বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন বলেছেন, ‘কেউ যদি বলার চেষ্টা করে আওয়ামী লীগের বিষয়ে বিএনপির অবস্থান কী? আমরা সেইটা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, যে খুনি স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট হাসিনার নির্দেশে আট বছরের শিশুকে হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে মেরে ফেলাসহ অসংখ্য মানুষকে হত্যা করা হয়েছে সেই ফ্যাসিস্ট হাসিনার বাংলাদেশ কোনো দিনও রাজনীতি করার অধিকার থাকতে পারে না। আমরা এটা কোনো দিনও হতে দেব না। তাদের যদি পুনর্বাসনের চেষ্টা করা হয় তাহলে আমরা সর্বশক্তি দিয়ে রুখে দেব।’
শুক্রবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যায় ভোলা শহরের মহাজনপট্টি জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে সদর উপজেলা বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ইশরাক হোসেন বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জোড়াল দাবি থাকবে, আওয়ামী লীগের বিচারের যে প্রক্রিয়া সেটিকে ত্বরান্বিত করা হোক এবং অবিলম্বে তাদের নিবন্ধন বাতিলের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’
সংস্কারের নাম করে নির্বাচন বিলম্বিত করা হচ্ছে দাবি করে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘আমরা জানি সরকারের ভিতরে এবং বাইরে থেকে একটি কুচক্রী মহল বিএনপির সুনাম ও জনসমর্থন কমাতে নির্বাচন বিলম্বিত করার ষড়যন্ত্র লিপ্ত রয়েছে। সেই কারণেই আমরা বারবার নির্বাচনের কথা বলি। আমরা যখন নির্বাচনের কথা বলি তার মানে এই না আমরা সংস্কার চাই না।
হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার দেড় বছর আগেই বিএনপি সংস্কারের বিষয়টি উপলব্ধি করতে পেরে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সংস্কারকে দীর্ঘস্থায়ী করতে হলে একটি সংসদ নির্বাচন ছাড়া সম্ভব না। সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত সংসদ ছাড়া এটি স্থায়িত্ব পাবে না। বর্তমানে অন্যান্য রাজনৈতিক দল জনগণের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে যে, বিএনপি সংস্কার চায় না।
আমরাই তো ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে মাসের পর মাস প্রগ্রাম করেছি। তাহলে সংস্কার আমরা চাই না এ কথা কে বলল। আমরা চাচ্ছি সংস্কার এমনভাবে করা হোক যেটা দীর্ঘস্থায়ী হয়। সংস্কারের নামে নির্বাচনকে পিছিয়ে তৃতীয় পক্ষ যাতে ঢুকে যেতে না পারে। তাহলে আরো ১০-১৫ বছরের জন্য বাংলাদেশ পিছিয়ে যাবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও সে ভারতে বসে চক্রান্ত করছে। লুট করে নিয়ে যাওয়া হাজার হাজার কোটি টাকা তারা বিনিয়োগ করেছে কিভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করা যায় এবং বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ করে ফেলা যায়। তাই কোনো ভাবেই যাতে নির্বাচন আগামী ডিসেম্বরের একদিন পর না যায় সেই চক্রান্তকে আমাদের রুখে দিতে হবে।’
সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আসিফ আলতাফের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব মো. হেলাল উদ্দিনের সঞ্চালনায় ইফতার মাহফিলে প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম নবী আলমগীর। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. রাইসুল আলম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শফিউর রহমান কিরণ, যুগ্ম আহ্বায়ক হারুন অর রশিদ ট্রুম্যান, মো. ফজলুর রহমান বাচ্চু মোল্লা, মো. হুমায়ুন কবির সোপান ও মো. এনামুল হক।