মানিকগঞ্জে আধ্যাত্মিক ক্ষমতার নামে অপচিকিৎসা, প্রতারণা

মারুফ হোসেন, মানিকগঞ্জ
মারুফ হোসেন, মানিকগঞ্জ
শেয়ার
মানিকগঞ্জে আধ্যাত্মিক ক্ষমতার নামে অপচিকিৎসা, প্রতারণা

পক্ষাঘাত (প্যারালিসিস), বাক্প্রতিবন্ধী, মানসিক প্রতিবন্ধীসহ সব ধরনের রোগের ‘চিকিৎসা’ করেন তিনি। রোগীকে সুস্থ করে দেওয়ার চ্যালেঞ্জ করেন। সন্তানহীন নারীকে সন্তান পাইয়ে দেওয়ার নিশ্চয়তা দেন। পানিপড়া, তেলপড়া, বিশেষ ধরনের মলম আর রোগীর কানে কানে কিছু একটা বলে চলছে তাঁর ‘চিকিৎসা’।

অথচ এই ‘সর্ব রোগের চিকিৎসকই’ কি না তাঁর স্ত্রীর চিকিৎসা করিয়েছেন হাসপাতালে। তিনি হলেন আধ্যাত্মিক ক্ষমতার দাবিদার বেলাল পাগলা।

হাজার হাজার মানুষ বিশ্বাস করে বেলাল পাগলার কাছে আসছে ‘চিকিৎসা’ নিতে। তিনি হাতিয়ে নিচ্ছেন টাকা।

স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীলরা বলছেন, এটা অপচিকিৎসা, প্রতারণা।

বেলাল পাগলার বাড়ি মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার হরগজ গ্রামে। নিজ বাড়িতে বড় এলাকাজুড়ে গড়ে তুলেছেন ‘বেলাল পাগলার দরবার শরিফ’। সবাই বলে বেলাল পাগলার আস্তানা।

এখানে নারী ও পুরুষদের জন্য রয়েছে পৃথক হলঘর। প্রতি শুক্রবার তিনি রোগী দেখেন। এদিন কমপক্ষে এক হাজার রোগী এবং তাদের সঙ্গে তিন-চার হাজার লোক আসে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বাস, মিনিবাস, প্রাইভেট কার, স্কুটারে করে আসে রোগীরা। তাদের ঘিরে আস্তানায় গড়ে উঠেছে অন্তত ২০টি দোকান।
দোকানগুলো থেকে কিনে নিতে হয় পানি ও তেলের বোতল আর মলম। বেলাল মূলত এই পানি ও তেল পড়ে দেন রোগীদের। বোতল বাবদ নেওয়া হয় ৩০ টাকা। বিশেষভাবে তৈরি প্রতি কৌটা মলমের দাম ১০০ টাকা। মলম বিক্রি করে বেলালের লোকজন।

বেলাল পাগলার ছেলে মোহাম্মদ বাবু জানান, তার বাবা একসময় বিআইডাব্লিউটিএতে (বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ) গ্রিজম্যান হিসেবে চাকরি করতেন। ২০০৬ সালে তিনি অবসরে যান। এর অনেক আগেই বেলাল পাগলা ‘আধ্যাত্মিক ক্ষমতার অধিকারী হন’। তখন থেকেই তিনি মানুষজনকে চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। তবে অবসরে যাওয়ার পর তিনি আস্তানাটি গড়েন।

কয়েকজন এলাকাবাসী জানায়, দিনে দিনে বেলাল পাগলার আস্তানা বড় হয়ে উঠছে। তিনি মানুষের বিশ্বাসকে পুঁজি করে ব্যবসা করছেন। তেল, পানি আর মলম বিক্রি করেই প্রতি শুক্রবার মোটা অঙ্কের টাকা কামান। এ ছাড়া আছে ভক্তদের মোটা অঙ্কের হাদিয়া। দেশজুড়ে একটি নেটওয়ার্ক আছে তাঁর। বিশেষ করে নোয়াখালী, কুমিল্লা, বরিশাল, ময়মনসিংহসহ উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় এজেন্ট রয়েছে। তারাই কমিশনের ভিত্তিতে রোগী ম্যানেজ করে।

ছয় মাস আগে স্ট্রোক হওয়ার পর বাঁ হাত ও পা অবশ হয়ে যায় আব্দুল্লা রাহির। সম্প্রতি ঢাকা থেকে কলেজছাত্রী মেয়ে কানিজ ফাতেমাকে নিয়ে তিনি আসেন বেলাল পাগলার আস্তানায়। ফাতেমা বলেন, ঢাকায় তাঁর বাবার চিকিৎসা হচ্ছে। আগের চেয়ে তিনি অনেক সুস্থ। কিন্তু বাবার তর সইছে না। লোকমুখে শুনে এসেছেন বাবা। তবে ফাতেমার বিশ্বাস নেই এ চিকিৎসায়। শুধু বাবার মনের শান্তির জন্য এসেছেন।

ছেলে মাহিনকে (৭) নিয়ে তৃতীয়বার আসা মা শাহিনা বেগম বলেন, ছেলে খুব চঞ্চল, পাগলামি করে। বেলাল পাগলা প্রতিবারই পানি ও তেল পড়া এবং মলম দিয়েছেন। এ পর্যন্ত তিনি ৯০০ টাকায় ৯ কৌটা মলম কিনেছেন। তবে ছেলের উন্নতি হয়নি।

ভ্যানচালক জহিরের ছেলে আজাদের ১০ বছর বয়সে হঠাৎ পা অবশ হয়ে যায়। ঠিকভাবে হাঁটতে পারে না। ডাক্তার দেখিয়েও কাজ হয়নি। জহির জানান, লোকমুখে বেলাল পাগলার কথা শুনে দশ-বারো জনের সঙ্গে তিনি গাইবান্ধা থেকে এসেছেন। এ নিয়ে চারবার ১৪ কৌটা মলমের সঙ্গে পানি ও তেল কিনতে হয়েছে। তবে ছেলের কোনো উন্নতি দেখছেন না।

আগামী বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে শুভ। ছয় মাস আগে থেকে হঠাৎ ডান চোখে দেখতে পায় না। ঢাকায় ইসলামিয়া হাসপাতালে দেখানোর পর চিকিৎকরা জানান, অন্তত সাতটি ইনজেকশন দিতে হবে। প্রতিটির দাম ৩৫ হাজার টাকা। আর ডান চোখের জন্য মাইনাস ১৩.২৪ পাওয়ারের চমশা দেন। শুভর বাবা হামিদুর রহমান আলী ভারতে চিকিৎসা করার সিদ্ধান্ত নেন। এর মধ্যে এক আত্মীয় বেলাল পাগলার কথা জানান (বেলালের দরবারেই থাকেন)। এর আগে দুবার ছেলেকে নিয়ে দরবারে এনেছেন। তিনি বলেন, বেলাল পাগলা কানে কানে কিছু একটা বলেছে শুভকে। কিন্তু তা কাউকে জানানো যাবে না। কেবল শুভই জানবে। এভাবেই চিকিৎসা চলছে। তবে ছেলের অবস্থা আগের মতোই।

সম্প্রতি এ প্রতিবেদক আস্তানাটিতে গিয়ে মোবাইল ফোনে বেলাল কোথায় আছেন জানতে চাইলে বেলাল বলেন, ‘আমার স্ত্রী অসুস্থ। তাঁকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছি। আপনি শুক্রবার আসবেন। দেখা হবে।’ এরপর ফোনের সংযোগ কেটে দেন বেলাল।

বেলাল পাগলার ছেলে মোহাম্মদ বাবু বলে, ‘আমার মায়ের মেরুদণ্ডের হাড় ক্ষয় হয়েছে। তাই ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।’

বেলাল দাবি করেন, তিনি কোনো রোগীর কাছ থেকে টাকা নেন না। বিশ্বাসই তাঁর শক্তি। তিনি বলেন, ‘মানবসেবাই পরম ধর্ম। আমাকে নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলে। কিন্তু আমাকে কেউ এই ধর্ম পালন থেকে পিছু হটাতে পারেনি।’

মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. মো. লুত্ফর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, বৈজ্ঞানিকভাবে ঝাড়-ফুঁক দিয়ে চিকিৎসার কোনো ভিত্তি নেই। এসব ভুয়া, অপচিকিৎসায় রোগীর বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। এসব যারা করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। সাধারণ মানুষকে এসব লোকের কাছে না গিয়ে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

সাভারে চাঁদা না দেওয়ায় গুলি ও মাঝিদের মারধর, দুই নৌকা লুট

সাভার (ঢাকা) সংবাদদাতা
সাভার (ঢাকা) সংবাদদাতা
শেয়ার
সাভারে চাঁদা না দেওয়ায় গুলি ও মাঝিদের মারধর, দুই নৌকা লুট

সাভারে দাবিকৃত ৫ লাখ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় প্রকাশ্যে গুলি করে দুটি ইঞ্জিন চালিত নৌকা লুট করে নিয়ে গেছে একদল দুর্বৃত্ত। বুধবার (৯ এপ্রিল) বিকেলে সাভারের কাতলাপুর বংশী নদীর মিলনঘাট এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।

এ ঘটনায় ঘাটের ইজারাদার কামরুল ইসলাম বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।

প্রত‍্যক্ষদর্শী হেদায়েত উল্লাহ জানান, কয়েকদিন আগে একদল সন্ত্রাসী ঘাট ব‍্যবসায়ী কামরুল ইসলামের কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।

কিন্তু ঘাট কর্তৃপক্ষ চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করায় বুধবার বিকেলে সন্ত্রাসী অন্তরের নেতৃত্বে ৮-১০ জনের একদল দুর্বৃত্ত অস্ত্র নিয়ে কাতলাপুর এলাকার মিলনঘাটে এসে কয়েক রাউন্ড গুলি করে। পরে তারা ঘাটে থাকা ২টি ট্রলার লুট করে অস্ত্র উচিয়ে চলে যায়।

লিখিত অভিযোগের বাদী ঘাট ব‍্যবসায়ী কামরুল ইসলাম জানান, বেশকিছুদিন ধরে পার্শ্ববর্তী ফুডনগর মোল্লাপাড়া এলাকায় অন্তর খান (২৬), মাহাবুল্লাহ খানের ছেলে মোর্শেদ খান (২৫), মোশারফ খান (২৮), হৃদয় (২৫) ও রনি খান (৪২) আমার কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল। তাদের দাবিকৃত চাঁদা না দেওয়ায় বিকেলে আরো ১০-১২ জন অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসী পিস্তল, ধারাল চাপাতি, রামদা, ছোরা, চাকু, লোহার রড, লোহার পাইপ নিয়ে হামলা চালিয়ে কাতলাপুর কর্ণপাড়া মিলনঘাটে এসে আমাকে এলোপাতাড়িভাবে মারধর করে।

এসময় আমার ডাক-চিৎকারে ঘাটে উপস্থিত মাঝি খোকন (৬০) ও আরমান আলী (৩৪) এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা তাদেরকে মারধর করে ৮ লাখ টাকা মূল্যের দুটি ট্রলার লুট করে নিয়ে যায়। বিষয়টি জানিয়ে আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

জানতে চাইলে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুয়েল মিঞা জানান, গুলি করে ট্রলার লুটের ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় সাভার মডেল থানা হতে লুট হওয়া ১২টি অস্ত্র এখনো উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।

মন্তব্য

ঝিনাইদহে বিএনপিকর্মীকে কুপিয়ে হাত বিচ্ছিন্ন করল প্রতিপক্ষরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঝিনাইদহ
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঝিনাইদহ
শেয়ার
ঝিনাইদহে বিএনপিকর্মীকে কুপিয়ে হাত বিচ্ছিন্ন করল প্রতিপক্ষরা
ছবি: কালের কণ্ঠ

ঝিনাইদহ সদরে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে রিপন মোল্লা নামের এক বিএনপিকর্মীকে কুপিয়ে হাত বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে প্রতিপক্ষরা।

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাতে উপজেলার রাজাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে প্রেরণ করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।

আহত রিপন মোল্লা সদর উপজেলার রাজাপুর গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাক মোল্লার ছেলে।

এ ঘটনায় আহতের মা নূরজাহান বেগম বাদী হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

আহতের স্ত্রী ইসমতারা বলেন, গ্রামে বিএনপির গ্রুপ পরিবর্তন নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে আমার স্বামীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় রাজাপুর গ্রামের হুমায়ুন, আব্দুল করিম, মিঠুন ও বাড়িবাথান হারুন।

পরে সেখানে তাকে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হাত-পা বিচ্ছিন্ন করে ফেলে যায় তারা।

এ ব্যাপারে সদর থানার ওসি আবদুল্লাহ আল মামুন কালের কণ্ঠকে বলেন, এ ঘটনায় আহত রিপনের মা থানায় মামলা দায়ের করেছে। হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।

মন্তব্য

সাফারি পার্কের তিনজনকে বদলি

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, গাজীপুর
আঞ্চলিক প্রতিনিধি, গাজীপুর
শেয়ার
সাফারি পার্কের তিনজনকে বদলি

গাজীপুরের শ্রীপুরে সাফারি পার্কের দুই কর্মকর্তাসহ তিনজনকে বদলি করা হয়েছে। বুধবার (৯ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) শারমীন আক্তার এ তথ্য জানান। 

কালের কণ্ঠকে তিনি জানিয়েছেন, এরই মধ্যে তিনজনকে বদলি করা হয়েছে। তারা হলেন- সাফারি পার্কের বন্যপ্রাণী তত্ত্বাবধায়ক আনিছুর রহমান, বন বিট কর্মকর্তা হারুন-অর রশিদ ও জুনিয়র বন্যপ্রাণী স্কাউট মামুন।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘এটা বন বিভাগের নিয়মিত বদলির অংশ। এ ছাড়া একজন আউটসোর্সিং কর্মচারীকেও সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

গত ২৩ মার্চ সাফারি পার্কটির লাম চিতা-১ বেষ্টনীর জাল কেটে একসঙ্গে আফ্রিকান তিনটি লেমুর চুরি হয়। চুরির ঘটনাটি গণমাধ্যমে ফলাওয়ের পর আজ দুপুরে সাফারি পার্কটি পরিদর্শন করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

এরপর আজ রাতে বদলির ওই চিঠি পান দুই কর্মকর্তাসহ তিনজন। তবে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) শারমীন আক্তার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ওই তিনজনকে মঙ্গলবার বদলি করা হয়েছে।’

মন্তব্য

বন্ধুদের সঙ্গে মার্কেটের ছাদে আড্ডা, পড়ে কলেজছাত্রের মৃত্যু

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
শেয়ার
বন্ধুদের সঙ্গে মার্কেটের ছাদে আড্ডা, পড়ে কলেজছাত্রের মৃত্যু
সংগৃহীত ছবি

লক্ষ্মীপুরে বহুতল একটি মার্কেটের ছাদ থেকে পড়ে মো. সিরাজ (১৯) নামে এক কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (৯ এপ্রিল) বিকেলে জেলা শহরের উত্তর তেমুহনী এলাকায় নিউ মার্কেটের ছাদ থেকে পড়ে তার মৃ্ত্যু হয়। 

সিরাজ পৌর শহরের লিল্লাহ মসজিদ এলাকার নাছির উদ্দিন বাড়ির ট্রাক চালক ফারুকের ছেলে ও দালাল বাজার ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। 

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সিরাজ নিউ মার্কেটের ছাদে তার তিন সহযোগী মোবারক, আল আমিন ও ফারুককে নিয়ে আড্ডা দিতে যায়।

সেখানে তারা গাঁজা সেবন করে। এর একপর্যায়ে সে ছাদ থেকে পড়ে  আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে পাঠায়। অবস্থার অবনতি হলে ঢাকায় নেওয়ার পথে সন্ধ্যায় তিনি মারা যান।
 

এদিকে ঘটনার পর তার বন্ধু এবং স্বজনরা মোবারক নামে এক যুবককে আটক করে মারধর করে নিউ মার্কেটে আটকে রেখেছে। খবর পেয়ে পুলিশ বিক্ষুব্ধ জনতার হাত থেকে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। আটক মোবারক রায়পুর উপজেলার চরলক্ষ্মী গ্রামের রিয়াজ হোসেনের ছেলে।

আরো পড়ুন
সিলেট সীমান্ত দিয়ে ১৪ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল ভারত

সিলেট সীমান্ত দিয়ে ১৪ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল ভারত

 

সিরাজের স্বজনরা জানান, সিরাজ দুপুরে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিউ মার্কেটের ছাদে যায়।

সে প্রায় সময় সেখানে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিত। বিকেলের দিকে সে ছাদ থেকে পড়ে গুরুতর আহত হয়। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠায় চিকিৎসক। পথিমধ্যে সে মারা যায়।
রাত ৮ দিকে তার মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে।

আরো পড়ুন
তথ্য উপদেষ্টার বাবার ওপর হামলা, ছাত্রদল-যুবদল নেতা আটক

তথ্য উপদেষ্টার বাবার ওপর হামলা, ছাত্রদল-যুবদল নেতা আটক

 

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মোন্নাফ বলেন, সিরাজসহ চারজন মার্কেটের ছাদে বসে আড্ডা এবং গাঁজা সেবন করে। ছাদ থেকে সিরাজ নিচে পড়ে মারা যায়। সিরাজের স্বজনরা মোবারক নামে একজনকে ধরে মারধর করে। তাকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। সিরাজের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হবে। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ