ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে ইনকিলাব মঞ্চ ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ। শুক্রবার (২১ মার্চ) জুমার নামাজের পরেই পৃথকভাবে এই কর্মসূচি পালন করেন সংগঠন দুটির নেতাকর্মীরা।
জুমার নামাজের পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকা প্রদক্ষিণ করে বিক্ষোভ মিছিল করে ইনকিলাব মঞ্চ। বিক্ষোভ মিছিল শেষে দুপুর দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে প্রতিবাদ সমাবেশ করে ইনকিলাব মঞ্চ।
আরো পড়ুন
নাটোরে প্রতিপক্ষের হামলায় এক ভাই নিহত, অপর দুই ভাই আহত
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্যকালে শরীফ ওসমান হাদি বলেন, আওয়ামী লীগকে নিয়ে যদি নির্বাচন করে তবে বাংলাদেশে রক্তের যমুনা বয়ে যাবে। দুই হাজারেরও বেশি শহীদ, ৫০ হাজারেরও বেশি অঙ্গহারা আহত ও তাদের মা-বাবার কসম, ওয়াসিম, মুগ্ধসহ শহীদদের রক্তের কসম- শরীরে রক্ত বিন্দু থাকতে আওয়ামী লীগকে নির্বাচন করতে দিব না।
আওয়ামী লীগের সাবের হোসেন, সোহেল তাজদের মতো মানুষকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ সামনের নির্বাচনে কিছু আসন নিয়ে কোনো না কোনোভাবে বিরোধী দলে থাকবে, সেখানে থেকে যত বদমাইশি রাজনীতি আছে সব করবে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, নির্বাচন হলে আড়াই থেকে তিন বছর বিএনপি ক্ষমতায় থাকবে, বিরোধী দলে থেকে আওয়ামী লীগ ভারত ও ইসরায়েলকে সাথে নিয়ে এমন ষড়যন্ত্র করবে তিন বছরের মাথায় বিএনপিকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেবে। এরপর যারা শহীদ ও আহত হয়েছেন তাদের পরিবারকে কচুকাটা করবে।
সুতরাং, শরীরে রক্ত থাকতে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে দেব না৷
এদিকে বেলা সোয়া দুইটার দিকে গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ। মিছিলটি রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে শুরু হয়ে রাজু ভাস্কর্য প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে দিয়ে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে এসে বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
বিক্ষোভ সমাবেশে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের মুখপাত্র আশরেফা খাতুন বলেন, ‘এখনও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আমাদের রাস্তায় নামতে হয় যেখানে পাঁচ আগস্ট নির্ধারণ হয়ে গিয়েছে আওয়ামী লীগ থাকবে কী থাকবে না। দিল্লির প্রেসক্রিপশনে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রেসক্রিপশনে আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য পায়তারা চলছে।
যতদিন পর্যন্ত আমাদের শরীরে এক বিন্দু রক্ত আছে ততদিন পর্যন্ত আমরা বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে ফিরতে দেব না। যতদিন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হয়, আওয়ামী লীগের বিচার না হয় ততদিন পর্যন্ত আমরা রাস্তায় থাকব।’
আরো পড়ুন
গাজা ও ইয়েমেনে হামলা: মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান আলী খামেনির
গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের মুখ্য সংগঠক তাহমীদ আল মুদ্দাসিসর চৌধুরী বলেন, ৫ আগস্টের পরে যে মাইনাস টু ফর্মুলা সে মাইনাস টু ফর্মুলা হচ্ছে সাউথ এশিয়ান মাইনাস টু। এখানে আমাদের ভারত এবং পাকিস্তানের আধিপত্য থেকে বের হতে হবে। আমাদের নতুন বাংলাদেশের জন্য নতুন ডিপ্লোম্যাটিক জোন নির্ধারণ করতে হবে।
নতুন ডিপ্লোম্যাটিক জোনের মাধ্যমে আমার দেশের ভাগ্য নির্ধারিত হবে। আমরা ভারত পাকিস্তানমুখী রাজনীতির শেষ করে ফেলেছি। আমরা আর ভারত পাকিস্তানমুখী রাজনীতি করতে চাই না। ভারতের প্রেসক্রিপশনে নতুন করে বাংলাদেশের রাজনীতি কি হবে, বাংলাদেশের ভাগ্য কি হবে সেটি আমরা কখনোই মেনে নেব না।