<p>বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হৃদয় চন্দ্র তরুয়া নিহতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সাত শতাধিক আসামি করে একটি মামলা করা হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও থানায় দায়েরকৃত এই মামলায় ২০৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৫০০ জনকে আসামি করা হয়। </p> <p>এই মামলায় চট্টগ্রামের চার সাংবাদিক এবং সাবেক দুই ওসিকে আসামি করা হয়েছে। ওই দুই ওসি (অফিসার ইনচার্জ) আন্দোলনের সময় ঢাকা ও নরসিংদীতে ওসির দায়িত্বে ছিলেন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চান্দগাঁও থানার ওসি মো. আফতাব উদ্দিন।  </p> <p>থানা সূত্রে জানা যায়, শেখ হাসিনা ছাড়া মামলায় আসামি করা হয়েছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানাকেও।</p> <p>মামলার আসামিদের মধ্যে আরো আছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী, আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান কাজী আকরাম উদ্দিন, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম, দিলীপ কুমার আগরওয়াল, খাগড়াছড়ির সাবেক সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ঝুলন কুমার দাশ, সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, চট্টগ্রাম রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি নুরে আলম মিনা, সিএমপি কমিশনার সাইফুল ইসলাম, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ, খাগড়াছড়ির সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মংশেফ্রু।</p> <p>মামলায় ৩৬ নম্বর আসামি করা হয়েছে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানার সাবেক ওসি আবুল কাশেম ভূঁইয়াকে। তিনি এখন নরসিংদী মডেল থানার ওসি। আর ৪০ নম্বর আসামি করা হয়েছে কোতোয়ালি থানার সাবেক ওসি মোহাম্মদ মহসিনকে। তিনি আন্দোলন চলাকালীন সময়ে ঢাকার তেজগাঁও থানার ওসি ছিলেন।</p> <p>এদিকে ১৪৮ থেকে ১৫১ নম্বর পর্যন্ত আসামি করা হয়েছে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশ, সময় টিভির চট্টগ্রাম ব্যুরোপ্রধান কমল দে, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক ও একুশে টিভির সাবেক আবাসিক সম্পাদক রফিুকুল বাহারকে।</p> <p>প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় গত ১৬ জুলাই চান্দগাঁও এলাকায় সংঘর্ষের মধ্যে গুলিতে আহত হয়েছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী হৃদয় চন্দ্র তরুয়া। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৩ জুলাই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তিনি মারা যান।</p> <p>বাদী আজিজুল হক নিজেকে হৃদয় চন্দ্র তরুয়ার বন্ধু দাবি করে মামলায় উল্লেখ করেছেন, ১ থেকে ৪০ নম্বর আসামির নির্দেশনা, অর্থায়ন ও প্ররোচণায় ৪১ নম্বর আসামি সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন ছাত্রদের দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দিয়েছিলেন। ৪২ থেকে ২০৬ নম্বর আসামিসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৪০০-৫০০ জন বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।</p>