেখছে না।

তিনি আরো বলেন, মামলাটি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ঝুলে আছে। পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে সাত পরিবারের স্বজনেরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে এই হত্যা মামলার বিচারের রায় কার্যকর করার দাবি জানান তিনি।

নিহত জাহাঙ্গীরের স্ত্রী সামসুন নাহার বলেন, জাহাঙ্গীর নিহতের দুই মাস দশ দিন পর তার মেয়ে রওজা মনির জন্ম হয়। মেয়েটি বাবা বলে ডাকতে পারেনি। পিতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন সে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমরা মা-মেয়ে অধীর আগ্রহে বসে আছি, এই নারকীয় হত্যা মামলায় রায় নিজ চোখে দেখার জন্য।

নিহত তাজুল ইসলামের বাবা আবুল খায়ের বলেন, পরিবারের একমাত্র ব্যক্তি ছিল তাজুল ইসলাম। যার আয়ে আমরা সংসারের সবাই চলতাম। আমার আদরের ধনকে যারা হত্যা করেছে তাদের ফাঁসি দেখতে চাই। বর্তমান সরকারের কাছে দ্রুত এটির নিষ্পত্তি করে রায় কার্যকর করার জোর দাবি জানাই।

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান জানান, বহুল আলোচিত নারায়ণগঞ্জের সাত খুন মামলার রায়টি চূড়ান্ত নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। গত ১০ বছরে এ মামলার বিচারের দুটি ধাপ শেষ হয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে আপিলসহ ডেথ রেফারেন্স (আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) আবেদন নিষ্পত্তি না হওয়ায় হতাশ প্রকাশ করেন এই আইনজীবি। রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি তার। 

নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ জাকির জানান, এই মামলা নিয়ে বর্তমান অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছি। এই মামলা যেন শিঘ্রই নিষ্পত্তি হয় সেজন্য তিনি নিজে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। আইন মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের বারবার আশ্বস্ত করে বলা হয়েছে, এই মামলার আসামিরা কোনোভাবেই কোনো সুবিধা নিতে পারবে না। বরং বাদীপক্ষ নিম্ন আদালতে, সুপ্রীম কোর্টে যেমনিভাবে ন্যায়বিচার পেয়েছে ঠিক তেমনিভাবে লিভ টু আপিল বিভাগে আসামিদের চূড়ান্ত শাস্তি বহাল থাকার বিষয়ে রাষ্ট্র পরিপূর্ণভাবে কাজ করে যাচ্ছে। 

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ আদালতে মামলায় হাজিরা দিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পশ্চিমপাড়া এলাকার নিজ বাসভবনে ফেরার পথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের খান সাহেব ওসমানী স্টেডিয়ামের সামনে থেকে অপহরণ হন সিটি করপোরেশনের তৎকালীন প্যানেল মেয়র ও ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার, নজরুলের বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম লিটন, জাহাঙ্গীর আলম ও চন্দন সরকারের গাড়িচালক মো. ইব্রাহীম। 

এর ৩ দিন পর ৩০ এপ্রিল ৬ জন এবং ১ মে একজনের লাশ সিদ্ধিরগঞ্জের শীতলক্ষ্যায় ভেসে ওঠে। এ ঘটনায় নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ও চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় দুটি মামলা করেন। মামলায় ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি রায় দেন বিচারিক আদালত। 

রায়ে ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন ২৮ আসামি। ২০১৮ সালের ২২ আগস্ট বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া ১১ আসামিকে যাবজ্জীবন এবং বাকি ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন হাইকোর্ট।

মন্তব্য

পরীক্ষায় না দেখানোয় মাথার খুলি ভাঙল সহপাঠীরা, ৮ দিন পর মৃত্যু

    দুই থানার ঠেলাঠেলিতে হয়নি মামলা
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
শেয়ার
পরীক্ষায় না দেখানোয় মাথার খুলি ভাঙল সহপাঠীরা, ৮ দিন পর মৃত্যু
ফাইল ছবি

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার এনায়েতপুরে এসএসসি পরীক্ষা চলাকালে খাতা দেখতে না দেওয়ায় সহপাঠীদের মারধরে আহত শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। ৮ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গতকাল শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) ভোরে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এর আগে ১৮ এপ্রিল তাকে মারধর করে তারই সহপাঠীরা।

নিহত ইমন হোসেন (১৬) শাহজাদপুর উপজেলার খুকনী ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের ইমদাদুল মোল্লার ছেলে।

খুকনী উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিলেন তিনি। এদিকে ঘটনার ৮ দিন পার হলেও দুই থানার ঠেলাঠেলিতে শনিবার পর্যন্ত মামলা করতে পারেননি নিহতের পরিবার। এতে চরম ক্ষুব্ধ পরিবার ও স্থানীয়রা। 

নিহত ইমনের বাবা ইমদাদুল মোল্লা বলেন, গত ১৭ এপ্রিল এনায়েতপুর ইসলামী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা চলাকালে কয়েকজন সহপাঠী ইমনের খাতা দেখে পরীক্ষা দিতে চাইলে ইমন তাতে রাজী হয়নি।

এর জেরে পরদিন শুক্রবার বিকালে ইমনকে বেলকুচি উপজেলার দৌলতপুর নতুন পাড়ায় ডেকে নিয়ে মারধর করে তারা। এতে ইমনের বাম পাশের মাথার খুলি ভেঙ্গে যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে গত বুধবার তাকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।
শুক্রবার ভোরে আবারো তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইমন মারা যায়।

ইমদাদুল মোল্লা আরো  বলেন, আমার ছেলে নম্র-ভদ্র এবং মেধাবী ছিল। পরীক্ষার খাতা দেখে নকল করতে না দেওয়ায় তাকে এভাবে হত্যা করা হবে আমি কখনো ভাবিনি। থানার সীমানা সংক্রান্ত জটিলতা দেখিয়ে পুলিশ মামলা না নেওয়ার ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

একইসঙ্গে ছেলে হত্যার বিচার দাবি করেন। 

এ বিষয়ে স্থানীয় খুকনী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সদস্য তোতা মিয়া বলেন, মারধরের ঘটনার পর থেকে বেশ কয়েকবার স্বজনরা এনায়েতপুর ও বেলকুচি থানায় মামলা করতে গেলেও দুইটি থানার সীমানা সংক্রান্ত জটিলতা দেখিয়ে পুলিশ মামলা নেয়নি। এনায়েতপুর থানা বলছে, বেলকুচিতে মামলা হবে; আর বেলকুচি থানা থেকে বলছে মামলা হবে এনায়েতপুরে। ফলে নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি। তবে শুক্রবার সন্ধ্যায় মরদেহের সুরতহাল তৈরির সময় এনায়েতপুর থানা পুলিশ বলেছে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে পরামর্শ করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে এনায়েতপুর থানার ওসি রওশন ইয়াজদানি শনিবার (২৬ এপ্রিল) বেলা ১২টার দিকে বলেন, শিক্ষার্থী ইমন নিহতের ঘটনায় এনায়েতপুর থানায় জিডি করা হয়েছে। লাশ উদ্ধারের পর শুক্রবার রাতে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছিল। আজ শনিবার ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থী ইমন বেলকুচি থানার অন্তর্ভুক্ত দৌলতপুর নতুনপাড়া এলাকায় মারধরের শিকার হয়েছেন। কিন্তু তার বাড়ি এনায়েতপুর থানার অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় ঘটনার পর স্বজনদের বেলকুচি থানায় মামলা করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। নিহতের স্বজনরা হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে এখনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।  

অন্যদিকে বেলকুচি থানার ওসি জাকেরিয়া ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থী ইমন আহত হওয়ার পর স্বজনরা থানায় মামলা করতে এসেছিল। কিন্তু তাদের বাড়ি এনায়েতপুর থানার অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় তাদের এনায়েতপুর থানায় মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে অভিযোগ পেলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার ফারুক হোসেন শনিবার দুপুরে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ