মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে চা গবেষণা কেন্দ্র (বিটিআরআই) বিদ্যালয়ের সামনে থেকে বৈদ্যুতিক শকে আহত একটি তাল খাটাশ (গন্ধগোকুল) উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার (২২ জানুয়ারি) প্রাণিটি মাটিতে পড়ে ছটফট করছিল।
স্থানীয় বাসিন্দা শিপন মিয়া বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনে খবর দিলে তাল খাটাশটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসা দিয়ে পরে বনবিভাগের কাছে হস্তান্তর করে।
বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক স্বপন দেব সজল বলেন, তাল খাটাশ (গন্ধগোকুল) উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বনবিভাগ (বন্যপ্রাণী) কার্যালয়ে হস্তান্তর করা হয়েছে।
তাল খাটাশ (গন্ধগোকুল) স্তন্যপায়ী। দেহ স্থূল ও রুক্ষ বাদামি-ধূসর বা ধূসর-কালো লোমে ঢাকা থাকে। ইংরেজিতে বলে এশিয়ান পাম সিভেট। বাংলায় তাল খাটাশ, ভোন্দর, লঙ্গর, লেনজা, সাইরেল বা গাছ খাটাশ নামে ডাকা হয়।
তালের রস পান করে বলে একে তাড়ি বিড়ালও বলে কেউ কেউ। বন-জঙ্গল কমে যাওয়ায় দিন দিন এদের সংখ্যা কমছে।
প্রাণীটি নিশাচর। এরা মানুষের বেশ কাছাকাছি থাকে।
দিনের বেলায় বড় কোনো গাছের ভূমি সমান্তরাল ডালে লম্বা হয়ে শুয়ে থাকে। লেজটি ঝুলে থাকে নিচের দিকে।
মূলত ফলখেকো হলেও কীটপতঙ্গ, শামুক, ডিম, পাখির ছানা, ছোট প্রাণী, তাল-খেজুরের রসও খায়। খাদ্যের অভাব হলে এরা মুরগি, কবুতর এসব চুরি করে। ইঁদুর ও ফল-ফসলের ক্ষতিকর পোকামাকড় খেয়ে কৃষকের উপকার করে এরা।
অন্ধকারে অন্য প্রাণীর গায়ের গন্ধ শুঁকে সেটাকে চিনতে পারার ক্ষমতা রয়েছে এদের। এর শরীরের গন্ধ উৎপাদনকারী গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত রস সুগন্ধি তৈরিতে ব্যবহার হয়।
তাল খাটাশ বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয় উপত্যকা, লাওস, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, চীন, ফিলিপাইনসহ এশিয়ার আরো অনেক দেশে এ প্রাণী বহুদিন ধরে আছে।