আক্কেলপুরে এক রাতে ৬ থ্রি ফেজ মিটার চুরি, রেখে গেছে ফোন নম্বর

আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
শেয়ার
আক্কেলপুরে এক রাতে ৬ থ্রি ফেজ মিটার চুরি, রেখে গেছে ফোন নম্বর
ছবি : কালের কণ্ঠ

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নে এক রাতে ৬টি গভীর নলকূপের থ্রি ফেজ বৈদ্যুতিক মিটার চুরির ঘটনা ঘটেছে। চোরেরা ঘটনাস্থলে একটি চিরকুট রেখে গেছে, যেখানে যোগাযোগের জন্য একটি ফোন নম্বর উল্লেখ করা হয়েছে। সোমবার দিবাগত রাতে এই ঘটনা ঘটে।

নিয়মিত নলকূপের মিটার চুরির ফলে নলকূপের মালিকরা বিপাকে পড়েছেন।

কৃষকরা ফসলের বিশেষ করে আলু উৎপাদনের ক্ষেত্রে গভীর দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।

জানা গেছে, তিলকপুর ইউনিয়নের পাঠানধারা মাঠ থেকে আজাদ হোসেনের, করমজি মাঠ থেকে আসলাম হোসেনের, পুকুড়িয়া পাড়ার মাঠ থেকে শাহানুর আলম শান্টুর, কয়া গোপীনাথপুর মাঠ থেকে খোরশেদ আলমের, কাদোয়া মাঠ থেকে শহীদুল ইসলামের এবং কয়া গোপীনাথপুর এলাকার মেহেদী হাসানের কারখানার থ্রি ফেজ মিটার চুরি হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিটি মিটার চুরির পর চোরেরা যোগাযোগের জন্য একটি ফোন নম্বর রেখে যায়। নম্বরে যোগাযোগ করলে চোরচক্র বিভিন্ন অঙ্কের টাকা দাবি করে।

টাকা না দিলে ফের চুরি করার হুমকি দেওয়া হয়।

ক্ষতিগ্রস্ত মালিক শাহানুর আলম শান্টু বলেন, ‘নিয়মিত মিটার চুরির কারণে পাহারা দিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না। আমরা দুশ্চিন্তায় আছি। চোরেরা চুরির সময় হুমকিও দিয়ে যায়।

এর আগেও আমার মিটার চুরি হয়েছে। আমাদের দেখার কেউ নেই।’

কৃষক শাহাদত হোসেন বলেন, ‘ফসলে সময়মতো পানি দিতে না পারলে ফসলের অনেক ক্ষতি হবে। প্রায়ই মিটার চুরির ঘটনা ঘটে, যা আমাদের বড় সমস্যায় ফেলেছে।’

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আক্কেলপুর জোনাল অফিসের ডিজিএম আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমাদের কাছে এখনো কোনো গ্রাহক অভিযোগ করেননি।

তবে এলাকায় নিয়মিত মিটার চুরির ঘটনা ঘটছে। গ্রাহকরা আমাদের বিষয়টি অবগত করলে আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ করব।’

আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিছুর রহমান বলেন, ‘মিটার চুরির বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

নিয়মিত মিটার চুরির কারণে নলকূপ মালিক এবং কৃষকরা মারাত্মক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলে দাবি করেছে স্থানীয়রা।

মন্তব্য

ঝুঁকি নিয়ে কাঠের সেতু পারাপার, ৮ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ

ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
শেয়ার
ঝুঁকি নিয়ে কাঠের সেতু পারাপার, ৮ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ
ছবি: কালের কণ্ঠ

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার দাঁতমারা ইউনিয়নের গজারিয়া খালে পাকা সেতু না থাকায় অস্থায়ী কাঠের সেতু দিয়ে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছেন আট গ্রামের প্রায় দুই হাজার মানুষ। নড়বড়ে এই সেতু দিয়ে শুধু মানুষই নয়, দুই শতাধিক যানবাহনও চলাচল করে, যা প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।

গজারিয়া খালের উপর নির্মিত এই কাঠের সেতুটি বেশ সরু এবং রেলিংবিহীন। সেতুটি কয়েকটি গাছের খুঁটির উপর ঝুঁকিপূর্ণভাবে দাঁড়িয়ে আছে।

যানবাহন চলাচলের সময় এক লাইনে যাওয়ার কারণে প্রায়ই যানজট তৈরি হয়। এছাড়া রেলিং না থাকায় হাঁটাচলাও বিপজ্জনক।

এই সেতু দিয়ে কাঞ্চনা, বড় বেতুয়া, ছোট বেতুয়া, সন্দীপ পাড়া, উত্তর বান্দরমারা, দক্ষিণ বান্দরমারা, মুজাহিদপুর ও চুড়ামনি গ্রামের মানুষ ছাড়াও খালের দুই পাড়ে অবস্থিত স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার শতাধিক শিক্ষার্থীকে প্রতিদিন চলাচল করতে হয়। স্থানীয় স্কুল শিক্ষক নুরুল হক বলেন, এখানে একটি পাকা সেতু নির্মাণ হলে অর্ধলক্ষ মানুষের জীবনমান বদলে যাবে।

কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, কেউ এগিয়ে আসেনি।

বেতুয়া গ্রামের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই আমরা পাকা সেতুর দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু স্থানীয়দের আর্থিক সহায়তায় তৈরি এই অস্থায়ী সেতুই এখনও আমাদের ভরসা।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলী তন্ময় নাথ জানান, গজারিয়া খালের মুজাহিদপুর এলাকায় সেতু নির্মাণ একটি জরুরি বিষয়।

সেতুটির গুরুত্ব বিবেচনা করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

এই অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, যাতে তাদের আর ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে না হয়।

মন্তব্য

রংপুরে পৌর বিএনপির কমিটি গঠন, নেতাদের ক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর
নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর
শেয়ার
রংপুরে পৌর বিএনপির কমিটি গঠন, নেতাদের ক্ষোভ
সংগৃহীত ছবি

রংপুর মহানগরীর হারাগাছ পৌর বিএনপির কাউন্সিল নিয়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করার কথা ছিল। কিন্তু গতকাল শনিবার রাতেই জেলা বিএনপির নেতারা পৌর বিএনপির কমিটির সদস্যদের নিয়ে কমিটি অনুমোদন দেন।

অন্যদিকে এই কমিটিতে ত্যাগী কর্মীদের জায়গা না হওয়া ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।

ত্যাগী নেতাদের দাবি দীর্ঘ দিন থেকে দলে কাজ করার পরও কমিটিতে স্থান হলো না তাদের। এরপরেও তারা দলকে ভালোবেসে কাজ করে যাবেন।

আরো পড়ুন
শহীদ নজির আহমদ দিবসে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের কর্মসূচি

শহীদ নজির আহমদ দিবসে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের কর্মসূচি

 

শনিবার (১ ফেব্রয়ারি) হারাগাছ বহুমুখী বিদ্যালয় মাঠে হারাগাছ পৌর বিএনপির ভোটের মাধ্যমে কমিটি গঠন নিয়ে কাউন্সিল চলাকালে সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন দাজু ও হারুন রশিদ সমাপ্তির প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। রংপুর জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা কমিটি ঘোষণা না করে রবিবার ভোটের মাধ্যম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হবে বলে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করে চলে আসেন।


পরে রংপুর জেলা বিএনপি নেতাকর্মীরা পৌর বিএনপির কাউন্সিলের থাকা সদস্যদের মতামতের মাধ্যমে রাতেই কমিটি অনুমোদন দেন।

নেতাকর্মীদের অভিযোগ রংপুর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও কাউনিয়া বিএনপির আহ্বায়ক এমদাদুল হক ভরসা তার দীর্ঘদিনের কর্মচারী দাজু ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক ও আপন ফুপাতো ভাই মোনায়েম হোসেন ফারুককে বিনা ভোটে সভাপতি নির্বাচিত করেছেন।

আরো পড়ুন
ভর্তিতে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আমরণ অনশনে বৈষম্যবিরোধীরা

ভর্তিতে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আমরণ অনশনে বৈষম্যবিরোধীরা

 

অনেক নেতাকর্মী অভিযোগ করে বলেন কাউনিয়া বিএনপি ভরসা পরিবারের আধিপত্যের কারণে সব সময় ত্যাগী নেতাকর্মীরা বঞ্চিত হয়। তার দেয়া মনোনীত কমিটি দিয়ে যুগের পর যুগ চলে আসছে হারাগাছ পৌর বিএনপির কার্যক্রম।

তাতে পদ বঞ্চিত হচ্ছেন অনেক ত্যাগী ও সিনিয়র নেতারা।
 
হারাগাছ পৌর বিএনপির সভাপতি পদপ্রার্থী মো. আমিরুল হক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমি এককভাবে নয়, যারা দলের দুঃসময়ে আঁকড়ে ধরে বিএনপিকে রক্ষা করেছিল তাদের অবশ্যই মূল্যায়ন করতে হবে। দলকে কারো পৈতৃক সম্পত্তি মনে করে স্বজনদের মধ্য দিয়ে নিজেরা পদ ভাগাভাগি করলে মেনে নেওয়া হবে না।

রংপুর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও কাউনিয়া বিএনপির আহ্বায়ক এমদাদুল হক ভরসা বলেন, সভাপতি মোনায়েম হোসেন ফারুক আমার ফুপাতো ভাই ও সাধারণ সম্পাদক দাজু ইসলাম আমার কর্মচারী হলেও তারা ত্যাগী কর্মী। আর সভাপতি প্রার্থী এক সময় আওয়মী লীগ রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার কারণে তার প্রার্থীতা বাতিল হয়।

 

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য
জন্মদিন

ফুটবলের জাদুকর সামাদ—হারিয়ে যাওয়া এক কিংবদন্তির গল্প

দিনাজপুর প্রতিনিধি
দিনাজপুর প্রতিনিধি
শেয়ার
ফুটবলের জাদুকর সামাদ—হারিয়ে যাওয়া এক কিংবদন্তির গল্প
সংগৃহীত ছবি

আজ ২ ফেব্রুয়ারি, ফুটবলের জাদুকর সৈয়দ আবদুস সামাদের ৬২তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৬৪ সালের এই দিনে দারিদ্র্যের কশাঘাতে বিনা চিকিৎসায় দিনাজপুরের পার্বতীপুরে রেল কোয়ার্টারে মৃত্যুবরণ করেন এই কিংবদন্তি ফুটবলার। তার অসাধারণ ক্রীড়ানৈপুণ্য তাকে উপমহাদেশের ফুটবল ইতিহাসে অমর করে রেখেছে।

সৈয়দ আবদুস সামাদ, যিনি ‘জাদুকর সামাদ’ নামে পরিচিত, ছিলেন ফুটবল জগতের এক অনন্য প্রতিভা।

১৮৯৫ সালের ৬ ডিসেম্বর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানের ভূরী গ্রামে এক দরিদ্র পরিবারে তার জন্ম। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর তিনি পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) পার্বতীপুরে চলে আসেন এবং সেখানেই স্থায়ী হন।

১৯১২ সালে কলকাতা মেইন টাউন ক্লাবে এবং ১৯৩৩ সালে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে যোগ দিয়ে সামাদ ফুটবল জগতে আলোড়ন তোলেন। তার নেতৃত্বে মোহামেডান পরপর পাঁচবার আইএফএ শিল্ড ও লিগ জয় করে।

১৯২৪ সালে তিনি ভারতের জাতীয় ফুটবল দলে নির্বাচিত হন এবং ১৯২৬ সালে দলের অধিনায়ক হন। তার নেতৃত্বে ভারতীয় দল গ্রেট ব্রিটেন, বার্মা, সিলোন, মালয়, সিঙ্গাপুর, হংকং, চীন ও ইন্দোনেশিয়ার মতো শক্তিশালী দলগুলোর বিরুদ্ধে অবিস্মরণীয় জয় পায়।

সামাদের খেলোয়াড়ি জীবনের অসংখ্য ঘটনা আজও ফুটবলপ্রেমীদের মুখে মুখে ঘুরে বেড়ায়। একবার ইন্দোনেশিয়ায় মাঠের গোলপোস্টের উচ্চতা কম থাকায় তার শট গোল না হওয়ায় তিনি রেফারিকে চ্যালেঞ্জ করেন।

মেপে দেখা যায়, গোলপোস্ট সত্যিই স্ট্যান্ডার্ড উচ্চতার চেয়ে ছোট। এমনই ছিল তার দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাস।

তার খেলোয়াড়ি জীবনের শেষ দিকে ১৯৩৬ সালে গুরুতর আহত হওয়ার পর তিনি আর তেমন করে খেলতে পারেননি। ১৯৬৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি দারিদ্র্য ও অবহেলার মধ্যে পার্বতীপুরের রেল কোয়ার্টারে মৃত্যুবরণ করেন এই কিংবদন্তি। তার মৃত্যুর পর তার স্মৃতি সংরক্ষণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

পার্বতীপুরের ইসলামপুর কবরস্থানে সমাহিত সামাদের সমাধি আজও অবহেলিত।

সামাদের স্মৃতিধন্য পার্বতীপুরের ‘সামাদ মিলনায়তন’ আজ ভগ্নদশায় পড়ে আছে। একসময় এই মিলনায়তন ছিল পার্বতীপুরের সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু। কিন্তু এখন এটি অযত্নে ধ্বংসের পথে।

স্থানীয় ফুটবলপ্রেমী ও সাংবাদিকরা সামাদের জীবনী পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন। তারা বলছেন, ফুটবলের রাজা পেলের মতো সামাদের গল্পও নতুন প্রজন্মের জানা প্রয়োজন। সামাদের মতো কিংবদন্তিকে স্মরণ ও সংরক্ষণ করা না হলে, তার অবদান কালের গহ্বরে হারিয়ে যাবে।

সামাদের জীবন ও কর্ম আমাদের শেখায়, প্রতিভা ও অধ্যবসায় কিভাবে একজন মানুষকে কিংবদন্তিতে পরিণত করতে পারে। কিন্তু সেই কিংবদন্তিকে আমরা কতটুকু স্মরণ করছি? আজও যদি তার স্মৃতি সংরক্ষণের উদ্যোগ না নেওয়া হয়, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তিনি শুধুই একটি নাম হয়ে থাকবেন। আসুন, ফুটবলের এই জাদুকরকে স্মরণ করি এবং তার অবদানকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করি।

মন্তব্য

ফরিদপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২৫

ভাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
ভাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
শেয়ার
ফরিদপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২৫
আহতদের ঢাকা-ফরিদপুর মেডিক্যালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ছবি : কালের কণ্ঠ

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে গুরুতর আহত একজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ও তিনজনকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন ১২ জন। বাকিরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের খারদিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ঘারুয়া ইউনিয়নের খারদিয়া গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুটি পক্ষ রয়েছে। একপক্ষের নেতৃত্ব দেন ঘারুয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার মুন্সী (৪৫) ও বিএনপির সমর্থক চান মিয়া (৪০)। অপরপক্ষের নেতৃত্ব দেন খারদিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও ঘারুয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফিরুজুর রহমান নিরু খলিফা (৪৮) ও ঘারুয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড কৃষক দলের সভাপতি করিম মোল্লা (৬০)।

 

শনিবার রাত ৯টার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে। রবিবার সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে দুই পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। খবর পেয়ে ভাঙ্গা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ সংঘর্ষে আনোয়ার মুন্সীর পক্ষের ইদ্রিস মোল্লাকে (৪৫) গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

 

অন্যদিকে, আনোয়ার মুন্সীর পক্ষের ফজলুল হক মুন্সী (৫০), জিয়াদ আলী মাতুব্বর (৪২) ও ফিরুজুর রহমান নিরু খলিফার পক্ষের ফয়সাল শেখকে (৪২) ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ঘারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য এবং ওই এলাকার বাসিন্দা কাওছার খন্দকার বলেন, ‘গত সরকারের পতনের পর নিরু খলিফা জেলে যান। সম্প্রতি জামিনে আসেন। তার (যুবলীগ নেতা নিরু খলিফা) লোকজনের এখন নেতৃত্ব দেন ওয়ার্ড কৃষকদলের সভাপতি করিম মোল্লা। আনোয়ার মুন্সীর লোকজন রবিবার সকালে নিরু খলিফার বাড়িতে হামলা করতে গেলে করিম মোল্লার লোকজন বাঁধা দিতে যায়।

এ নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কিছু লোক আহত হয়। পুলিশ এসে দুইপক্ষকে শান্ত করে।’ 

ঘারুয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার মুন্সী বলেন, ‘সাবেক এমপি নিক্সন চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ যুবলীগ নেতা নিরু খলিফার নেতৃত্বে কয়েক শত লোক ঢাল, সড়কি, রামদা নিয়ে আমাদের ওপর আক্রমণ করে। নিরু খলিফা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বাঁধা দিয়েছিল। এ মামলায় কয়েক মাস জেল খেটে সম্প্রতি জামিনে আসে। এসেই আবার বেপরোয়া  হয়ে ওঠে। গত আওয়ামী লীগের আমলে নিরু খলিফা আমাদের এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল।’

ঘারুয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফিরোজুর রহমান নিরু খলিফা বলেন, ‘আমি আজ এলাকায় ছিলাম না। আমার জামাতা শনিবার দিবাগত ভোরে বিদেশে গিয়েছে। তাকে নিয়ে আমি শনিবার ঢাকায় এসেছি। আমি শুনেছি আনোয়ার মুন্সীর নেতৃত্বে কয়েক শত লোক ঢাল, সড়কি, ইট, পাটকেল নিয়ে আমার বাড়িতে হামলা করে। এ সময় আমার চাচা ওয়ার্ড কৃষক দলের সভাপতি করিম মোল্লার নেতৃত্বে এ হামলা প্রতিহত করা হয়।’

ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার মিঠুন মজুমদার বলেন, ‘গুরুতর আহত ৪ জনকে আমরা উন্নত চিকিৎসার জন্য মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছি। বাকি বেশ কয়েকজন আহত রোগী এখানে ভর্তি রয়েছে।’

ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোকছেদুর রহমান বলেন, ‘সংঘর্ষের খবর পেয়ে ওই এলাকায় পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ ব্যাপারে থানায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ