<p style="text-align:justify">আর মাত্র কয়েক দিন পরেই শুরু হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। তাই এ সময় মন্দিরে মন্দিরে মা দুর্গার প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। </p> <p style="text-align:justify">দুর্গাপূজায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়িতে নাড়ু ও মোয়া বানানোর প্রচলন দীর্ঘদিনের। অনেকের কাছেই নাড়ু-মোয়া ছাড়া দুর্গাপূজার উৎসব অনেকটাই ম্লান। কিন্তু এবার নাড়ু-মোয়া তৈরিতে যেন ভাটা পড়েছে। মূলত নাড়ু-মোয়া তৈরির উপকরণের অস্বাভাবিক দাম বাড়ার কারণেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এক থেকে দেড় বছরের ব্যবধানে বিভিন্ন উপকরণের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। এ কারণে উচ্চবিত্তের ঘরে এবার নাড়ু-মোয়া তৈরি হলেও নিম্ন ও মধ্যবিত্তের ঘরে এগুলো তৈরিতে তেমন সাড়া নেই।</p> <p style="text-align:justify">শুধু তা-ই নয়, দুর্গাপূজায় মা দুর্গাকে পূজার সময় হরেক রকমের ফলমূলে পাশাপাশি নারকেল ও নারকেলের নাড়ু দিতে হয়। শুধু মা দুর্গার জন্যই নয়, এ সময় বাড়িতে আগত অতিথিদের আপ্যায়নেও নারকেল নাড়ু রাখতে হয়। কিন্তু বগুড়ায় এবার নারকেলের বাজার অত্যন্ত চড়া। দোকানিরা নারকেলের পসরা সাজিয়ে রাখলেও বেচা-বিক্রি তেমন একটা হচ্ছে না। </p> <p style="text-align:justify">নারকেলের বাজার শহরের চেলোপাড়া ও স্টেশন রোড এলাকা ঘুরে দেখা যায়, গতবারের চেয়ে নারকেলের দাম বেড়েছে অনেক। গত পূজায় এক জোড়া নারকেলের দাম ছিল আকারভেদে ৬০, ৭০ বা ৯০ টাকা। সেই নারকেল এ বছর বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে শুরু ১০০, ১৫০ এমনকি  ১৭৫ টাকায়। </p> <p style="text-align:justify">এ বিষয়ে শহরের চেলোপাড়ার নারকেল বিক্রেতারা ভোম্বল সরকার বলেন, ‘সারা বছরই ডাবের দাম বেশি ছিল। যার কারণে নারকেলের দামও বেশি। আড়তে নারকেলের দাম বেশি ধরায় আমরাও বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।’</p> <p style="text-align:justify">নারকেল বিক্রেতা পলান সাহা বলেন, ‘খুলনার বাগেরহাট থেকে পূজা উপলক্ষে এক মাস আগে নারকেল মজুদ করেছি। এর মধ্যে অনেক নারকেল নষ্ট থাকবে আবার আকারেও ছোট বড় থাকবে। এ পর্যন্ত এক হাজার নারকেলও বিক্রয় করতে পারিনি। তবে পূজার আগ মুহূর্তে বিক্রয় ভালো হবে বলে আমি আশাবাদী।’ তিনি বলেন, ‘দামের কারণে অনেকেই কম নারকেল কিনছেন।’</p> <p style="text-align:justify">বগুড়ার সদর উপজেলার শেখেরকোলা গ্রামের কাঠমিস্ত্রি রণজিৎ প্রামাণিক বলেন, ‘পূজা উপলক্ষে আত্মীয়-স্বজন এমনকি বন্ধু-বান্ধবদের নিমন্ত্রণ করা হয়। তারা প্রায় সবাই নারকেলের নাড়ু খেতে চায়। কিন্তু নারকেলের দাম বেড়েই চলেছে। আগে ২০ থেকে ২২টি নারকেলের নাড়ু তৈরি করলেও এবার দাম বেশি হওয়ার কারণে ১২টি নারকেল কিনেছি।’ </p> <p style="text-align:justify">শিবগঞ্জ উপজেলা সদরের বানাইল এলাকার শিক্ষক বিপ্লব মোহন্ত বলেন, ‘মা দুর্গার পূজায় ফলমূল, মোয়া, নাড়ু ও নারকেল দিতে হয়। কিন্তু বাজারে নারকেল বেশি মূল্যে কিনতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে আমাদের মতো সনাতন ধর্মের পরিবারের লোকদের।’ </p> <p style="text-align:justify">তিনি আরো বলেন, ‘গত বছরের চেয়ে এ বছর নারকেলের দাম অনেক বেশি।’ </p> <p style="text-align:justify">বগুড়া জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু রায় নির্মল বলেন, এ বছর জেলায় ৬২৮টি মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজার আয়োজন চলছে। বাঁশ ও মাটির কাজ শেষ। এখন অনেক মন্দিরে রঙের কাজও শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি। </p>