<p style="text-align: justify;">দূর থেকে দেখে মনে হবে যেন লাল কোন মানচিত্র, মাঠে ভাগা দিয়ে দিয়ে শুকনা মরিচ বিছিয়ে রাখা হয়েছে। রাস্তা দিয়ে কোনো পথচারী গেলেই দৃষ্টি ফেরানোর কোনো উপায় নেই। জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার এম এম ডিগ্রী কলেজ মাঠে এভাবেই কৃষকরা তাদের উৎপাদিত মরিচ শুকাতে দিয়েছেন। এছাড়াও রাস্তার পাশে, ক্ষেতের ধারে, ফাঁকা মাঠে সবখানেই মরিচ শুকাতে দিয়েছেন কৃষকরা। </p> <p style="text-align: justify;">উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার এই উপজেলায় ৩৯৫ হেক্টর জমিতে মরিচের উৎপাদন হয়েছে। এবারের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩২০ মেট্রিক টন। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কিছুটা বেশি উৎপাদন হয়েছে। </p> <p style="text-align: justify;">কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এবারে পোকামাকড়ের আক্রমণ বেশি ছিল এবং বিরূপ আবহাওয়া থাকায় কাঙ্খিত মাত্রায় ফলন হয়নি। প্রতি হেক্টরে ফলন হয়েছে ২.০৫ মেট্রিক টন। উৎপাদন ভালো হলে ফলন হওয়ার কথা ২.৫০ মেট্রিক টন শুকনা মরিচ। এক বিঘা মাটিতে ৬ থেকে ৮ মন শুকনা  মরিচ ফলন হয়েছে। ভালো ফলন হলে ১০ থেকে ১২ মন মরিচ উৎপাদন হয়। </p> <p style="text-align: justify;">উপজেলার বাহাদুরাবাদ, চুকাইবাড়ী, ইউনিয়নের সবচেয়ে বেশি মরিচ উৎপাদন হয়। মাটির ধরন এবং আবহাওয়া ইউনিয়নের সবচেয়ে বেশি মরিচ উৎপাদন হয়েছে। মরিচের মান ধরন অনুযায়ী ৮  থেকে ১০ হাজার টাকা মনে শুকনো মরিচ বিক্রি হচ্ছে। দাম গত বছরের তুলনায় কম হওয়ায় চাষীদের মাথায় হাত পড়েছে। একদিকে ফলন কম অন্যদিকে দামও কম হওয়ায় দুইদিক থেকেই লোকসানে পতিত হয়েছে কৃষকরা। </p> <p style="text-align: justify;">উপজেলার বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের মরিচ চাষী মোহাম্মদ জাবেদ আলী, ওয়াজ কুরুনী, আনারুল ইসলাম, সাহেব মিয়ার অভিযোগ, মরিচ চাষ করে এবার লাভবান হতে পারেননি। তারা বলেন, গত বছর মরিচের মন ছিল ১২ থেকে ১৬ হাজার টাকা, ফলনও ভালো হয়েছিল। এবারের মরিচের ফলন কম দামেও অর্ধেক। এক বিঘা মাটির মরিচ চাষ করতে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়। কার্তিক মাস থেকে চৈত্র ৬ মাস পর্যন্ত সময় লাগে মরিচ ঘরে তুলতে।  সার বিষ কীটনাশকের দাম বেশি সে তুলনায় ফসলের দাম নেই। আগামী বছর আর মরিচের চাষ করবে না বলেও তাদের আক্ষেপ। হাতি ভাঙ্গা ইউনিয়নের কয়েকজন কৃষক জানান "মরিচের দাম নেই আপনাদেরকে আর কি বলব কিছুই বলার নাই "</p> <p style="text-align: justify;">উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলমগীর আজাদ কালের কণ্ঠকে বলেন, পোকামাকড়ের আক্রমণ এবং আবহাওয়া অনুকূল না থাকায় এবার ফলন কম হয়েছে। তার ওপরেও দাম কম থাকায় কৃষকরা হতাশ।</p>