ট্রাম্পযুগে নাটকীয়ভাবে ইউরোপের কৌশলগত পরিবর্তন

এএফপি
এএফপি
শেয়ার
ট্রাম্পযুগে নাটকীয়ভাবে ইউরোপের কৌশলগত পরিবর্তন
প্রতীকী ছবি : এএফপি

মাত্র এক মাস আগেই ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভ্লাদিমির পুতিনের এক ফোনালাপ ইউরোপের উদ্দেশে স্পষ্ট বার্তা পাঠিয়েছিল—যুক্তরাষ্ট্র হয়তো চিরকাল ইউরোপকে রাশিয়ার আগ্রাসন থেকে রক্ষা করতে থাকবে না। এরপর এই সপ্তাহে যখন দুজনের আবার কথা হলো, তখন কূটনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক তৎপরতার ফলে ইউরোপ তার জোট পুনর্গঠন করেছে এবং দীর্ঘদিনের নীতি পরিবর্তন করেছে—এক ধরনের দৃঢ়তা দেখিয়ে, যা সাধারণত পুরনো মহাদেশের সঙ্গে ততটা সম্পৃক্ত নয়।

জার্মান মার্শাল ফান্ড থিংকট্যাংকের ইয়ান লেসার বলেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসনের আগমন ইতিহাসের গতিপথ বদলে দিয়েছে এবং কী করতে হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে স্পষ্টতা এনেছে।’

এই পরিবর্তনের নানা দিক এবং ভবিষ্যতে কী হতে পারে, তা নিয়েই বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ২৭ সদস্য রাষ্ট্রের নেতারা ছয় সপ্তাহের মধ্যে তৃতীয়বারের মতো সম্মেলনে বসছেন, যেখানে ইউরোপের প্রতিরক্ষা জোরদারের বিষয়ে আলোচনা হবে।

‘নতুন খেলোয়াড়দের’ আবির্ভাব
ব্রাসেলস থেকে প্যারিস, লন্ডন এবং আবার ব্রাসেলস—ইউক্রেন বিষয়ে মস্কোর সঙ্গে ট্রাম্পের সংলাপের পর ইউরোপজুড়ে কূটনৈতিক তৎপরতা বিভিন্ন সীমারেখাকে অস্পষ্ট করে দিয়েছে। ক্রমাগত বৈঠকের ফলে ইইউর ভেতরে ও বাইরে থাকা দেশগুলোর বিভিন্ন উপদল সক্রিয় হয়েছে, আর ইইউর আনুষ্ঠানিক আলোচনায় যুক্তরাজ্য ও কানাডার মতো ‘মনোভাবের মিল থাকা’ অংশীদারদের অন্তর্ভুক্ত রাখা হয়েছে, যা এবারও অব্যাহত থাকবে। অন্যদিকে ন্যাটোর মহাসচিব প্রায় প্রতিটি আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন, যেন নতুন মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করা যায়।

আরো পড়ুন
এক সপ্তাহে যেভাবে বিশ্বরাজনীতি বদলে দিলেন ট্রাম্প-পুতিন

এক সপ্তাহে যেভাবে বিশ্বরাজনীতি বদলে দিলেন ট্রাম্প-পুতিন

 

এই পরিবর্তনগুলোর অন্যতম কারণ হলো হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান, যিনি ট্রাম্প ও রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ এবং ইউক্রেন ইস্যুতে ইইউর ঐকমত্যের পথে বারবার বাধা সৃষ্টি করেছেন।

পরিস্থিতি সামাল দিতে এবারও ব্রাসেলসে ২৬ সদস্য রাষ্ট্রের যৌথ বিবৃতি অনুমোদনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, যাতে ওরবানের বিরোধিতাকে পাশ কাটানো যায়। ইইউর এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা একে ওরবানের সঙ্গে ‘কৌশলগত মতপার্থক্য’ বলে উল্লেখ করেছেন।

এদিকে ইউক্রেনকে সমর্থন দিতে ‘ইচ্ছুকদের জোট’ গঠনের প্রক্রিয়া এবং দীর্ঘ মেয়াদে ইউরোপের প্রতিরক্ষা জোরদারের চেষ্টার প্রতিফলন হিসেবেও এই কৌশলগত পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে।

লেসার বলেন, ‘এটি স্পষ্ট যে ইউরোপ এখন প্রতিরক্ষাব্যবস্থার প্রতি শুধু আরো গুরুত্বই দিচ্ছে না, বরং তারা আরো স্বাধীনভাবে পরিচালনার কথাও ভাবছে।

এতে যুক্তরাজ্য, নরওয়ে, এমনকি তুরস্কের মতো নতুন খেলোয়াড়দের অন্তর্ভুক্ত করার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।’

তিনি আরো বলেন, ভবিষ্যতে ন্যাটোর ভেতরেই ‘একটি শক্তিশালী ইউরোপীয় কেন্দ্র’ গড়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে।

পুরনো মিত্রদের প্রত্যাবর্তন
যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা কমে যাওয়ার অন্যতম বড় প্রভাব পড়েছে যুক্তরাজ্যের ওপর, যা ব্রেক্সিট-পরবর্তী সময়ে ইউরোপের সঙ্গে নতুন সম্পর্ক গড়তে তেমন আগ্রহী ছিল না। যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে সম্পৃক্ত রাখা, সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি অর্জন ও ইউরোপের নিরাপত্তা জোরদারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।

ইউরোপীয় পররাষ্ট্র সম্পর্ক পরিষদের (ইসিএফআর) নীতিনির্ধারক ক্যামিল গ্র্যান্ড বলেন, ‘এটি সত্যিই যুক্তরাজ্যের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করতে সাহায্য করেছে।

উভয় পক্ষই বুঝতে পারছে, যখন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সামনে আসে, তখন আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারি।’

তবে স্বল্প মেয়াদে ইউরোপের প্রতিরক্ষা তহবিল নিয়ে দ্বন্দ্ব অব্যাহত থাকতে পারে। ইইউর প্রস্তাবিত ১৫০ বিলিয়ন ইউরোর পুনর্গঠন ঋণ কর্মসূচিতে ‘শুধু ইউরোপীয় উৎপাদিত’ প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে যুক্তরাজ্য ইইউর সঙ্গে একটি নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষর করলে এই প্রকল্পের অংশ হতে পারে।

স্টারমার ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ ইউক্রেন ইস্যুতে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করায় ইইউ-যুক্তরাজ্য নিরাপত্তা সহযোগিতার সম্ভাবনাও আরো উজ্জ্বল হচ্ছে।

নিয়ম ভাঙার প্রস্তুতি?
যুক্তরাষ্ট্রের সুরক্ষার ছায়া হারানোর আশঙ্কায় ইইউর ঐতিহ্যগত বাজেট ঘাটতির নিয়ম-কানুনও নড়বড়ে হয়ে উঠেছে। ইইউ এখন তার আর্থিক নিয়ম চার বছরের জন্য স্থগিত রাখতে চায়, যাতে প্রতিরক্ষা খাতে ৬৫০ বিলিয়ন ইউরো ব্যয়ের সুযোগ তৈরি হয়। আগে যেসব দেশ এই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করত, তারাও এখন নীরবে সম্মতি জানাচ্ছে।

জার্মানির মতো ব্যয়ের ক্ষেত্রে ঐতিহ্যগতভাবে সতর্ক দেশও তাদের অবস্থান বদলাচ্ছে। সম্ভাব্য চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মেৎসের নেতৃত্বে দেশটি ‘প্রতিরক্ষা ব্যয়ে বিপ্লবী পরিবর্তন’ আনতে চাইছে।

আরো বিস্ময়কর বিষয় হলো, মেৎস যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের সঙ্গে যৌথ পরমাণু প্রতিরক্ষাব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন, আর পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টুস্ক এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহারের সম্ভাবনা নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

লেসার বলেন, ‘সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে অনেক নিষিদ্ধ বিষয়বস্তু ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এটি শুধু প্রতিরোধব্যবস্থা বা অর্থায়নসংক্রান্ত বিষয় নয়, বরং সামগ্রিক কৌশলগত চিন্তা-ভাবনার দিকেও ইঙ্গিত করছে।’

তবে একটি বড় বাধা এখনো রয়ে গেছে—জার্মানি ও নেদারল্যান্ডস এখনো ইইউর পক্ষ থেকে বড় পরিসরে যৌথ ঋণ গ্রহণের বিরোধিতা করছে, যেমনটি কভিড মহামারির সময় করা হয়েছিল। ইইউর শীর্ষ কূটনীতিক কাজা কালাস বুধবার বলেন, ‘এই মুহূর্তে এটি বাস্তবায়নের পর্যায়ে নেই। তবে এটি পুরোপুরি বাতিলও হয়নি।’

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

চীনে বিয়ে করা আরো সহজ হলো

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
চীনে বিয়ে করা আরো সহজ হলো
প্রতীকী ছবি : এএফপি

চীন বিয়ে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া সহজতর করতে ও দম্পতিদের আর্থিক চাপ কমাতে শনিবার কিছু পদক্ষেপ ঘোষণা করেছে, যা জন্মহার বৃদ্ধির জন্য বেইজিংয়ের সর্বশেষ উদ্যোগ। 

সামাজিক কলঙ্ক ও কম সুরক্ষার কারণে চীনে বিয়ের বাইরে সন্তান জন্মদান অত্যন্ত বিরল। দম্পতিরা বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া ও সন্তান ধারণে আগ্রহ হারানোর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যেমন নগদ প্রণোদনা ও শিশুর যত্নের পরিকাঠামো নির্মাণের প্রতিশ্রুতি।

নতুন পদক্ষেপটি দম্পতিদের তাদের বাসস্থানেই বিয়ের নিবন্ধন করার সুযোগ দেবে।

সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভি শনিবার একটি সরকারি নথির উদ্ধৃতি দিয়ে এ খবর জানায়। এ ছাড়া রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, ‘এই সংস্কারটি তাদের প্রয়োজন মেটানোর জন্য, যারা তাদের নিবন্ধিত জন্মস্থানের বাইরে বসবাস বা কাজ করেন, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম।’

এখন পর্যন্ত দম্পতিদের যে জায়গায় বর বা কনের নাম নাগরিক নিবন্ধনে ছিল, সেখানে গিয়ে নিবন্ধন করতে হতো, যা ভ্রমণ ও আর্থিক বোঝা সৃষ্টি করত। যেমন বেইজিংয়ের উত্তরাঞ্চলে বসবাসরত একটি দম্পতি যদি দেশের অন্য কোনো জায়গা থেকে আসতেন, তবে তারা রাজধানীতে তাদের বিয়ে নিবন্ধন করতে পারতেন না।

 

সিসিটিভি বলেছে, ‘জনগণের প্রত্যাশার প্রতি আরো ভালোভাবে সাড়া দেওয়ার জন্য এবং পাইলট প্রকল্পগুলোর সফলতার ভিত্তিতে, দেশের পুরোপুরি বিয়ে নিবন্ধন প্রক্রিয়া বাস্তবায়িত হবে।’

অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মুখে চীনে গত বছর বিয়ের সংখ্যা এক-পঞ্চমাংশ ও টানা তৃতীয় বছর জনসংখ্যা হ্রাস হয়েছে। সিসিটিভি জানিয়েছে, এই বিষয়টি সমাধান করতে আরো একটি পদক্ষেপ হিসেবে নাগরিক বিষয়ক মন্ত্রণালয় যৌতুক ও বিয়ের অনুষ্ঠানে অপচয়ের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাবে।

যৌতুক প্রায়ই শ্বশুরবাড়ির প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন হিসেবে এবং একটি তরুণ দম্পতির জীবনযাত্রার জন্য অবদান হিসেবে দেখা হয়।

তবে এই খরচ কখনো কখনো অত্যন্ত বেশি হতে পারে এবং বরের পরিবারে আর্থিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে, পাশাপাশি সামাজিক অসমতা বাড়াতে পারে।

বিভিন্ন কারণে তরুণ চীনারা বিয়ে ও সন্তান ধারণে হতাশাগ্রস্ত, এর মধ্যে একটি বড় কারণ হলো অ্যাপার্টমেন্ট কেনার জন্য সঞ্চয়ের অভাব, যা সাধারণত বিয়ের আগে করতে হয়। শিক্ষার খরচও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যেমন ডে কেয়ারের খরচ বা প্রাইভেট টিউশন, যা একটি শিশুর একাডেমিক সাফল্যের জন্য প্রায় অপরিহার্য হিসেবে দেখা হয়।

সূত্র : এএফপি

মন্তব্য

নাইজারে মসজিদে হামলায় নিহত ৪৪, ৩ দিনের শোক ঘোষণা

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
নাইজারে মসজিদে হামলায় নিহত ৪৪, ৩ দিনের শোক ঘোষণা
নাইজারে পুলিশের টহল। ফাইল ছবি : এএফপি

নাইজারের সরকার দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে একটি মসজিদে হামলার ঘটনায় তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে শুক্রবার প্রচারিত এক বিবৃতিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, দেশটির সীমান্তবর্তী কোকোরু শহরের ফামবিতা এলাকায় এই ‘নৃশংস’ সশস্ত্র হামলায় অন্তত ৪৪ জন নিহত ও আরো ১৩ জন আহত হয়েছে।  

পশ্চিম আফ্রিকার সাহেল অঞ্চলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশেষ করে ২০১২ সালের তুয়ারেগ বিদ্রোহের পর মালির উত্তরাঞ্চলে আল-কায়েদা ও আইএসআইএল (আইএসআইএস) সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীগুলোর উত্থানের ফলে। এরপর সহিংসতা প্রতিবেশী দেশ নাইজার ও বুরকিনা ফাসোতে ছড়িয়ে পড়ে এবং সাম্প্রতিক সময়ে টোগো ও ঘানার মতো পশ্চিম আফ্রিকার উপকূলীয় দেশগুলোতেও বিস্তৃত হয়েছে।

 

নাইজারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সর্বশেষ হামলাটি মুসলমানদের পবিত্র রমজান মাসে জুমার নামাজের সময় মসজিদে সংঘটিত হয়। ভারি অস্ত্রে সজ্জিত সন্ত্রাসীরা মসজিদ ঘিরে ফেলে এবং অস্বাভাবিক নিষ্ঠুরতার সঙ্গে গণহত্যা চালায়। তারা স্থানীয় একটি বাজার ও বেশ কয়েকটি বাড়িতেও অগ্নিসংযোগ করে।  

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এই হামলার জন্য ইসলামিক স্টেট ইন দ্য গ্রেট সাহারা (ইআইজিএস) নামের আইএসআইএল সংযুক্ত একটি গোষ্ঠীকে দায়ী করা হচ্ছে।

তবে এই অভিযোগের বিষয়ে এখনো ইআইজিএসের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। নাইজারে আগের বেশ কয়েকটি হামলার দায় আল-কায়েদার সহযোগী গোষ্ঠীগুলো স্বীকার করেছিল।

এদিকে সরকার হামলাকারীদের খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সামরিক শাসিত নাইজারে প্রায়ই সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সংঘর্ষ হয়, যেখানে সাধারণ মানুষ সহিংসতার শিকার হয়ে থাকে।

সংঘাতবিষয়ক তথ্য সংরক্ষণকারী বেসরকারি সংস্থা এসিএলইডির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত নাইজারে কমপক্ষে দুই হাজার ৪০০ জন নিহত হয়েছে।

এ ছাড়া সাহেল অঞ্চলে সামগ্রিকভাবে কয়েক লাখ মানুষ নিহত ও লক্ষাধিক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো শহর, গ্রাম ও সরকারি নিরাপত্তা স্থাপনায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারগুলোর নিরাপত্তা পুনরুদ্ধারে ব্যর্থতা ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে মালিতে দুটি, বুরকিনা ফাসোতে দুটি ও নাইজারে একটি সামরিক অভ্যুত্থানের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিন দেশেই এখনো সামরিক শাসন চলছে, যদিও আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক চাপ রয়েছে নির্বাচনের আয়োজন করার জন্য।

এই অভ্যুত্থানগুলোর পর থেকে দেশগুলোর নেতৃত্ব পশ্চিমা মিত্রদের থেকে দূরে সরে গিয়ে রাশিয়ার সামরিক সহায়তা গ্রহণের দিকে ঝুঁকছে।

সূত্র : আলজাজিরা

মন্তব্য

সৌদি আরবে শান্তি আলোচনা নিয়ে অগ্রগতির আশা মস্কোর

এএফপি
এএফপি
শেয়ার
সৌদি আরবে শান্তি আলোচনা নিয়ে অগ্রগতির আশা মস্কোর
সৌদি আরবে সোমবার অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। ছবি : সংগৃহীত

রাশিয়া সোমবার সৌদি আরবে অনুষ্ঠিতব্য আলোচনায় ‘কিছুটা অগ্রগতি’ অর্জনের আশা করছে। দেশটির এক আলোচক রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। এই বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করবেন, যার লক্ষ্য হচ্ছে তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধ থামানোর পথ খোঁজা।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের প্রস্তাবিত ৩০ দিনের পূর্ণ ও নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মস্কো প্রত্যাখ্যান করেছে।

এর বদলে তারা কেবল জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর বিমান হামলা বন্ধ রাখার প্রস্তাব দিয়েছে। তবে এ প্রস্তাব সত্ত্বেও আলোচনা শুরুর আগ পর্যন্ত উভয় পক্ষই বিমান হামলা চালিয়ে গেছে। শুক্রবার রাতে রাশিয়ার একটি হামলায় ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর জাপোরিঝিয়ায় তিনজনের একটি পরিবার নিহত হয়, যা ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।  

সৌদি আরবে সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের আলোচকরা আলাদাভাবে ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

মার্কিন দূত কিথ কেলোগ এটিকে হোটেল কক্ষের মধ্যে ‘শাটল ডিপ্লোমেসি’ বলে উল্লেখ করেছেন। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কূটনৈতিক তৎপরতা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি হয়নি।

রাশিয়ার প্রতিনিধি দলনেতা সিনেটর গ্রিগরি কারাসিন রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল জভেজদাকে বলেন, ‘আমরা অন্তত কিছু অগ্রগতি অর্জন করতে চাই।’ তবে তিনি নির্দিষ্ট করে কিছু উল্লেখ করেননি।

তিনি আরো জানান, তার সহআলোচক ও এফএসবি উপদেষ্টা সের্গেই বেসেদা আলোচনা প্রক্রিয়ায় ‘লড়াইপূর্ণ ও গঠনমূলক’ মনোভাব নিয়ে অংশ নেবেন।  

এদিকে এক দিন আগেই একজন জ্যেষ্ঠ ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কিয়েভ অন্তত জ্বালানি, অবকাঠামো ও সমুদ্রবন্দর লক্ষ্যবস্তুতে হামলা বন্ধ করার বিষয়ে সমঝোতা করতে চায়।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মালিকানাধীন চ্যানেল জভেজদাকে কারাসিন বলেন, ‘আমরা অন্তত একটি সমস্যার সমাধানের জন্য লড়তে যাচ্ছি।’ রাশিয়ার প্রতিনিধিদল রবিবার সৌদি আরবের উদ্দেশে রওনা দেবে এবং মঙ্গলবার ফিরে আসবে বলে জানিয়েছেন তিনি।  

পরিবার নিহত
শান্তি আলোচনা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে রাশিয়ার আলোচক নির্বাচন নিয়ে।

কারণ আলোচকদের কেউই ক্রেমলিন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নন। কারাসিন একজন কূটনীতিক, যিনি বর্তমানে রাশিয়ার সংসদের উচ্চকক্ষে দায়িত্ব পালন করছেন। অন্যদিকে বেসেদা দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবির সঙ্গে যুক্ত এবং বর্তমানে সংস্থাটির পরিচালককে পরামর্শ দিচ্ছেন। ২০১৪ সালে ইউক্রেনের ইইউপন্থী বিপ্লবের সময় কিয়েভে রক্তক্ষয়ী দমন-পীড়নের ঘটনায় বেসেদার ভূমিকা ছিল বলে স্বীকার করে এফএসবি।  

ইউক্রেন রাশিয়ার সদিচ্ছা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে এবং চলমান হামলার জন্য দেশটির সমালোচনা করেছে, যদিও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত মঙ্গলবার সেনাবাহিনীকে ইউক্রেনের জ্বালানি স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানানো থেকে বিরত থাকতে বলেছেন।

এদিকে ইউক্রেনীয় বিমানবাহিনী শনিবার জানিয়েছে, রাশিয়া রাতভর ১৭৯টি ড্রোন হামলা চালিয়েছে। জাপোরিঝিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে শুক্রবার রাতে এক পরিবারের ওপর ড্রোন হামলা চালানো হয়, এতে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীসহ পুরো পরিবার নিহত হয়। গভর্নর ইভান ফেদোরভ টেলিগ্রামে জানান, ‘মেয়েটি ও তার বাবার মরদেহ ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। চিকিৎসকরা দীর্ঘ ১০ ঘণ্টা মায়ের জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন।’  

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির দপ্তরের প্রধান আন্দ্রি ইয়ারমাক বলেন, ‘রাশিয়া আবারও যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে এবং একটি শাহেদ ড্রোন ব্যবহার করে জাপোরিঝিয়ায় ১৪ বছরের এক শিশুকে হত্যা করেছে।’ রাশিয়া ইরানি ধাঁচের এই বিস্ফোরক ড্রোনগুলো দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করে আসছে।  

ইউক্রেনও রাশিয়ায় ড্রোন হামলা চালিয়েছে, এতে দক্ষিণাঞ্চলীয় রোস্তভ-অন-ডন শহরে দুজন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তিনি পূর্বাঞ্চলীয় শহর পোক্রোভস্কে অবস্থানরত সেনাদের পরিদর্শন করেছেন। এই শহরটি কয়েক মাস ধরে রুশ বাহিনীর অবরোধের শিকার।

মন্তব্য

কড়াইয়ে গুলি ছেঁকছিলেন এসআই, সেখান থেকেই বিস্ফোরণ

অনলাইন ডেস্ক
অনলাইন ডেস্ক
শেয়ার
কড়াইয়ে গুলি ছেঁকছিলেন এসআই, সেখান থেকেই বিস্ফোরণ
প্রতীকী ছবি : এএফপি

ভারতের কেরালা রাজ্যে গত ১০ মার্চ আচমকাই বিস্ফোরণ হয় কোচি পুলিশের ত্রিপুনিথুরা পুলিশ শিবিরে। বিস্ফোরণের কারণ জানতে তদন্ত শুরু করেছিল পুলিশের একটি দল। এবার জানা গেল কিভাবে ঘটেছিল সেই বিস্ফোরণ। ভারতীয় গণমাধ্যম শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমটি বলছে, কোচি সিটি পুলিশের আর্মড রিজার্ভ ক্যাম্পে বাহিনীর গোলাবারুদ শাখার দায়িত্বে যে কর্মকর্তা ছিলেন, তার গাফিলতিতেই এমন ভয়ংকর ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশ কমিশনার পুত্তা বিমলাদিত্যের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উপপরিদর্শক মর্যাদার এক কর্মকর্তা সেদিন গুলি পরীক্ষা করে দেখছিলেন। শিবিরের অস্ত্রাগারে মরচে ধরা বেশ কিছু গুলি চোখে পড়ে তার। সেই গুলিগুলো ঠিক আছে কি না, দেখার জন্য তিনি কড়াইয়ে রেখে ছেঁকা শুরু করেন।

আর তার জেরেই বিস্ফোরণ হয় পুলিশ শিবিরে।

আনন্দবাজার অনুসারে, সেই ঘটনায় পুলিশ শিবিরের একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে কেউ হতাহত হননি। এমন ঘটনা যে ঘটতে পারে, তা কারো ধারণাতেই ছিল না বলে পুলিশের সূত্রের দাবি।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ