<p style="text-align:justify">নেত্রকোনার মদন উপজেলায় ফসলের মাঠজুড়ে চলছে বোরো আবাদের ব্যস্ততা। আবাদ কার্যক্রম সফল করতে চাষিরা দিনরাত কাজ করছেন। তবে শীতের তীব্রতা এবং বিভিন্ন সমস্যার কারণে তাদের বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। শীতে বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া, সার ও সেচসহ কৃষি উপকরণের মূল্যবৃদ্ধি এবং শ্রমিক সংকটের কারণে প্রতি ১০ শতাংশ জমিতে এবার চাষিদের অতিরিক্ত খরচ গুনতে হবে। প্রচণ্ড শীতে শ্রমিক না পাওয়ায় চাষাবাদ নিয়ে চাষিরা উদ্বিগ্ন। শ্রমিক পাওয়া গেলেও তাদের মজুরি দিতে হচ্ছে অনেক বেশি।</p> <p style="text-align:justify">সরেজমিনে দেখা গেছে, কৃষকরা বোরো চারা উত্তোলন করে সারিবদ্ধভাবে মাঠে নিয়ে যাচ্ছেন। কেউ মই দিয়ে জমি সমতল করছেন, আবার কেউবা সারিবদ্ধভাবে চারা রোপণে ব্যস্ত। অনেক চাষি জমি চাষ করে চারা রোপণের জন্য জমি প্রস্তুত করছেন। ফসলি জমিগুলোতে গভীর নলকূপের মাধ্যমে চলছে সেচ কার্যক্রম।</p> <p style="text-align:justify">উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলায় ১৭ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। হাওরবেষ্টিত এ উপজেলায় ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে বোরো আবাদ শুরু হয়েছে, যা চলবে ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত। তবে শ্রমিক সংকটের কারণে এবার সময়মতো আবাদ নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছেন কৃষকরা।</p> <p style="text-align:justify">বাঘমারা গ্রামের কৃষক জানু মিয়া, ফতেপুর গ্রামের সবল মিয়া, ফরিদ চৌধুরী, দেওশহিলা গ্রামের সামিউর ও নাছিরসহ একাধিক কৃষক জানান, প্রতি বছর ধান উৎপাদনের সময় বাজারে ধানের দাম কমে যায়। এতে উৎপাদন খরচ তুলতেই হিমশিম খেতে হয়। এর ফলে ঋণের বোঝা বাড়ছে। এবার শ্রমিক সংকটের কারণে সমস্যাটা আরও জটিল হয়েছে। গত বছর শ্রমিকের মজুরি ছিল ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, যা এখন বেড়ে হয়েছে ৮০০ থেকে ১,০০০ টাকা। তবুও সময়মতো শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। শীতের কারণে ভরা মৌসুমেও শ্রমিক সংকট প্রকট। এছাড়া বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ফলে প্রতি একর জমিতে সেচের খরচও বেড়েছে।</p> <p style="text-align:justify">উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, শীতের কারণে বোরো বীজতলা রক্ষায় বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ মৌসুমে উপজেলায় ২ হাজার ৫০০ কৃষককে প্রণোদনার আওতায় সার ও বীজ দেওয়া হয়েছে। চলতি বোরো মৌসুমে ১৭ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সময়মতো চাষাবাদ সম্ভব হলে ফসল ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।</p>