পুঁজিবাজারে দুই দিনে ‘নেই’ ১১ হাজার কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
পুঁজিবাজারে দুই দিনে ‘নেই’ ১১ হাজার কোটি টাকা
পুঁজিবাজারে অব্যাহত দরপতনের প্রতিবাদে গতকাল মতিঝিলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সামনে মানববন্ধন করে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদ। ছবি : কালের কণ্ঠ

অব্যাহত পতন থেকে বের হতে পারছে না পুঁজিবাজার। সপ্তাহের প্রথম দুই কার্যদিবসেই বাজার থেকে উধাও হয়ে গেছে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকার মূলধন। এ নিয়ে গত দুই মাসে বাজার ৪২ হাজার ৫২৬ কোটি ৭২ লাখ টাকার মূলধন হারিয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার এক দিনেই ডিএসই পাঁচ হাজার ২৪৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকার মূলধন হারিয়েছে। আগের দিন বাজার মূলধন কমেছিল পাঁচ হাজার ৪৮৫ কোটি ২৯ লাখ টাকা।

টানা দর পতনে বিনিয়োগকারী ও মধ্যবর্তী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে উদ্বেগ, আতঙ্ক ও হতাশা বাড়ছে। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১০ সালের ধস ও পরবর্তী ১৪ বছরের নিম্নমুখী ধারায় পুঁজিবাজারের সব শ্রেণির বিনিয়োগকারী ও প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত।

এমন অবস্থায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের অবসান ঘটলে বিনিয়োগকারীরা নতুন আশায় বুক বেঁধেছিলেন। 

তাঁরা আশা করেছিলেন, অনেক রক্তের বিনিময়ে পাওয়া নতুন পরিবেশে পুঁজিবাজার তার স্বাভাবিক গতি ফিরে পাবে। কিন্তু ঘটছে তার উল্টো।

বাজার পরিস্থিতি

রবিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দরপতনে সূচক কমেছে ১৪৯ পয়েন্ট, যা ছিল গত চার বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

গতকাল সোমবার পতন হয়েছে আরো প্রায় ৬৭ পয়েন্ট। এ নিয়ে ১২ আগস্ট থেকে ডিএসইর সূচক লাপাত্তা হয়ে গেল ১১৪৭ পয়েন্ট। 

গতকালের পতনের পর ডিএসইর প্রধান সূচক নেমে গেছে ৪৮৯৮ পয়েন্টে, যা গত প্রায় চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে ২০২০ সালের ৩০ অক্টোবর ডিএসইর প্রধান সূচক ছিল ৪৮৬৬ পয়েন্ট। অর্থাত্ গত তিন বছর ১১ মাসের মধ্যে বর্তমানে  শেয়ারবাজারের সূচক সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে।

বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভ

অব্যাহত দর পতনের প্রতিবাদে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের পদত্যাগ দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের নেতৃত্বে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।

সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পুরাতন ভবনের সামনে সংগঠনটির নেতারাসহ সাধারণ বিনিয়োগকারীরা এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছেন।

বিক্ষোভকালে বিনিয়োগকারীরা বলেন, ‘২০১০ সালেও আমরা এতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, যা গত আড়াই মাসে হয়েছি। ২০১০ সালে শেয়ারের দাম কমেছিল। কিন্তু এখন পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে শেয়ারের দাম ফেসভ্যালু ১০ টাকার নিচে নেমে এসেছে। এতে আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি।’

তাঁরা বলেন, ‘পরিবার-পরিজন নিয়ে আমরা ঠিকমতো জীবন যাপন করতে পারছি না। বর্তমান বিএসইসির কমিশনের প্রতি বিনিয়োগকারীদের কোনো আস্থা নেই। তাই আমরা দ্রুত বিএসইসি চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করছি।’

বিনিয়োগকারীরা আরো বলেন, ‘গত দুই মাসের টানা দরপতনের ফলে আমাদের বিনিয়োগকৃত অর্থের ৭০ শতাংশ কমে গেছে। আমরা সবাই নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি, আমরা এখানে ভিক্ষা করতে আসিনি। এখন পুঁজি হারিয়ে আমরা নিঃস্ব।’

টানা পতনের কারণ খুঁজতে তদন্ত কমিটি

পুঁজিবাজারে টানা দরপতনের কারণ অনুসন্ধানে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড কমিশন (বিএসইসি)।

এই কমিটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থার মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম।

তিনি বলেন, ‘বাজার পতনের নেপথ্য কারণ বের করে প্রতিবেদন দেবে চার সদস্যের কমিটি।’

রবিবার রাতে গঠিত এই কমিটির সদস্যরা হলেন বিএসইসির পরিচালক মোহাম্মদ শামছুর রহমান, উপপরিচালক মোহাম্মদ ওরাইছুল হাসান রিফাত, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মাহফুজুর রহমান ও সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) সহকারী মহাব্যবস্থাপক কাজী মিনহাজ উদ্দিন।

সম্প্রতি টানা পতনের কারণ অনুসন্ধান, বাজার নিয়ে গুজব ছড়ানো ব্যক্তিদের শনাক্ত করা, বাজার পতনে অনুঘটক হিসেবে কী কাজ করছে তা শনাক্ত করা এবং বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে কমিশনের করণীয় সুপারিশ আকারে জানাতে হবে এই কমিটিকে।

বাজার পরিস্থিতি ও পতন ঠেকাতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার নেওয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘বর্তমানে বাজারে মূল্য আয় অনুপাত সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। এ অবস্থায় বাজারে প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তিশ্রেণির বিনিয়োগ বাড়বে বলে আমরা আশা করছি।’

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

শুল্ক বাড়ানোর প্রভাব, ফলের দাম কেজিতে ৫০-৯০ টাকা বাড়তি

শিহাবুল ইসলাম
শিহাবুল ইসলাম
শেয়ার
শুল্ক বাড়ানোর প্রভাব, ফলের দাম কেজিতে ৫০-৯০ টাকা বাড়তি
সংগৃহীত ছবি

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর চলতি অর্থবছর বিভিন্ন নিত্যপণ্যের সঙ্গে আমদানি করা ফলের দামে দ্বিতীয় দফায় সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়েছে। এর প্রভাবে পাঁচটি ফলে প্রতি কেজিতে দাম ৫০ থেকে ৯০ টাকা বেড়েছে। এতে সাধারণ মানুষের ফল কিনে খাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলের নিয়মিত ক্রেতা অনেকে ফল কেনা কমিয়ে দিয়েছেন।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও ভাটারা এলাকার খুচরা বাজার ঘুরে এমন তথ্য জানা গেছে।

আরো পড়ুন
নোয়াখালীতে চুলার আগুনে দগ্ধ স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু

নোয়াখালীতে চুলার আগুনে দগ্ধ স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু

 

ব্যবসায়ীরা জানান, শুল্ক বাড়ানোর পর প্রতি কেজি কালো আঙুরের দাম বেড়েছে প্রায় ৫০ টাকা। একইভাবে মানভেদে আপেলের দাম কেজি প্রতি বেড়েছে ৪০ থেকে ৯০ টাকা। কমলার দাম বেড়েছে ৫০ থেকে ৭০ টাকা, নাশপাতি ও আনারের দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) গত ৯ জানুয়ারি আমদানি করা ফলের ওপর সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করেছে।

বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, কালো আঙুর ৪০০ টাকা থেকে বেড়ে ৪৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। সাদা আঙুর মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি। আফ্রিকার আপেল মানভেদে ৩০০ থেকে ৩৮০ টাকা কেজি।

আরো পড়ুন
গভীর রাতে আগুন জ্বালিয়ে হরতালের ডাক বিএনপির

গভীর রাতে আগুন জ্বালিয়ে হরতালের ডাক বিএনপির

 

আগে ছিল ২৬০ থেকে ২৯০ টাকা কেজি। সবুজ আপেল ছিল ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি, এখন ৩৫০ থেকে ৩৭০ টাকা। কমলা বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি, আগে ছিল ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। নাশপাতি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা কেজি, আগে ছিল ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা। ছোট আনার ৩৫০ টাকা কেজি, মাঝারিটা ৪৫০ টাকা।

সবচেয়ে বড় আনার ৬০০ টাকা কেজি।

কারওয়ান বাজারের ফল বিক্রেতা মো. আমিনুল হক বলেন, ‘দাম শুনলেই ক্রেতা চলে যায়। বিক্রি অনেক কমে গেছে। কেউ কেউ দোকান বন্ধ করে দিচ্ছেন। ক্রেতা না থাকলে কী করা যাবে? আমার এখানে গতকাল একটা ছেলে কাজ চেয়েছে। আগে সে ফল বিক্রি করত। লাভ হয় না বলে ব্যবসা গুটিয়েছে।’

একই বাজারে ফল কিনতে আসেন পশ্চিম তেজতুরি বাজার এলাকার মো. রফিকুল ইসলাম। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এই চাকরিজীবী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এখানে সরকারকে আমাদের সাহায্য করতে হবে। ফলের ওপর যে শুল্ক বাড়ানো হয়েছে, এতে আমরা বেশ চাপে আছি। আগের মতো আর কিনতে পারছি না ফল। আগে মাসে পাঁচ কেজি ফল কিনতাম, এখন দেড়-দুই কেজি কম কিনছি।’

আরো পড়ুন
খারাপ হচ্ছে বেশির ভাগ সূচক, ব্যবসা-বিনিয়োগ নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছেই

খারাপ হচ্ছে বেশির ভাগ সূচক, ব্যবসা-বিনিয়োগ নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছেই

 

জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে আপেল, কমলা, আঙুর, নাশপাতি ও আনারের ওপর মোট শুল্ককর ছিল ৮৯.৩২ শতাংশ। পরের বছর অর্থাৎ ২০২২-২৩ অর্থবছরে শুল্ককর বাড়ানো হয়। তখন মোট শুল্ক দাঁড়ায় ১১৩.৮০ শতাংশ, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাড়িয়ে তা করা হয় ১১৮.৮০ শতাংশ। চলতি অর্থবছর দ্বিতীয় দফায় আবার বাড়ানোর ফলে মোট শুল্ককর হয়েছে ১৩৬.২০ শতাংশ।

এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইম্পোর্টার অ্যাসোসিয়েশন (বিএফএফআইএ) সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। হুমকি দিয়ে সংগঠনটি বলেছে, ফলের ওপর বর্ধিত সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার না করা হলে ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশের সব স্থল ও নৌবন্দরে আমদানিকরা ফল খালাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখবেন।

সংগঠনটির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম ওই সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ফলে শুল্ক বাড়ানো কোনোভাবেই কাম্য নয়। বর্তমানে আমদানিকারক, ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের কাছে বর্ধিত শুল্কের কারণে দাম অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। ফলের ওপর বর্ধিত শুল্ক আরোপ হটকারী সিদ্ধান্ত ছাড়া আর কিছুই না, যা বাতিল করে দেওয়া আবশ্যক। অন্যথায় নিম্ন ও মধ্যবিত্ত ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে ফল।

আরো পড়ুন
গরুচুরির অভিযোগ, স্বেচ্ছাসেবক দলের দুই নেতাকে গণপিটুনি

গরুচুরির অভিযোগ, স্বেচ্ছাসেবক দলের দুই নেতাকে গণপিটুনি

 

তিনি বলেন, আগে প্রতি ট্রাক ফল এক দিনে বিক্রি করা সম্ভব হলেও এখন তিন-চার দিনেও সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য পোর্ট থেকে পণ্য খালাস করা সম্ভব হচ্ছে না। অন্যদিকে শিপিং ও পোর্টে জরিমানা দিতে হচ্ছে। উচ্চ শুল্কের কারণে ব্যবসায়ীদের ব্যবসা ত্যাগ করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

খারাপ হচ্ছে বেশির ভাগ সূচক, ব্যবসা-বিনিয়োগ নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছেই

শেয়ার
খারাপ হচ্ছে বেশির ভাগ সূচক, ব্যবসা-বিনিয়োগ নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছেই
সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশে অর্থনীতির বেশির ভাগ সূচক খারাপ হচ্ছে। দেশের ব্যবসা ও বিনিয়োগ পরিস্থিতি নিয়ে বহুমুখী সংকট সামনে আনছেন ব্যবসায়ীরা। অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও একটা নেতিবাচক ধারা দেখা যাচ্ছে। দেশের অর্থনীতির জন্য এগুলোকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা।

আরো পড়ুন

গরুচুরির অভিযোগ, স্বেচ্ছাসেবক দলের দুই নেতাকে গণপিটুনি

গরুচুরির অভিযোগ, স্বেচ্ছাসেবক দলের দুই নেতাকে গণপিটুনি

 

৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর একদিকে যেমন বেশ কিছু শিল্প-কারখানা বন্ধ হয়েছে, আবার সম্ভাবনাময় অনেক শিল্প-কারখানাও অর্থাভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। আবার অর্থায়ন সংকট, ঋণ সহায়তা, সুদহার বৃদ্ধির কারণে ব্যবসায়ীরা উদ্বেগ জানাচ্ছেন নিয়মিত।

দেশের দক্ষিণাঞ্চলে চামড়া ও পাটশিল্পের উদ্যোক্তা মো. ফিরোজ আহমেদ। পাটকলের মুনাফা এবং ব্যাংক ঋণে ভর করে খুলনার ফুলতলায় দেশের বৃহত্তম চামড়া প্রক্রিয়া কারখানা প্রতিষ্ঠা করেছেন।

ফুলতলায় সুপার জুট মিলস ও সুপারেক্স লেদার নামে দুটি প্রতিষ্ঠান তাঁর গড়ে তোলা।

ফিরোজ আহমেদ জানান, অতীত ও বর্তমান সংকট মিলিয়ে রপ্তানিমুখী দুটি শিল্প-কারখানাই এখন রুগ্ণ। পাটকলে সক্ষমতার ২৫ শতাংশ এবং চামড়া কারখানায় ১০ ভাগের কম সক্ষমতা কাজে লাগাতে পারছেন। তাঁর দুই কারখানার ৮০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ জমেছে।

দৈনিক সুদ ৩০ লাখ টাকা। চামড়া ও পাটকল মিলে আড়াই হাজারের বেশি শ্রমিকের কাজ নেই।

আরো পড়ুন

চির গৌরবের ভাষার মাস শুরু আজ

চির গৌরবের ভাষার মাস শুরু আজ

 

তাঁর দাবি, ‘আমাদের দুটি ফ্যাক্টরিতে দৈনিক মাত্র পাঁচ-সাত লাখ টাকা ইনকাম হয়। এখন এত বড় ইন্টারেস্ট কী করে দেব। এই জায়গাগুলো এই সরকারকে দেখতে হবে।

এশিয়ার মধ্যে বড় ফ্যাক্টরি তৈরি করেছি, যদি ব্যাংক এগুলো না দেখে আমার মনে হয় এই বাংলাদেশে নতুন করে কোনো লোক এ ধরনের রিস্ক নিয়ে নতুন করে আর ব্যবসা করবে না।’

ফিরোজ আহমেদের মতো বহু ব্যবসায়ী ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান শিল্প-কারখানা চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন বলে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো জানাচ্ছে। বলা হচ্ছে, অতীত সংকট আর বর্তমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতি মিলিয়ে বাংলাদেশে ব্যবসা বিনিয়োগে যে স্থবিরতা সৃষ্টি হয়েছে তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে সর্বস্তরের ব্যবসায়ীদের মধ্যে।

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের অবস্থা ভীষণ খারাপ। তাঁদের লোনের টাকা শোধ করতে বেগ পেতে হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা নিজেদের ব্যয় নিয়ে কষ্টের মধ্যে আছেন। বিদেশি ক্রেতারা আরো স্বল্পমূল্যে পণ্য ক্রয় করতে চাচ্ছেন। ভারতীয় কম্পিটিশন আসছে গার্মেন্টস সেক্টরে। সো অভারঅল ব্যবসায়ীরা কিন্তু বিভিন্নমুখী চাপের সম্মুখীন হচ্ছেন, এটা কিন্তু কেউ ডিনাই করতে পারবে না।’

তিনি বলেন, এখন বিনিয়োগে একটা ভাটা তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে গত অর্থবছরের তুলনায় ৭১ শতাংশ কম।

আরো পড়ুন

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় ছাত্রদল কর্মীর শাস্তি মওকুফ

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় ছাত্রদল কর্মীর শাস্তি মওকুফ

 

গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বিবিসিকে বলেন, ঘুষ-দুর্নীতি এগুলো কিন্তু কমেনি। ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ জিডিপির ২৩.৫ শতাংশ এবং বিদেশি বিনিয়োগ জিডিপির ১ শতাংশের নিচে ছিল। সেটা কমে কমে ০.৩-এর কাছাকাছি রয়েছে। একটা বড় সময় ধরে বাংলাদেশে বিনিয়োগে স্থবিরতা দেখা যাচ্ছে।

ফাহমিদা খাতুন বলেন, “ব্যবসায়ীরা বলতে পারছেন না দুর্নীতির ‘সরাসরি কারণ’। যাঁরা ব্যবসা করেন, তাঁরা সেনসিটিভিটির মধ্যে থাকেন, তাঁরা ভয়ের মধ্যে থাকেন যে কী বলতে কী বলে ফেলি।’

ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এবং বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আবদুল আউয়াল মিন্টু বিবিসিকে বলেন, যে পরিবেশ-পরিস্থিতিতে একটা দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটে, বিনিয়োগ বৃদ্ধি পায় এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়, সেটা অনুপস্থিত।

তাঁর ভাষায়, ‘দেশি বিনিয়োগকারীকে যখন দেখবে যে এরা বিনিয়োগ করছে, তখন আস্তে আস্তে আসবে। না হয় বিদেশি যেগুলো আছে, এগুলো কেমনে চলে যাবে, সেই চিন্তা করবে। আমি যদি আমার দেশে বিনিয়োগ না করি, তো বিদেশিরা কি মরতে আসবে এখানে? ও তো আমাদের থেকে বেশি চালাক। সে পরিসংখ্যান আমাদের থেকে বেশি বোঝে। সে দেশের রাজনীতির অবস্থা বেশি দেখছে। আমরা তো এখানে ভেতরে বসে অনেক কিছু বুঝি না, কিন্তু তারা বেশি বোঝে।’

ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা বলছেন বিনিয়োগ ও অর্থনীতিতে গতি সঞ্চারে প্রয়োজন দুর্নীতিমুক্ত স্থিতিশীল পরিবেশ, আইন-শৃঙ্খলার উন্নতি এবং আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা।

আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘বিনিয়োগের জন্য যে পরিবেশ দরকার সেই পরিবেশ সৃষ্টি করুন। সেটা হলো আর্থিক খাতকে ঠিক করে বিনিয়োগের জন্য টাকা সাপ্লাই বাড়ান। দুই নম্বর হলো, সামাজিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনুন। তিন নম্বর হলো রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসুক।’

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, চলমান সংকট সমাধানে সময় লাগবে। কর্মসংস্থান, মূল্যস্ফীতি, প্রবৃদ্ধিসহ বিভিন্ন সূচক খারাপের দিকে থাকায় ঢালাওভাবে কারখানা বন্ধ এবং শ্রমিক ছাঁটাই যাতে না হয় সেদিকে লক্ষ রেখে পদক্ষেপ নিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকার দেশের ব্যাংকব্যবস্থা এবং আর্থিক খাতে নানা সংস্কার শুরু করেছে। বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যেও পদক্ষেপ নিচ্ছে। ভবিষ্যতে ব্যবসা সংকট উত্তরণে কী ধরনের পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন সেটি নিয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বিবিসিকে বলেন, বিনিয়োগ বাড়াতে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। তাঁর ভাষায়, ‘যখন দেশি বিনিয়োগকারীরা উদ্বিগ্ন থাকেন, তখন বিদেশিরাও আসেন না।’ 

সূত্র : বিবিসি বাংলা

মন্তব্য

মুখ থুবড়ে পড়েছে শিল্প খাত

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
মুখ থুবড়ে পড়েছে শিল্প খাত
সংগৃহীত ছবি

রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার পাশাপাশি গ্যাস, বিদ্যুৎ, মূলধন ও ডলারসংকট, কাঁচামালের অপর্যাপ্ততা, শ্রমসংকট, পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়াসহ নানা কারণে মুখ থুবড়ে পড়েছে দেশের শিল্প খাত। বড় থেকে ছোট সব শিল্পই কমবেশি সংকটে পড়েছে। পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, বছরভিত্তিক হিসেবে গত অক্টোবরে দেশের গুরুত্বপূর্ণ শিল্পগুলোর মধ্যে সিমেন্ট, লাইম ও প্লাস্টার, রড ও স্টিল, ওষুধ, ওয়েভিং টেক্সটাইল, নিট ফেব্রিক্স, জুট টেক্সটাইল, কাগজ, সফট ড্রিংকস, চা ও কফির উৎপাদন কমে গেছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে শিল্পোদ্যোক্তাদের মধ্যে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে তার প্রভাব পড়ছে শিল্পের উৎপাদনে।

শ্রম অসন্তোষসহ মূলধন সংকটে তৈরি পোশাকসহ বস্ত্র খাতের শিল্পগুলো সংকটে পড়েছে। রড, সিমেন্টের শিল্পগুলো সংকটে আছে ব্যাপকভাবে ভোক্তা চাহিদা কমে যাওয়ায়। সংকট মোকাবিলায় উদ্যোক্তা-ব্যবসায়ীরা সরকারের উপদেষ্টা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংস্থা প্রধানের সঙ্গে আলোচনা করছেন। কিন্তু সমাধান মিলছে না।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত বছর আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পরও বড় থেকে ছোট ও মাঝারি শিল্পের উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব বিদ্যমান রয়েছে। গত সেপ্টেম্বরের তুলনায় অক্টোবরে উৎপাদন কমেছে এমন শিল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে- বস্ত্র খাতের গার্মেন্ট, নিটওয়্যার, নিট ফেব্রিক্স, বিল্ডিং, শিপস অ্যান্ড ফ্লোটিং স্ট্রাকচার, কাগজ, সার, পেট্রোলিয়াম পণ্য ও ফলজ প্রক্রিয়াজাত পণ্য।

বস্ত্র খাতের সংকট নিয়ে বিকেএমইএ’র প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম বলেন, আমাদের মূল চ্যালেঞ্জ জ্বালানি খাত, আইনশৃঙ্খলার অবনতি, ব্যাংকিং খাত, কাস্টমস সংক্রান্ত শর্ত; এসব সমস্যা সমাধান না হলে নিশ্চিতভাবে শিল্পের উৎপাদন হ্রাস পাবে, যা রপ্তানি আয়েও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

শুধু মাসভিত্তিক হিসেবে নয়, বার্ষিক হিসাবেও গুরুত্বপূর্ণ শিল্পগুলোর উৎপাদন কমার তথ্য পাওয়া গেছে।

বিবিএস প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের অক্টোবরের তুলনায় চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের অক্টোবরে সফট ড্রিংকসের উৎপাদন কমেছে ৯ দশমিক ১৩ শতাংশ, ওয়েভিং টেক্সটাইল শিল্পে উৎপাদন কমেছে ২৯ দশমিক ৩১ শতাংশ, জুট টেক্সটাইলে উৎপাদন কমেছে ৩৫ দশমিক ৫০ শতাংশ, ওষুধশিল্পে উৎপাদন কমেছে ১০ দশমিক ৮১ শতাংশ, সিমেন্ট, লাইম, প্লাস্টার শিল্পে ৫ দশমিক ৯৪ শতাংশ, চা এবং কফি প্রক্রিয়াজাতকরণ কমেছে ১৬ দশমিক ২৮ শতাংশ, ফলজাত খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে উৎপাদন কমেছে ১৮ দশমিক ০৯ শতাংশ এবং কাগজ উৎপাদন কমেছে দশমিক ০২ শতাংশ। একইভাবে ছোট ও মাঝারি শিল্পের মধ্যে ফিনিশড টেক্সটাইল ৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ, হ্যান্ডলুম টেক্সটাইল ৫ দশমিক ৫১ শতাংশ, নিট ফেব্রিক্স উৎপাদন কমেছে ১ দশমিক ৩৮ শতাংশ এবং আয়রন ও স্টিল শিল্পে উৎপাদন কমেছে ৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, বস্ত্রশিল্পের পর সবচেয়ে বেশি সংকটে পড়েছে রড-সিমেন্ট শিল্প। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ, আন্দোলনের কারণে নির্মাণ শিল্পে স্থবিরতা নেমে আসে। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর প্রায় ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও পরিস্থিতির বদল ঘটেনি।

সরকারি প্রকল্পের কাজ বন্ধ রয়েছে। অপরদিকে মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের হাতে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায় নির্মাণ শিল্পে স্থবিরতা নেমে এসেছে, যা সিমেন্ট, লাইম ও প্লাস্টার এবং রড ও স্টিল শিল্পের উৎপাদনে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট আলমগীর কবির সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, রাজনৈতিকভাবে দেশে যে পরিবর্তন ঘটেছে, তাতে বেসরকারি খাত খুব বেশি প্রয়োজন না পড়লে এখন নির্মাণকাজ করছে না। যারা শুরু করেছিলেন নানা অনিশ্চয়তার কারণে তারাও কাজ বন্ধ রেখেছেন। অপরদিকে মেগা প্রকল্পসহ বেশির ভাগ সরকারি প্রকল্প বন্ধ রয়েছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জনপ্রতিনিধি ও ঠিকাদারদের অনেকে পালিয়ে যাওয়ায় মফস্বল ও গ্রামীণ এলাকায় নির্মাণকাজও বন্ধ রয়েছে। এর ফলে রড-সিমেন্টের চাহিদা ব্যাপকভাবে কমে গেছে। তাদের হিসাবে সিমেন্ট শিল্পে প্রায় ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত চাহিদা কমে গেছে বলে জানান অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট।

সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

ডিজেল-কেরোসিন, পেট্রল-অকটেনের দাম বাড়ল

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
ডিজেল-কেরোসিন, পেট্রল-অকটেনের দাম বাড়ল
সংগৃহীত ছবি

ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রল ও অকটেনের দাম প্রতি লিটারে এক টাকা বাড়িয়েছে সরকার। জ্বালানি তেলের নতুন এ দাম ১ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।

বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ গত মার্চ থেকে শুরু করেছে সরকার। সে হিসেবে প্রতি মাসে নতুন দাম ঘোষণা করা হচ্ছে।

জ্বালানি তেলের নতুন দাম নির্ধারণ করে শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) রাতে প্রজ্ঞাপন জারি করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।

এতে প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ১০৪ টাকা থেকে বেড়ে ১০৫ টাকা হয়েছে। অকটেন প্রতি লিটার ১২৫ টাকা থেকে বেড়ে ১২৬ টাকা এবং পেট্রল ১২১ টাকা থেকে বেড়ে ১২২ টাকা হয়েছে।

বর্তমানে জ্বালানি তেলের দর নির্ধারণ ছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মিল রেখে প্রতি মাসে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম নির্ধারণ করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।

অনেকটাই একই প্রক্রিয়ায় প্রতি মাসে জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণ করছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বছরে জ্বালানি তেলের চাহিদা প্রায় ৭৪ লাখ টন। মোট চাহিদার প্রায় ৭৫ শতাংশই ডিজেল ব্যবহার হয়। বাকি ২৫ শতাংশ চাহিদা পূরণ হয় পেট্রোল, অকটেন, কেরোসিন, জেট ফুয়েল, ফার্নেস অয়েলসহ বিভিন্ন জ্বালানি তেলে।

ডিজেল সাধারণত কৃষি সেচে, পরিবহন ও জেনারেটরে ব্যবহার করা হয়। জ্বালানি তেলের মধ্যে উড়োজাহাজে ব্যবহৃত জেট ফুয়েল ও বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্যবহৃত ফার্নেস অয়েলের দাম নিয়মিত সমন্বয় করে বিপিসি। আর ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রল ও অকটেনের দাম নির্ধারণ করে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ।

প্রতিবেশী দেশ ভারত ছাড়াও উন্নত বিশ্বে প্রতি মাসেই জ্বালানির মূল্য নির্ধারণ করা হয়।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ